গতকালের পর

বিগত ১০ বছর ধরে বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে সুইডেনের গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভি-ডেম ইনস্টিটিউট। প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিলো ‘অটোক্রাটাইজেশন গোজ ভাইরাল’। সংস্থাটির ২০২১ সালের ১১ মার্চ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, উদার গণতান্ত্রিক সূচকে (লিবারেল ডেমোক্রেসি ইনডেস্ক) ১৭৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫৪তম। স্কোর শূন্য দশমিক ১। আগের বারের চেয়ে স্কোর কমেছিলো শূন্য দশমিক ০১৯।

প্রতিবেদনে ‘নির্বাচনভিত্তিক গণতন্ত্রের সূচকে’ (ইলেকটোরাল ডেমোক্রেসি ইনডেক্স) বাংলাদেশের অবনমন ঘটেছিলো। এ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিলো ১৩৮তম, স্কোর শূন্য দশমিক ২৭। স্কোর কমে প্রায় শূন্য দশমিক ০৩১। এ ছাড়া লিবারেল কম্পোনেন্ট ইনডেস্কে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬১তম। ইগলিট্যারিয়ান কম্পোনেন্ট ইনডেস্কে ১৭৬তম, পার্টিসিপেটরি কম্পোনেন্ট ইনডেস্কে ১৪৩ এবং ডেলিবারেটিভ কম্পোনেন্ট ইনডেস্কে বাংলাদেশ ১৫৮তম অবস্থানে ছিলো। এতে বলা হয়, শাসনতান্ত্রিক দিক থেকে বাংলাদেশ আছে ‘নির্বাচনভিত্তিক স্বেচ্ছাতন্ত্র’ (ইলেকটোরাল অটোক্রেসি) বিভাগে। এর অর্থ হলো, এ দেশে গণতন্ত্র অপগ্রিয়মাণ। সে জায়গায় ধীরে ধীরে স্থান করে নিচ্ছে স্বেচ্ছাচারী ও স্বৈরাতান্ত্রিক শাসন।

ভি-ডেম-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনভিত্তিক গণতন্ত্র থেকে ভারত নেমে এসেছে নির্বাচনভিত্তিক স্বেচ্ছাতন্ত্রের স্তরে। দেশটি গত ১০ বছরে ক্রমাগত গণতন্ত্র থেকে একনায়কতন্ত্রের দিকে হাঁটছে এবং সেখানে সংবাদপত্র, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষকসমাজের স্বাধীনতা প্রচন্ডভাবে সংকুচিত হয়েছে। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নির্বাচনে জিতে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার সঙ্গে এ অবনমনের সাথে সম্পর্ক রয়েছে বলে সংস্থাটি মনে করেছে।

বস্তুত, বিশ্বজুড়েই স্বেচ্ছাচারী ও অগণতান্ত্রিক শাসনের প্রভাব বেড়েই চলেছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা চলছে পোল্যান্ডে। মহামারি সামাল দেয়ার কথা বলে অনেক দেশে গণতান্ত্রিক কাঠামোর ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছিলো। ৯টি দেশে মারাত্মক ও ২৩টি দেশ আন্তর্জাতিক নিয়মের পরিমিত মাত্রায় লঙ্ঘন করেছে। পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ হয়েছে ঘোষিত একনায়কতান্ত্রিক দেশগুলোতে, ৫৫টি দেশেই আন্তর্জাতিক নিয়মের লঙ্ঘন হয়েছে বেশি।

মূলত, বিশ্বজুড়ে শাসনকাঠামোর দিক থেকে নির্বাচনভিত্তিক স্বেচ্ছাতন্ত্র সাম্প্রতিক দশকগুলো সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। সব মিলিয়ে পুরোপুরি ও আংশিক স্বেচ্ছাতন্ত্রের দেশগুলোতে আছে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৬৮ শতাংশ। অথচ ২০১০ সালে এটি ছিল ৪৮ শতাংশ। আর উদার গণতান্ত্রিক দেশের সংখ্যা কমে হয়েছে ৩২টি। মোট বৈশ্বিক জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ রয়েছে এ দেশগুলোতে। ইলেকটোরাল ডেমোক্রেসি আছে ৬০টি রাষ্ট্রে। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১৯ শতাংশ আছে এসব দেশে।

ভি-ডেমের বার্ষিক গণতন্ত্র প্রতিবেদনে উদার গণতান্ত্রিক সূচকে শীর্ষ তিন স্থান পেয়েছিলো যথাক্রমে ডেনমার্ক, সুইডেন ও নরওয়ে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে উদার গণতান্ত্রিক সূচকে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে ছিলো ভুটান, নেপাল, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় আন্তর্জাতিক নিয়মের মারাত্মক লঙ্ঘন হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

মহামারি পরিস্থিতিতে সারাবিশ্বে গণতন্ত্র ঝুঁকিতে পড়ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, ২০২০ সালে মোট দেশের দুই-তৃতীয়াংশেই সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর মারাত্মক থেকে পরিমিত মাত্রায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এক-তৃতীয়াংশ দেশে কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা ব্যতিরেকে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এভাবে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সীমিত করা এবং জরুরি ক্ষমতার অত্যধিক প্রয়োগ করা হচ্ছে।

সর্বশেষ ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) গণতন্ত্র সূচকে সবচেয়ে বেশি অবনমন হয়েছে বাংলাদেশের। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে গণতন্ত্র সূচকে বাংলাদেশ ২৫ ধাপ পিছিয়েছে। ১৬৫টি দেশ ও ২টি অঞ্চলের মধ্যে এবার বাংলাদেশের অবস্থান ১০০তম। আগের বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে বিশ্বের আর কোনো দেশের গণতন্ত্রের সূচক এতটা পেছায়নি। লন্ডনভিত্তিক দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) ২০২৪ সালের গণতন্ত্র সূচকে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নিজেদের ওয়েবসাইটে ইআইইউ এ সূচক প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক এ সংস্থাটি। বিশ্বের গণতন্ত্রের সার্বিক চিত্র তুলে ধরতে বিশ্বের ১৬৫টি স্বাধীন দেশ এবং ২টি অঞ্চল নিয়ে গবেষণা চালিয়েছে ইআইইউ। বলা যায়, এতে বিশ্বের প্রায় সব মানুষ ও দেশের প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের চিত্র পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।

পাঁচটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে সূচকটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এসব বিষয় হচ্ছে নির্বাচনপ্রক্রিয়া ও বহুত্ববাদ, সরকারের কার্যকারিতা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং নাগরিক স্বাধীনতা। প্রতিটি বিষয়ের স্কোর ১০। এ স্কোরের ভিত্তিতে দেশগুলোর শাসনব্যবস্থাকে চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে পূর্ণ গণতন্ত্র, ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র, হাইব্রিড শাসনব্যবস্থা এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা।

২০২৩ সালের ইআইইউর গণতন্ত্র সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৭৫তম। ২০২২ সালে তা ছিল ৭৩তম। অর্থাৎ ২০২৩ সালে আগের বছরের তুলনায় দু’ধাপ পিছিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ২০২৪ সালে এক লাফে ২৫ ধাপ পিছিয়ে ১০০-এ নেমে গেছে। ইআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে স্কোর সবচেয়ে বেশি কমেছে বাংলাদেশের। এবার বাংলাদেশের সার্বিক স্কোর ৪ দশমিক ৪৪। ২০২৩ সালের তুলনায় স্কোর কমেছে ১ দশমিক ৪৪। এর আগের বছর বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৫ দশমিক ৮৭। বাংলাদেশের সমান স্কোর নিয়ে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বেনিনও ১০০তম অবস্থানে রয়েছে। তবে আগের বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে দেশটির অবস্থান নেমেছে তিন ধাপ। সেখানে বাংলাদেশের নেমেছে ২৫ ধাপ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের মতো গত বছরও বাংলাদেশ ‘হাইব্রিড শাসনব্যবস্থায়’ থাকলেও এবার তা একেবারে নিচের দিকে নেমে গেছে। যেকোনো সময় কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থায় নেমে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ।

এবার পাঁচটি ক্যাটাগরির মধ্যে ‘সরকারের কার্যকারিতা’ (২ দশমিক ৫৭) ও ‘নাগরিক স্বাধীনতা’ (৩ দশমিক ৫৩) এ দু’ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সবচেয়ে কম স্কোর করেছে। ১০-এর মধ্যে ৬ দশমিক শূন্য ৮ স্কোর নিয়ে সবচেয়ে ভালো করেছে ‘নির্বাচনপ্রক্রিয়া’ ও ‘বহুত্ববাদ’ ক্যাটাগরিতে। ‘রাজনৈতিক অংশগ্রহণ’ ও ‘রাজনৈতিক সংস্কৃতি’ উভয় ক্যাটাগরিতে স্কোর পেয়েছে ৫। ২০২৩ সালে সবচেয়ে কম স্কোর করেছিল ‘নাগরিক স্বাধীনতা’ (৪ দশমিক ৭১) ও ‘রাজনৈতিক অংশগ্রহণ’ (৫ দশমিক ৫৬)। সবচেয়ে বেশি স্কোর করেছিল নির্বাচনপ্রক্রিয়া ও বহুত্ববাদে (৭ দশমিক ৪২)।

আগের বছরের মতো ২০২৪ সালেও গণতন্ত্র সূচকে সবচেয়ে বেশি ৯ দশমিক ৮১ স্কোর নিয়ে শীর্ষে রয়েছে নরওয়ে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে নিউজিল্যান্ড ও সুইডেন। ২০২৩ সালে আইসল্যান্ড তৃতীয় স্থানে থাকলেও এবার দেশটি চতুর্থ স্থানে নেমে এসেছে।

আগের বছরের মতো ২০২৪ সালেও গণতন্ত্র সূচকে তলানিতে (১৬৭তম) রয়েছে আফগানিস্তান। দেশটির স্কোর শূন্য দশমিক ২৫। ২০২৩ সালে তা ছিল দশমিক ২৬। ২০২৩ সালের মতো এবারও আফগানিস্তানের ওপরের দু’অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে মিয়ানমার (১৬৬তম) ও উত্তর কোরিয়া (১৬৫তম)। এবারের তালিকায় যুক্তরাজ্যের অবস্থান আগের তুলনায় এক ধাপ এগিয়ে ১৭-তে উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানও আগের বছরের তুলনায় এক ধাপ এগিয়ে ২৮-এ উঠে এসেছে। তবে দেশটির গণতন্ত্র ‘ত্রুটিপূর্ণ শাসনব্যবস্থা’র অন্তর্ভুক্ত। কর্তৃত্ববাদী ক্যাটাগরিতে থাকা চীনের অবস্থান তিন ধাপ এগিয়েছে, তাদের অবস্থান ১৪৫। পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গিনি-বিসাউয়ের সঙ্গে এবার যৌথভাবে ১৫০তম অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। গতবার রাশিয়া ছিল ১৪৪তম।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে ভারত। দেশটির অবস্থান ৪১তম, ২০২৩ সালেও তা-ই ছিল। এরপর রয়েছে যথাক্রমে শ্রীলঙ্কা ৬৭তম, ভুটান ৭৯তম, নেপাল ৯৬তম, পাকিস্তান ১২৪তম। এশিয়ায় গণতন্ত্র সূচকে ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে যেসব দেশ বেশি খারাপ করেছে, সেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের পর পাকিস্তান অন্যতম। আগের বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে দেশটির অবস্থান ছয় ধাপ পিছিয়েছে। তবে এ অঞ্চলে ২০২৩ সালের তুলনায় ১০ ধাপ পিছিয়ে ২০২৪ সালে ৩২তম অবস্থানে নেমে গেছে দক্ষিণ কোরিয়া। ইআইইউ জানিয়েছে, ২০২৪ সালের সূচকে ১৬৭টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে ২৫টিতে পূর্ণ গণতন্ত্র ছিল। ৪৬টির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ। বাংলাদেশসহ ৩৬টি দেশ ও অঞ্চলে হাইব্রিড শাসনব্যবস্থা বিদ্যমান। আর সবচেয়ে বেশি ৬০টিতে কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা ছিল।

ইআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন আয়োজন নিয়ে চাপে রয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের মুখে দীর্ঘদিনের শাসক শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তারা শাসনভার গ্রহণ করে। তবে নির্বাচন দেওয়ার আগে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করতে চায় তারা। এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে, নির্বাচনের আয়োজন ২০২৫ সালের পরেও চলে যেতে পারে।

মূলত, বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলেই আমাদের দেশের গণতন্ত্রের সূচক একেবারে তলানীতে এসে ঠেকেছে। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে কথিত নির্বাচনের নামে যে প্রহসন হয়েছে তা কারো অজানা নয়। এমনকি সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া সাবেক ২ জন প্রধান নির্বাচন কমিশনারেরও এ বিষয়ে আত্মস্বীকৃতি রয়েছে। তবে গত বছরের জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ফ্যাসীবাদী আওয়ামী সরকারের লজ্জাজনক পতন হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার এখন রাষ্ট্র সংস্কারের মাধ্যমে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন। আমরা আশা করছি আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের দুঃসময় কেটে যাবে এবং গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ নিজ কক্ষে ফিরে আসবে।

একথা ঠিক যে, বিশ্বব্যাপী উদার গণতন্ত্রের ধারাবাহিক অবনমন হচ্ছে। বিশেষ করে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এশিয়া, মধ্য এশিয়া, পূর্ব ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকায় এ বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। ব্রাজিল, ভারত, তুরস্কসহ মোট ১০টি দেশে গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির সবচেয়ে বেশি অবনমন হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি দেশ হয়ে গেছে পুরোপুরি একনায়কতান্ত্রিক। যা আগামী দিনে বৈশ্বিক গণতন্ত্রকে বড় ধরনের সংকটে ফেলে দিতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বিপ্লবোত্তর সময়ে আমরা অনেকটাই আশাবাদী।

গত বছরের আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে মূলত একটি স্বেচ্ছাতন্ত্রের অবসান হয়েছে। এ বিজয় এমনিতেই আসেনি বরং এর মধ্যে রয়েছে প্রায় ২ হাজার মানুষের আত্মত্যাগ। এ বিপ্লবে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন। অনেকে হাত-পা ও চোখ হারিয়ে বিকলাঙ্গ হয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ এখনো হাসপাতালের শয্যায় কাতরাচ্ছেন। এ ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরেই আমরা নতুন করে দেশে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা শুরু করার জন্য রীতিমত আশাবাদী হয়ে উঠেছি। কিন্তু কতিপয় বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমতে পৌঁছতে পারছেন না। বিশেষ করে জুলাই সনদের বিষয়বস্তু ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। সমস্যা কাটেনি নির্বাচন পদ্ধতি নিয়েও। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই অতিদ্রুততার সাথে এসব সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার। এজন্য চাই রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য ও সদিচ্ছা। যেকোন ধরনের বিভেদ অর্জিত বিজয়কে কলঙ্কিত করছে পারে। (সমাপ্ত)