আছিয়া নামের আট বছরের এক শিশু, বয়োসন্ধিক্ষণে পৌঁছতে যার আরো প্রায় ৫/৬ বছর বাকী, তার পর বিয়ের বয়স হলে তার বিয়ে হবে এবং আমাদের কারুর মা হবে এবং ধরিত্রিকে ধারণ করবে; এটাই ছিল আছিয়া ও তার মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজন এবং দেশবাসীর স্বপ্ন। মেয়েরা মায়ের জাতি, এ অর্থে আছিয়া ছিল আমাদের সকলেরই মা। এ ছোট্ট মা আছিয়া মাগুরা জেলা শহরের উপকণ্ঠে জিনান্দুয়ালি নামক গ্রামে গত ৬ মার্চ মোতাবেক ৫ রমযান তার বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। এই বয়সে মুসলিম ছেলে মেয়েদের যেমনি উচ্ছ্বাস থাকে তেমনি হয়ত তারও আশা ছিল বোনের সাথে কয়েকটি রোযা রাখবে, এক সাথে আনন্দের সাথে বোন ভগ্নিপতির সাথে সেহরী ও ইফতারে অংশগ্রহণ করবে। কিন্তু এ নিষ্পাপ শিশুটি যে ঐ বাড়িতে নরপিশাচ কিছু আত্মীয়ের যৌন লিপ্সার শিকার হয়ে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণ করবে কেউ কি তা জানতো?

শিশু আছিয়ার পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী আছিয়াকে দলবদ্ধভাবে তার ভগ্নিপতি সজিব হোসেন (১৮), বোনের শ্বশুর বিটু শেখ (৪৮) এবং দেবর (১৭) দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করেছে। তাকে প্রথমে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়ানো হয় এবং তার ভগ্নিপতি কোলে করে তাকে একটি কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে তিন পাষণ্ড তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, এমনকি ব্লেড দিয়ে তার অঙ্গচ্ছেদও করা হয়। এ কাজে তাদের সামগ্রিকভাবে সহযোগিতা করেছে তার বোনের শাশুড়ি মাতৃতুল্য জাবেদা বেগম (৪০)। তাদের বাপ-বেটা তিনজনের জঘন্য অত্যাচারে শিশু আছিয়া অজ্ঞান হয়ে যায় এবং এ ঘটনা জানাজানি হয়ে যাবার পর এ নৃশংসতা ও ব্যভিচারের প্রতিবাদে সারাদেশ উত্তাল হয়ে উঠে। চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা সেনানিবাসের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অদৃষ্টের পরিহাস চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা করেও আছিয়াকে সুস্থ করতে পারেননি। গত বৃহস্পতিবার আছিয়া দেশবাসীকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। তার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানসহ দেশের শীর্ষ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে সকল স্তরের নেতানেত্রীরা শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন। অপরাধীদের শাস্তির দাবি এবং এমন পৈশাচিক ঘটনার নিন্দা জানানোর লক্ষ্যে জামায়াতের মহিলা শাখার তরফ থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচিও পালন এবং আছিয়ার রূহের মাগফিরাত কামনা করা হয়েছে। আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সাতদিনের মধ্যে আছিয়ার ধর্ষণ মামলার কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন।

বাংলাদেশে ধর্ষণ-ব্যভিচারের ইতিহাস ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শাসনের ইতিহাসের সাথে অত্যন্ত ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখানে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারের সহযোগী ও অঙ্গ সংস্থাগুলো মিলে সরকারি দলের নেতানেত্রীরাই ধর্ষণ-ব্যভিচারের ন্যায় অনৈতিক কাজে উৎসাহ যুগিয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জনৈক ছাত্রলীগ নেতার ধর্ষণের সেঞ্চুরী পালনের কথা দেশবাসী এখনো ভুলেনি। শেখ হাসিনার সরকার ঐ জঘন্য অপরাধীকে শাস্তি না দিয়ে পুরস্কার হিসেবে কানাডা পাঠিয়ে দিয়েছিলে। এমসি কলেজে স্বামীকে বেঁধে নববধূকে ধর্ষণকারী ছাত্র ও যুবলীগ নেতাদেরও বিচার করা হয়নি। ২০১০/১১ সালে ইডেন কলেজ, আনন্দমোহন কলেজ ও বদরুন্নেছা কলেজের ছাত্রীরা প্রেস কনফারেন্স করে তাদের সম্ভ্রমহানির জন্য ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের দায়ী করে দেশবাসী ও সরকারের কাছে তাদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে বিচার দাবি করেছিলেন। তারা এও জানিয়েছিলেন যে, ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাদের কথামত তাদের রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী ও বিদেশীদের শয্যাসঙ্গী হতে অস্বীকার করলে তারা প্রচণ্ড মারধরের শিকার হতেন, এমনকি হোস্টেলের সীট পাবার শর্ত হিসেবে তারা তাদের নির্দেশ মানতে বাধ্য হতে হতো। আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয় পদ পেতে হলে মহিলা নেত্রীদের অনৈতিক কাজ করা বাধ্যতামূলক ছিল বলে পুরানা ঢাকার ওয়ার্ড পর্যায়ের এক নেত্রী সামাজিক মাধ্যমে লাইভে এসে অভিযোগ করেছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট না দেয়ার সন্দেহে বিএনপিপন্থী একটি পরিবারের পাঁচ সন্তানের মা এক মহিলাকে যুবলীগ/আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গণধর্ষণ করেছে। একই অজুহাতে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি ও পিরোজপুরসহ দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় অনুরূপ জঘন্য ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার বিচার করাতো দূরের কথা অপরাধগুলোকে আমলেই আনেননি। আওয়ামী আমলে ধর্ষণ, ব্যভিচার ও অনৈতিকতার চাষ বর্তমানে এমন অবস্থার সৃষ্টি করেছে যে, আমাদের দেশের নারীরা তাদের সম্ভ্রম, সম্মান ও মর্যাদা এমনকি জীবনও হারাতে বসেছেন। ফলে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যারা সেদিনও শরীয়া আইনের বিরোধিতা করেছেন তারাও আজ অপরাধীদের দোররা মারা ও শরীরের অর্ধেক মাটিতে পুঁতে পাথর মেরে হত্যা করার আইন বাস্তবায়নের দাবি তুলেছেন।

এখন আরেকটি মারাত্মক ঘটনার কথা বলি যা আমাদের অবস্থানকে পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট পর্যায়ে নিয়ে গেছে। কয়েকদিন আগে আমাদেরই এক দ্বীনি বোন সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় একজন দা’য়ী পুষ্পিতা নামের স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ তার ওয়ালে, ‘ধর্ষণের রকমভেদ...’ শিরোনামে দেয়া পোস্টে একটি মর্মান্তিক ঘটনা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ১২ বছর বয়সী কন্যাকে চার বছর ধরে ধর্ষণ করে যাচ্ছে তার আপন পিতা। মেয়েটির মা নিয়ে এসেছিল। কাজ করে গার্মেন্টসে। দুই মেয়ে এক ছেলে। ছোট্ট এক ঘরে থাকে। সেখানেই বড় মেয়েকে নিজের পিতা এভাবে নিপীড়ন করে যাচ্ছে। আমার প্রথমে বিশ্বাস হয়নি। পরে আরো ক্লোজলি মা মেয়ে দু’জনের সাথে কথা বললাম। ঘটনা পুরোপুরি সত্য। এ ধর্ষণ ঠেকাবেন কিভাবে?

এটা কি একেবারে নতুন কিছু? অনেক আছে। আমার-আপনার কাছে আসে না এমন খবরই মিনিমাম ৯৯%। নিজের আপন ভাইয়ের হাতে হচ্ছে, সৎ পিতার হাতে হচ্ছে অহরহ। বোনের স্বামীর কাছে তো একেবারে ডালভাত। উচ্চবিত্ত থেকে একেবারে অসহায় নিম্নবিত্ত সব জায়গায় ঘটে চলেছে। উচ্চবিত্তদের কিছু ঘটনা পেয়েছি, স্বামী উন্নতির সিঁড়ি হিসেবে নিজের অপরূপা স্ত্রীকে ব্যবহার করছে এবং নিয়মিত ধর্ষিতা হচ্ছে মেয়েটি। খবরগুলো কি আমরা পাই? একেবারেই না। পুষ্পিতা আরো অনেকগুলো পিলে চমকানোর ঘটনা তুলে ধরেছেন যা আমাদের সমাজ ব্যবস্থাকে তিলে তিলে ধ্বংস করে আল্লাহর গজবের দিকে ত্বরিৎ গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে শুশ্রী ছেলেদের ধনাঢ্য বিবাহিতা নারী কর্তৃক ব্যবহার। তিনি প্রশ্ন করেছেন এগুলো বন্ধ করা কি সম্ভব....?

তার প্রশ্নের জবাবে যাবার আগে প্রাসঙ্গিকভাবে পাঠকদের আরেকটা ঘটনা বলি। সময়টা ছিল ১৯৮৪ সালের মাঝামাঝি সময়ের। আমি তখন বৃটিশ কাউন্সিলের বৃত্তি নিয়ে ইংল্যান্ডে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে ব্রত। ঐ সময় বৃটিশ উচ্চ আদালতের একটি রায় সমগ্র বৃটিশ দ্বীপপুঞ্জে প্রচণ্ড ঝাঁকুনির ন্যায় একটি টালমাটাল অবস্থার সৃষ্টি করেছিল। এতে এ প্রাচীন সভ্য ও শক্তিধর দেশটির সভ্যতার বৃহৎ, মাঝারি ও ক্ষুদ্র সকল খুঁটিগুলোর ভিত কেঁপে উঠেছিল। ঘটনাটি ছিল এরকম :

একজন বৃটিশ মা সে দেশটির স্বাস্থ্য দফতরের একটি সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে আদালতে একটি মামলা করেছিলেন। স্বাস্থ্য দফতর তার এ সিদ্ধান্তে স্কুলগামী অবিবাহিতা মেয়েদের মায়ের অনুমতি ছাড়াও অজ্ঞাতে কনটাসেপটিভ বা জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী বিতরণের অনুমতি দিয়েছিলেন। মা এটি সহ্য করতে পারেননি। তিনি আদালতে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেন। দীর্ঘ এগারো বছর পর আদালত তার পক্ষে রায় দেন এবং স্বাস্থ্য বিভাগকে এ মর্মে নির্দেশনা প্রদান করেন যে মায়ের অনুমতি ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরা অবিবাহিতা কোনো মেয়েকে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী প্রদান করা যাবে না। এ রায় প্রকাশ হবার পর দেশটির পত্র-পত্রিকাগুলো এর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ঐতিহ্যবাহী গার্ডিয়ান পত্রিকা তিন কলামব্যাপী একটি সম্পাদকীয় নিবন্ধে এ রায়ের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, এর ফলে বৃটেনের বহু খান্দানি পরিবারের সম্মানিত ব্যক্তি রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী এমনকি গির্জার আধিকারিকরাও তাদের মান-মর্যাদা হারাবেন। এর প্রধান কারণ রহপবংঃ তথা নিকটাত্মীয় যেমন পিতা-কন্যা, মাতা-পুত্র, ভাই-বোন প্রমূখের মধ্যে যৌনাচার বৃটিশ সমাজব্যবস্থার অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এ রায় সংশ্লিষ্ট ভদ্রলোকদের মুখোশ উন্মোচন করার পথে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

এটা ছাড়াও আশির দশকের মাঝামাঝি বৃটিশ সমাজে ধর্ষণপ্রবণতা মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল। মেয়েদের নিরাপত্তা সাংঘাতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে যখন তখন মেয়েদের ওপর হামলা এবং তাদের ধর্ষণান্তে ধর্ষণকারীদের বিদ্যুৎবেগে পলায়ন অনেকটা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বৃটিশ সংবাদ মাধ্যমে এই ধর্ষণকারীদের নাম দেয়া হয়েছিল মি. ফক্স। পুলিশী তৎপরতায় এ ফক্সদের কয়েকজন ধরাও পড়েছিল। বৃটিশ সরকার এর কারণ অনুসন্ধানের জন্য একটি তদন্ত কমিশনও গঠন করেছিলেন। তদন্ত কমিশন তার রিপোর্টে ধর্ষণ-ব্যভিচারের জন্য দায়ী কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছিলেন। তার মধ্যে ছিল লন্ডনের সিনেমা হল ও সড়ক পথসমূহে প্রদর্শিত পিপশো, অশ্লীল ও নারী-পুরুষের উলঙ্গ ছবিসংবলিত ম্যাগাজিন, ট্যাবলয়েড পত্রিকাসমূহে প্রকাশিত উলঙ্গ ছবি, পারিবারিক ও সামাজিক শিক্ষা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নৈতিক শিক্ষার অভাব প্রভৃতি। বৃটিশ সরকার এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য কিছু কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন, যা আমি নব্বই এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে আমার অন্য এক সফরে প্রত্যক্ষ করেছি।

এখন ধর্ষণ ও জেনা-ব্যভিচারের প্রশ্নে আসি। আছিয়ার মৃত্যু আমাদের সমাজের মারাত্মক ব্যাধির ব্যাপারে এ প্রথমই যে আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে তা নয় এর বিস্মৃতি ব্যাপক ও সর্বগ্রাসী। এ অবস্থা থেকে সমাজকে উদ্ধার করতে না পারলে জাতি হিসেবে আমরা অস্তিত্ব হারাবো। কিন্তু উদ্ধারের পন্থা কী? প্রচলিত ব্যবস্থা এর কোনো সমাধান দিতে পারে না। পারবেই বা কিভাবে। সমস্যার মূল উৎপাটন না করলে সমস্যা থেকেই যাবে। ধর্ষণ-ব্যভিচারের উপকরণ এখন কোথায় নেই? টেলিভিশন, সিনেমা, নাটক, উপন্যাস, ইউটিউব, ফেইসবুক, পত্র-পত্রিকা, ম্যাগাজিন সর্বত্র এর ছড়াছড়ি। ইদানিং বয়ফ্রেন্ড, গার্লফ্রেন্ড-এর অসভ্য রীতির প্রচলন ও তাদের মধ্যে আলিঙ্গন, চুম্বন, নগ্নদেহের প্রদর্শন মুসলিম এ দেশটিতে পাশ্চাত্য ও প্রতিবেশী মুশরিক সংস্কৃতির প্রভাবে এগুলোতে স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়ে গেছে।

আমার দৃষ্টিতে শরিয়া আইনের প্রয়োগই হচ্ছে এ সমস্যার উপযুক্ত সমাধান। যারা অপরাধী তাদের অবশ্যই শাস্তি দিতে হবে। সদিচ্ছা থাকলে জাতির স্বার্থে প্রচলিত ফৌজদারি দণ্ডবিধি সংশোধন করে ইসলামী দণ্ডবিধির চালু এবং উকিল-মোক্তারের মারপ্যাঁচে না গিয়ে ভিক্টিম তার বা তাদের অভিভাবকদের সাক্ষ্য, প্রত্যক্ষদর্শী ও পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে কাজির বিচারের ন্যায় ৯০ দিন, ১২০ দিন নয় এক সপ্তাহের মধ্যেই বিচার কাজ সম্পন্ন করা যায়। আফ্রিকান কয়েকটি দেশে এ ধরনের বিচারব্যবস্থা চালু আছে এবং মামলার চাপ অনুযায়ী দিনে দিনেই তারা বিচার কাজ শেষ করতে পারেন। পাশাপাশি অপরাধ রোধের জন্য সর্বস্তরে নৈতিক শিক্ষা বিশেষ করে কুরআন-হাদিস চর্চা বাধ্যতামূলক করা অপরিহার্য। এ ব্যাপারে ইসলামী দলগুলো ধর্ষণ-ব্যভিচার প্রতিরোধে নিম্নোক্ত ছয়টি ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারেন।

১. ধর্ষণ-জেনা-ব্যভিচারের সর্বোচ্চ শাস্তি জনসম্মুখে নিশ্চিত করা

২. পর্নোগ্রাফির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা

৩. মাদকদ্রব্যের অবাধ প্রাপ্তি ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা

৪. নারীর অশ্লীল উপস্থাপনা ও তাদের পণ্য হিসেবে ব্যবহার রোধ করা

৫. আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ ও হস্তক্ষেপমুক্ত বিচার নিশ্চিতকরণ

৬. নারীর মর্যাদা ও অধিকার সংরক্ষণে কুরআন-হাদিসের শিক্ষাসমূহ পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করা

সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে মানুষের লজ্জাশীলতা। লজ্জা ঈমানের অঙ্গ। লজ্জা না থাকলে ঈমান থাকে না। আমরা আমাদের ঈমানের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটি হারিয়ে ফেলছি। একটি উর্দু কবিতার দুটি ছত্র উদ্ধৃত করে আজকের আলোচনা শেষ করতে চাই। ছত্র দুটি হচ্ছে : ‘আও হায়া আও পাছবানে আব্রু নেকউঁকি কুওতে বাজ হায় তু।’ অর্থাৎ হে লজ্জা, হে মান-সম্ভ্রমের ঢাল, তুমি হচ্ছ সৎ কাজ ও শরাফতের শক্ত বাহুবল।