বিশ্ব রাজনীতি এবং অর্থনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনো শীর্ষস্থানে রয়েছে। অনেক দেশকেই তাদের উন্নয়ন এবং রাষ্ট্রক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মর্জির উপর নির্ভর করতে হয়। দেশটি প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে অন্যদেশের উপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে এমনভাবে সাজিয়ে নিয়েছে যে, তাদের প্রভাব অস্বীকার করলে সংশ্লিষ্ট দেশটির সরকারকে বিপদে পড়তে হয়। আর অর্থনৈতিক শক্তি এবং প্রভাব বিস্তারের জন্য তারা নানা কৌশল গ্রহণ করে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হয়তো কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে প্রত্যক্ষভাবে হস্তক্ষেপ করে না কিন্তু দেশটির হয়ে কাজ করার মতো বেশকিছু সংস্থা আছে। এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড (আইএমএফ) এবং বিশ্বব্যাংক অন্যতম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ বিরোধী কোনো কাজ করছে এমন দেশকে বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ সাধারণত ঋণ বা অর্থ সহায়তা প্রদান করে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনেক সময় বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ’র মাধ্যমে তাদের নীতি-কৌশল প্রয়োগ করে থাকে। দেশটির একটি সিদ্ধান্ত বিশ্ব অর্থনীতিকে কিভাবে বিপর্যস্ত করতে পারে তার সাম্প্রতিক দৃষ্টান্ত বা উদাহরণ হচ্ছে, আমদানি পণ্যের উপর ট্রাম্প প্রশাসনের বাড়তি শুল্কারোপের উদ্যোগ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন ব্যবসায়ী। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বার্থটাকেই প্রাধান্য দেবেন এটাই স্বাভাবিক। আগের টার্মে ক্ষমতা গ্রহণ করার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ অর্থাৎ সবক্ষেত্রেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষস্থানে থাকবে। সে সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশেষ করে চীনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়েছিলেন। তিনি চীনা আমদানি পণ্যের উপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এ নিয়ে দেশ দু’টির মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই অভিযোগ করে আসছে, চীনা কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করেই মার্কিন ডলারের বিপরীতে তাদের স্থানীয় মুদ্রা ইউয়ানের বিনিময় হার কমিয়ে রাখছে। তারা ইউয়ানের বিনিময় হার বাজার ভিত্তিক করছে না। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বাজারে চীনা পণ্যের নিকট মার্কিন পণ্য মার খাচ্ছে। চীন অবশ্য বরাবরই মার্কিনী অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।

মার্কিন প্রশাসন সম্প্রতি ঢালওভাবে বিভিন্ন দেশের আমদানি পণ্যের উপর বাড়তি শুল্কারোপ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশের জন্য লাওসের পণ্যকে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ৪৮ শতাংশ হারে শুল্ক প্রদান করতে হবে। ভিয়েতনামকে ৪৬শতাংশ, শ্রীলঙ্কাকে ৪৪ শতাংশ, মিয়ানমারকে ৪৪ শতাংশ, বাংলাদেশকে ৩৭শতাংশ, পাকিস্তানকে ২৯ শতাংশ, ভারতকে ২৬ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়াকে ২৫ শতাংশ, মালয়েশিয়া ও জাপানকে ২৪ শতাংশ করে, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ২০ শতাংশ এবং ইসরাইলকে ১৭ শতাংশ বাড়তি শুল্ক দিতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাড়তি শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে করের হারে কিছুটা তারতম্য করলেও কোনো দেশকেই ছাড় দেয়নি। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বশংবদ যে ইসরাইল তার পণ্যের উপরও ১৭ শতাংশ হারে শুল্কারোপ করা হয়েছে। ভারত সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু মনে করে। দেশটি হয়তো আশা করেছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে তারা কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা পাবে। কিন্তু তাদের সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ভারতের বিরোধী দলের নেতা ও পার্লামেন্ট সদস্য পি চিদারম্বর এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি ভারতীয় পণ্যের উপর বাড়তি শুল্কারোপ করে তাহলে আগামী ৬ মাসের মধ্যে ভারতীয় অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমদানিকৃত সব ধরনের গাড়ির উপর ২৫ শতাংশ শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা ২ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে আমেরিকায় ভারতীয় গাড়ি ব্যবসায়ের উপর মারাত্মক বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে। এতে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতি হতে পারে। এটা শুধু গাড়ি শিল্পের ক্ষতির পরিসংখ্যান। সাধারণভাবে বর্ধিত শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তার প্রতিক্রিয়া কতটা হবে তা এ মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চলে আসছে অনেক দিন থেকেই। প্রাথমিক পর্যায়ে বাংলাদেশ যখন তৈরি পোশাক রপ্তানির দিকে ঝুঁকে পড়ে তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের এই শিল্প বিকাশের ক্ষেত্রে চমৎকার অবদান রেখেছিল। মার্কিন যুুক্তরাষ্ট্রের দেয়া কোটা সুবিধা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিএসপি সুবিধা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা বর্ধিত পরিমাণে তৈরি পোশাক এ দু’টি অঞ্চলে রপ্তানি করে নিজেদের অবস্থান শক্ত করে নেয়। পরবর্তীেেত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোটা সুবিধা প্রত্যাহার করলেও তারা সীমিত পরিসরে জিএসপি সুবিধা প্রদান শুরু করে। পরবর্তীতে শ্রম অধিকার এবং অন্য কয়েকটি ইস্যুতে বিরোধ সৃষ্টি হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে, যা এখনো বহাল রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো যেসব দেশ ও অঞ্চলের সঙ্গে বাণিজ্যিক ভারসাম্য অনুকূলে রাখতে সক্ষম হয়েছে তার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাম সবার আগে উল্লেখ করতে হয়।

বাংলাদেশ আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হতে চলেছে। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সবধরনের অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা হারাবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদিও বলেছে তারা ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধা প্রদান করবে। তারপর জিএসপি+ নামে এক বিশেষ বাণিজ্যিক সুবিধা প্রদান করা হবে। কিন্তু বাংলাদেশ জিএসপি+ সুবিধা পাবার জন্য যোগ্য বিবেচিত হবে না। যেসব শর্ত পূরণ করতে হবে তা বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব হবে না। এর উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি পণ্যের উপরও বর্ধিত শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিদ্ধান্ত মোতাবেক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি বাংলাদেশী রপ্তানি পণ্যের উপর ৩৭ শতাংশ শুল্কারোপ করে তাহলে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা সহজেই অনুমেয়। বাংলাদেশ-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের উপর দৃষ্টি দিলে আমরা দেখতে পাবো এ দু’টি দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক কতটা শক্তিশালী। ২০২০ সালে বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ১৮৫ দশমিক ১৮ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করে। এর বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা হয় ৬০৬ কোটি ৪৮ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য অর্থাৎ বাংলাদেশের অনুকূলে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ছিল ৪২১ দশমিক ৩০ কোটি মার্কিন ডলার।

২০২১ সালে বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৩৫ দশমিক ০৪ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করে। এর বিপরীতে ৮২৮ দশমিক ৫৯ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা হয়। অর্থাৎ বাংলাদেশের অনুকূলে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ছিল ৫৯৩ দশমিক ৫৫ কোটি মার্কিন ডলার। ২০২২ সালে বাংলাদেশ মোট ২৯৪ দশমিক ৭২ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এর বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা হয় ১ হাজার ১১৫ দশমিক ০৭ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য। অর্থাৎ বাংলাদেশের অনুকূলে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ছিল ৮২০ দশমিক ৩৬ কোটি মার্কিন ডলার। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২২৪ দশমিক ৭৯ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানির বিপরীতে রপ্তানি করে ৮২৭.৬৫ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য। ফলে বাংলাদেশের অনুকূলে বাণিজ্য উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়ায় ৬০২ দশমিক ৮৬ কোটি মার্কিন ডলার। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করে ২২১ দশমিক ৪০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য। এর বিপরীতে রপ্তানি করা হয় ৮৩৬ দশমিক ৫৮ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য। ফলে বাংলাদেশের অনুকূলে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত দাঁড়ায় ৬১৫ দশমিক ১৮ কোটি মার্কিন ডলার।

অর্থনীতিবিদগণ বলছেন, গত এক শতাব্দির মধ্যে বিশ্ব বাণিজ্যে এটাই সবচেয়ে বড় পরিবর্তন। কারণ এর আগে এভাবে এত বিপুল পরিমাণ শুল্ক আর আরোপ করা হয়নি। অর্থনীতিবিদগণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্যোগকে অন্যায্য বলে মন্তব্য করেছেন। তারা মনে করছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্যোগের ফলে বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষ করে যেসব উন্নয়নশীল দেশ পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল তাদের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে। তারা মনে করছেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আওতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা সিদ্ধান্ত পুন:বিবেচনার জন্য উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত পণ্যের উপর বর্ধিত হারে শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে বিষয়টি বিবেচনা করলে অত্যন্ত ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির ইঙ্গিত পাওয়া যাবে। বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের একক বৃহত্তম ক্রেতা দেশ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর অঞ্চল হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন হচ্ছে বাংলাদেশী রপ্তানি পণ্যের সবচেয়ে বড় গন্তব্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি বাংলাদেশী পণ্যের উপর ৩৭ শতাংশ হারে শুল্ক ধার্য করে তাহলে নিশ্চিতভাবেই দেশটিতে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি সাংঘাতিকভাবে কমে যাবে। বাংলাদেশ এমন অবস্থানে আছে যেখান থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব নয়। তবে বাংলাদেশ চাইলে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ইস্যুটি সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনার চেষ্টা করতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনো কোনো দেশের পণ্যের উপর ১০ শতাংশ বর্ধিত শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বর্ধিত শুল্ক হার ৩৭ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশে নির্ধারণের অনুরোধ জানাতে পারে।

তবে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মানউন্নয়ন করা এবং রপ্তানি পণ্যের বহুমুখিকরণ। একই সঙ্গে স্থানীয় কাঁচামাল নির্ভর পণ্যের উৎপাদন এবং রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা। বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যেসব পণ্য রপ্তানি করে তার মধ্যে বেশির ভাগই তৈরি পোশাক। তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামাল এবং ক্যাপিটাল মেশিনারিজ যেহেতু আমদানি করতে হয় তাই জাতীয় অর্থনীতিতে এ খাতের মূল্য সংযোজনের হার তুলনামূলকভাবে কম। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রায় ৬৩২ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে। এর মধ্যে ৬০ কোটি মার্কিন ডলার অর্জিত হয় তৈরি পোশাক খাত থেকে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে ২১ কোটি মার্কিন ডলার, হোম টেক্সটাইল থেকে ৪ দশমিক ৭৯ কোটি মার্কিন ডলার, হিমায়িত খাদ্য খাতে ১ দশমিক ৬৪ কোটি মার্কিন ডলার এবং পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে আসে ১ দশমিক ৫২ কোটি মার্কিন ডলার।

শুধু তৈরি পোশাক শিল্পের উপর নির্ভর করে দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে টিকে থাকা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। তাই আমাদের রপ্তানি পণ্য তালিকায় নতুন নতুন পণ্যের উপস্থিতি বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে রপ্তানি পণ্যের গন্তব্য আরো বাড়াতে হবে। কারো দয়ায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে টিকে থাকার সুযোগ নেই। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই আমাদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পরিকল্পনা সাজাতে হবে।