পাকিস্তান-আফগানিস্তান সার্কভুক্ত দুটি প্রতিবেশী দেশ। এক দেশ আরেক দেশের পাশে থেকেছে, সংকটে পাশে থেকে হামলাকারী অপর দেশ ও জোটের সাথে যুদ্ধ করেছে। কিন্তু নানা ঘটনাচক্রে আঞ্চলিকতা নির্ধারণে এক-সময়ের বন্ধু রাষ্ট্র দুটো আজ পরপরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী। দুটি দেশের মধ্যে সম্প্রতি কয়েক দফা সংঘর্ষও হয়েছে, প্রাণ গেছে সৈন্য ও সাধারণ মানুষের। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সম্পর্ক দীর্ঘ সময় ধরে ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে, কিন্তু রাজনৈতিক, নিরাপত্তাগত ও ভূ-রাজনৈতিক কারণে দেখা যাচ্ছে সঙ্ঘাতও প্রচুর। বর্তমান সময়ে এ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এক নতুন সংকটের মুখে, যেখানে সীমান্ত উত্ত্যক্ততা, সশস্ত্র গোষ্ঠীর কার্যকলাপ, এবং বড় শক্তি-রাজনীতির হানাহানির উপস্থিতি রয়েছে।
চলতি অক্টোবর মাসের শুরুতে দু’প্রতিবেশী দেশ সীমান্তে তীব্র সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ওই সংঘর্ষ একটি পূর্ণমাত্রার সংঘাতে রূপ নেওয়া আটকাতে আলোচনার জন্য গত শনিবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে দু’দেশের প্রতিনিধিরা বৈঠকে বসেন। কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় কয়েক দিন আগে দোহায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। ওই চুক্তির লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালে তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে সীমান্তে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে তীব্র সংঘর্ষ থামানো। সীমান্তে ওই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন।
বুধবার এএফপির খবরে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের সঙ্গে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। পাশাপাশি দেশটি সতর্ক করে দিয়েছে, পাকিস্তান তাদের জনগণকে রক্ষা করার জন্য পদক্ষেপ নেবে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তান ইস্তাম্বুলে আলোচনায় বসেছিল। দক্ষিণ এশিয়ার এ দু’প্রতিবেশীদের মধ্যে বছরের পর বছর ধরে ভয়াবহ সীমান্ত সংঘর্ষের পর শান্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ আলোচনা হয়। যদিও তাতে সমস্যা সমাধানে কোনো উপায় বের হয়নি বলে পাকিস্তান দাবি করেছে। গত ৯ অক্টোবর কাবুলে বিস্ফোরণের পর ৭০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং শত শত আহত হয়। এরপর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে, যার জন্য তালেবান কর্তৃপক্ষ পাকিস্তানকে দায়ি করেছে। কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় চার দিনের আলোচনার পর পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এক্সে বলেছেন, ‘দুঃখজনকভাবে আফগান পক্ষ কোনো আশ্বাস দেয়নি। মূল সমস্যা থেকে সরে গেছে। তারা দোষারোপ, বিচ্যুতি ও কৌশল অবলম্বন করেছে। এভাবে সংলাপ কোনো কার্যকর সমাধান আনতে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে আফগানিস্তানের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
একসময়ের মিত্র, যাদের রয়েছে ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার (১৬০০ মাইল) অভিন্ন সীমান্ত , তাদের মধ্যে সম্পর্ক সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসলামাবাদের অভিযোগের কারণে তিক্ত হয়ে উঠেছে। পাকিস্তানের অভিযোগ, আফগানিস্তান ‘জঙ্গি গোষ্ঠী’গুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে এবং পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে। ইসলামাবাদের জন্য বিশেষ উদ্বেগের গোষ্ঠীর নাম, তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) গোষ্ঠী। এ দলটির বিরুদ্ধে ইসলামাবাদ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে। তারারের বিবৃতি অনুসারে, পাকিস্তান তালেবান কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করেছিল, টিটিপিকে আফগানিস্তানের ভূখণ্ডকে প্রশিক্ষণসহ সরকারি ঘাঁটি এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তালেবান সরকার ধারাবাহিকভাবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। ৯ অক্টোবর কাবুলে বিস্ফোরণের পর তালেবানরা প্রতিশোধমূলক সীমান্ত আক্রমণ শুরু করে, যার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও সাড়া দেয়। দোহায় আলোচনার পর ১৯ অক্টোবর কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় দ্বিতীয় যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার আগে প্রাথমিক ৪৮ ঘন্টার যুদ্ধবিরতি বাতিল হয়ে যায়। এই হলো দু দেশের সংঘর্ষ ও শান্তি আলোচনার চিত্র। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ শনিবার বলেছিলেন, যুদ্ধবিরতি এখনো বহাল আছে এবং কাবুল শান্তিতে আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইস্তাম্বুলে আলোচনা ব্যর্থ হলে ইসলামাবাদের সামনে ‘সরাসরি যুদ্ধ’ ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকবে না।
এদিকে পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত সংঘাত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও কথা বলেছেন। মালয়েশিয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক জোটের (আসিয়ান) শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, চলমান আলোচনার বিষয়ে তাঁকে জানানো হয়েছে। তিনি আফগানিস্তান-পাকিস্তান সংকট খুব দ্রুত সমাধান করবেন। ২৭ অক্টোবর আল জাজিরা জানায়, শান্তি ফেরাতে আলোচনার মধ্যেই পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে নতুন করে সংঘর্ষ হয়েছে। গত শুক্র ও শনিবার ওই সংঘর্ষে ৫ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হন বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। সে সঙ্গে আফগানিস্তান থেকে আসা ২৫ সশস্ত্র যোদ্ধাকে হত্যার দাবিও করেছে তারা।
দুটি দেশের সম্পর্কের চিত্রটি একটু দেখি। ১৯৪৭ সালের আগস্টে ব্রিটিশ ভারতের বিভাজনের ফলে আফগানিস্তানের পূর্ব সীমান্তে পাকিস্তানের অভ্যুদয় ঘটে; আফগানিস্তানের স্বাধীনতার পর জাতিসংঘে পাকিস্তানের প্রবেশের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া একমাত্র দেশ ছিল আফগানিস্তান। যদিও কয়েকদিন পরে ১৯৪৭ সালের অক্টোবরে নেতিবাচক ভোট থেকে সরে আসে। বহুল পরিচিত “ ডুরান্ড লাইন “ বরাবর আঞ্চলিক বিরোধ এবং বিরোধপূর্ণ দাবি বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় জুড়ে দেশগুলির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণে বাধা দেয়। পাকিস্তানে অবস্থিত পশতুন-সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলের উপর আফগান আঞ্চলিক দাবির সাথে ডুরান্ড লাইনের স্থায়িত্ব নিয়ে অসন্তোষ ছিল, যা দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তান ছাড়া অন্য সকল জাতির দ্বারা আন্তর্জাতিক সীমানা হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে। সোভিয়েত -আফগান যুদ্ধ (১৯৭৯-১৯৮৯) এবং ১৯৮৯-১৯৯২ সময়কালে দেশটির অভ্যন্তরীণ বিরোধকালে পাকিস্তান আফগান মুজাহিদিনদের সমর্থন করেছিল। ১৯৯২-১৯৯৬ সময়কালে পাকিস্তান ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত হিজবে ইসলামী গুলবুদ্দিনকে সহায়তা করেছিল, যখন ইন্টার-সার্ভিস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) তালেবানদের সৃষ্টি এবং অর্থায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল । পাকিস্তান একমাত্র রাষ্ট্র যারা তালেবান-নেতৃত্বাধীন আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাতকে (১৯৯৬-২০০১) স্বীকৃতি দিয়েছিল। তা ছিল উত্তর জোট -নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইসলামিক স্টেট অফ আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে।
কী এমন ঘটলো যে দুটি দেশ নতুন করে সংঘাতে জড়ালো? জানা যাচ্ছে, দু’সপ্তাহ আগে কাবুলের একাধিক স্থানে বিস্ফোরণের পর সীমান্তে অভিযান চালায় আফগান বাহিনী। এরপর উভয় দেশের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষে বেসামরিকসহ দুই পক্ষেরই বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। পাকিস্তানও আফগান ভূখণ্ডে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালায়। এটি দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সহিংসতা বাড়িয়ে তোলে। পরবর্তীতে কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় দোহায় দেশ দুটি একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়। আফগান সরকারের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ এএফপিকে বলেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংকটের একমাত্র সমাধান হলো সংলাপ ও পারস্পরিক বোঝাপড়া।’ পাকিস্তানি নিরাপত্তা সূত্র দাবি করেছে, আলোচনায় অগ্রগতি নির্ভর করছে আফগান তালেবানের ইতিবাচক মনোভাবের ওপর। এক সময়ের মিত্র হিসেবে কাজ করা এ ভ্রাতৃপ্রতিম দু’প্রতিবেশী রাষ্ট্র কেন এখন সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে সেটা নিয়ে বিশ্লেষকরাও নানা প্রশ্ন করছেন।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে দু’হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত থাকলেও অনেক এলাকা এখনো অনির্ধারিত। এসব এলাকায় দু’পক্ষের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে এবার সীমান্তে সবচেয়ে মারাত্ম সঙ্ঘাতক শুরু হয়েছে। সম্পর্ক এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি জটিল ও বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।
পাকিস্তান-আফগান সীমান্ত হিসেবে সংজ্ঞায়িত ডুরান্ড লাইন শতাব্দীর পুরনো বিষয়। এ রেখাটি ব্রিটিশ ভারত থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পাকিস্তানই গ্রহণ করেছে, কিন্তু আফগানিস্তান অনেক সময়ই তা আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সীমান্ত হিসেবে মানেনি, সে কথা আগেই বলেছি। এর ফলে সীমান্ত জুড়ে মিথস্ক্রিয়া, পার্শ্ববর্তী উপজাতি–সম্পর্কিত ও রাষ্ট্রনির্ধারিত কারিগরি বিতর্ক দীর্ঘায়িত হয়েছে। এ সীমান্ত পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোতে পার্বত্য, উপজাতি জনসংখ্যা বিশেষ করে পশ্তুন সম্প্রদায় উপরের রেখাকে ‘নিজ জনপদের অংশ’ হিসেবে দেখেছে। এ ভৌগোলিক বাস্তবতা রাজনৈতিক ব্যবস্থায় উভয় দেশের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দ্বিতীয়ত, আফগান-পাকিস্তান সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সশস্ত্র গোষ্ঠীর কার্যকলাপ দীর্ঘদিনের। পাকিস্তানে সক্রিয় তেহরিক ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নেতারা আফগান মাটি ব্যবহার করছে এমন অভিযোগ পাকিস্তানের। পাকিস্তান বলছে, আফগান সরকারের অধীনে থাকা মাটিতে এ গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দেওয়া হয়; আফগানিস্তান বলছে, এটি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। এসব গোষ্ঠীর হামলা ও প্রতিবাদমূলক বলবৎকরণ এখন দু’দেশই নিয়মিত সমস্যার মুখে।
তৃতীয়ত, দুই দেশের সীমানায় শুধু সীমান্ত নয় বড় শক্তি-অভ্যন্তরীণ শক্তির প্রতিযোগিতাও বর্তমান। পাকিস্তান একটি নির্দিষ্ট নিরাপত্তা পরিমণ্ডল চাইছে তাহলেই ভারতের সঙ্গে তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা, অঞ্চলের সাহচর্য এবং প্রভাব বজায় থাকবে। আফগানিস্তানের দৃষ্টিতে পাকিস্তানের নীতি কখনও কখনও তাদের সার্বভৌমত্ব ও অভ্যন্তরীন নীতিতে হস্তক্ষেপের মতো মনে হয়েছে।
চতুর্থত, উভয় দেশেই অভ্যন্তরীণ চাপ রয়েছে। পাকিস্তানে অর্থনৈতিক সংকট ও নিরাপত্তা সমস্যা, আফগানিস্তানে পুনর্গঠন ও নিরাপত্তা শূণ্যতা। পাকিস্তানের জন্য তার পশ্চিম সীমান্তের নিরাপত্তা বড় উদ্বেগ। এ অভ্যন্তরীণ অবস্থা তাদের সীমান্ত নীতি ও স্বরের ওপর প্রভাব ফেলছে। এরই ফল হিসেবে সীমান্তে সংঘর্ষ ও উত্তেজনার বৃদ্ধি পেয়েছে। পাকিস্তান বলেছে তাদের সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য নিহত হয়েছে, আফগানিস্তান বলেছে পাকিস্তান তাদের অভ্যন্তরীণ স্থানে বিমান হামলা চালিয়েছে।
সীমান্ত উত্ত্যক্ততার কারণে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও সাধারণ জনসংযোগও প্রভাবিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ হয়ে পড়েছে, ট্রেড বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে অভ্যন্তরীণ জনসমস্যাও দ্বিতীয় কোনো সংকটে রূপ নিচ্ছে।
উপরের কারণগুলো এক-একটি আলাদা সমস্যা হলেও প্রকৃতপক্ষে তারা আন্তঃসংযুক্ত। যেমন, সীমান্তের অব্যবস্থা এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীর ব্যবহার একটি নির্ধারিত বিভাজনের অস্বীকৃতি ও রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ-হ্রাসের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। আবার পাকিস্তানের নিরাপত্তা উদ্বেগ ও আফগানিস্তানে রাজনৈতিক শূণ্যতা মিলিয়ে সীমান্ত উত্ত্যক্ততা দ্রুত সশস্ত্র সংঘাতে রূপ নিচ্ছে।
পাকিস্তান বলছে তারা নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে চায়, আফগানিস্তান বলছে তাদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন হচ্ছে। এ দ্বৈরথে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় যেখানে সীমান্তবর্তী গোষ্ঠীগুলী সুযোগ পাচ্ছে। এ অনাকাক্সিক্ষ উত্তেজনা এখন শুধু সীমান্তসংক্রান্ত ইস্যুই নয় ক্ষুদ্র সশস্ত্র সংঘর্ষ থেকে বড় রাষ্ট্রীয় উত্তেজনায় ইতিমধ্যে রূপ নিচ্ছে।
এ মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, উভয় পক্ষই উত্তেজনা বাড়িয়ে নিয়ে না গিয়ে, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ, গোষ্ঠী কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ ও পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে অর্জিত সূচনাকে এগিয়ে নেওয়া। কিন্তু তা হয়নি। তুরস্ক আলোচনা কোন সমাধান ছাড়া শেষ হওয়া সমস্যাটিকে জিইয়ে রাখার শামিল বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠলে কারো জন্যই সুখকর হবে না।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক।