ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে ভারতে লুকিয়ে আছে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের মন থেকে নতুন রূপে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার শংকা কাটছে না। কারণ ফ্যাসিবাদের মূল দর্শন সাপের মতো মহোনীয় রূপে এসে বার বার বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের ওপর দুঃশাসনের স্টিমরোলার চালিয়েছে। সাপ দেখতে সুন্দর, কিন্তু এর বিষ মৃত্যুর কারণ। কমিউনিজমও সুন্দর স্লোগানের মোড়ানো বিষাক্ত এক মতবাদ। যার আকর্ষণে আকৃষ্ট হয়ে বিশ্বের কোটি কোটি তরুণের ভবিষ্যতের সোনালি স্বপ্নের মৃত্যু ঘটেছে। মানবতাবাদের নামে মানবতা বিধ্বংসী মতবাদের দীক্ষায় কমিউনিস্টরা নিজের অজান্তেই মানবিক মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলেন। মানবতার মৃত্যু ডেকে এনে নিজেরা পরিণত হন পাশবিক বৈশিষ্ট্যের বস্তু বা জন্তুতে। সমাজের অন্য মানুষগুলোকেও তারা ভাবতে শুরু করে প্রাণ সর্বস্ব জন্তু। তাই তো তার দলের বাইরের যে কাউকে শ্রেণিশত্রু আখ্যা দিয়ে হত্যা করতে একটুও তাদের হাত কাঁপে না। একজন মানুষ মানে যে শুধু একজন নয় একটি পৃথিবী একটি জগৎ- এ কথা তারা ভুলে যান। তারা ভুলে যান একজন মানুষকে ঘিরে ভালোবাসার বন্ধনে বাঁধা থাকে মা,বাবা, প্রেমময়ী স্ত্রী, স্নেহের সন্তান হাজারো আত্মীয়, বন্ধু স্বজন। এ ভুলে যাওয়ার বোধ থেকেই বিচারের আগেই তাদের মুখে শোভা পায় ‘নির্মূল করো’, ‘ফাঁসি চাই’ স্লোগান। ভিন্ন মতের কারণে নিজের সহপাঠি বন্ধু কিংবা একই বিদ্যাপিঠের শিক্ষার্থীকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে লাশের ওপর নৃত্য করে পৈশাচিক উল্লাসে। অন্তর মনন আর মানসে ফ্যাসিবাদী এই মানুষগুলোর মুখে পরা থাকে মানবতাবাদের মুখোশ। তারা শোষিত-বঞ্চিত শ্রমিক শ্রেণির রাজত্ব কায়েম করার নামে যে রাষ্ট্র কায়েম তা আসলে বাধ্যতামূলক শ্রমশিবির না নয় তো সশ্রম কারাদ- প্রাপ্ত আসামীদের জেলখানা। ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ডের তুলনামূলক রাজনীতির অধ্যাপক ভøাদিমির তিসমানেনু (Vladimir Tismaneanu) তার লেখা গবেষণামূলক গ্রন্থ The Devil in History: Communism, Fascism, and Some Lessons of the Twentieth Century’ এ লিখেছেন, Communism and Fascism: The Reason They Are So Similar HOLOCAUST AND GULAKS’. অর্থাৎ কমিউনিজম ও ফ্যাসিবাদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। ফ্যাসিজমের আছে হোলোকাস্ট (গণহত্যার জন্য তৈরি গ্যাসচেম্বার) আর কমিউনিস্টের আছে গোলাকস (বাধ্যতামূলক শ্রমশিবির। যেখানে হাজার হাজার মানুষ কাজের চাপ সহ্য করতে না পেরে নিহত হয়েছে)। অথচ কমিউনিউজম বা সাম্যবাদের আদর্শে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগে স্বপ্নের স্বর্গরাজ্যের ছবি নিপীড়িত-বঞ্চিত মানুষ বিশেষ করে শ্রমিক শ্রেণির সামনে তুলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু ১৯১৭ সালে লেলিনের নেতৃত্বে রাশিয়াকে কেন্দ্র করে সোভিয়েত ইউনিয়ন নামের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরই মানুষ বুঝতে পারলো তারা শয়তানের খাঁচায় বন্দি হয়েছে। দু’মুঠো খাবারের বিনিময়ে কেড়ে নেয়া হয়েছে তাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা, ধর্মীয় মূল্যবোধ, মানবিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার। দীর্ঘ দিন ধরে লালিত বিশ্বাস ইতিহাস ঐতিহ্য মুছে ফেলতে বাধ্য করা হচ্ছে। অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা, সংগ্রামের বিনিময়ে তারা মূলতঃ একটি বন্দিশিবির বা জেলখানা উপহার পায়। পুঁজিবাদের নামে যে শোষণের বিরুদ্ধে তারা সংগ্রাম করেছে, যেখানে কথা বলা ও পেশার পছন্দের অধিকার ছিল। একজন কারাখানা মালিককে পছন্দ না হলে অন্য মালিক বেছে নেয়ার অধিকার ছিল। কমিউনিজমের জালে বন্দি হয়ে এখন তাদের সেই অধিকার নেই। তাদের এখন মানুষ হিসেবে নয় উৎপাদনের হাতিয়ার হিসেবে গণ্য করা হয়। প্রাণহীন কলকারখানার মতোই তাদের মর্যাদা,পাথর্ক্য শুধু তাদের প্রাণ আছে। শ্রেণিহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নের স্লোগান ভুলে কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা হয়েছেন নব্য মালিক। রাজা-বাদশা, সম্রাট, প্রভু।
ফ্যাসিবাদের আরেক রূপ বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করে। সাম্যবাদ এবং শ্রমিকের রাজ্য রক্ষার নামে লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয় সীমাহীন অত্যাচার নির্যাতনের মাধ্যমে। ফ্যাসিজমের শয়তানের আরেক রূপ কমিউনিজমের আগ্রাসন ঠেকাতে পৃথিবী জুড়ে তৈরি হয় নতুন নতুন যুদ্ধক্ষেত্র।
আতঙ্কিত বিশ্ববাসীকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেন সমাজবিজ্ঞনীরা। সেই সমাজবিজ্ঞানীদেরই অন্যতম অধ্যাপক ভøাদিমির তিসমানেনু। তার আগে আরো কয়েকজন সমাজবিজ্ঞানী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও সুসংহত করতে ফ্যাসিবাদ, কমিউনিজম, ইউরোপীয় একনায়কতন্ত্রের নেতিবাচক বিভিন্ন দিক নিয়ে গবেষণা করেন। তাদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য দুইজন হলেন, ফ্রাঁসোয়া ফুরেট এবং আর্নস্ট নলট (Francois Furet and Ernst Nolte). তাদের একজন ফরাসি অন্যজন জার্মান। ফ্রাঁসোয়া ফুরেট একজন ফরাসি ইতিহাসবেত্তা । আর্নস্ট নলট একজন জার্মান ইতিহাসবেত্তা ও দার্শনিক। তারা উভয়েই ফ্যাসিজম ও কমিউনিজম নিয়ে গবেষণা করেছেন। তারা এর উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ তুলে ধরে দেখিয়েছেন ফ্যাসিবাদ ও কমিউনিজমের মধ্যে দুইটি আদর্শের মধ্যে রাজনৈতিক ও দর্শনগত তেমন কোন পার্থক্য নেই।
অধ্যাপক ভøাদিমির তিসমানেনুর বইয়ের শিরোনাম ‘ইতিহাসের দুই শয়তান: ফ্যাসিজম ও কমিউনিজম’ পোলিশ দার্শনিক লেসজেক কোলাকোস্কির (Lesyek Kolakowski) এর পর্যবেক্ষণ থেকে নেওয়া হয়েছে। তিনি দেখিয়েছেন, বলশেভিজম (কমিউনিজম) এবং ফ্যাসিবাদ ইতিহাসে শয়তানের বিপর্যয়কর উপস্থিতির দুটি অবতারের প্রতিনিধিত্ব করে। দুইটি মতবাদই সর্বগ্রাসীবাদের একই মুদ্রার এপিঠ ও ওপিঠ।
জার্মান ভাষায় কার্ল মার্কস, ফ্রেডরিক এঙ্গেলসের লেখা দ্য কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো গ্রন্থটি ১৮৪৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রকাশিত হয়। এটি প্রকাশের পর একদল সমাজবিবজ্ঞানী তা দারুণভাবে গ্রহণ করেন। এর ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরেন। রাজনৈতিক তত্ত্ব হিসেবে মার্কসবাদ ১৭৫ বছরেরও বেশি পুরনো একটি ব্যর্থ মতবাদ। এটা জানার পরও তথাকথিত একদল মানুষের মোহ ভঙ্গ হয়নি। অথচ তারা নিজেদের মুক্তচিন্তার অধিকারী,গণতন্ত্রমনা, মানবাধিকারের পক্ষের প্রগতিশীল বলে আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুলেন।
মার্কসবাদ প্রথম থেকেই ব্যর্থ : প্রফেসর তিসমানেনু দাবি করেন রাজনৈতিক ধারণা হিসাবে মার্কসবাদ প্রথম থেকেই ব্যর্থ। এর কারণ “মানবজাতির মনস্তাত্ত্বিক গঠনের প্রতি এর সংবেদনশীলতার অভাব”। “আধ্যাত্মিক বা সাংস্কৃতিক উৎসের জন্য মানুষের প্রয়োজনকে অবমূল্যায়ন এবং এইভাবে মানুষের গোপনীয়তার অধিকারের গভীর গুরুত্ব উপেক্ষা করা।” ভøাদিমির লেনিন যখন মার্ক্সের ধারণাকে “বিশ্বের আদর্শিক রূপান্তরের একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক অস্ত্র” হিসাবে বাস্তবায়ন করেছিলেন, তখন তিনি সর্বগ্রাসীবাদকে কাজে লাগিয়েছিলেন। ১৯১৭ সালের অক্টোবরে রাশিয়ান বিপ্লবের সূচনাকারী লেনিনের গোঁড়ামীর দৃষ্টিভঙ্গি ও সর্বগ্রাসীতা না থাকলে পশ্চিমা সভ্যতার গতিপথ, এবং বিশ্ব ইতিহাস অন্যরকম হতো। লেনিন যে মতবাদ প্রচার করেছিলেন তার লক্ষ্য ছিল রাজনীতিতে জনসাধারণের বিদ্রোহকে প্রজ্বলিত করা। তিনি ব্যক্তি স্বত্তাকে নিছক একটি বস্তু কণা হিসেবেই বিশ্বাস করতেন। তার এ দর্শন সর্বগ্রাসী চিন্তাধারার পথ প্রশস্ত করেছিল যা বিংশ শতাব্দীতে ফ্যাসিজমকে উৎসাহিত করেছে। এখনো নানান কায়দায় করে যাচ্ছে। তাই দেখা যায়, এ আদর্শে বিশ্বাসী তরুণরা ভিন্ন সহ্য করতে পারে না। জয় দেখিয়ে নয়, ভয় দেখিয়ে নিজের দল ভারি করে তাদের স্বপ্নরাজ্য গড়তে চায়। উপমহাদেশের রাজনীতিতে সন্ত্রাসবাদের ইতিহাস পর্যালোচনা এবং দেশের সাম্প্রতিক রাজনীতি বিশ্লেষণ করলে উল্লেখিত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী,ইতিহাসবেত্তা ও সমাজবিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণেরই প্রতিফলন দেখা যায়।
নতুন রূপে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার শংকা
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুই মতবাদের প্রভাবের কারণেই নতুন রূপে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার শংকা কাটছে না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে হত্যা সন্ত্রাসের আমদানি দুই মতবাদের প্রভাবেই হয়েছে এতে কোন সন্দেহ নেই। কমিউনিজমের হাত ধরেই ফ্যাসিবাদ তার ডালপালার বিস্তার ঘটিয়েছে। বিশিষ্ট বামপন্থী তাত্ত্বিক, গবেষক ও ইতিহাসবিদ; শতাধিক গ্রন্থের লেখক বদরুদ্দীন উমর দেশের একটি প্রথম শ্রেণির জাতীয় দৈনিকের সাথে সাক্ষাৎকারেও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন,”১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশ স্বাধীনহওয়ার পর কমিউনিস্ট পার্টি সমাজতান্ত্রিক রাজনীতি ছেড়ে দিয়ে বিপ্লবের নামে সন্ত্রাসবাদের দিকে চলে গেল, তারপরে সেই সন্ত্রাসবাদের পতন হলো, তারপরে আবার একটা রাজনীতি শুরু হলো, যেটাকে বলে সংসদীয় রাজনীতি। পঞ্চাশের দশকে যখন এসব ঘটছে, তখনো কিন্তু সারা দুনিয়ায় সমাজতন্ত্র নিয়ে আশা-উদ্দীপনা ছিল। তারপর স্তালিনের মৃত্যুর পর ক্রুশ্চভ ভিন্ন পথ নিলেন, তারপর আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলন বিভক্ত হলো, দেশে দেশেও কমিউনিস্ট আন্দোলন বিভক্ত হয়ে গেল। তা ছাড়া চীন সাংস্কৃতিক বিপ্লবের পরে আমেরিকা, পাকিস্তান ইত্যাদি দুনিয়ার যত প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির সঙ্গে সমঝোতা করে তাদের সঙ্গে গেল। ফলে আগে চিন্তার ক্ষেত্রে যে শৃঙ্খলা ছিল, সেটা নষ্ট হয়ে গেল। লেনিন তো পরিত্যক্ত হলেনই, এমনকি চীনে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় সব বইপত্র বাদ দিয়ে লাল বই পড়া শুরু হলো, তার ফলে মাও সে-তুংয়ের গুরুত্বপূর্ণ লেখাপত্রওপরিত্যাগ করা হলো। চীন বলত যে সশস্ত্রভাবে সংগ্রাম করতে হবে, সেই মতবাদ ছড়িয়ে পড়তে লাগল। কিন্তু সশস্ত্র সংগ্রাম বা গেরিলাযুদ্ধ করার মতো প্রকৃত পরিস্থিতি এখানে ছিল না বলে সন্ত্রাসবাদ দেখা দিল। মাও বলেছিলেন, গেরিলারা হলো মাছ আর জনগণ হলো পানি, কিন্তু আমাদের মতো দেশগুলোতে অবস্থা দাঁড়াল পানি ছাড়াই মাছের মতো। এসব করে ভারত উপমহাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।” বদরুদ্দীন উমর তার বিশ্বাসের জায়গা থেকে কমিউনিস্ট আন্দোলনের দর্শনের গলদ স্বীকার করতে চাননি। তিনি এই আদর্শে বিশ্বাসী কয়েকজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে দায়ী করেছেন। কমিউনিস্ট আন্দোলনের সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমকে যে জনগণ গ্রহণ করেনি এবং করছে না এ কথাও তিনি স্বীকার করেছেন। দেশে বর্তমানে যে ফ্যাসিবাদী শাসন চলছে এর নেপথ্যের কারণ হিসেবে সমাজবিজ্ঞানীরা বামধারার কমিউনিস্ট তাত্ত্বিক ও রাজনীতিবিদদেরই দায়ী করেন।
পতিত আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী এই নব্য ধারার সূচনা মূলত: ২০০৮ এর নির্বচানের পর থেকে। এর কারণ গণতান্ত্রিক এই দলটিতে বাম বা কমিউনিস্টদের প্রভাব। এ প্রসঙ্গে পর্যবেক্ষকমহলের বিশ্লেষণ হলো, ২০০৮ এর নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগে কমিউনিস্টদের প্রভাব বেড়ে যায়। কারণ ওই সময়ে বেগম মতিয়া চৌধুরী, আবদুল মান্নান খান, নূহ-উল-আলম লেনিন এর নেতৃত্বে কমিউনিস্ট পার্টি থেকে আসারাই সংস্কারপন্থীদেরকে রুখে দিয়েছিল এবং শেখ হাসিনার প্রতি অকুণ্ঠ আনুগত্য দেখিয়েছিল।’ বামপন্থীদের কবলে পড়েই আওয়ামী লীগ বার বার বিপথে হেঁটেছে। গণতান্ত্রিক আদর্শ বিচ্যূতির জন্য তাদের চরম মূল্যও দিতে হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। স্বাধীনতা লাভের পর মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনের পর একুশ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকার জন্য বিশ্লেষকরা দলটির এই ভুল নীতি অর্থাৎ শয়তানের খপ্পরে পড়াকেই দায়ী করেন। গত দেড় যুগ ধরে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শাসন চলছে। কমিউনিস্টদের কবলে পড়ার কারণেই গণতান্ত্রিক আদর্শের একটি রাজনৈতিক দলের এই পরিণতি। ক্ষমতা দখলের পর মতপ্রকাশের স্বাধীনতা,গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং মানুষের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা রক্ষার কথা বলে ফাঁসি,খুন-গুমের নির্মম ও অমানবিক রাজনীতির দর্শনের চর্চা করছে।
নব্য ফ্যাসিবাদের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে মহল বিশেষ মেধাবী তরুণদের বিপথগামী করছে। তারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধর্মহীন অমানবিক পিশাচে পরিণত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ মুখে বলছে মানবতাবদের কথা। তাদের মাঝে মানবিকবোধ জাগ্রত করার বদলে হিংস্রতার বিস্তার ঘটাচ্ছে। সরলমনা মেধাবী ও মানবতাবাদী মানুষরা অতি সহজেই এমন ফাঁদে পা দেন। তাই এদের সম্পর্কে সবাইকে সাবধান করতে হবে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার এ দেশে ইসলামের আলোকে তরুণদের আলোকিত করার আয়োজনের মাধ্যমেই শুধু সম্ভব উল্লেখিত অপশক্তির কবল থেকে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করা।
লেখক: কথাসাহিতিক ও সিনিয়র সাংবাদিক।