মাহবুব আলম

বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এখন এক আমূল পরিবর্তন চলছে। ৫৪ বছর আগের পলিটিক্যাল প্যারামিটার কিংবা পুরনো সে চেতনার ভাষ্য দিয়ে বর্তমান রাজনীতি ব্যাখ্যা করার দিন শেষ হয়ে এসেছে। সময় বদলেছে, প্রেক্ষাপট বদলেছে, জনগণের চাহিদা ও রাজনৈতিক আকাঙ্খাও বদলেছে। এ বদলে যাওয়া বাস্তবতায় জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান ও গতিপথ নতুনভাবে মূল্যায়নের দাবি রাখে। রাজনৈতিক ভবিষ্যতে এটি অবশ্য করণীয় একটি দিক, অন্যথায় আবারো আমরা আরেকটি ফ্যাসিবাদের কবলে পড়ে যাবো।

অনেকেই এখনো ১৯৭১-এর অপবাদ টেনে জামায়াতকে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা করে রাখতে চান। কেনো অপবাদ বলেছি জানেন? খোদ তাজউদ্দীন আহমদ ভারতপ্রীতি দেখিয়ে গেছেন, আর শেখ মুজিবতো ছিলেন ভারতের একেবারেই নিজস্ব আত্মীয়ের মতো। তাজউদ্দিন যখন প্রধানমন্ত্রী হন তখন অতি গোপনে ভারত গোপন চুক্তি স্বাক্ষর করিয়ে নেয় যা বাংলাদেশকে ভারতের কাছে একশ বছরের জন্য বন্ধক রেখে দেয়ার সামিল। এখন আমরা জানতে পারি ৮টি অধীনতামূলক চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। অষ্টম চুক্তিটি করার সময়ে শেখ মুজিবুর রহমান চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করেন। তাহলে কেনো এ চুক্তিগুলো প্রজন্মকে জানতে দেয়া হচ্ছে না?

এখন পর্যন্ত স্বাধীনতার পর যত সরকার ক্ষমতায় এসেছে কেউই তা প্রকাশ করার সাহস করতে পারেনি। তাহলে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে জামায়াত ইসলামী ভারতীয় আগ্রাসনের আশঙ্কা করে মুক্তিযুদ্ধের যে রাজনৈতিক বিরোধিতা করেছিলো সেটাই কি তাহলে আজকে বাস্তবায়ন হলো? সময় এসেছে সেগুলো প্রকাশ করে জাতিকে জানানোর, ‘‘যতদূর জানা গেছে- এসব চুক্তিতে ভারত কতকগুলি ব্যাপারে বাংলাদেশকে নিজের ইচ্ছামত পরিচালনার কর্তৃত্ব লিখিয়ে নিয়েছে।

(১) বাংলাদেশে ভারত তার ইচ্ছামত, তার পছন্দসই লোক দিয়ে, পছন্দসই নেতৃত্ব পাঠিয়ে একটি সামরিক বাহিনী গঠন করবে, যারা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আধা-সামরিক বলে পরিচিত হবে, কিন্তু এদেরকে গুরুত্বের ও সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের মূল সামরিক বাহিনী থেকে বড় ও তাৎপর্যপূর্ণ রাখা হবে।

ধারণা করা হচ্ছে, বাহিনীটি হচ্ছে রক্ষীবাহিনী। ভারতীয় সৈন্যের পোষাক, ভারতীয় সেনামণ্ডলীর নেতৃত্ব ও ভারতের অভিরুচি অনুযায়ী বিশেষ শ্রেণীর লোককে শতকরা ৮০ জন এবং ‘বিশেষ বাদ’এর সমর্থক ২০ জন করে নিয়ে এ বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছে। অস্ত্র, গাড়ী, পোষাক, সুযোগ-সুবিধার দিক দিয়ে এই বাহিনীটি মূল বাহিনীকে ছাড়িয়ে গেছে। এ বাহিনীটি ব্যবহার করা হবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। ভারত বিরোধী কোন সরকার ঢাকায় ক্ষমতায় বসলেও এ বাহিনী দিয়ে তাকে উৎখাত করা হবে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিরোধী রাজনীতির সমর্থকদের এ বাহিনী দিয়েই দমন করা হবে।

এ বাহিনীর মধ্যে ভারতপ্রেমিক বিশেষ শ্রেণীর লোকেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় কোনদিন এদেরকে ভারতের বিরুদ্ধে লাগানো যাবে না। এদেশের জনগণ কোনদিন বিপ্লবে অবতীর্ণ হলে, রক্ষীবাহিনীর পোষাকগুণে ভারতীয় সৈন্যরা লাখে লাখে রক্ষীবাহিনী সেজে এদেশের অভ্যন্তরে জনগণকে দমন করতে পারবে।

(২) বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে যে সামরিক সাহায্য নিয়েছে তা পরিশোধ করতে হবে বিভিন্ন ভাবে:- (ক) ভারত ছাড়া অন্য কোন দেশের কাছ থেকে বাংলাদেশ অস্ত্র কিনতে পারবেনা। মাঝে মাঝে ঘোষণা করা হবে ভারত থেকে এত কোটি টাকার অস্ত্র কেনা হলো। এর দাম ভারতই ঠিক করে দেবে। সরবরাহ দেওয়া হবে অর্ধেক অস্ত্র। সরবরাহকৃত অস্ত্রও ভারত ইচ্ছামত নিজ দেশে নিয়ে যেতে পারবে। অর্থাৎ একই অস্ত্র বারবার দেখিয়ে ১৯৭১-এর পাওনা এবং ভারতের সম্পূর্ণ যুদ্ধ খরচ আদায় করা হবে। অভ্যন্তরীণ গোলযোগ দমনের অস্ত্র ছাড়া কোন ভারী অস্ত্র, সাজোয়া গাড়ী বা ট্যাঙ্ক বাংলাদেশকে দেয়া হবে না।

(৩) বাংলাদেশের বহির্বাণিজ্য ভারতের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ভারতের অনুমতি ছাড়া কোন পণ্য বিদেশে রপ্তানী করা যাবে না। কোন পণ্য কত দরে বাইরে রপ্তানী করতে হবে ভারত সে দর বেধে দেবে। এসব পণ্য ভারত নিজে কিনতে চাইলে বাংলাদেশ আর কারো সাথে সে পণ্য বিক্রির কথা আলোচনা করতে পারবে না। বাংলাদেশের আমদানী তালিকা ভারতের কাছ থেকে অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে। (বাংলাদেশে বিদেশী পণ্য আমদানীর ব্যাপারে ভারত উদার থাকবে-যে সব পণ্য ভারতকেও আমদানী করতে হয় সেগুলি আমদানী করানো হবে বাংলাদেশকে দিয়ে। বাংলাদেশ তার বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল ভেঙে বিদেশ থেকে যে সব সামগ্রী আমদানী করবে সেগুলি ভারত নিজে আমদানী করবে না।

চোরাচালানের মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশ থেকে সে পণ্যগুলি ভারতীয় টাকায় যোগাড় করবে। বিলাতের ‘সেভেন ও ক্লক’ ব্লেডের বেলায় এবার এটা ঘটেছে। ভারত ‘সেভেন ও ক্লক’ আমদানী করেনি। বাংলাদেশকে দিয়ে বিপুল পরিমাণে-দেড় কোটি টাকার ব্লেড আমদানী করিয়েছে-এখন ভারত নিখরচায় সেই ব্লেড পেয়ে গেছে)।

(৪) বাংলাদেশের বাৎসরিক ও পঞ্চ-বার্ষিকী পরিকল্পনাগুলি ভারতকে দিয়ে অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে। (বাংলাদেশ যেন স্বাবলম্বী না হতে পারে ভারত সেভাবে পরিকল্পনাগুলি কেটে ছিঁড়ে ঠিক করবে। আইয়ুবী আমলে বাংলাদেশে পরিকল্পনায় অর্থ ব্যয় হয়েছে কিন্তু সবই অনুৎপাদশীল খাতে। “পশ্চিম” পাকিস্তানে সব অর্থ ঢালা হয়েছে উৎপাদনশীল খাতে। ভারতও বাংলাদেশের উন্নয়নকে অনুৎপাদনশীল রেখে দিতে চায়। ইতিমধ্যে সরকার কর্তৃক ঘোষিত বাৎসরিক উন্নয়ন কর্মসূচী ও বাজেটে একই অবস্থা দেখা গেছে। আগামী মহাপরিকল্পনা এখন ভারতের কাছে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। তাতেও অনুৎপাদনশীল খাত প্রাধান্য পাবে)।

(৫) বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ভারতের পররাষ্ট্রনীতির অন্তর্বর্তী রাখতে হবে। অভ্যন্তরীণ রাজনৈতির ক্ষেত্রে ভারতের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

(৬) বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার চুক্তিগুলি বাংলাদেশ একতরফাভাবে অস্বীকার করতে পারবে না। তবে ভারত এ চুক্তিগুলির কার্যকারিতা অস্বীকার না করলে বৎসর-বৎসরান্তে এ চুক্তিমালা বলবৎ থাকবে।

(৭) ডিসেম্বর যুদ্ধের অব্যবহিত পূর্বে স্বাক্ষরিত চুক্তিটিতে বলা হয়েছিল যে, ভারতীয় সৈন্যরা যে কোন সংখ্যায়, যে কোন সময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারবে এবং বাধাদানকারী যে কোন মহলকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারবে। ভারতীয় বাহিনীর এ ধরনের অভিযানের প্রতি বাংলাদেশ সরকার স্বীকৃতি দিচ্ছে। ভারত চুক্তিটি নাকচ না করলে বৎসরান্তে এ চুক্তি কার্যকরী থাকবে। মুক্তিযুদ্ধের ন’মাসে ভারত যে সাহায্য দিয়েছে, তার প্রতিটি সাহায্য দিয়েছে পরে পরিশোধ করে দেবার শর্তে, লিখিত চুক্তি অনুযায়ী। এসব চুক্তির শর্ত এত হীন এবং লজ্জাকর যে তাজুদ্দিন সরকার ও বর্তমান সরকার জনগণের ভয়ে তা প্রকাশ করছে না। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে ভারত মোটামুটি এ ধরণের চুক্তিগুলি সম্পাদন করে নিয়েছিল। এ চুক্তিতে স্বাক্ষর দিয়েছিলেন তাজুদ্দিন আহমদরা।

বাংলাদেশকে বেকায়দা অবস্থায় পেয়ে এমনি ঠগ ও শঠতাপূর্ণ চুক্তিতে বাঁধা হয়েছিল। আজ এ সকল চুক্তির মরণফাঁদ ছিন্ন করার জন্য যারা সংগ্রাম শুরু করেছেন প্রভু গৃহে পর্দাপন করে তাজুদ্দিন সাহেব তাদের ঠগ জুয়াচোর বলে অভিহিত করলেন। একেই বলে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। প্রভুর মনতুষ্টির জন্য তাজুদ্দিন সাহবেরা যা খুশী তা বলে দেশের জনগণকে গালাগালি করতে পারেন, কিন্তু বাচালতা দিয়ে অপরাধ ঢাকা যায় না। বাংলাদেশকে ভারতের পদপ্রান্তে সমর্পণের দাসখত লিখিয়ে লোকদের জনতার দরবারে জবাবদিহি করতে হবে।”

-সেই গোপন ৭টি চুক্তি / সাপ্তাহিক “হক-কথা”-২২শে সেপ্টেম্বর, ১৯৭২

এখন বাস্তবতা কি দাঁড়ালো, জামায়াত তাঁর এ রাজাকার অপবাদ পেরিয়ে দলটি এখন এক নতুন ধারার রাজনীতির পথে হাঁটছে। এমনকি বলা যায়, বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে সংগঠিত, সুশৃঙ্খল এবং নৈতিকভাবে দৃঢ় অবস্থানে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর একটি জামায়াত। তারা এখন একটি গণমুখী, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক রাজনীতির মডেল দাঁড় করাতে চাচ্ছে। যা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

২০২৪ সালের আন্দোলন শুধু রাজপথে নয়, দেশের রাজনৈতিক ভাষা ও ব্যাকরণেও পরিবর্তন এনে দিয়েছে। জামায়াত সে পরিবর্তনের কেন্দ্রে অবস্থান করছে। তারা মূলত দুটি মৌলিক কৌশল অবলম্বন করে এগিয়ে যাচ্ছে কৌশল দুটি হলো- ‘সততা ও পরোপকারী মনোভাব’ যারা এখনো এই বাস্তবতা মানতে চান না, তারা রাজনৈতিকভাবে নয়, আত্মিকভাবে মৃত হয়ে গেছেন। ৫ আগস্টের পর থেকে জামায়াত যে রাজনৈতিক সংযম, কৌশল এবং ভবিষ্যতমুখী ভিশনের পরিচয় দিয়েছে, তারা এখন মানুষের জন্য রাজনীতি করছে এক্ষেত্রে ধর্মীয় দাবি খুব কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে কারণ মানুষের জন্য কাজ করলে ধর্মীয় অনেক দাবি পূরণ হয়ে যাচ্ছে, এভাবে মানুষ ইসলাম সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা পাচ্ছে জামায়াতের এই কৌশলগুলো বেশ বুদ্ধিদীপ্ত ও নজরকাড়া।

দলটি তাদের অবস্থান সুস্পষ্টভাবে জানাচ্ছে যে, তারা এমন রাজনীতি চায় যেখানে জনগণই হবে সিদ্ধান্তের কেন্দ্রবিন্দু। আমরা দেখেছি, তারা এমন কিছু প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, যা এদেশের রাজনীতিতে বিরল এবং অনন্য। যেমন: তাদের সংসদ সদস্যরা কোনোভাবেই ট্যাক্স ফ্রি গাড়ি গ্রহণ করবেন না, এটা তারা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে। সরকার থেকে প্রাপ্ত প্রতিটি অর্থের হিসাব জনসম্মুখে উপস্থাপন করা হবে, এটি একটি শক্তিশালী জবাবদিহির নজির তৈরির সংকল্প। কোনো নেতা মেয়র নির্বাচিত হলে তিনি নদীতে গিয়ে প্রতীকী গোসল করবেন, এ উদ্যোগ শুধু নাটকীয় নয়, বরং পরিবেশ ও নদী রক্ষায় এক গভীর দায়বদ্ধতার প্রকাশ।

এ ধরণের কমিটমেন্ট রাজনীতিকে একটি স্বচ্ছ ও গণমুখী পথে নিয়ে যেতে পারে। একে আমরা ‘পলিটিক্যাল ট্রান্সপারেন্সি’-র নতুন অধ্যায় বলতে পারি। যখন কোনো রাজনৈতিক দল স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজেদের দায়িত্ব, প্রতিশ্রুতি এবং আর্থিক লেনদেন সম্পর্কে জনসমক্ষে জবাবদিহি করার ঘোষণা দেয় তখন সেটি নিঃসন্দেহে এক ইতিবাচক উন্নয়ন। ভবিষ্যতে নাগরিক সমাজ এখান থেকে অ্যাক্টিভিজমের জায়গা তৈরি করে দলগুলোর প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন যাচাই করতে পারবে। কিন্তু জামায়াতের মতো এখনো অন্য কোনো রাজনৈতিক দল এতটা সাহস করে বলতে পারেনি যে, তারা এই স্বচ্ছতার সাথে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে।

এখন প্রশ্ন হলো, এ ধরনের উন্নয়ন আপনি কীভাবে অস্বীকার করবেন? আপনি কি বলতে পারবেন, বাংলাদেশের পুরনো রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রতিশ্রুতির কতটুকু বাস্তবায়ন করেছে? তাদের মধ্যে কয়টি দল জনগণের সামনে অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা ও নৈতিক দায়বদ্ধতার নজির রাখতে পেরেছে? বরং আমরা দেখেছি যে, বিদেশে লীগ নেতা সাইফুজ্জামানের বাড়ির সংখ্যাই ৫৮০টি (ইত্তেফাক। ১৭/০৬/২৫)। এছাড়াও বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার শুধু ব্যাংক খাত থেকে ৮০ শতাংশ অর্থ নিয়ে গেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর এই সংকট তৈরি হয়েছে দিনের পর দিন জবাবদিহিতার বালাই না থাকাতে। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে এই জবাবদিহিতার যায়গাটাকেই ফোকাস করবে। তাহলে এবার ভাবুন ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত কাদের হাতে তুলে দেওয়া উচিত।

আমাদের রাজনীতি এখন এমন একটি জায়গায় পৌঁছাতে হবে, যেখানে রাজনৈতিক দলকে মূল্যায়ন করা হবে তার পরিকল্পনা, প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবায়নের ভিত্তিতে। শুধু অতীতের ত্রুটি টেনে নয়, বরং বর্তমানের বাস্তবতা এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা চাই এমন রাজনীতি, যেখানে দলগুলো একে অপরের সাথে ভালো কাজের প্রতিযোগিতায় নামবে-কে বেশি জবাবদিহিতা দেখাতে পারছে, কে বেশি জনমানুষের জন্য স্বচ্ছ ও কার্যকর নীতি দিতে পারছে-এই প্রতিযোগিতা হোক আগামীর মূল রাজনৈতিক সংস্কৃতি।

সুতরাং জামায়াতে ইসলামীর এ পরিবর্তন ও ইতিবাচক রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতিকে অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। এখন সময়-গায়ে তকমা লাগিয়ে নয়, বরং যুক্তি, স্বচ্ছতা ও জনগণের স্বার্থের মানদণ্ডে রাজনৈতিক দলগুলোকে মূল্যায়নের।

লেখক : শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক।