মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বিভিন্ন দেশের আমদানি পণ্যের উপর উচ্চ হারে শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর বিশ্বব্যাপী প্রচণ্ড আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেসব দেশের আমদানি পণ্যের উপর বর্ধিত হারে শুল্কারোপ করেছে যাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ভারসাম্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিকূলে রয়েছে। আরো স্পষ্ট করে বললে বলতে হয়,মূলত চীনের বাণিজ্য অগ্রযাত্রা রোধের লক্ষ্যেই এ বর্ধিত শুল্কারোপ করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের আপত্তির মুখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন শুল্কারোপ সিদ্ধান্ত তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছে। কিন্তু চীনের ক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হয়তো ভেবেছিল বর্ধিত শুল্কহার প্রয়োগের মাধ্যমে চীনকে নাস্তানাবোধ করা যাবে এবং দেশটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা করার জন্য চেষ্টা করবে। কিন্তু চীন সে পথে ধাবিত হয়নি। চীনা নেতৃবৃন্দ বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে তারা পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তিন দফায় চীনা আমদানি পণ্যের উপর শুল্ক হার বাড়িয়েছে। বর্তমানে চীন থেকে আমদানিকৃত সকল পণ্যের উপর ২৪৫ শতাংশ হারে শুল্কারোপ করা হচ্ছে। অন্যদিকে চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিতকৃত পণ্যের উপর ১২৫ শতাংশ বর্ধিত শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মার্কিন নতুন শুল্কনীতির কারণে সবচেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে চীন। কারণ এ শুল্কনীতির কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্য রপ্তানি সাংঘতিকভাবে কমে যেতে পারে। আগে শুল্কসহ যে পণ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকারকগণ ১০০ মার্কিন ডলারে ক্রয় করতে পারতেন এখন তা আমদানি করতে আরো ২৪৫ মার্কিন ডলার বেশি দিতে হবে।
বর্ধিত হারে শুল্কারোপ করতে গিয়ে আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেই বিপাকে পতিত হয়েছে। অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদন বাড়িয়ে ভোক্তাদের চাহিদা তাৎক্ষণিকভাবে মেটানো সম্ভব হবে না। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিদেশ থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রি আমদানি করতেই হবে। কিন্তু সে আমদানি পণ্যের মূল্য অনেকটাই বেড়ে যাবে। স্থানীয় পর্যায়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত শ্রেণির ভোক্তাগণ বিপদে পতিত হবে। ইউক্রেন যুদ্ধের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি ৪০ বছরের রেকর্ড অতিক্রম করে ৯ দশমিক ০১ শতাংশে উন্নীত হয়েছিল। সে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব আমেরিকা ( ফেড) পলিসি রেট বৃদ্ধিকরণসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে ঠিকই কিন্তু দেশটির অর্থনীতি মন্থর হয়ে পড়েছে। কিছুদিন আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতির হার ৩ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে এসেছিল। সে মূল্যস্ফীতি আবারো ঊর্ধ্বমুখি হবার আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠেছে। পলিসি রেট বৃদ্ধির ফলে ব্যক্তি খাতে ব্যাংক ঋণের প্রবৃদ্ধি অস্বাভাবিকভাবে কমে যায়। এতে বিনিয়োগ কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বর্ধিত শুল্কারোপ ইস্যুতে যদি চীনের সঙ্গে সমঝোতায় উপনীত না হয় তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে চরম মূল্য দিতে হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য চীনের সঙ্গে বর্ধিত শুল্ক ইস্যুতে সমঝোতার ইঙ্গিত দিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি পণ্যে বর্ধিত শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত সারা বিশ্বব্যাপী মারাত্মক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। বিশ্ব অর্থনীতির অনেক হিসাব নিকাশ উল্টে যাবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড (আইএমএফ) প্রকাশিত প্রতিবেদন, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউট লুক,২০২৫ এর উল্লেখ করা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্ধিত শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত বিশ্ব অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব সৃষ্টির আশঙ্কা প্রবল করে তুলেছে। এ বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি আরো মন্থর হয়ে পড়তে পারে। এ বছর বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে। পাশাপাশি দেশে দেশে মূল্যস্ফীতির প্রবণতা আবারো ঊর্ধ্বমুখি করতে পারে। সংস্থাটি বলেছে, এ বছর বিশ্ব প্রবৃদ্ধি দশমিক ৫ শতাংশ কমে ২ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে আসতে পারে। মার্কিন যুত্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশ কমে যেতে পারে। আগে বলা হয়েছিল, ২০২৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে। এখন সে প্রক্ষেপন ১ শতাংশ কমিয়ে ১দশমিক ৮ শতাংশে নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্ধিত শুল্কের প্রভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এতে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধির কমার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি আবারো ঊর্ধ্বমুখি হবার আশঙ্কা রয়েছে। আইএমএফ’র প্রধান অর্থনীতিবিদ বলেন, ৮০ বছর ধরে চলে আসা বিশ্ব অর্থনীতিনতুন রূপ গ্রহণ করতে চলেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বিশ্ব প্রবৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ কমে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। এ বছর বিশ্ব অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি হতে পারে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। ২০২৬ সালে তা হ্রাস পেয়ে ৩ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসতে পারে।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি নিয়েও কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, এ বছর বাংলাদেশের অর্থনীতির গতি আরো কমে যেতে পারে। এ বছর বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। আগামী বছর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কিছুটা বাড়তে পারে। গত মার্চ মাসে বাংলাদেশের সার্বিক গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আইএমএফ বলেছে, এ বছর মূল্যস্ফীতির হার হবে ১০ শতাংশ। এদিকে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে যে পূর্বাভাস দিয়েছে তা খুব একটা সুখকর নয়। সংস্থাটি বলেছে, এ বছর বাংলাদেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে। মার্কিন শুল্কনীতি এবং পারিপার্শ্বিক অন্যান্য অবস্থার প্রেক্ষিতে এ বছর আরো ৩০ লাখ মানুষ নতুন করে চরম দারিদ্র্য সীমার নিচে চলে যাবে। অতি দারিদ্র্যের হার ৭দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯ দশমিক ৩ শতাংশে উন্নীত হতে পারে। দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে দুর্বল শ্রমবাজার বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। সার্বিকভাবে দরিদ্রের হার ছিল সাড়ে ২০ শতাংশ। এ বছর তা বৃদ্ধি পেয়ে ২২ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
বিগত সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের স্বৈরাচারি শাসনামলে দেশের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। সে অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালিন সরকার চেষ্টা করছে। কিন্তু অবস্থা এতটাই ভয়াবহ তা থেকে উঠে আসা খুব একটা সহজ কাজ নয়। বিগত সরকারের আমলে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করে গেছে। এ বিপুল পরিমাণ ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময় সমাহত। ঋণের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে তা দিয়ে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটে নেয়া হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ থেকে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার সমতুল্য ২৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। উন্নয়ন অর্থায়নের জন্য স্থানীয় উৎস থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। বর্তমানে দেশের ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ,যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। অনেকে অবশ্য এখানে এক ধরনের ফাঁকি প্রত্যক্ষ করছেন। তারা বলছেন, বিগত সরকার আমলে জিডিপি’র আকার কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে দেখানো হতো। কিন্তু ট্যাক্সের পরিমাণতো বাড়িয়ে দেখানো সম্ভব ছিল না। কারণ ট্যাক্সের যে পরিমাণ দেখানো হয় তা বাস্তবে থাকতে হয়। তাই ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও এতটা কম মনে হয়।
বিগত সরকার আমলে অর্থনীতির ইতিবাচক সূচকগুলোকে বাড়িয়ে দেখানো হতো। আর নেতিবাচক সূচকগুলোকে কমিয়ে দেখনো হতো। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৯শতাংশের উপরে ছিল। সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী আব্দুল মান্নান উল্লাস প্রকাশ করেছিলেন এই বলে যে, যাক মূল্যস্ফীতির হার ডাবল ডিজিট অতিক্রম করেনি। কিন্তু তার এ বক্তব্য ছিল মনগড়া। কারণ গবেষণদের অনেকেই মনে করেন, বিগত সরকার আমলে মূল্যস্ফীতির হার ২০ শতাংশের কাছাকাছি ছিল। দলীয় সমর্থনপুষ্ট ব্যবসায়ি গোষ্ঠীকে নানাভাবে অবৈধ অর্থ উপার্জনের সুযোগ করে দেয়া হয়েছিল। অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের আমলে মূল্যস্ফীতি কিছুটা হলেও কমে এসেছে। তবে এখনো মূল্যস্ফীতির হার প্রত্যাশিত মাত্রার তুলনায় অনেক বেশি। কোনোভাবেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বিগত সরকার আমলে যারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিল তারা এখনো নানা উপায়ে বিদ্যমান রয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য বাজারে তৎপর ব্যবসায়ি সিন্ডেকেটকে দমন করা না গেলে কোনোভাবেই সফল হওয়া যাবে না। আর্থিক স্বার্থের নিকট অন্য সব কিছু গৌণ হয়ে যায়। যারা বাজার সিন্ডিকেট পরিচালনা করে থাকেন তারা সব সময়ই ক্ষমতাসীন সরকারের কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করেন। কোনো উপলক্ষ পেলেই তারা সরকারি কাজে অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে,দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার হচ্ছে ৯ দশমিক ২ শতাংশ, ভারতে ৫দশমিক ৭ শতাংশ,পাকিস্তানে মাইনাস ৪দশমিক ১ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় মাইন্যাস শুন্য দশমিক ২ শতাংশ, নেপালে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ মালদ্বীপে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ এবং আফগানিস্তনে মাইনাস ৩ শতাংশ। অন্য যে কোনো পণ্যের চেয়ে খাদ্য পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেশি সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে।
মাঝে মাঝে ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন। সে অভিযানের খবর প্রচার মাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হয়। এগুলো কার্যত লোক দেখানো কৌশল মাত্র। সরকার যদি পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সত্যিই আন্তরিক হন তাহলে বাজার সিন্ডিকেট দমন করা খুব একটা কঠিন কাজ নয়। যারা বাজার সিন্ডিকেট পরিচালনা করেন তাদের আমরা চিনি। কিন্তু সরকারের ছত্রছায়ায় থাকে বলে তাদের কিছু বলা যায় না। যারা বাজারে সিন্ডিকেট তৈরির মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে বিপর্যস্ত করছেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা কি সত্যি কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারবো বা নিতে অঙ্গিকারবদ্ধ? ইসলামে ব্যবসায়-বাণিজ্যের শর্ত নির্ধারিত আছে। সে শর্ত মোতাবেক ব্যবসায় পরিচালনা করতে যদি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িদের বাধ্য করা যেতো তাহলে বাজারে পণ্যমূল্য এমনিতেই নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে আসতো। যারা সিন্ডিকেট পরিচালনা করে থাকেন তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করাসহ অর্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। কেউ যদি দেখেন দিন শেষে তার অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পত্তি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে চলে গেছে এবং তিনিও নিজেকে জেলের মধ্যে আবিস্কার করেন তাহলে অন্যেরা সতর্ক হয়ে যাবে। কেউই নিশ্চয়ই অবৈধ সম্পদ অর্জন করতে গিয়ে সম্পদ হারা এবং কারাবন্দি হতে চাইবেন না। আমাদের দেশের অন্যতম সমস্যা হচ্ছে ভালো ভালো অনেক আইন আছে কিন্তু সে আইনের সঠিক প্রয়োগ নেই। আমরা জানি আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের দেশের আইন সরকারি নির্দেশনার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। আমাদের দেশে অন্যায় করতেও ক্ষমতা (আর্থিক ও রাজনৈতিক) লাগে। এর অপরাধ থেকে দায়মুক্তি পেতেও ক্ষমতা প্রয়োজন হয়। রাজনৈতিক নেতারা অধিকাংশ সময়ই সরাসরি উৎকোচ গ্রহণ করেন না। তারা ভায়া মাধ্যমে অবৈধ উপার্জন করে থাকেন। তাদের অবৈধ অর্থের অন্যতম প্রধান সূত্র হচ্ছে এসব ব্যবসায়ি-উদ্যোক্তারা। ফলে সাধারণ মানুষ চাইলেই এসব দুস্কৃতিকারিদের বিরুদ্ধে টু শব্দটি উচ্চারণ করতে পারেন না।
লেখক : সাবেক ব্যাংকার।