প্রফেসর তোহুর আহমদ হিলালী

জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা তুঙ্গে এবং নির্বাচন যতো ঘনিয়ে আসবে অপপ্রচার ততো বাড়বে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, মিথ্যা প্রচারণা শুধু বর্তমান নয় সুদূর অতীত থেকে চলে আসছে। পৃথিবীর ইতিহাস হলো হক ও বাতিলের দ্বন্দ্ব-সংগ্রামের ইতিহাস। আদম (আ.)-এর দু’সন্তান থেকেই এমন দ্বন্দ্ব চলে আসছে। সকল নবি-রসূল আল্লাহপাকের মনোনীত বান্দা এবং সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও কাফের-মুশরিকরা তাঁদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালিয়েছে। আমাদের প্রিয়তম নবী মুহাম্মদ (সা.) সর্বকালের সেরা মানুষ হওয়া সত্ত্বেও তাঁর জাতি কতভাবেই না তাঁকে কষ্ট দিয়েছে। একজন ব্যক্তি যা নন তা যদি বারবার তাকে বলা হয় তাতে তার দুঃখ-কষ্ট পাওয়া খুবই স্বাভাবিক। মুহাম্মদ (সা.) ও সকল নবী-রসূল মিথ্যা প্রচারণার সম্মুখীন হয়েছেন। এমতাবস্থায় আল্লাহপাক নিজে তাঁর নবীকে সান্ত্বনা দিয়েছেন, ‘(হে রসূল) আমি জানি, এ লোকগুলো যেসব কথাবার্তা বলে তাতে তোমার বড়ই মনোকষ্ট হয়। কিন্তু এরা কেবল তোমাকেই মিথ্যা সাব্যস্ত করে না, বরং এসব জালেমরা আল্লাহর নিদর্শনসমূহ মানতেই অস্বীকার করে। তোমার আগেও এভাবে নবী-রসূলদের মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করা হয়েছিল, কিন্তু তাদের মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করা ও নানারকম নির্যাতন চালাবার পরও তারা কঠোর ধৈর্য ধারণ করেছেন, শেষ পর্যন্ত তাঁদের কাছে আমার পক্ষ থেকে সাহায্য এসে হাজির হয়েছে।

আসলে আল্লাহর কথার রদবদলকারী কেউ নেই, তদুপরি নবীদের এসব সংবাদ তো তোমার কাছে আগেই এসে পৌঁছেছে। তারপরও যদি তাদের এ উপেক্ষা তোমার কাছে কষ্টকর মনে হয়, তাহলে তোমার সাধ্য থাকলে তুমি ভূগর্ভে কোনো সুড়ঙ্গ কিংবা আসমানে কোনো সিঁড়ি তালাশ করো এবং সেখান থেকে তাদের জন্য কোনো নিদর্শন নিয়ে এসো; আসলে আল্লাহ তায়ালা যদি চাইতেন, তিনি তাদের সবাইকে হেদায়াতের ওপর জড়ো করে দিতে পারতেন, তুমি কখনো মূর্খ লোকদের দলে শামিল হয়ো না। যারা শোনে, তারা অবশ্যই আল্লাহর ডাকে সাড়া দেয় এবং যারা মরে গেছে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকেও কবর থেকে উঠিয়ে জড়ো করে নেবেন, অতঃপর (মহা বিচারের জন্যে) তারা সবাই তাঁর সামনে প্রত্যাবর্তিত হবে’- সূরা আল আনয়াম ৩৩-৩৬। কিয়ামত পর্যন্ত আল্লাহর বান্দা যারা দীন কায়েমের স্বপ্ন দেখে ও চেষ্টা-প্রচেষ্টা চালায় তাদের জন্য এটা বড়ো সান্ত্বনা। তাগুতের পক্ষে প্রচেষ্টাকারী তাদের কেউ কেউ বলেন, ব্যক্তি সাদিক কায়েম ও ফরহাদ ভালো কিন্তু তারা যে আদর্শ ধারণ করে সেটা আমার পছন্দ নয়। ইসলামী আদর্শ ধারণ করার কারণেই তারা সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছেন। আল্লাহর বাণী ধারণ ও মানব সমাজে প্রচার করার কারণেই তাদের এ বিরুদ্ধাচরণ। মূলত তারা আল্লাহরই শত্রু।

সকল নবী-রসূল এবং তাঁর অনুসারীরা একটি পক্ষ পক্ষান্তরে ইসলামকে যারা মানে না তারা ভিন্ন পক্ষ। এ দুটি পক্ষের পরিচিতি আল্লাহপাক নিজেই স্পষ্ট করেছেন, ‘যারা ঈমানের পথ অবলম্বন করে তারা লড়াই করে আল্লাহর পথে। আর যারা কুফরির পথ অবলম্বন করে তারা লড়াই করে তাগুতের পথে। কাজেই শয়তানের সঙ্গী-সাথিদের বিরুদ্ধে লড়াই করো আর বিশ্বাস রেখো, শয়তানের ষড়যন্ত্র আসলেই দুর্বল’- সূরা নিসা ৭৬। যারা ইসলামের পক্ষে তারা ইসলামকে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনাদর্শ হিসেবে বিশ্বাস করে, জীবনে ইসলাম মেনে চলে এবং এর প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা-প্রচেষ্টা চালায় ও বিজয় কামনা করে। পক্ষান্তরে যারা ধর্মনিরপেক্ষ হিসেবে নিজেদেরকে জাহির করে বা ইসলাম ছাড়া অন্যকিছু তালাশ করে এমন সকল কুফরি শক্তি ভিন্ন একটি পক্ষ। ইসলামের সারকথা হলো কালিমা তাইয়্যেবার ঘোষণা-আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। ভিন্নভাবে বলা যায়, ‘তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং তাগুতকে অস্বীকার করো’- সূরা নহল ৩৬। কালিমা তাইয়্যেবা যারা বিশ্বাস করে তারা আল্লাহ ছাড়া আর কিছু বুঝে না ও মানে না। কালিমা তাইয়্যেবা মূলত এক বিপ্লবাত্মক ঘোষণা। অতীতকালে এ ঘোষণা দানকারী নবী-রসূলকে নমরুদ, ফেরাউন, আবু জেহেল-আবু লাহাবরা যেমন মানেনি এবং নবী-রসূলদের চলার পথে বাধা সৃষ্টি করেছে বর্তমানেও তাদের উত্তরসূরীরা বাধা সৃষ্টি করবে- এটাই স্বাভাবিক। এদেশে অনেকগুলো ইসলামী সংগঠন দীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চেষ্টা-প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। জামায়াত-শিবিরের কর্মসূচি ও তাদের সংখ্যাধিক্যের কারণে সকল কুফরি শক্তি একাট্টা হয়ে তাদের বিরোধিতা করছে। ওরা শুধু জামায়াত-শিবিরের বিরোধী নয়, ওরা সকল ইসলামী শক্তির বিরোধী।

ডাকসুর নির্বাচন হতে যাচ্ছে। শিবিরের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ এরা গুপ্ত ছিল। প্রতিপক্ষের জুলুম-নির্যাতন থেকে নিজেদের রক্ষার লক্ষ্যে স্বয়ং আল্লাহর নবী মুহাম্মদ (সা.)-কেও গোপনে কাজ করতে হয়েছে। ফ্যাসিবাদী সরকার জামায়াত-শিবিরকে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছিল এবং তাদের অফিসসমূহ বন্ধ ছিল। প্রকাশ্যে তৎপরতা চালাবার কোনো সুযোগই রেখেছিল না। কোনো ঘরে ৫/৬ জন মহিলা একত্রে বসে কুরআন-হাদিসের চর্চা করার সুযোগও ছিল না। করোনা আসার কারণে অনলাইনে কাজ করার সুযোগ পেয়ে জামায়াত-শিবির বেশ এগিয়ে যায়। একটু তথ্য দেই, ২০১৬ সনে ঢাকা মহানগরী উত্তর-দক্ষিণ দুটি ভাগে বিভক্ত হয়। তখন ঢাকা মহানগরী উত্তরের রুকন সংখ্যা ছিল ২,৭২৮। বর্তমানে ঢাকা উত্তরের রুকন সংখ্যা বারো হাজার ছেড়ে গেছে। জামায়াত-শিবির অতীত নিয়ে না থেকে আগামীর বাংলাদেশ গড়তে চায় বৈষম্যহীন ও সবার বাংলাদেশ হিসেবে। বর্তমান প্রজন্ম সেকুলারদের ৭১ বয়ানকে গুরুত্ব না দিয়ে ব্যাপকভাবে জামায়াত-শিবিরকে বেছে নিচ্ছেন।

পাকিস্তান আমলে জামায়াত তেমন উল্লেখযোগ্য কিছুই ছিল না। সেসময়ে রুকন সংখ্যা ছিল বড়জোর চারশ অথচ বর্তমানে লক্ষাধিক। সেসময়ে পাকিস্তানের পক্ষে ছিল মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম, পিডিপি, ভাসানী ন্যাপ এবং জামায়াত ছাড়া বাকি দলগুলোর বাঘা বাঘা নেতা ছিল। জামায়াত ছাড়া অন্যান্য সংগঠনের ছাত্রসংগঠন ছিল না বললেই চলে। ফলে পরবর্তীতে এরা প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় মুসলিম লীগ ও ভাসানী ন্যাপের বড়ো বড়ো অনেক নেতা ছিলেন। শেখ মুজিবের সাড়ে তিন বছর ও শেখ হাসিনার ১৯৯৬-২০০১ প্রথম শাসনামলে জামায়াতের বিরুদ্ধে কোনো থানায় সাধারণ ডায়েরিও ছিল না। সেসময়ে জামায়াতের বিচার করার সুযোগ ছিল। আসলে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী কোনো অপরাধ প্রমাণীত ছিল না এবং ফ্যাসিবাদের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীও ছিল না। চল্লিশ বছর পরে বিচারের মুখোমুখি করা স্রেফ রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল ও ভারতকে খুশি করা এবং ইসলাম বিদ্বেষ বৈ আর কিছু নয়।

টকশো কমই দেখা হয়। একদিন দেখলাম জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি ড. হামিদুর রহমান আযাদকে সঞ্চালক প্রশ্ন করেন, আপনারা তো জান্নাতের টিকেট বিক্রি করেন। ড. আযাদ হেসে জবাব দিলেন, আমাদের কোনো লিটারেচার বা দায়িত্বশীল কারো মুখে কি শুনেছেন যে জামায়াতে ইসলামী করলে বা জামায়াতকে ভোট দিলে জান্নাত পাওয়া যাবে? জান্নাত-জাহান্নাম দেয়ার মালিক আল্লাহ। তবে আল্লাহপাক জান্নাতি ও জাহান্নামি কারা হবে তার একটি বর্ণনা দিয়েছেন। কেউ যদি ঈমান এনে নেক আমল করে তাদের ব্যাপারে আশা করা যায় যে আল্লাহপাক তাঁর এসব নেক বান্দাদের ক্ষমা করে জান্নাতে দেবেন। জান্নাতের বেচাকেনা আল্লাহপাক নিজেই করেছেন। আল্লাহর বাণী, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের জানমাল খরিদ করে নিয়েছেন জান্নাতের বিনিময়ে। তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে এবং মারে ও মরে। তাদের জন্য জান্নাত দানের ওয়াদা আল্লাহর যিম্মায় একটি পাকাপোক্ত ওয়াদা তওরাত, ইঞ্জিল ও কুরআনে। আল্লাহর চেয়ে বেশি ওয়াদা পালনকারী আর কে আছে? কাজেই তোমরা আল্লাহর সাথে যে কেনাবেচা করেছ তার জন্য সন্তুষ্ট হও। এটিই সবচেয়ে বড়ো সাফল্য’- সূরা তওবা ১১১। আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত আমার জীবন ও সম্পদ সবই আমার প্রতি মহান মালিকের অনুগ্রহ। এই জীবন ও সম্পদ আল্লাহপাক জান্নাতের বিনিময়ে খরিদ করে নিয়েছেন। বুঝতে হবে আমার জীবন ও সম্পদ আল্লাহর আমানত এবং এটি আল্লাহর পথে (জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ) ছাড়া অন্যত্র ব্যবহৃত হওয়া সুস্পষ্ট কুফরি।

পৃথিবীকে আবাদ করার জন্যই আল্লাহপাক যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রসূল প্রেরণ করেছেন। সকল নবী-রসূলের দায়িত্ব ছিল আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠিত করা। আল্লাহর বাণী, ‘তিনি তোমাদের জন্য দীনের সেসব নিয়ম-কানুন নির্ধারিত করেছেন যার নির্দেশ তিনি নুহকে দিয়েছিলেন এবং (হে মুহাম্মদ) যা এখন আমি তোমার কাছে ওহির মাধ্যমে পাঠিয়েছি। আর যার আদেশ দিয়েছিলাম ইব্রাহিম, মুসা ও ইসাকে। তার সাথে তাগিদ করেছিলাম এ বলে যে, দীন কায়েম করো এবং এ ব্যাপারে মতপার্থক্য সৃষ্টি করো না’- সুরা শুরা ১৩। এ দীন কায়েমের মিশন দিয়েই শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে পাঠানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহপাকের বাণী, ‘তিনি আপন রসূলকে হেদায়াত ও সত্য-সঠিক জীবনব্যবস্থা (দীনে হক) দিয়ে পাঠিয়েছেন যাতে সকল জীবনব্যবস্থার ওপর একে বিজয়ী করে দিতে পারেন, মুশরিকদের কাছে তা যতই অসহনীয় হোক’- সূরা সফ ৯। এমন কথা বলা হয়েছে একাধিক সূরায় (সুরা তওবা ৩৩ নং ও সুরা ফাতাহ্ ২৮ নং)। প্রিয়তম নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর উত্তরাধিকার হিসেবে দেশের আলেম সমাজ ও ইসলামপন্থী জনগোষ্ঠীর কাজও অনুরূপ অর্থাৎ সকল দীন ও জীবনব্যবস্থার ওপরে ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করা। দীন কায়েম হওয়ার অর্থ হলো সমাজে আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়া। ইসলামকে যারা সীমাবদ্ধ অর্থে ধর্ম হিসেবে মানে তারা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবেই বলে, জামায়াত-শিবির ধর্মের নামে রাজনীতি করে এবং সরলমনা লোকদেরকে ধোঁকা দেয়। অথচ আল্লাহপাক জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর মাঝেই রেখেছেন তাঁর ক্ষমা ও জান্নাত। সূরা সফের ৯ থেকে ১৩ পর্যন্ত পড়লে বোঝা যায় জাহান্নামের ভয়াবহ আজাব থেকে রক্ষা এবং গুনাহের ক্ষমা ও জান্নাতের সুসংবাদ রয়েছে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর মাঝে। ১২ নং আয়াতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, আল্লাহপাক তাদের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন এবং জান্নাতে দাখিল করাবেন। পরবর্তী আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য ও দুনিয়ার জীবনে বিজয়ী হওয়ার সুসংবাদ।

কুরআনের পাশাপাশি হাদিসেও মুসলমান হওয়ার জন্য জামাতবদ্ধ জীবন যাপনের তাগিদ দেয়া হয়েছে। হজরত হারেস আল আশয়ারী (রা.) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমি তোমাদের পাঁচটি কাজের আদেশ করছি (অন্য রেওয়াতে আছে, আমার আল্লাহ আমাকে পাঁচটি বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন) (১) জামাতবদ্ধ হবে (২) নেতার আদেশ মন দিয়ে শুনবে (৩) নেতার আদেশ মেনে চলবে (৪) আল্লাহর পথে হিজরত করবে (আল্লাহর অপছন্দনীয় কাজ বর্জন করবে) (৫) আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। আর তোমাদের মধ্য হতে যে ব্যক্তি সংগঠন থেকে এক বিঘত পরিমাণ দূরে সরে যাবে সে নিজের গর্দান থেকে ইসলামের রশি খুলে ফেলবে, তবে যদি সংগঠনে প্রত্যাবর্তন করে তো স্বতন্ত্র কথা। আর যে ব্যক্তি জাহেলিয়াতের দিকে লোকদের আহবান জানাবে সে জাহান্নামে যাবে। সাহাবিগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল (সা.), সালাত কায়েম ও ছিয়াম পালন করা সত্ত্বেও? আল্লাহর রসূল (সা.) বললেন, সালাত কায়েম ও ছিয়াম পালন এবং নিজেকে মুসলিম দাবি করা সত্ত্বেও’ -আহমদ ও তিরমিজি। তিনি আরো বলেছেন, ‘জামায়াতের উপর রয়েছে আল্লাহর রহমত। যে ব্যক্তি জামাত ছাড়া একা চলে, সে তো একাকী দোযখের পথেই ধাবিত হয়’- তিরমিজি। রসূলুল্লাহ (সা.) বড়ো শক্ত কথা বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আনুগত্য পরিত্যাগ করে এবং জামাত থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে, তার মৃত্যু হবে জাহেলিয়াতের মৃত্যু’ - মুসলিম।

জামায়াত-শিবির জান্নাতের টিকিট দেয় না এবং দিতেও পারে না। জান্নাতে যাওয়ার টিকিট একান্তভাবে আল্লাহর হাতে। জামায়াত-শিবির মানুষকে আল্লাহর সাথে মিলিয়ে দেয় যাতে সে আল্লাহর ক্ষমা ও জান্নাত লাভ করতে পারে। জামায়াত-শিবিরের সকল জনশক্তি আখেরাতে আল্লাহর ক্ষমা ও জান্নাত লাভের আশা নিয়ে মাঠে-ময়দানে তৎপর থাকে। ফলে সকল বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও সংগঠনকে আঁকড়ে ধরে থাকে। ফ্যাসিবাদের শত জুলুম-নির্যাতন ইসলামী আন্দোলনকে দমাতে পারেনি বরং জুলাই বিপ্লবের পর অনেক শক্তি নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে। সূরা সফের ১৩ নং আয়াত ‘তোমাদের জন্য আরো থাকবে আল্লাহর সাহায্য ও নিকটবর্তী বিজয়। মুমিনদের সুসংবাদ দাও’। সামনে রয়েছে নির্বাচন। ইসলামী আন্দোলন সফল হওয়ার জন্য প্রয়োজন একদল যোগ্য নেতৃত্ব এবং জনপদের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন। আল্লাহপাক আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে তাঁর দীনের জন্য কবুল করুন। আমিন।

লেখক : শিক্ষাবিদ ও প্রাবন্ধিক।