৫ আগস্ট ২০২৫ ছাত্র-জনতার সফল অভ্যুত্থানের এক বছর অতিক্রান্ত হলো। ছাত্র-জনতার এ বিপ্লব বাংলাদেশের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্বাধীনতার সমতূল্য। মানুষ এর মাধ্যমে মুক্ত হয়েছে। কথা বলার স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। সভা-সমাবেশ ও জমায়েতের অধিকার পেয়েছে। গণমাধ্যম মত প্রকাশের স্বাধীনতা পেয়েছে। ভিন্নমতাবলম্বীরা নির্ভয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করতে পারছে। আমাদের জাতীয় জীবনে তাই এ বিপ্লবের গুরুত্ব অপরিসীম। যেসব ছাত্র-জনতা এ বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছেন, নেপথ্যে কাজ করেছেন তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা। হাজার হাজার মানুষ যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের পরিচালিত আইনশৃংখলা বাহিনী ও দলীয় ক্যাডারদের গুলিতে শাহাদাতবরণ করেছেন তাদেরকে আমরা স্বশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করছি। তারা আমাদের জাতীয় বীর। আর যারা আহত হয়েছেন, এখনো বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাদের আমরা দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।

বিগত একটি বছর ধরে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা করছে। এ সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা ছিল অনেক। সরকার তার অনেকগুলোই পূরণ করতে পেরেছে। আবার অনেকগুলোই পূরণ হয়নি। অনেকগুলো বিষয় প্রক্রিয়াধীনও আছে। অনেকগুলো বিষয় তারা কোনো দাবি ছাড়া নিজেদের থেকেও জরুরি মনে করে স্বপ্রণোদিত পন্থায় করেছেন। আবার বেশ কিছু সিদ্ধান্ত জনমনে অসন্তোষেরও জন্ম দিয়েছে। কিন্তু এরই মাঝেই জুলাই বিপ্লবের চেতনা আস্তে আস্তে যেন ফিকে হয়ে আসতে শুরু করেছে।

রাজনৈতিক দল ও অন্তর্বর্তী সরকার শুরু থেকেই নির্বাচনের আয়োজনকেই গুরুত্ব দেওয়ায় বিপ্লবের চেতনা দুর্বল হয়েছে বরং যদি তারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিচার ও আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার সব পথ রুদ্ধ করাকেই প্রথম অগ্রাধিকার দিতেন, তাহলে একদিকে যেমন ফ্যাসিস্টদের শাস্তি নিশ্চিত হতো, অন্যদিকে বিপ্লবের চেতনা রক্ষা করাও সহজ হতো। তাছাড়া, যেভাবে প্রয়োজন ছিল সেভাবে শহীদ ও আহতদের কুরবানি নিয়ে আলোচনা করা হয়নি। রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের পর মাত্র একটি বছর অতিক্রান্ত হয়েছে অথচ এরই মধ্যে যেভাবে জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ও প্রত্যাশিত সংস্কারের দাবিকে অগ্রাহ্য করা হচ্ছে তা সত্যিই মর্মান্তিক।

৫ আগস্ট জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এক আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনুস বহু প্রতীক্ষিত জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র ঘোষণা করেন। যদিও গেল এক বছরে বহুবার বহু ফোরাম থেকে এ ঘোষণাপত্র দেয়ার জন্য চাপ ছিল; এ কারণে এ ঘোষণাপত্রের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় সকলেরই সন্তোষ্টিই প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে দলীয় ফোরামে বিস্তারিত আলোচনা করে অনেক দলই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে। মোটের ওপর নানা সমীকরণ বিবেচনায় নিয়ে অনেকে অনেক কিছু মেনে নিলেও ঘোষণাপত্রের নতুন একটি সংশোধিত সংস্করণ প্রকাশ এবং ঘোষণাপত্রে অনুপস্থিত সকল জরুরি বিষয় পরবর্তীতে প্রকাশিতব্য জুলাই সনদে স্থান দেয়ার জন্যেও তারা দাবি তুলেছেন।

২০০৯ সালে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় বসেই আধিপত্যবাদী শক্তির সেবাদাস হিসেবে এদেশের মানুষের উপরে সীমাহীন জুলুম, দুর্নীতি, লুটপাট, খুন গুম রাষ্ট্র যন্ত্রের সর্বনাশা দলীয়করণ, বিরোধী রাজনৈতিক দলের উপর মিথ্যা মামলা, সকল গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার তথা ভোটাধিকার হরণ করে। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই, অর্থাৎ ক্ষমতায় আসার দু’মাসের মাথায় পিলখানায় ৫৭ জন চৌকষ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনের নৃশংস হত্যাকান্ড, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা হত্যাকাণ্ডের মত বর্বর ঘটনাবলি ফ্যাসিবাদের বিভৎস রূপকে জাতির সামনে উন্মোচিত করে। তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের নামে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা সাজানো ও বানোয়াট মামলায় একের পর এক জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ ১১জন নেতাকে হত্যা করা হয়। হাজার হাজার আলেম-ওলামা ও ইসলামিক স্কলার ও লক্ষ-লক্ষ নিরপরাধ মানুষকে কারাগারে আটক করা হয়, রিমান্ডে নিষ্ঠুর নির্যাতন করা হয় ও সাজা দেয়া হয়। আয়নাঘর এবং ক্রসফায়ারে বহু মানুষকে নিষ্ঠুর নির্যাতন করা হয় এবং হত্যা করা হয়। অথচ এর কোনো কিছুই ঠাঁই পায়নি জুলাই ঘোষণাপত্রে। এ স্বীকৃতিটি একেবারেই অপরিহার্য ছিল।

শাপলা চত্বরের ইতিহাসকে স্বীকৃতি দেয়া বাংলাদেশের ইসলামপ্রিয় মানুষগুলোর জন্য জরুরি ছিল। মূলত শাপলা চত্বরের গণপ্রতিরোধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়েই জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আলেম-ওলামা, মাদরাসা শিক্ষার্থী ও তৌহিদি জনতা দলে দলে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। অকাতরে রক্ত দিয়েছেন; জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। অথচ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পঠিত জুলাই ঘোষণাপত্রে শাপলা গণহত্যার বিচারের প্রতিশ্রুতি তো নেই; এমনকী প্রসঙ্গটির অবতারণাই করা হয়নি। ঘোষণাপত্র পাঠকালে হেফাজত নেতারা উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও এমনটি হয়েছে।

এছাড়া সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার দোহাই দিয়ে জনমতকে উপেক্ষা করে কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি বাতিল করে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নামে ইতিহাসের নজিরবিহীন প্রহসনের নির্বাচনী নাটক মঞ্চস্থ করে। উল্লেখ্য, “আমি ও ডামি” নির্বাচনের পর ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি, ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাট, বিদেশে অর্থ পাচার, দলীয় করণে দেশের সামগ্রিক পরিবেশ চরম অবনতির দিকে আগাতে থাকে। আইজিপি, সেনা প্রধান, র‍্যাবের ডিজিসহ তাদের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে দেশের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিরুদ্ধে নিষেধজ্ঞা জারি করে। শেখ হাসিনা ও তার পরিবার দেশকে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও সন্ত্রাসের রাজত্বে পরিণত করে। কিন্তু এ বিষয়গুলো ঘোষণাপত্রে স্পষ্ট করা হয়নি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে জুলাই ঘোষণাপত্রের একটি বড়ো দুর্বলতা হলো, এখানেও আওয়ামী স্টাইলে ইতিহাসের বর্ণনা শুরু হয়েছে ১৯৭১ সাল থেকে। অথচ ১৯৪৭ না হলে ৭১ হতো না, স্বাধীন বাংলাদেশ হতো না। অথচ এ বিষয়টি ঘোষণাপত্রে নেই। বৃটিশ খেদাও আন্দোলন, বঙ্গভঙ্গ ইস্যু, মুসলিমদের স্বাধীকার আন্দোলন, এ ভূখণ্ডে জালিম শাসনের বিরুদ্ধে বারবার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধ ও আন্দোলন সংগ্রামও তুলে ধরা হয়নি। জুলাই বিপ্লবের নেপথ্য অনেক সূত্র এ জাতির অনবদ্য বৈশিষ্ট্য। তাই ইতিহাসের এ সংযোগটা না থাকায় ঘোষণাপত্রটি পূর্ণাঙ্গতা পায়নি।

শুধুমাত্র একটি সরকার হটিয়ে আরেকটি সরকারকে ক্ষমতায় নিয়ে আসার জন্যই জুলাই বিপ্লব হয়নি। এ বিপ্লব চলাকালে ১৪শ’র বেশি সাধারণ মানুষ ও ছাত্রছাত্রী জীবন দিয়েছেন। আহত হয়েছেন, অঙ্গ হারিয়েছেন ২৫ হাজারের বেশি মানুষ। এত বিশাল সংখ্যক মানুষের কুরবানি কারণ ছাড়া হয়নি। জুলাই বিপ্লবের নায়কদের মৌলিক প্রত্যাশা ছিল এমন একটি বাংলাদেশ গঠন যেখানে ফ্যাসিবাদী আমলের মতো লুটপাট, অর্থপাচার, দারিদ্র্য, বেকারত্ব, সন্ত্রাস, অবিচার, বৈষম্য ও ভিন্নমত দমন থাকবে না। আমাদের জাতিসত্ত্বা ও মূল্যবোধবিরোধী আধিপত্যবাদীদের সেবাদাস কোনো কর্তৃত্ববাদী শাসন থাকবে না। যেখানে দুর্নীতিমুক্ত, বৈষম্যহীন এবং ইনসাফপূর্ণ একটি সুষম অর্থনীতির কাঠামো গড়ে তোলা হবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এ প্রত্যাশাগুলো পূরণ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। প্রত্যাশিত সংস্কারের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বিগত আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে ঐকমত্য কমিশন বৈঠক করে আসছে। সেখানে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় মৌলিক অনেক সংস্কার প্রস্তাবে বিএনপি আপত্তি জানিয়েছে। নোট অব ডিসেন্টসসহ অনেকগুলো প্রস্তাবনা অনুমোদিত রয়েছে। তবে এ প্রস্তাবনাগুলো কবে বাস্তবায়িত হবে তা নিয়ে সংশয় ছিল। ঘোষণাপত্রে অনেকগুলো প্রস্তাবনার বাস্তবায়নের দায় পরবর্তী নির্বাচিত সংস্কারের ওপর দিয়ে দেয়ায় দেশের মানুষ হতাশ হয়েছে। তাই যদি হবে, তাহলে এত রক্ত ও কুরবানির বিপ্লবের স্বার্থকতা কোথায় রইলো- তাই এখন বড়ো প্রশ্ন। মূলত যে জায়গাগুলো রাজনৈতিক সরকারগুলো ছাড়তে চায় না, নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়, বিএনপির মতো বড়ো দলগুলো সে বিষয়গুলোতেই সংস্কারে আপত্তি জানিয়েছে। এমনটা হওয়াই স্বাভাবিকও ছিল। এ কারণে জনগণের চাওয়া ছিল গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়গুলোতে অন্তর্বর্তী সরকারই সিদ্ধান্ত নিয়ে বাস্তবায়ন করে যাবে। কিন্তু এই সরকার সে পথে যে হাঁটবে না- এর অনেকটাই ঘোষণাপত্রে স্পষ্ট হয়ে গেছে।

জুলাই এর অন্যতম একটি সফলতা ছিল, ফ্যাসিবাদী আমলে ভিকটিম হওয়া সবগুলো দল এ সময়ে একাট্টা হয়েছিল। তাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, আদর্শিক অবস্থান সবটাই তারা ভুলে গিয়ে একত্রিত হয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। আর সে কারণেই বিগত সাড়ে ১৫ বছরে না পারলেও জুলাইয়ের আন্দোলনের জেরে শেখ হাসিনার পতন হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে দেশের রাজনীতিতে পুনরায় বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে। আওয়ামী ন্যারেটিভ ও শ্লোগানগুলো ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। রাজনৈতিক সৌহার্দ্য ও সহাবস্থানের গন্ডি ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে আবারও শাহবাগী ন্যারেটিভগুলো তোলা হচ্ছে। আওয়ামী আমলে একইসাথে নির্যাতিত হওয়া দলগুলো এখন পুনরায় পরস্পরের শত্রুতে পরিণত হচ্ছে। এই বাস্তবতায় সরকারের তরফ থেকে দেয়া ঘোষণাপত্র জাতিকে একত্রিত করার ক্ষেত্রে সূতিকাগার হতে পারতো। কিন্তু সরকার নিজেও তেমন কোনো দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে পারেনি।

ঘোষণাপত্র দেয়ার দিনই রাতের বেলায় জাতির উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনুস আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান আয়োজনের চূড়ান্ত ঘোষণা দিয়েছেন। এ ঘটনায় বিএনপি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এ প্রতিক্রিয়াও স্বাভাবিক ছিল। কেননা লন্ডন বৈঠকে তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার মধ্যকার বৈঠকেও এরকমই একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু জুলাই ঘোষণাপত্র কিংবা নির্বাচনী তারিখ ঘোষণা- উভয়ের ক্ষেত্রেই অন্যান্য দলগুলোর মুল্যায়ন হলো, সরকার আসলে একতরফাভাবে বিএনপির ইচ্ছে পূরণ করছে। বিএনপির সম্মতি- অসম্মতি বা বিএনপিকে সন্তুষ্ট করাটাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। অন্যান্য দলগুলোর চাওয়াকে ততটা মূল্যায়ন না করাটাকে অনেকেই বিপ্লবের চেতনাবিরোধী বলে মনে করছে। কেননা বড়ো দলগুলোর একক মনোপলি দেশে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মতো পরিস্থিতি তৈরি করে দিয়েছে বারবার। আর বড়ো দলগুলো সুযোগ পেলেই ছোট দলগুলোকে অবজ্ঞা করে- এটিও সর্বজনবিদিত। কিন্তু এ বিষয়টি প্রতিকার করার মতো কোনো সুরাহা এখনো সম্ভব হয়নি।

সবচেয়ে হতাশাজনক বাস্তবতা হলো, সিনিয়র আইনজীবীদের অনেকেই বলছেন, সংবিধানের তফসিল অংশে জুলাই ঘোষণাপত্রের অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলায় এর কোনো ‘প্রায়োগিক বাধ্যবাধকতা থাকল না’। তাদের মতে বর্তমান সরকার ‘নির্বাচিত’ না হওয়ায় ত্রয়োদশ নির্বাচনের মাধ্যমে যারা নির্বাচিত হয়ে আসবে, তাদের বিরোধিতার মুখে ঘোষণাপত্রটি বদলানোর সুযোগ থাকছে। যদি তাই হয় তাহলে এরকম একটি অনিশ্চয়তা কেন জিইয়ে রাখা হলো- তা আমার বোধগম্য নয়। তবে আমি আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিটি বিষয় এবং প্রতিটি মহলের প্রতিক্রিয়া বিবেচনায় নিচ্ছে। এখনো জুলাইয়ের সনদ ঘোষণা করা বাকি। আমরা জানি না, সেখানে কতটুকু কী হবে। তবে প্রত্যাশা এটুকুই যে, জুলাই ঘোষণাপত্রের ব্যাপারে বিভিন্ন মহলের প্রতিক্রিয়া বিবেচনায় নিয়ে এবার হয়তো সরকার সচেতন হবেন এবং জুলাইয়ের ঘোষণাপত্রে যে বিষয়গুলো তুলে আনা যায়নি, সেগুলোকে আগামীতে জুলাই সনদে স্থান দেয়া হবে। ঘোষণাপত্র বা সনদ- যাই বলি না কেন, জনগণ চায় বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা। কথার ফুলঝুড়ির ফাঁদে এদেশের মানুষ বহুবার পড়েছে। সেরকম কোনো ফাঁদে জনগণ আর পড়তে চায় না। এবার জনগণ চায় প্রকৃত সংস্কার, এবং একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল সিদ্ধান্তের দ্রুত ও কার্যকর বাস্তবায়ন।