মাস্টার নজরুল ইসলাম

মাহে রবিউল আউয়াল মাসে নবী (সা.)-এর জন্ম হয়েছে এবং ইন্তিকাল করেছেন এ মাসেই। নবীজী (সা.) মুসলমানদের নিকট কলিজার চেয়ে বেশি প্রিয়, হৃদয়ের চেয়েও বেশি নিকট। এ মাসে নবী প্রেমিকগণ তাঁর জীবন নিয়ে সেমিনার-সিম্পোজিয়াম অলোচনা ও চর্চা বেশি করে থাকেন। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। আমাদের দেশের নবীপ্রেমিকগণ গতানুগতিকভাবে তার জন্ম, মৃত্যু, হিজরত, তায়েফের নির্যাতন, বদর, ওহুদ, খন্দক, তাবুকের অভিযান, হুদাইবিয়ার সন্ধি, মক্কা বিজয়ের কাহিনী, হযরত ওমর, বিলাল, আম্মার, খাব্বাব, সালমান ফারসী প্রমুখ সাহাবীগণের ইসলাম গ্রহণ ও তাদের উপর নির্যাতনের কাহিনী সাহিত্যের রসে বর্ণনা করে থাকেন। শ্রোতাগণ এসব আবেগঘন বক্তব্য শ্রবণে আবেগে আপ্লুত হয়ে চোখ দিয়ে অবেগের অশ্রুপাত করে থাকেন। প্রাসঙ্গিকভাবে চার খলিফার শাসনামল নিয়ে বর্ণনা করে থাকেন। বাংলা ভাষায় যেসব সিরাতগ্রন্থ রচিত হয়েছে সবগুলিতে একই বিষয় বার বার ঘুরে ফিরে আলোচিত হয়েছে। অর্থাৎ একই বিষয়, একই বর্ণনা বিভিন্ন আঙ্গিকে সিরাত লেখকগণ করেছেন। এসব গ্রন্থের মধ্যে মাওলানা আকরাম খাঁ রচিত ‘মোস্তফা চরিত’ একটি ব্যতিক্রম রচনা। সিরাত গ্রন্থের আলোচ্য বিষয় নিয়ে আমার আলোচনার বিষয় নয়। আমি অনালোচিত বিষয় নিয়ে কিছু তুলে ধরার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

মহানবী (সা.)-এর জীবন একটি মহাসাগরের সমতুল্য। মহাসাগর থেকে যতই পানি সিঞ্চন করুন না কেন পানির উচ্চতার কোনো পরিবর্তন হয় না। তদ্রুপ মহানবীর (সা.) জীবনী যতই আলোচনা করুন আলোচনা করে শেষ করা যাবে না। মুসলমানদের নিকট মহানবীর (সা.) জীবনী অবিকৃত থাকার পরেও বাংলাদেশের মুসলমানেরা তার পবিত্র জীবন থেকে কোনো বৈষয়িক ফায়দা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা গ্যারান্টি দিয়ে বলেছেন, ‘মুহাম্মাদ (সা.) মুসলমানদের জন্য উসওয়াতুন হাসানা’। উসওয়াতুল হাসানাকে অনুসরণ ও অনুকরণ করলে পৃথিবীতে মুসলমানদের জন্য সাফল্য আসবে একথা আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন (আরাফ)। এখন যদি প্রশ্ন করা হয় পৃথিবীর সব চাইতে পবিত্র ও মূল্যবান গ্রন্থ কোনটি ? উত্তরে বলবে পবিত্র কুরআন। শ্রেষ্ঠ নবী কে ? জবাব দিবে মহাম্মাদ (সা.)। শ্রেষ্ঠ জাতির নাম কি? উত্তরে বলবে মুসলমানগণ। আবার যদি প্রশ্ন করা হয়, সবচাইতে অবহেলিত গ্রন্থ কোনটি? অর্থাৎ না বুঝেই কোন গ্রন্থটি বেশি পাঠ করা হয় এবং যে গ্রন্থের কোনো বাস্তব আমল হয় না? জবাব হবে পবিত্র কুরআন।

পৃথিবীর সবচেয়ে নির্যাতিত জাতির নাম কী? জবাব দিবে মুসলিম জাতি। তাহলে পৃথিবীর সবচাইতে উৎকৃষ্ট গ্রন্থ যাদের হাতে আছে, যারা শ্রেষ্ঠ নবীর শ্রেষ্ঠ উম্মাত, তারা কেন আজ সবচেয়ে গরীব, নির্যাতিত, নিগৃহীত, অবহেলিত জাতি? এর সঠিক উত্তর হবে বিজ্ঞানময় কুরআন শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ হয়েও আজ মুসলমানেরা কুরআনকে বুঝে পড়ার প্রয়োজন মনে করে না। কুরআন অনুধাবন করা, কুরআন নিয়ে গবেষণা করে জীবন সমস্যার সমাধান গ্রহণ করা ভুলে গেছে। বিপরীতে তারা জীবন সমস্যার সমাধানের জন্য পশ্চিমা দর্শনের নিকট হাত পেতে যা পেয়েছে তাই দিয়ে তাদের জীবন সমাজ ও রাষ্ট্রকে সাজিয়েছে। মুসলমানদের নিকট পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ ও শ্রেষ্ঠ নবীর জীবন চরিত মজুত থাকার পরে মুসলমানেরা দুটি বিষয়কে পৃথিবীবাসির নিকট উপযুক্তভাবে উস্থাপন করতে না পাড়ার কারণে আজকে সমগ্র পৃথিবী মহাসঙ্কটে নিপতিত এবং সেই সাথে মুসলমানেরা মহাবিপর্যয়ে নিমজ্জিত।

আল্লাহ বলেন, ‘এটি একটি বরকতময় গ্রন্থ, যা আমি তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে লোকেরা তার আয়াত সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে এবং জ্ঞানী ও চিন্তাশীলেরা তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে (সোয়াদ-২৯)।’ আজকে মুসলমানেরা দশটি নেকীর জন্য তোতা পাখির মত কুরআন তিলাওয়াত করে থাকে। তোতা পাখি জানে না সে কী বলছে বা উচ্চারণ করছে, ঠিক মুসলমানেরা জানেই না পবিত্র কুরআনে কী ম্যাসেজ আল্লাহ মানুষের জন্য পাঠিয়েছেন। আল্লাহ বলেছেন এ কুরআন হলো মানবের মুক্তির একমাত্র হেদায়াত। ‘এই কিতাব আমি তোমার প্রতি নাযিল করেছি যাতে তুমি মানব জাতিকে অন্ধকার হতে বের করে আনতে পার আলোর দিকে, তাঁর পথে যিনি পরাক্রমশালী সর্বপ্রশংসিত ; ইবরাহীম-১।’ সাধারণ মুসলমান সহ অনেক আলেম মনে করেন যে, এ কিতাব মহানবী (সা.) সকাল বিকালে সুর করে তিলাওয়াত করতেন আর আরবের তৎকালীন বৈষয়িক শক্তির দ্বারা তিনি আরব উপদ্বীপ সহ পারস্য ও রোমান সম্রাজ্য জয় করে শান্তি ফিরিয়ে এনেছিলেন।

জীবন চলার পথে মুসলমানেরা কুরআনের অনুসরণ করা ভুলে গেছে, তারা জানেই না এটা একমাত্র অনুসরণযোগ্য গ্রন্থ। তারা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে মহানবীর (সা.) আদর্শের পরিবর্তে পাশ্চাত্যের দর্শন অনুসরণ করে থাকে। কুরআন প্রণীত ও মহানবী (সা.) এর প্রদর্শিত অর্থনীতির ব্যবস্থা শ্রেষ্ঠ অর্থনীতিক ব্যবস্থা। বর্তমানের মুসলিম বিশ্বে কোনো দেশই মহানবী (সা.) প্রদর্শিত অর্থনীতি মেনে চলছে না। ফলত মুসলিম দেশগুলি পাশ্চাত্যের দেশগুলির কাছে দেউলিয়া হয়ে গেছে। সুদের বেড়াজালে মুসলিম দেশগুলি পশ্চিমাদের নিকট আষ্টেপৃষ্টে বাধা পড়েছে। ব্যাংক ব্যবস্থা, ব্যবসা বাণিজ্য, কৃষি অর্থনীতি, শিল্প অর্থনীতি, শ্রমিক মালিক সম্পর্ক, লাভ লোকসানের ভিত্তিতে পরিচালিত অর্থব্যবস্থা, অর্থের সুষম বন্টন ইত্যাদি মহানবীর(সা.) আদর্শে বিরাজমান থাকার পরে মুসলমানেরা এসব বিষয়গুলি পরিচালনার জন্য পশ্চিমাদের অনুসরণ করে থাকে। আমাদের প্রশাসনিক ব্যবস্থা, রাষ্ট্র ব্যবস্থার মূলনীতি মহানবীর আদর্শে থাকার পরেও মুসলমানেরা বৃটিশ ব্যবস্থার দ্বারা শাসিত হচ্ছে। অথচ আল্লাহ তায়ালা জোর দিয়ে বলেছেন, ‘মহানবীর জীবনে রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ।’ ‘রাসূল তোমাদের যা দিয়েছেন তা গ্রহণ কর এবং রাসূল যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাক (আল কুরআন)।’

উপমহাদেশের মুসলিম দেশ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি অন্ধের মতো পশ্চিমাদের দেওয়া রাষ্ট্র, প্রশাসন, অর্থ ব্যবস্থার অনুসরণ করে আসছে। এসব দেশগুলি বৃটেন, ফ্রান্স, ইটালি, জার্মানী, ওলন্দাজ প্রভৃতি ইউরোপীয় দেশের কলোনী থাকার কারণে তাদের নীতি রীতি ও আদর্শ এসব দেশে চালু করেছিল। মুসলিম দেশগুলি স্বাধীনতার দীর্ঘকাল পরে নিজেদের আঙ্গিকে রাষ্ট্র, প্রশাসন, বিচার, পুলিশ, সামরিক ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন করতে পাড়লোনা তা বিরাট প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। বৃটিশ প্রবর্তিত সুদভিত্তিক ব্যাংক ও অর্থব্যবস্থা আমরা কেন চালু রাখবো? বাংলাদেশের ব্যাংক ব্যবস্থা ইসলামী করনের এক উজ্জল দৃষ্টান্ত হয়ে আছে ইসলামী ব্যাংকের দ্বারা। দেশের সকল ব্যাংককে ইসলামী করনের উদ্যোগ আমরা সহজেই নিতে পারি। পৃথিবীর অনেক দেশ বিশেষ করে ইউরোপের কোনো দেশেই বৃটিশ ব্যবস্থা চালু নেই।

তাই আমরা কেন তাদের পুরাতন ব্যবস্থা চালু রাখবো? ইতালী, জার্মানী, রাশিয়া, আমেররিকা প্রভৃতি দেশ নিজ নিজ উদ্ভাবিত পদ্ধতি অনুসরণ করে। আমরা কেন নিজেদের উদ্ভাবিত রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তন করতে পারবো না? প্রশ্ন আসতে পারে আমাদের উদ্ভাবিত পন্থা কোথায় পাব? বৃটিশেরা অধিকারের পূর্বে নবাবী আমলে একটা প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও অর্থব্যবস্থা এদেশে ছিল। আমরা কতজন সে ব্যবস্থার কথা জানি? আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ও ইতিহাসে সেসব বিষয় নিয়ে কোনো আলোচনাই নেই। বৃটিশেরা তাদের নীতি চালু করার জন্য নবাবী আমলের শাসন, প্রশাসনিক ও অর্থব্যবস্থা সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা সেই ইতিহাসও মুছে দিয়েছে। আমরা এতবছর পরে কেন সেসব অতীতের বিষয়গুলি উদ্ধার করতে পারলাম না? আমরা আজও কেন বৃটিশের প্রবর্তিত শিক্ষাব্যবস্থা ঘষামাজা করে চালাচ্ছি? কারণ আমরা একটা স্বাধীন শিক্ষা কমিশন গঠনের জন্য নবী মুহাম্মাদ (সা.) এর জীবন থেকে শিক্ষা নেই নি। সাতচল্লিশ এবং একাত্তরের পরে শাসকগোষ্ঠী স্বৈরাচারী কায়দায় দেশ চালানোর কারণে এসব নিয়ে ভাবার সময় পায়নি। নবী মুহাম্মাদ (সা.) এর জীবনী আলোচনা কালে কেমন করে নবীজীর প্রশাসনিক নীতি, শিক্ষানীতি, অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি ইত্যাদি পুনরুজ্জীবিত করতে পারি এবং যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ইজতিহাদের মাধ্যমে আধুনিকীকরণ করা যায় তা অলোচনা করে জনগণের মাঝে এসব নীতি গ্রহণের আবেগ ও উদ্যোগ জাগ্রত করতে পারি। বৃটিশের প্রণীত প্রশাসনিক কাঠামোর অনুসরণ আমাদেরকে কখনই স্বনির্ভর ও কল্যাণমূলক জাতিতে পরিণত করবে না। বৃটিশ প্রণীত প্রশাসনিক কাঠামোকে প্রভু ও ভৃত্যের সাথে তুলনা করা যায়। এখানে প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ নিজেদেরকে জনগণের সেবকের পরিবর্তে প্রভু মনে করেন। আর জনগণ তাদের নিকট হয়ে যায় দাস বা প্রজা। চিন্তা করে দেখুন দেশের একজন সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা রাষ্ট্রকর্তৃক কত রকম সুযোগ সুবিধা নেয় আর তাদের জন্য সুযোগ সুবিধার উপাদান সরবরাহকারি জনগণ তাদের কাছে দাসতুল্য। তারা থাকেন রাজধানীর সুউচ্চ আলীশান আধুনিক সুবিধাযুক্ত দালানে, রাস্তাঘাট কংক্রিটের তৈরি, চলাচল করেন এসি যুক্ত গাড়িতে, কাজ করেন আটঘন্টা যার চারপাঁচ ঘন্টা কাটে আরাম আয়েশে। তাদের সুযোগ-সুবিধা সরবরাহকারি জনতা থাকে গ্রামেগঞ্জের ধূলি আর কাদামাখা রাস্তার ধারে মাটির নির্মিত ঘরে। আধুনিকতার কোনো সুযোগ তারা ভোগ করতে পারে না। তারা সারাবছর নিজ উদ্যোগে উৎপাদন করে চলে আর উৎপাদিত পন্যের ন্যায্য মূল্যটুকু পায় না। পক্ষান্তরে যারা ঢাকায় থাকেন সরকারি চেয়ারে বসে হুকুম জারি করেন তারা বছর শেষে বিনোদনের জন্য ছুটি পান এবং ছুটি কাটানোর জন্য ভাতা পেয়ে থাকেন। এসব ব্রিটিশের রেখে যাওয়া আবর্জনা।

নবীজী (সা.) এর প্রণীত প্রশাসনিক কাঠামোতে একজন কর্মকর্তা হলেন একজন উত্তম আমানতদার এবং জনগণের উত্তম সেবক। কিভাবে আমরা নবীজীর সুন্নাহ বিশ্লেষণ করে ও গবেষণা করে সেই রকম একটি প্রশাসনিক কাঠামো দাঁড় করানো যায় তার একটা বাস্তব চিত্র সীরাত মাহফিলে উন্মোচিত করা দরকার আলেমদের পক্ষ থেকে। অনুরূপভাবে বৃটিশেরা এ জাতিকে বিভিন্ন মত ও পথে বিভক্ত করার জন্য শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করে গেছে। উদাহরণ স্বরূপ একজন পিতার চারটি সন্তানের একজনকে সাধারণ শিক্ষায়, একজনকে কওমী শিক্ষায়, একজনকে আলীয়া শিক্ষায় এবং একজনকে কারিগরি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেন এবং দশবছর পরে এই পিতার চার সন্তানকে ন্যূনতম একটি বিষয়ে একমত করতে চাইলে ব্যর্থ হবেন। বেশি ব্যাখ্যার দরকার নেই। বিভিন্ন মতের এরকম হাজারো নাগরিকের দ্বারা দেশের কোনো সমস্যার সমাধানের জন্য ঐক্যবদ্ধ করা যাবে না, ফলে দেশ উন্নয়নে পিছিয়ে যাবে। দেশের নাগরিকদের ঐক্য বিনষ্ট হবে।

বলাই বাহুল্য এরকম অনৈক্য জতি নিয়ে বেশি দূর এগুনো যায় না। শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে কিভাবে জাতিকে ঐক্য বদ্ধ করা যায় এবং ন্যূনতম একটা শ্রেণী পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীকে এক মলাটের সিলেবাস পড়ানো যাবে এবং উচ্চশিক্ষা স্তর এবং বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষা কোন পর্যায় থেকে পড়ানো হবে তা মহানবী (সা.) এর সুন্নাহ বা তার প্রণীত শিক্ষা থেকে উদঘাটন করতে হবে। শিশু শ্রেণী থেকে সর্বশেষ শ্রেণী পর্যন্ত কুরআন ও হাদিসের ন্যূনতম সিলেবাস বাধ্যতামূলক থাকবে পাঠ্যসূচিতে। এভাবে মুসলমানদের ঈমান আমল বিশ্বাস আখলাখের মান উন্নয়নের জন্য দেশ সেরা মেধাবী আলেম, দেশ সেরা মেধাবী গবেষকের সম্বন্বয়ে একটি শক্তিশালী কমিশন তৈরি করে তাদের দ্বারা প্রশাসনিক ব্যবস্থার সংস্কার, শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার, অর্থনীতির সংস্কার, ব্যাংক ব্যবস্থার সংস্কারের রূপরেখা তৈরি করে তা বাস্তবায়ন করলে অল্পদিনের মধ্যে মুসলিম উম্মাহ সমৃদ্ধি অর্জন করবে। আমার প্রবন্ধে সামান্য একট ধারণা দিলাম। এ সংস্কার কাজে দেশের মেধাবী আলেমগণকে এগিয়ে এসে জনমত তৈরি করে সরকারকে বাধ্য ও সহযোগিতা করতে হবে। সীরাত সম্মেলনে যদি গতানুগতিকতা পরিহার করে, নবীজী (সা.) প্রণীত রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় উপাদানগুলি গবেষণার মাধ্যমে অর্জন করে জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে ও জনমত তৈরি করতে সক্ষম হয়, তাহলে জনগণই একদিন সিদ্ধান্ত নিবে দেশ মেরামত করে শরিয়া বাস্তবায়নে জন্য। সীরাত সম্মেলন যেন উম্মাকে সেই দিকে ধাবিত করে সেই তাওফিক কামনা করি।

লেখক : শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক।