DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

কলাম

মধ্যমপন্থাই ইসলামের মূল সৌন্দর্য

৫ আগষ্টের পর দেশে একটি স্বাধীন ও মুক্ত পরিবেশ তৈরি হওয়ার প্রেক্ষিতে ইসলামের প্রসার যেমন বেড়েছে তেমনি ইসলামপন্থিদের কর্মতৎপরতাও অনেক গতি পেয়েছে। আওয়ামী অপশাসনের সাড়ে ১৫ বছর ইসলাম ও ইসলামপন্থিরা এক ধরনের কোণঠাসা অবস্থানে থাকায় নানা ধরনের ইসলামিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল।

Printed Edition
Default Image - DS

৫ আগষ্টের পর দেশে একটি স্বাধীন ও মুক্ত পরিবেশ তৈরি হওয়ার প্রেক্ষিতে ইসলামের প্রসার যেমন বেড়েছে তেমনি ইসলামপন্থিদের কর্মতৎপরতাও অনেক গতি পেয়েছে। আওয়ামী অপশাসনের সাড়ে ১৫ বছর ইসলাম ও ইসলামপন্থিরা এক ধরনের কোণঠাসা অবস্থানে থাকায় নানা ধরনের ইসলামিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় কিছু লোক দেখানো কাজ হলেও ইসলামের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্য তুলে ধরার মতো কার্যক্রম সেভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘদিন যেহেতু নানা ধরনের দ্বীনি কার্যক্রম করা যায়নি, তাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এগুলো শুরু হওয়ার প্রেক্ষিতে হঠাৎ করেই মনে হচ্ছে, বাংলাদেশে যেন কেবল ইসলামিক সংগঠন ও সংস্থাই রয়েছে এবং এখানে কেবল মুসলিমরাই স্বগৌরবে জীবন যাপন করছে এবং অন্য ধর্মাবলম্বীরা বা সংস্থাগুলো কোণঠাসা অবস্থায় পড়ে আছে।

সেক্যুলার মহল যেমন ইসলামপন্থিদের নতুন করে প্রত্যাবর্তনকে ইতিবাচকভাবে দেখতে পারছে না, তেমনি প্রতিবেশী দেশের মিডিয়াতেও এ বিষয়টিকে খুবই বাজেভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। তাদের অনেকেই দাবি করছেন, বাংলাদেশে উগ্রপন্থার উত্থান ঘটেছে কিংবা দেশে মৌলবাদীরা এ দেশে সবকিছু দখল করে নিচ্ছে। এটি নিতান্তই অমূলক অপপ্রচার। বাংলাদেশের মানুষ ঐতিহাসিকভাবে পরমতসহিষ্ণু এবং সকল ধর্ম ও মতের সাথে মিলে মিশে বসবাসের একটি চমৎকার ঐতিহ্য এদেশে রয়েছে। একথা ঠিক, অন্যসব ধর্ম বা মতের মতো ইসলামকে ঘিরেও কিছু ব্যক্তির ভেতর কট্টর দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ্য করা যায় কিন্তু তা খুব ধর্তব্য নয়; কেননা এগুলো কখনোই সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে না। অপপ্রচারকারীরা যেভাবে ইতিবাচক উপকরণগুলোকে এড়িয়ে গিয়ে দু’একটি নেতিবাচক ঘটনাকে বড়ো করে প্রচার করে তা কখনোই সত্য ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হতে পারে না।

সম্প্রতি একটি নারীর ওড়না পরিধান নিয়ে টিজ করাকে কেন্দ্র করে যে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে গেলো এবং এ ঘটনাকে স্বার্থান্বেষী মহল যেভাবে চিত্রায়িত করার চেষ্টা করলো তাতে এটি পরিষ্কার যে, ইসলামকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সামান্যতম সুযোগ পেলেও ইসলাম বিরোধী শক্তি কোনো ধরনের ছেড়ে দেবে না।

বরং তারা তিলকে তাল বানিয়ে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। তবে স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে, ওড়না সংক্রান্ত ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে অস্থিরতা দেখা গেল এবং মুসলিমদের একটি অংশের মধ্যেই যে ধরনের অসচেতনতা দৃশ্যমান হলো, তা আমাদের জন্য যথেষ্ট উদ্বেগেরও কারণ হতে পারে।

যুক্তিবিদগণের মতে কেউ যদি কোনো বিষয় সম্বন্ধে ভালোভাবে না জানেন, তাহলে সে বিষয়ে তার মত না দেওয়াটাই উত্তম। চরমপন্থা বিশেষ করে ধর্মীয় চরমপন্থাকে ভালো বা মন্দ বলার আগে আমাদেরকে আগে এ বিষয়টি সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। আক্ষরিক অর্থে, চরমপন্থা মানে হলো কোনো একটি বিষয়ের কেন্দ্রবিন্দু থেকে দূরে সরে গিয়ে একেবারে প্রান্তসীমায় অবস্থান করা। বাস্তবে চিন্তা করলে, ধর্ম, চিন্তাভাবনা বা আচরণের ক্ষেত্রে চরমপন্থা শব্দটি ব্যবহারও ভীষণরকম নেতিবাচক। চরমপন্থার কারণে বিপদের আশংকা বেড়ে যায় এবং নিরাপত্তাহীনতার সৃষ্টি হয়।

এ প্রেক্ষিতে, ইসলাম বরাবরই মধ্যমপন্থা এবং ভারসাম্য করার সুপারিশ করে। ইসলাম আমাদেরকে সকল কর্মকাণ্ডে বিশেষত ইবাততে, ব্যবহারে, আচার-আচরণে কিংবা আইন প্রণয়নে মধ্যমপন্থা অবলম্বনের তাগিদ দেয়। আর আল্লাহ এ মধ্যমপন্থাকেই সিরাতুল মুস্তাকিম হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। আমরা সূরা ফাতিহাতে এ সিরাতুল মুস্তাকিম পাওয়ার জন্যই আল্লাহর কাছে আকুতি জানাই। কেননা, এ পথটিই নেয়ামতপ্রাপ্তদের পথ। বাকি যত পথ তার সবই আমাদেরকে বিপথগামী কর;ে অভিশপ্ত রাস্তায় টেনে নিয়ে যাবে।

যারা ইসলাম নিয়ে কাজ করেন, ইসলামকে লালন করেন, ইসলামের অনুশীলন ও অনুসরণ করেন-তারা কখনোই কোনো ধরনের উগ্রতা বা চরমপন্থাকে প্রশ্রয় দেন না, সমর্থন করেন না। মুসলিমদের বলা হয় উম্মাতান ওয়াসাতান। কুরআনের মুফাসসিরগণ ‘ওয়াসাত’ শব্দের অর্থ করেছেন, ন্যায্যভাবে ভারসাম্যকারী, সর্বোত্তম প্রভৃতি। ইসলামের সারকথাই হলো, উভয়পক্ষের বাড়াবাড়ি পরিহার করা। কেননা, ইসলাম বরাবরই একটি মার্জিত ও ব্যবহারিক জীবনব্যবস্থা।

আল্লাহ তাআলা এ উম্মতকে একটি মধ্যমপন্থি উম্মত হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। মুসলিমদেরকে সবসময় মধ্যমপন্থা অনুসরণ করতে হবে। মধ্যপন্থা এমন একটি পথ যাতে কোনো চরমপন্থা ও বাড়াবাড়ি নেই। ইসলাম সবসময়ই সামঞ্জস্য এবং ভারসাম্যপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করতে চায়।

বিশেষ করে ওহী এবং যুক্তির মাঝে, ব্যক্তি এবং সমাজের মাঝে, দ্বীন ও দুনিয়ার মাঝে এবং ইহকাল ও পরকালের মাঝে-ইসলাম আমাদেরকে ভারসাম্য, নমনীয়তা এবং মার্জিক আচরণ বজায় রাখার শিক্ষা দেয়। কর্কশতা এবং কঠোরতার কোনো স্থান ইসলামে নেই। এমনকী যুদ্ধক্ষেত্রেও রুক্ষ ও কঠোর মনোভাব এড়িয়ে যাওয়ার আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে তাগিদ দিয়েছেন। (রেফারেন্স : সুরা তাওবাহ : ৭৩ এবং সুরা আল তাহরিম : ৯ নং আয়াত)

ইসলামের সকল আইন সার্বজনীন ও সার্বিক। ইসলাম মানবিক মর্যাদা, সমতা ও সম্মান নিশ্চিত করে। ইসলামের মৌলিক নীতিমালা অপরিবর্তনীয়। তবে, জনগণের অবস্থা এবং প্রয়োজনের আলোকে এগুলোর প্রয়োগে শিথিল হওয়ার সুযোগ আছে। ইসলামী আইন বা শরীয়াতের মূল দর্শনগুলো হলো:

ক. সামর্থ্যরে বাইরে কোনো দায় দায়িত্ব আরোপ করার সুযোগ নেই।

খ. ইসলামে সকল ভালো ও কল্যাণকর বিষয়ই অনুমোদন করা হয়েছে আর সকল বাজে ও ক্ষতিকর বিষয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

গ. দায়িত্ব ও কর্তব্যের মূল উদ্দেশ্য হলো সম্মান ও বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা। কাউকে হেয় করা কিংবা কারো ওপর বোঝা চাপিয়ে দেয়া নয়।

ঘ. অতীব প্রয়োজনকে স্বীকৃতি দেয়া।

ইসলামের আরো কিছু অনিন্দ্যসুন্দর বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ইসলাম কখনোই বিশেষ কোনো সংস্কৃতি, গোত্র বা দেশকে শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয় না। রাসূল (সা.) নিজে বিদায় হজে¦র ভাষণে অনারবের ওপর আরবের কিংবা কালোর ওপর সাদার শ্রেষ্ঠত্বকে খারিজ করে দিয়েছেন। ইসলাম শিক্ষা দেয় যে, জীবনের যা কিছু ইতিবাচক সবটাই উপভোগ করা যায়। ইসলাম বৈশিষ্ট্যগতভাবে তাপস্যবাদ, সন্যাসবাদ বা রোগাক্রান্ত কোনো দর্শন নয় বরং ইসলাম মানুষকে সুখী, খুশি, স্বাস্থ্যবান, আস্থাবান এবং দূরদর্শী হিসেবে দেখতে চায়। ইসলাম মানুষের প্রয়োজন, চাহিদা, আবেগ অনুভূতি, প্রত্যাশাকে বিবেচনায় নেয় এবং বিকশিত হওয়ার জন্য যেকোনো ব্যক্তিকে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা প্রদান করে। ইসলামে কোনো দ্বৈত অবস্থান নেই। ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের জন্য একটি নিয়ম আবার সাধারণদের জন্য ভিন্ন নিয়ম- এমন বৈশিষ্ট্য ইসলামে নেই।

রাসুল (সা.) বলেন, “তোমরা ধর্মের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না। তোমাদের পূর্বে অনেক জাতি এ বাড়াবাড়ির কারণেই ধ্বংস হয়ে গেছে (আহমাদ)। এ হাদিসটি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এর আগে বিভিন্ন আহলে কিতাব সম্প্রদায় বিশেষত ইহুদি ও খৃষ্টানেরা এ ধরনের জুলুম করেছে। আর এর পরিণতিতে তাদেরকে শাস্তিও ভোগ করতে হয়েছে। এ কারণে এ হাদিসে মুসলামনদেরকে সতর্ক করা হয়েছে যাতে তারা অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে একটি স্বস্তিদায়ক জীবন উপভোগ করতে পারে। উপরোক্ত হাদিস আমাদের এ বার্তাও দিয়েছে যে, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি ও সীমা লঙ্ঘন আমাদেরকে এমন সব কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে পারে যার ফলে পরিবেশ আরো বেশি অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।

ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেছেন, “ইসলাম বাড়াবাড়ি বা সীমা লঙ্ঘন বিষয়ক যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তা সব ধরনের বিশ্বাস, ঈমানের সব স্তর, ইবাদত এবং লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।” এমনকী কোনো কাজ করার সময় বা কথা বলার সময় কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি ও অতিরঞ্জনও কাম্য নয়। এর ফলে দুনিয়া ও আখেরাত উভয়ই বরবাদ হতে পারে।

ইসলাম এমনভাবে মানুষকে তার যাপিত জীবন পালন করার সুপারিশ করে যার মাধ্যমে সমাজে ভাতৃত্ববোধ ও সংহতি প্রতিষ্ঠা হয়। একইসঙ্গে সভ্যতা ও সমাজ বিনির্মাণে মুসলমানদের যে দায়িত্বও রয়েছে তাও সুষ্ঠুভাবে পালন করা সম্ভব হয়। মনে রাখতে হবে, সভ্যতা বিনির্মাণে এবং জ্ঞানের প্রভূত উন্নয়নে মুসলমানদের সম্পৃক্ত হওয়াটিকে অনেকটা বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয়েছে। ইসলাম এমনভাবে ইবাদত পালন করার সুপারিশ করে না যা করতে গিয়ে মানুষ তার পরিবার ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। উলটো মানুষের পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধনগুলো যেন মজবুত হয়, এমনটাই ইসলাম প্রত্যাশা করে।

পৃথিবীতে যা কিছুকে আল্লাহ হারাম করেছেন তা উপভোগ করার বিষয়ে আল্লাহ কোনো ধরনের বিধি নিষেধ আরোপ করেননি বরং এগুলোকে কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিগত ও সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার জন্যই ইসলাম সুপারিশ করে।

মধ্যমপন্থী নীতিমালাগুলো আমাদের চিন্তা প্রক্রিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রতিফলিত হওয়া উচিত এবং দৈনন্দিন জীবনে আমরা যেসব যুক্তিদর্শন লালন করি সেগুলোর ক্ষেত্রেও মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা উচিত। দ্বীনের নির্ধারিত কর্তব্যসমূহ এবং পার্থিব জীবনের অন্যান্য দায়িত্বের মধ্যেও ভারসাম্য ও মধ্যমপন্থা বজায় রাখা উচিত। এখানে মনে রাখতে হবে যে, সংযম, মধ্যমপন্থা ও ভারসাম্য- উন্নত নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্য। যদি জনশক্তি চরমপন্থার দিকে ঝুঁকে যায় তাহলে নেতার দায়িত্ব হলো তাদের লাগাম টেনে ধরা। আর যদি নেতা নিজেই চরমপন্থী হয়ে যান কিংবা উগ্র কোনো দৃষ্টিভঙ্গি লালন করেন তাহলে জনগণের দায়িত্ব হলো তাকে সংযত করা। সমাজ ও সরকারের বিভিন্ন স্তর ও শাখার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারলে উগ্রপন্থা এবং এ থেকে উদগত সম্ভাব্য জুলুম নিবারণ করা যায়।

এমন অনেক মুসলিমই আছেন যারা ভালোভাবে ইসলাম সম্বন্ধে জানেন না এবং এমনও অনেকেই আছেন যারা সঠিকভাবে ইসলাম অনুশীলনও করেন না। আমাদের জন্য ইসলাম জানা এবং সঠিকভাবে ইসলাম শেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম কর্কশ বা কঠোর নয়, আবার খুব কঠিনও নয়। ইসলামে এমন কোনো বিধান নেই যা অবাস্তব ও অসম্ভব। রাসূল (সা.) বলেছেন, “নিশ্চয়ই দ্বীন সহজ। দ্বীন নিয়ে যে বাড়াবাড়ি করে দ্বীন তার ওপর জয়ী হয়। কাজেই তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন কর এবং (মধ্যপন্থার) কাছাকাছি অবস্থান করো। তোমরা আশাবাদী হও এবং সকাল-সন্ধ্যায় ও রাতের কিছু অংশে ‘ইবাদত সহযোগে সাহায্য চাও। (বুখারি : ৩৯)

পরিশেষে বলতে চাই, মধ্যমপন্থা হলো ইসলামের একটি সুমহান বৈশিষ্ট্য যা মুসলিমদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে দিক নির্দেশনা প্রদান করে। যদি কেউ মধ্যমপন্থা নীতি অগ্রাহ্য করে তাহলে তার বিপথগামী হয়ে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাওয়ারও ঝুঁকি থাকে। ইসলামের এ সুমহান শিক্ষা উপলব্ধি ও অনুশীলন করার মাধ্যমে মুসলিমরা চরমপন্থার অনেকগুলো ঢেউ বা স্রোত মোকাবেলা করতে পারে। মনে রাখতে হবে, চরমপন্থা শুধু মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্যই নয় বরং গোটা মানবতার জন্যই স্পষ্ট হুমকি। আর বাংলাদেশের বিদ্যমান কাঠামোতে বিশেষ করে দেশ যখন অভ্যুত্থান পরবর্তী একটি সন্ধিক্ষণ পার করছে এমন একটি সময়ে কোনো কিছু নিয়েই খুব বেশি উগ্রতা বা চরমপন্থা মনোভাব লালণ করার কোনো সুযোগ নেই।

ইসলামকে যথাযথভাবে অনুসরণ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই চেষ্টা চালাতে হবে, একনিষ্ঠ হতে হবে। আসুন আমরা সবাই ঈমান সম্পর্কে আরো বেশি জানি এবং ঈমানের চাষাবাদে মনোযোগী হই। দ্বীনকে খুব সাদামাটাভাবে বিবেচনা করার সুযোগ নেই। কারণ ইসলাম কেবলমাত্র একটি ধর্মীয় বিষয়ই নয়। ইসলামের সামাজিক, রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক কাঠামোও আছে। আর সর্বোপরি ইসলামই হলো সবচেয়ে মধ্যমপন্থী, ভারসাম্যপূর্ণ, সুন্দর, ত্রুটিমুক্ত এবং বাস্তবসম্মত জীবন ব্যবস্থা যা স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন।