নেপালে হঠাৎ করেই জেন জি নামে পরিচিত তরুণ বিক্ষোভকারীদের আন্দোলনের পর সরকারের পতন ঘটে। দায়িত্ব গ্রহণ করেন একটি অন্তর্বর্তী সরকার। অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী সুশিলা কার্কির মন্ত্রিসভায় নতুন চার মন্ত্রী শপথ নিয়েছেন। এতে দেশটির মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো আটজনে। এটা মন্ত্রিসভার স্বাভাবিক আকার নয়, বেশ ছোট। অন্যদিকে জেন জি আন্দোলনের সময় পদত্যাগ করা প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি জনসমক্ষে ফিরে রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে শুরু করেছেন। কথা বলেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তারা কেউ সরকারে, কেউ বিরোধী দলে ছিলেন। আর দেশটি নির্বাচনের ধারায় ফিরছে। সে আলামত এসব খবরে স্পষ্ট।
জেন-জিদের নেতৃত্বে বিক্ষোভের মুখে কেপি শর্মা ওলির সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশিলা কার্কি। পরিস্থিতি বাংলাদেশের গণ অভ্যুত্থানের মতোই। তবে সেখানে ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচন দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নতুন সরকার।
নেপালের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরেই নানা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে চলছে। গণতান্ত্রিক রূপান্তরের ইতিহাস, মাওবাদী সশস্ত্র সংগ্রাম থেকে শান্তি চুক্তি, রাজতন্ত্রের অবসান এবং ২০১৫ সালের নতুন সংবিধান, এসব মিলিয়ে দেশটির রাজনৈতিক দৃশ্যপট আজ এক জটিল গতি অর্জন করেছে। সম্প্রতি যে প্রবল রাজনৈতিক ঘূর্ণি হাওয়া বইছে, সেটি কেবল নির্বাচনী প্রতিযোগিতার ভেতর সীমাবদ্ধ নয়; এটি সামাজিক, অর্থনৈতিক, এমনকি আন্তর্জাতিক সম্পর্ককেও গভীরভাবে নাড়া দিচ্ছে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত। এ ঘূর্ণি হাওয়ার মূল বৈশিষ্ট্য হলো অনিশ্চয়তা, জোটভিত্তিক সরকার, তরুণ প্রজন্মের অসন্তোষ, নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান, এবং প্রচলিত দলগুলোর প্রতি আস্থাহীনতা। এর প্রভাব নেপালের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় সুদূরপ্রসারী।
সর্ব সাম্প্রতিক খবর, রাজনীতিবিদরা খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসছেন। বক্তব্যও রাখছেন। নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের (সিপিএন -ইউএমএল) চেয়ারম্যান কে পি শর্মা অলি ঘোষণা দিয়েছেন, নেপালকে বর্তমান সরকারের হাতে ছেড়ে দিয়ে তিনি পালাবেন না। চলতি মাসের শুরুর দিকে জেন-জিদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। নেপালের ভক্তপুরের গুন্ডু এলাকায় ইউএমএলের যুব শাখার এক সমাবেশে অলি এ কথা বলেন। দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে অলি বলেন, ‘আমরাই এ দেশ গড়ে তুলব। আমরা দেশকে আবার সাংবিধানিক ধারায় ফিরিয়ে আনব, শান্তি ও সুশাসন ফিরিয়ে আনব।’ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ছাড়ার ১৮ দিন পর এটি ছিল অলির প্রথম প্রকাশ্য বক্তৃতা। ৯ দিন নেপালের সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা সুরক্ষায় থাকার পর ১৮ সেপ্টেম্বর তিনি গুন্ডুতে ভাড়া বাসায় গিয়ে ওঠেন। এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর আন্দোলনকারীরা ভক্তপুরের বালকোটে তাঁর ব্যক্তিগত বাসভবন পুড়িয়ে দেন। নেপালের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকির নেতৃত্বাধীন সরকারকে জনসমর্থনহীন সরকার বলে আখ্যা দিয়েছেন কে পি শর্মা অলি। অলি বলেন, ‘এই সরকার জনগণের ভোটে নয়; বরং লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে।’
অন্যদিকে বর্তমান সংকট মোকাবেলায় রাজনৈতিক ঐক্যের উপর জোর দিয়েছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারী। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে রাজনৈতিক ঐক্য বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার মূল চাবিকাঠি। এক অনুষ্ঠানে প্রাক্তন রাষ্ট্রপ্রধান দেশকে বর্তমান সমস্যা থেকে বের করে আনার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে সিপিএন (ইউএমএল)-এর ভাইস চেয়ারম্যান যুবরাজ জ্ঞানালি প্রাক্তন রাষ্ট্রপ্রধানকে সমর্থন করে বলেন, সংকটময় সময়ে জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য। তিনি আসন্ন নির্বাচনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য সকল রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানান। সদ্য বিদায়ী সরকারের অংশীদার নেপালি কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় সদস্য উমেশ জং রায়মাঝি ঘোষণা করেন যে তার দল পরিষ্কার দলীয় সংগঠন নিশ্চিত করার জন্য একটি প্রচারণা শুরু করবে। প্রাক্তন প্রধান নির্বাচন কমিশনার নীলকান্ত উপ্রেতি বলেছেন, সম্পূর্ণ আনুপাতিক নির্বাচনী ব্যবস্থা গ্রহণ রাজনৈতিক বিবাদ দূর করতে এবং স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সহায়তা করতে পারে। ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর অধ্যাপক ড. খড়গ কেসি মন্তব্য করেছেন যে রাজনৈতিক দলগুলির জন্য এটিই সবচেয়ে ভালো সময়। জাতীয় তদন্ত বিভাগের প্রাক্তন প্রধান দেবীরাম শর্মা নির্বাচনের আগে পুলিশের মনোবল বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। সাংবাদিক কনক মণি দীক্ষিত জোর দিয়ে বলেছেন যে জেনারেশন-জেড বিক্ষোভের সুষ্ঠু তদন্ত পরিচালনা করা দায়মুক্তি রোধ করার জন্য অপরিহার্য। দেখা যাচ্ছে প্রত্যেকের কথাতেই একটি পরিবর্তনের ইঙ্গত যেমন আছে তেমনি নির্বাচনী ধারায় ফেরার কথাও আছে। তবে নেপালী কংগ্রেস ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রচন্ডের দল মাওবাদী সেন্টারের শীর্ষ নেতাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে না।
নতুন নেতৃত্ব কী ভাবছেন? নেপালে নির্বাচনে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন গণ-আন্দোলনের নেতা গুরুং, গড়ছেন দল। সরকারের বিরুদ্ধে জেন-জি প্রজন্মের তরুণদের আন্দোলনের নেতা ঘোষণা দিয়েছেন, দেশে আগামী মার্চে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। জনগণের সরকার গঠনের জন্য তাঁরা ‘ শেষ পর্যন্ত লড়াই করবেন’। এক সাক্ষাৎকারে আন্দোলনের নেতা সুদান গুরুং বলেন, প্রচলিত রাজনৈতিক দলের পরিবর্তে ‘পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন’ গড়ে তুলতে দেশজুড়ে তাঁরা সমর্থকদের সংগঠিত করার কাজ করছেন। ‘স্বার্থপর’ ও ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ সাবেক সরকার ও রাজনীতিকদের বিষয়ে গুরুং বলেন, ‘তাঁরা আমাদের রাজনীতিতে টেনে এনেছেন। যদি তাঁরা রাজনীতিই চান, তবে তা–ই পাবেন। আমরা পরবর্তী নির্বাচনে লড়ব। কারণ, আমরা এখন পিছু হটব না।’ ৩৬ বছর বয়সী গুরুং মূলত নেপালের তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা গণ-অভ্যুত্থানের পরিচিত মুখ। ওই আন্দোলনে তাঁকে নেতৃত্বের ভূমিকায় দেখা গেছে। তিনি এসব কথা বললেও আসন্ন নির্বাচনে তা কতখানি ফলদায়ক হবে বিশ্লেষকরা সে ব্যাপারে সন্দিহান।
এবারের নির্বাচন কেমন হবে সে নিয়ে জল্পনা কল্পনা চলমান। বলতে গেলে অনন্য এক নির্বাচনী ব্যবস্থা আছে নেপালে। একজন বিশ্লেষক লিখেছেন, নেপালের নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্ভবত দক্ষিণ এশিয়ায় তুলনামূলক সবচেয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ। দেশটিতে জাতীয় ফেডারেল পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ বা প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যসংখ্যা ২৭৫। এর ভেতর ১৬৫ জন (৬০ শতাংশ) সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন। বাকি ১১০ জন (৪০ শতাংশ) দলগুলোকে দেওয়া হয় তাদের সর্বমোট প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হিস্যা অনুযায়ী। দেখা যাচ্ছে দেশটিতে পি আর পদ্ধতি চালু রয়েছে, তবে তা আংশিক, ৪০ শতাংশ আসনের ক্ষেত্রে। সরাসরি ভোট বা ফার্স্ট পাস্ট দি পোস্ট (এফপিটিপি) ও পি আর ভোট উভয়ের সমন্বয়ে নির্বাচনে গঠিত হয় পার্লামেন্ট।
সরকার ফেসবুক, এক্স, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বার্তা আদান-প্রদানের প্লাটফর্ম বন্ধ করে দিলে তরুণেরা প্রতিবাদে রাজপথে নামেন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এসব প্রতিষ্ঠান সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ে নিবন্ধন ও নজরদারির অধীন আসতে ব্যর্থ হয়েছে।
রাজনৈতিক ঘূর্ণিঝড়ের প্রেক্ষাপটটি বিবেচনায় নেয়া যেতে পারে। জোটের টানাপোড়েন ছিল এ ক্ষেত্রে প্রধান একটি বিষয়। নেপালে রাজনৈতিক টানাপোড়েন বেশ পুরনো। একক কোনো দল সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় নি বিগত নির্বাচনে। ফলে সরকার গঠিত হয় বহুদলীয় জোটের ভিত্তিতে। এতে সরকারের স্থায়িত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়। নেপালে বর্তমান পার্লামেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল আগামী বছর। কিন্তু নতুন সরকার তা ইতিমধ্যে ভেঙ্ েদিয়ে আগামী বছরের ৫ মার্চ নির্বাচন আহবান করেছেন। বিগত বছরগুলোতে কয়েকবার সরকার পরিবর্তন হয়েছে। গত বছর জুলাইয়ে অলির নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয় ভিন্ন এক মেরুকরণের মাধ্যমে। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী অলির দল ইউএমএল (ইউনাইটেড মার্ক্সবাদী লেনিনবাদী পার্টি) জোট করেছিল চির প্রতিদ্বন্দ¦ী নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে। অলি চীনঘনিষ্ঠ আর কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠতা নয়াদিল্লির সঙ্গে। তিনটি প্রধান দলের কেউই এককভাবে সরকার গঠন করতে না পারায় তেলে জলে মিশ খাইয়ে গঠিত হয়েছিল সরকার। ২৭৫ আসনের পার্লামেন্টে নেপালি কংগ্রেসের সদস্য ছিল ৮৮ জন, অলির দলের ৭৬ জন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহল প্রচন্ডের মাওবাদী সেন্টারের ৩২ জন। কিন্তু তরুণদের আন্দোলনে অলির সে সরকারের অবসান হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে তরুণরা। তাদের আন্দোলনের ও প্রতিবাদ কর্মসূচীর ধরণ বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লবের অনুরূপ বলে বর্ণনা করে বিভিন্ন গণমাধ্যম। দু’দিনের আন্দোলনেই ধসে পড়ে সরকার।
নির্বাচন আসন্ন হলেও পুরনো শক্তির টালমাটাল অবস্থান দেখা যাচ্ছে। নেপালী কংগ্রেস, ইউএমএল এবং মাওবাদী সেন্টার নেপালের মূলধারার তিন রাজনৈতিক শক্তি। এরা রাষ্ট্র পরিচালনায় দীর্ঘদিন প্রভাব রেখেছে। কিন্তু বিগত নির্বাচনে দেখা গেছে নেপালী কংগ্রেস সর্বাধিক আসন পেলেও এককভাবে সরকার গঠনে ব্যর্থ। অভ্যন্তরীণ বিভাজন এবং নেতৃত্ব নির্বাচনে দ্বিধা তাদের দুর্বল করেছে। ইউএমএল এখনও শক্তিশালী সংগঠন বজায় রাখলেও নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে। মাওবাদী সেন্টার একসময়ের প্রভাবশালী দল আজ জোট রাজনীতির আশ্রয়ে বেঁচে আছে। এককভাবে টিকে থাকার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এ অবস্থায় পুরনো শক্তিগুলো বারবার নতুন সমীকরণ সাজাতে বাধ্য হচ্ছে। এর ফলে সরকার টেকসই হয় না, নীতি ও উন্নয়ন পরিকল্পনা দীর্ঘমেয়াদি ধারাবাহিকতা হারায়। নির্বাচনের তারিখটি এগিয়ে এলে আসন্ন নির্বাচনে কার কি অবস্থান তা পরিস্কার হবে।
নেপালের রাজনীতিতে ঘূর্ণি হাওয়ার বড় কারণ হলো নতুন রাজনৈতিক শক্তির আবির্ভাব। এ নতুন শক্তি প্রচলিত দলগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরা রাজনৈতিক ভারসাম্যে নতুন ঘূর্ণিঝড় তৈরি করছে। বিশ্লেষকরা বলেছেন, নেপালের রাজনীতিতে যে ঘূর্ণি হাওয়া বইছে, সেটি গণতন্ত্রের পরিপক্বতারই অংশ বলা যায়। তবে এই হাওয়া স্থায়ী ঝড় হয়ে দাঁড়ালে তা দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেবে। রাজনীতির পুরনো খেলোয়াড়দের উচিত নিজেদের দায় স্বীকার করে তরুণ নেতৃত্বের জন্য জায়গা তৈরি করা। আর নতুন শক্তির উচিত কেবল আবেগ নয়, বাস্তবসম্মত নীতি ও কার্যকর শাসনের রূপরেখা দেওয়া। অতএব, নেপালের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এ ঘূর্ণিঝড়কে তারা কেবল ধ্বংসের শক্তি হিসেবে দেখবে, নাকি পরিবর্তনের সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাবে। গণতান্ত্রিক পরিশুদ্ধি ও উন্নত রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়তে হলে এই ঘূর্ণি হাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ ও ইতিবাচক শক্তিতে রূপান্তর করা ছাড়া বিকল্প নেই।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক।