ফ্যাসিজম প্রতিরোধে সাধারণ নাগরিকদের চেয়ে লেখক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের দায়িত্ব নিঃসন্দেহে বেশি। এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন বললে কম বলা হবে। তারপর সত্যিকারের বুদ্ধিজীবীরা অন্যায়ের সাথে আপস করেন না। বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে মাঠের কর্মী বা সামনের সারির যোদ্ধা হলেন সাংবাদিকরা। প্রতিদিন তাদের সত্য-মিথ্যার মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়। আমেকিান অধ্যাপক তাত্ত্বিক ও সমালোচক নোয়াম চমস্কি মনে করেন,‘বুদ্ধিজীবীর দায়িত্ব হচ্ছে রাষ্ট্র ও সরকারের মিথ্যাগুলোকে জনগণের সামনে উন্মোচন করা।’ তার কথা ব্যাখ্যা করলে দেখা যায়, কোন দেশে প্রকৃত বুদ্ধিজীবী বিশেষ করে সাংবাদিকরা সজাগ থাকলে ফ্যাসিবাদ শিকড় গাড়তে পারে না।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আলোকপাত করলে বিষয়টি নিয়ে কোন বিতর্ক থাকবে না। স্বাধীনতা যুদ্ধের মূলনীতি : ১.সাম্য (সম্পদের ইনসাফপূর্ণ বন্টন) ২. মানবিক মর্যাদা ও ৩. সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। এ মূলনীতি বাস্তবায়নের প্রত্যয়ে এবং ১৯৭০-এ জনগণের ভোটে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে গরিমসির করার প্রতিবাদে গণবিক্ষোভের ফলেই শুরু হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ। কিন্তু স্বাধীনতার পর তারা কী পেলো? গণতন্ত্রের বদলে পেলো একদলীয় বাকশাল,সাম্য সামাজিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের বদলে বৈষম্য আর ভারতের আধিপত্যবাদ। গণতন্ত্র হত্যাকারী একদলীয় বাকশালের মাস্টারমাইন্ড বসেন দেবতার আসনে। এটা কী করে সম্ভব হলো? তখন কি দেশে কোন বুদ্ধিজীবী ছিলেন না? সাংবাদিক,সংবাদপত্র? অবশ্যই ছিলেন এবং ছিলো? তাদের সাহসী ভূমিকার কারণেই ‘হক্ব কথা; ‘গণকণ্ঠ’ ও ‘সোনার বাংলা’ ‘হলি ডে’ এবং আরো অনেক জাতীয় ও স্থানীয়সহ পত্র-পত্রিকা দেশের প্রথম ফ্যাসিস্টের বুকে কাঁপন ধরিয়ে ছিলো। তাই তো মাত্র চারটি পত্রিকা রেখে সবগুলোর প্রকাশনা বন্ধ করেছিলো নব্য স্বাধীন দেশের নব্য ফ্যাসিস্ট সরকার। কিন্তু এতে শেষ রক্ষা হয়নি। ফ্যাসিজমের পতন হয়েছে। এর কারণ জার্মান দার্শনিক জর্জ হেগেলের ভাষায়, ‘ইতিহাসের বড় শিক্ষা হলো, ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না।’ তাই ক্ষমতার মোহে অন্ধ ফ্যাসিস্টরা মানুষের জীবন নিয়ে জুয়া খেলা বন্ধ করে না। সাংবাদিকদের দায়িত্ব এ খেলা বন্ধ করা। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় জীবনমরণ পণ করে কাজ করা।

জীবন নিয়ে জুয়া খেলা নয়

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিপ্লব সফল করতেও সাহসী সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের ছিলো বলিষ্ঠ ভূমিকা। এর ব্যতিক্রম যে নেই তা কিন্তু নয়। পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই ব্যতিক্রম ছিলো এবং এখনো আছে। যে ব্যক্তির কারণে ফ্যাসিজম শব্দটি বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছে ইতালির বেনিটো মুসোলিনিও একজন সাংবাদিক এবং একটি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। তার সম্পাদিত পত্রিকার নাম Avanti! (আভান্তি)। অবশ্য সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে আসার পর তিনি আর সাংবাদিকতা করেননি। তার রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল ফ্যাসিস্ট পার্র্টির (PNF) মুখপত্রের নাম ছিলো Il Popolo d’Italia (ই পোপোলো দি’ইতালিয়া)। জার্মানির নাৎসি পার্টির মুখপত্র পিপলস অবজার্ভার জার্মান ভাষায় পত্রিকটির নাম ছিলো Völkischer Beobachter...

এ সব পত্রিকাতেও অনেক বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিক কাজ করতেন। তারা সবাই অর্থ-বিত্ত, সুযোগ-সুবিধা ও পদ-পদবীর লোভে কাজ করেছেন এমন সহজ সমীকরণ সত্য অস্বীকার করার নামান্তর। কারণ দর্শনের শক্তি অস্বীকার করা যায় না। হিটলার ও মুসোলিনি যে দর্শন তাদের জাতির সামনে উপন্থাপন করেছিলেন, তার প্রতি অন্ধবিশ্বাসীরা বিবেকের চেয়ে আবেগকে প্রাধান্য দিয়ে অনেকেই তাদের দলে যোগ দিয়েছিলেন। পরে কারো কারো বিবেক জাগ্রত হলেও ফেরার পথ হারিয়ে ফেলেছিলেন। বাংলাদেশের সাংবাদিক বুদ্ধিজীবীদের মধ্যেও যেমন বিক্রি হওয়া ফ্যাসিস্ট সমর্থক আছেন, ঠিক তেমনি আছেন আবেগের কাছে বিবেক বিসর্জন দেয়া ব্যক্তিও। তারা ‘স্বাধীনতা এনেছে যে ব্যক্তি ও দল’, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা করেছে যে দেশ’ এমন আবেগে ফ্যাসিবাদের কাছে আত্মসমর্পন করেছেন। তারা একবারও ভাবতে চান না, শেষবিচারের ভালই ভাল। একদিন জীবন বাঁচিয়ে ছিলো বলেই, আজ তার অধিকার নেই জীবন নিয়ে জুয়া খেলার, জীবন নেয়ার এবং সম্পদ ও সম্মান কেড়ে নেয়ার। এ কথা ভুলে যাওয়ার কারণে অনেকে ভ্রান্তির চক্রে পড়ে ফ্যাসিবাদ চিনতে ভুল করেন। এমনও অনেকে আছেন যারা বুঝতেই চান না বুদ্ধিজীবী ছেলের হাতে মোয়া নয়। দর্শনের দর্পনে বুদ্ধিজীবী মর্যাদা অত সহজ নয়।

সাধারণ অর্থে বুদ্ধিবৃত্তিক কাজের মাধ্যমে যারা জীবিকা নির্বাহ করেন, তাদের বুদ্ধিজীবী মনে করা হলেও। তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ এবং দার্শনিকদের চোখে বুদ্ধিজীবী অত সহজ নয়। বুদ্ধি অর্জন,ধারণ,সংরক্ষণ ও বিক্রি করার ক্ষমতা থাকেই তিনি বুদ্ধিজীবী নন। ফরাসি দার্শনিক জুলিয়েন বেন্দার চোখে, ‘প্রকৃত বুদ্ধিজীবী তারাই যারা জাগতিক লাভের উর্ধ্বে উঠে নিঃস্বার্থ এবং আপসহীন জ্ঞানচর্চায় ব্যস্ত থাকেন। সত্য উচ্চারণে তারা থাকেন নির্ভীক, এমনকি সত্য প্রকাশের জন্য প্রাণ সংশয়ের মতো ঝুঁকি নিতেও তারা দ্বিধা করেন না। বরং জাতির সংকটে নিজের জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করেন।’ দার্শনিক এডওয়ার্ড সাঈদের মতে ‘বুদ্ধিজীবী এমন একজন ব্যক্তি যিনি স্বাধীনতা ও ন্যায় বিচারের পক্ষে একটি নির্দিষ্ট বার্তা, একটি দৃষ্টিভঙ্গী ও একটি সুচিন্তিত মতামত জনগণের সামনে তুলে ধরেন। কোনো প্রতিবন্ধকতাই তাকে সত্য প্রকাশ থেকে বিচ্যুত করতে পারে না।’ জুলিয়েন বেন্দা ও এডওয়ার্ড সাঈদ যাদের বুদ্ধিজীবী স্বীকৃতি দিয়েছেন, তারা ডোরা কাটা দাগ দেখে বাঘ চিনতে পারেন বলেই, ফ্যাসিস্ট ও নাৎসির তালিকায় মুসোলিনি ও হিটলারকেই সীমাবব্ধ করেননি। বৈশিষ্ট্যগুলো চিহ্নিত করে দেখিয়েছেন যে এ দাগগুলো দেখেই চেনা যায়, যার মধ্যে এ চিহ্নগুলো আছে তার নাম হিটলার হোক, মুসোলিনি, হোসনী মোবারক, মুজিব, এরশাদ, হাসিনা যা হোক না কেন, তিনিই স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট, একনায়ক।

এ কথা যে অনেকেই মনে করতেন চান না তা উল্লেখ্য করেছেন নেদারল্যান্ডের লেখক, দার্শনিক এবং নেক্সাস ইন্সটিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা রব রিমেন। তিনি মনে করেন, ‘ইতিহাসের অনেক নিন্দনীয় অধ্যায়ের মত, ফ্যাসিবাদকেও আমরা অতীতের ব্যাপার হিসেবে দেখতে পছন্দ করি। যেন ফ্যাসিবাদ এমন কিছু একটা যা অতীতে ছিল, এখন নাই। আসলে হিটলার এবং মুসোলিনির করুণ পতনের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের বিনাশ হয়ে গেছে -এটা ভাবা বোকামি।’

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী লরেন্স ডব্লিউ ব্রিট বিষয়টি আরো স্পষ্ট করেছেন, তার লেখা দঅহুড়হব Anyone Fascism?’ (যে কেউ ফ্যাসিজম) গ্রন্থে। তিনি ‘ফ্যাসিবাদের ১৪ লক্ষণ’ চিহ্নিত করে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। লক্ষণগুলো হলো :১. ক্ষমতাশালী ও ধারাবাহিক জাতীয়তাবাদের ধারক। যেমন:‘ তোমরা সবাই বাঙালী হয়ে যাও’। ২. মানবাধিকারের স্বীকৃতির প্রতি অশ্রদ্ধা ৩.কাল্পনিক শত্রুর বিরুদ্ধে জনতাকে উত্তেজিত রাখা। ৪.সামরিক বাহিনীর শ্রেষ্ঠত্ব ৫. প্রচণ্ড পৌরুষবাদীতা ৬.নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম ৭.জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ে জনগণের ভেতরে বার্তা ছড়ানো ৮. সরকারের প্রয়োজনে ধর্মকে ব্যবহার। ৯.কর্পোরেট শক্তিকে সুরক্ষা প্রদান ১০. শ্রমিক দমন ১১.বুদ্ধিজীবী এবং শিল্প,সাহিত্য ও সংষ্কৃতির প্রতি অবজ্ঞা ১২. অপরাধ ও শাস্তি বিষয়ে উন্মাদনামূলক একটি রহস্য সৃষ্টি করে রাখা ১৩. বিপুল স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি ১৪. প্রতারণাপূর্ণ নির্বাচন।

দেশের পতিত ও পলাতক ফ্যাসিস্টের মধ্যে উল্লেখিত বৈশিষ্ট্য ছিলো, এতে কোন বিতর্ক নেই। তারপরও দেশের এক শ্রেণির বুদ্ধিবিক্রিকারী চেতনার ফেরিওয়ালা শুধু সমর্থন নয়, মিথ্যার জাল ছড়িয়ে দিয়ে অনবরত চেষ্টা করেছে, ফ্যাসিস্ট শক্তি আবার ফিরে আসুক। তাদের কারণেই পলাতক পতিত ফ্যাসিস্ট অপশক্তির শিকড় এত গভীরে প্রবেশের সুযোগ ও সাহস পেয়েছিলো। দেড় দশক বিনা ভোটে টিকেছিলো। নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে গুলি বোমা এবং আকাশ থেকে হেলিকপ্টার হামলা চালালোর দৃশ্য সামনে থেকেও দেখেও, সত্য প্রকাশ করেনি বরং ফ্যাসিস্টকে উৎসহিত করেছে। পতিত অপশক্তি অনুশোচনা ও অনুতাপের বদলে জঙ্গি কায়দায় হুমকি দিচ্ছে কখন, সোস্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলছে। বিক্ষোভ-সমাবেশ করার নামে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হাতবোমা ছুড়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। তারপরও নিষিদ্ধ দলকে নির্বাচনে টেনে এনে আবার নির্বাচন ব্যবস্থাসহ রাষ্ট্রের সব অঙ্গ ধ্বংসের আয়োজনের আগুনে ঘি ঢালছে, বুদ্ধিবিক্রিকারী একটি গোষ্ঠি। তারা কী সত্যি বধির ও অন্ধ।

ফ্যাসিস্টদের মিছিল সমাবেশ ও বাক ন্বাধীনতার অধিকারকে কেউ কেউ মানবাধিকার বলতে চান। বিপ্লবীদের সাথে মিলিয়ে দেখতে চান। জুলাই বিপ্লবীদের প্রতিবাদ ছিলো ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য। নিরস্ত্র সংগ্রাম। তাদের আন্দোলনের সাথে নিষিদ্ধ দলের বিক্ষোভ, হাতবোমা হামলার তুলনা করার দুঃসাহস দেখাচ্ছেন কেউ কেউ। এর পরিণতি এশিয়া-আফ্রিকা না বুঝলেও ইউরোপ আমেরিকা ঠিকই বুঝেছে। যারা জানে, ফ্যাসিস্টদের রাজনীতিতে পূনর্বাসন বা সুযোগ দেয়ার অর্থ, বিশৃঙ্খলা, সন্ত্রাস ও জঙ্গি কর্মকাণ্ড আমন্ত্রণ জানানো। তাই তো জার্মানিতে নাৎসি পার্টি, ইতালিতে ন্যাশনাল ফ্যাসিস্ট পার্টি (PNF) আজও নিষিদ্ধ। এ আদর্শে বিশ্বাসীদের ইউরোপের অধিকাংশ দেশে ও আমেরিকার কোথাও রাজনীতির করার এবং দল গঠন করার সুযোগ নেই, নতুন নামে দল গঠন করতে চাইলেও কঠোর হাতে দমন করা হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য বুদ্ধিবিক্রিকারীদের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে এশিয়া ও আফ্রিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বার বার ফ্যাসিবাদ ফিরে আসে।

এ প্রস্রঙ্গে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভারতীয় লেখিকা অরুন্ধতী রায় এক বক্তৃতায় বলেছেন, ‘কান পাতলেই তিনি সে অনাগত বিশ্বের নিশ্বাস শুনতে পান। নিশ্চয়ই গুম, খুন, দমন, নিপীড়ন, যুদ্ধ, হামলা, উচ্ছেদ, দখলের অবসান ঘটবে। ফ্যাসিজম যতভাবেই ফিরে আসুক, তা টিকে থাকতে পারে না। খুব গভীরভাবে কান পাতলে সে সব মুক্তিকামী মানুষেরও জেগে ওঠার শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। খালি ঠাহর করে একটু কান পাততে হবে। অবশ্য ফ্যাসিস্ট শাসক ও তাঁর সমর্থকেরা তা কখনোই শুনতে পান না। ক্ষমতার মোহে তাঁরা বধির।’ ‘কাম সেপ্টেম্বর’ নামে তার এ বক্তৃতাটির মর্ম এক শ্রেণির সংবাদমাধ্যম কর্মীও বুঝতে চান না। তারা পতিত পলাতক ফ্যাসিবাদ ফিরিয়ে আনার জন্য জীবন উৎসর্গ করেন। কারণ অরুন্ধতী রায়ের ভাষায় তারা,‘অবশ্য ফ্যাসিস্ট শাসক ও তাঁর সমর্থক’। ‘ক্ষমতার মোহে তাঁরা বধির।’ তারা একথাও ভুলে যায়, ’মুক্তিকামী মানুষও জেগে আছে’। কারণ তারা জানেন, পতিত শিকড় ও বীজ থেকে ভিন্ন নামে নব্য ফ্যাসিজম ফিরে আসার পথ তালাশ করছে। যেমনকরে ফেরাউন থেকে হোসনী মোবারক, আবদেল ফাত্তাহ সাইদ হুসেন খলিল এল-সিসি, আওয়ামী লীগ থেকে বাকশাল তারপর আবার আওয়ামী লীগ এসেছিলো।

Fascism: The Forgotten Story শিরোনামে শিরোনামে বুদ্ধিজীবী জোসেফ নাইটিঙ্গেল (ঔড়ংবঢ়য ঘরমযঃরহমধষব) মার্ক টোয়েন বিখ্যাত উক্তি, ‘History never repeats itself, but it sometimes rhymes.’. অর্থাৎ ইতিহাস কখনো ফিরে আসে না, কিন্তু অনেক সময়ই অন্তমিল ঘটায়।’ আর এজন্্যই ইউরোপ আমেরিকা উদারতাবাদ, বাকস্বাধীনতা মানবাধিকারের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হওয়ার পরও কোন নামেই ফ্যাসিবাদ নাৎসিবাদকে প্রশ্রয় দেয় না। কারণ তারা ফিরে বিশৃঙ্খলা সন্ত্রাসে পথধরে কিংবা মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে। তারপর স্বরূপে খেলে ধ্বংস ও রক্তের হোলি খেলা। সরকার গঠন করে হোক কিংবা বিরোধী দল হিসেবে যেরূপেই আসুক, তাদের রক্তে মিশে থাকা ‘জোর যার মুল্লুক তার’ নীতির জাগরণ ঘটাবেই। তাই ফ্যাসিজমের আগমন, মানবতাবাদের মৃত্যুর আয়োজন। তাই পরীক্ষিত ফ্যাসিস্টদের সাথে কোন প্রকৃত বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক আপস করতে পারে না। ফ্যাসিজম ও নাৎসিবাদী একনায়ক স্বৈরাচারদের কঠোরভাবে দমন করলে সরকারের সমালোচনা নয়, বরং দমনে সহযোগিতা করাই সাংবাদিকতার দাবি। এ দাবি পূরণে সাহসী সাংবাদিক, লেখক, কবি ও বুদ্ধিজীবীরা এগিয়ে আসলেই সচেতন হবেন রাজনীতিবিদরা এবং সংগ্রামের শক্তিতে বলীয়ান হবে সর্বস্তরের জনগণ এবং তরুণ ছাত্র জনতা।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, ও কথাসহিত্যিক। ইমেইল: [email protected]