খবরটি স্বস্তিদায়ক যে, জনদাবির প্রেক্ষাপটে খুনি-পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গুম খুন হত্যা সন্ত্রাসসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে জড়িত দলটির নেতাকর্মীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে। সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তি ও ব্যক্তিবর্গের বিচারের পাশাপাশি এর সাথে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের বিচারের ক্ষমতাও ট্রাইব্যুনালকে দিয়ে একটি অধ্যাদেশ জারির গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও সন্ত্রাসে জড়িত ব্যক্তি ও সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা যাবে। এভাবে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাদের নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে। সরকারের এ সিদ্ধান্তে সারা দেশ আনন্দে উদ্বেলিত। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে সাধারণ ছাত্র-জনতা গত দু’দিন ধরে আনন্দ মিছিল বের করে উল্লাস প্রকাশ করছে এবং জামায়াত-শিবির ও কিছু কিছু ইসলামী দল আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের অংশ হিসেবে রাস্তায় সিজদায় লুটিয়ে পড়েছেন বলে সামাজিক মাধ্যমে সচিত্র খবর প্রকাশিত হয়েছে।
এদিকে আওয়ামী নৃশংসতার ওপর জাতিসংঘ গঠিত তদন্ত দলের একটি প্রতিবেদনও সরকারের নিকট জমা দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদনটি লোমহর্ষক। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর ৫ আগস্ট জনরোষে ভারতে পালিয়ে যাবার পর তার বিরুদ্ধে হত্যা, গুম, দুর্নীতি, সরকারি সম্পত্তি আত্মসাৎ, লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচারসহ মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে শতাধিক মামলা রুজু করা হয়েছে। এসব অভিযোগে তার পুত্র-কন্যা, বোন ও অন্যান্য আত্মীয়, মন্ত্রী, উপ ও প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে এবং পলাতকদের ধরার জন্য ইন্টারপোলের সহায়তা কামনা করা হয়েছে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পর দলটির নেতাকর্মীদের কাউকে শোকাহত হতে দেখা যায়নি। যারা গৃহযুদ্ধের হুমকি দিতেন ও আশঙ্কা করতেন তারাও চুপসে গেছেন বলে মনে হয়। বলাবাহুল্য ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনা অভ্যুত্থানে শেখ মুজিব নিহত হবার সময়ও এমন একটি শান্ত পরিবেশ বিরাজ করেছিল। তার শোকে কোথাও ৫ জনের একটি মিছিলও বের হতে দেখা যায়নি। এখনো ইতিহাসের ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ একটি গণধিকৃত দল। বলাবাহুল্য, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার দু’বছর পার না হতেই ১৯৪৯ সালের ২৩শে জুন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, ইয়ার মোহাম্মদ খান ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর উদ্যোগে পুরানা ঢাকার কে এম দাস লেনের রোজ গার্ডেন নামক ভবনে আওয়ামী মুসলিম লীগের জন্ম হয়। দ্বিজাতি তত্ত্ব তথা মুসলিম জাতীয়তার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রটিকে তার আতুর ঘরেই ধ্বংস করার জন্য ভারতের ইন্ধনে তারা উঠে পড়ে লেগে যায়। সমগ্র পাকিস্তানে তারা ভৌগোলিক ও আঞ্চলিক জাতীয়তাবাদের বিষবাষ্প ছড়িয়ে দেয়। অচিরেই তারা আওয়ামী মুসলিম লীগের নাম পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগে রূপান্তর করে এবং পূর্ব বাংলায় বাঙ্গালী, সিন্ধুতে সিন্ধি, বেলুচিস্তানে বেলুচি, পাঞ্জাবে পাঞ্জাবী এবং সীমান্ত প্রদেশে খান আবদুল গাফফারের নেতৃত্বে পাঠানদের দিয়ে নতুন দেশটির বিরোধিতা শুরু করেন। ভারতীয় কংগ্রেসের অনুসারী আবদুল গাফফার খান সীমান্ত গান্ধি নামে পরিচিত ছিলেন এবং ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ওয়ালি) গ্রুপের প্রধান ওয়ালি খানের পিতা ছিলেন। আগেই বলেছি আওয়ামী মুসলিম লীগ তাদের নাম থেকে মুসলিম বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ হয়ে যায়। দলটির নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তানে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয় এবং তারা চটকদার ২১ দফার ভিত্তিতে ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ভূমিধস বিজয় অর্জন করে। পরে মন্ত্রিসভা গঠন করে। ক্ষমতা ও অর্থবিত্তের কাড়াকাড়ি যুক্তফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রিসভার প্রধান বৈশিষ্ট্য হয়ে পড়ে। মন্ত্রী তো বটেই মুখ্যমন্ত্রী পর্যায়েও সকাল বিকাল পরিবর্তন লক্ষণীয় হয়ে পড়ে। আবু হোসেন সরকার ও আতাউর রহমান খানের মুখ্যমন্ত্রীত্বের গড়াগড়ি এদেশের প্রবীণরা এখনো নিশ্চয়ই ভুলেননি। আতাউর রমান খানের মন্ত্রিসভায় শেখ মুজিব ১৯৫৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৫৭ সালের ৩০শে মে পর্যন্ত শিল্প, বাণিজ্য ও শ্রমমন্ত্রী ছিলেন। মন্ত্রীত্বকালে এক মামলায় দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে ঢাকা জেলা বিশেষ জজ আদালত তাকে দু’বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করে এবং অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। তার সাথে তার এক বন্ধু কাজী আবু নাসেরও একই দণ্ডে দণ্ডিত হন। ১৯৫৮ সালের অক্টোবর মাসে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে নেতৃত্বের কোন্দলে ডেপুটি স্পীকার শাহেদ আলীকে হত্যার জন্যও শেখ মুজিবুর রহমানকে দায়ী করা হয়। ঘটনার পরের দিন অধুনালুপ্ত পাকিস্তান অবজার্ভার পত্রিকায় মাইকের ডাণ্ডা খুলে শেখ মুজিব কর্তৃক শহীদ শাহেদ আলীকে আঘাত করার ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই জেনারেল আইয়ুব খান দেশে সামরিক শাসন জারি করেছিলেন এবং শেখ মুজিবসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার এবং পরবর্তীকালে এবডো (Election Bodies Disqualification Order) জারি করে রাজনৈতিক নেতাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ, সামরিক শাসক কর্তৃক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পদদলন, সার্বজনীন ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে মৌলিক গণতন্ত্রের নামে পরোক্ষ ভোটের প্রচলন প্রভৃতির জন্য আওয়ামী লীগই দায়ী ছিল। দলটি ভারতের সাথে যোগসাজশ করে ১৯৫০-৫১ সালের দিকে পূর্ব বাংলাকে বিচ্ছিন্ন করে ভারতের সাথে যোগ দেয়ার একটি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার একটি অভিযোগও শোনা গিয়েছিল, যা ষাটের দশকে এসে আগরতলা ষড়যন্ত্রে রূপ নেয়। আগরতলা ষড়যন্ত্রে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে আদালতে হলফনামা পেশ করলেও শেখ মুজিব ও তার দল বাংলাদেশ হওয়ার পর প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন যে, ঘটনাটি সত্য ছিল। একইভাবে তারা আরো ঘোষণা করেছেন যে, ১৯৪৮ সাল থেকেই তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করে আসছেন। মুসলিম লীগের নেতৃত্বে উপমহাদেশের মুসলমানদের চরম ত্যাগ তিতিক্ষা এবং সংগ্রামের ফসল হিসেবে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট প্রায় ১৯০ বছরের বৃটিশ শাসনের অবসান ঘটিয়ে পাকিস্তানের সৃষ্টি হয়। এর এক বছর যেতে না যেতেই দেশটি ভাঙার আওয়ামী লীগের এই দাবি প্রমাণ করে যে, তারা শুধু বিশ্বাসঘাতক নয়, দেশের শত্রুও। তাদের নেতা ভারতের তাঁবেদার দু’শেখের এক শেখ হবার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন। ভারত শেখ আব্দুল্লাহকে দিয়ে মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীর দখলে রেখেছেন, আরেক শেখ মুজিবকে দিয়ে তারা পূর্ব বাংলা দখলে নিয়ে এ ভূখণ্ডের মুসলমানদের পদদলিত করে রাখার জন্য উদগ্রীব ছিলেন। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ নামের এ দলটির মূল লক্ষ্য ছিল ভারতের তাঁবেদার হয়ে ক্ষমতা ও অর্থবিত্ত ভোগ করা।
মুক্তিযুদ্ধের শীর্ষস্থানীয় নেতা ও কর্মকর্তা, এমনকি দলটির বিবেকবান নেতাদের অনেকেই একথা স্বীকার করেছেন।
আমার সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য যেটাই হোক না কেন, বাংলাদেশ সৃষ্টির পর নিয়োগপ্রাপ্ত প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের প্রথম ব্যাচের আমি একজন সদস্য ছিলাম। ছয় মাস মৌলিক প্রশিক্ষণের পর ১৯৭৩ সালের জানুয়ারি মাসের তিন তারিখে অনুষ্ঠিত পাসিং আউট সভার একটি ঘটনা আমার এখনো মনে পড়ে।
কুমিল্লাস্থ বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির মিলনায়তনে ঐ অনুষ্ঠানে তৎকালীন মন্ত্রী পরিষদ সচিব এজেডএম ওরায়েদ উল্লাহ খান সভাপতি ও পল্লী উন্নয়নমন্ত্রী জনাব সামছুল হক প্রধান অতিথি ছিলেন। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে সদ্য নিয়োগকৃত কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনা দিতে গিয়ে বললেন যে, তোমাদের অন্যতম প্রধান কাজ হচ্ছে দেশের ঘরে ঘরে মুজিববাদের বাণী পৌঁছিয়ে দেয়া। এ কথাটি বলার সাথে সাথে আমাদের সাথে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত কাজী ফরিদ নামক এক কর্মকর্তা উঠে দাঁড়ালেন এবং বললেন, “স্যার আমার একটি কথা আছে। মন্ত্রী মহোদয় বললেন, বলো, সভাপতি সাহেব বললেন ‘বসো’। কাজী ফরিদ খুব সাহসী লোক ছিলেন। তিনি বললেন, মন্ত্রী মহোদয় আমাকে অনুমতি দিয়েছেন কাজেই আমি আমার কথা বলবোই। তিনি বললেন, মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়, মেহেরবানি করে আমাদের মুজিববাদের পয়গম্বর বানাবেন না। আমি মুক্তিযোদ্ধা; মুজিববাদীদের হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও লুটপাটের কারণে আমরা এখন সমাজে মুখ দেখাতে পারি না। দেশের মানুষের কাছে মুজিববাদ একটি ত্রাস ও ডাকাতির নাম। কাজেই এ ত্রাস ও ডাকাতির ওকালতি আমরা করতে পারি না। এব্যাপারে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মুজিব নগর সরকারের পররাষ্ট্র সচিব মাহবুবুল আলম চাষীর একটি পর্যবেক্ষণও প্রণিধানযোগ্য। তিনি তার প্রণীত ওহ In Quest of Swanirver পুস্তকের ৮৫ নং পৃষ্ঠায় বলেছেন, “Many of the freedom fighters who were once eager to sacrifice their lives for the cause of the motherland were now trying to devour the entire nation. Excesses committed by them made normal work nearly impossible situation became so unmanageable that once a leader of a foreign delegation asked me whether the country was really liberated or it was conquered. I wanted to know why he asked this question. He told in reply that in a liberated country everybody felt safe and happy. While in a conquered country people were afraid and the conquers looted and plundered the conquered land. In his opinion the general condition in Bangladesh was closer to the lather.
সংক্ষেপে এর অর্থ হচ্ছে, অনেক মুক্তিযোদ্ধা যাদের মাতৃভূমির জন্য জীবন বিসর্জন দিতে প্রস্তুত বলে মনে হয়েছিল। এখন দেখা যাচ্ছে তারা সারা দেশটাকে গোগ্রাসে গিলে খেতে চাচ্ছে। তাদের বাড়াবাড়ি স্বাভাবিক কাজকর্মকে অসম্ভব করে তোলে। অবস্থার এতই অবনতি ঘটে যে, একবার বিদেশী এক প্রতিনিধি দলের নেতা আমাকে জিজ্ঞাসা করেই বসলেন যে, তোমরা কী দেশটি স্বাধীন করেছ, না দখল করেছ। আমি তাকে এ প্রশ্নের কারণ জিজ্ঞাসা করলাম। উত্তরে তিনি বললেন যে, স্বাধীন দেশের নাগরিকরা প্রত্যেকে নিজেকে নিরাপদ ও সুখী মনে করে। পক্ষান্তরে দখলিকৃত দেশের নাগরিকরা সর্বদা ভীতসন্ত্রস্ত থাকে এবং দখলদাররা বিজিত জনগণের সম্পদ লুণ্ঠন, লুটপাটে লিপ্ত থাকে। বাংলাদেশের অবস্থা দখলকৃত দেশের মতোই।
এ প্রসঙ্গে মওলানা ভাসানীর একটি উক্তি স্মরণ করা যেতে পারে। তিনি শেখ মুজিবকে লক্ষ্য করে বলেছেন, মুজিব তুমি তো দেশ স্বাধীন করোনি বরং একটা লুটপাট সমিতি কায়েম করেছ। এ লুটপাট ভারতের পা-চাটা নীতি বাকশাল গঠন, গণতন্ত্র হত্যা এবং মানুষের ওপর অত্যাচার, হত্যা, লুণ্ঠন, দুর্ভিক্ষ ও দলীয় ও পারিবারিক লোকদের আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হবার নির্মম পরিণতি ছিল শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ও তার সপরিবারে নিধন। সে দিন কেউ তার মৃত্যুতে ইন্না লিল্লাহ পড়েনি। তার কন্যা শেখ হাসিনা তার পিতা ও দলের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলাদেশের একচ্ছত্র কর্তৃত্ব নিয়ে দেশকে যেমনি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন তেমনি অভাবিত লুটপাট ছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল ও তাদের নেতাকর্মীদের হত্যা নির্যাতনেরও ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। তার পিতা ১৯৭৩ সালের ২৮ এপ্রিল তৎকালীন সময়ের তার প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর ৩৮ জন খ্যাতনামা রাজনৈতিক নেতার নাগরিকত্ব বাতিল করেছিলেন। খ্যাতনামা রাজনীতিবিদ ফজলুল কাদের চৌধুরীকে জেলখানায় বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করেছিলেন। এছাড়াও ১৯৭২-৭৩ সালে স্বাধীনতা বিরোধী আখ্যা দিয়ে প্রায় ৫ লাখ লোককে হত্যা করা হয়েছিল।
আওয়ামী লীগ দল ও এর দুঃশাসনের উপর লেখা আওয়ামী লীগ নেতা আবুল মনসুর আহমদের বেশি দামে কেনা কম দামে বেচা আমাদের স্বাধীনতা এবং দলটিরই অন্যতম জনপ্রতিনিধি পাইওনিয়ার প্রিন্টিং প্রেসের মালিক এম. এ মোহায়মেন প্রণীত অধিসর Awami League in the politics of Bangladesh শীর্ষক বই দুটি পাঠ করলে পাঠকরা দলটির আসল চরিত্র খুঁজে পেতে পারেন। এরা প্রকৃতপক্ষে লুটেরা, দেশ ও গণতন্ত্রের শত্রু। বার বার তারা প্রমাণ করেছে যে, এ দেশে রাজনীতি করার যোগ্যতা ও অধিকার তাদের নেই। কাজেই রাজনীতিতে তাদের পুনর্বাসনের যারাই চেষ্টা করবেন তারাও এ দেশের বন্ধু নয়, শত্রু হিসেবেই গণ্য হবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আসলে ইতিহাস কথা বলে। জালেম ফেরাউনকে আল্লাহ তায়ালা নীলনদের পানিতে ডুবিয়ে মেরেছিলেন। এটা ছিল তার অপরাধের শাস্তি। নমরুদ শাস্তি পেয়েছিল ছোট একটি মশার কামড়ে যা তার নাক দিয়ে মাথার মধ্যে ঢুকে পড়েছিল। নিজের জুতা দিয়ে মাথায় আঘাত করে মশা মারতে গিয়ে তাকে অপমানকরভাবে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছিল। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নব্য ফেরাউন-নমরুদদের জন্য আল্লাহ কী ধরনের শাস্তি রেখেছেন তা দেখার জন্য দেশবাসী উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছেন।