॥ প্রফেসর আর. কে. শাব্বীর আহমদ ॥
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এতে ব্যক্তিগত জীবন থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায় পর্যন্ত শান্তি, নিরাপত্তা, সাম্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার নির্দেশাবলি সন্নিবেশিত হয়েছে। আল্লাহ তা’আলার মনোনীত সর্বজনীন জীবনব্যবস্থার নাম আল ইসলাম। আল্লাহ তা’আলার ঘোষণা : ‘আল্লাহর কাছে মনোনীত ও গ্রহণযোগ্য দীন (জীবন ব্যবস্থা) হচ্ছে ইসলাম। -সূরা আলে ইমরান-১৯। ইসলামি জীবনব্যবস্থার আলোকে ন্যায়বিচারের মানদ- প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহ তা’আলার ঘোষণা : ‘সাবধান! তোমরা (মিযান) মানদ-ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করো না। ইনসাফের সাথে সঠিকভাবে পরিমাপ করো এবং পরিমাপে কম, দিও না। -সূরা আর রাহমান-৭ ও ৮। ইসলামি বিচার-বিধানে সবচেয়ে বড় অন্যায় ও গুনাহের কাজ হলো, নিরপরাধ কোনো মানুষকে হত্যা করা। আল্লাহ তাআলার ঘোষণা : ‘নরহত্যা বা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করার অপরাধ ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে যে ব্যক্তি নিরপরাধ কাউকে হত্যা করলো, সে যেন পৃথিবীর সব মানুষকে হত্যা করলো’। -সূরা-আল মায়েদাহ-৩২। আল কুরআনভিত্তিক রাসূল মুহাম্মাদ (সা.)-এর নেতৃত্বাধীন যে বিচারব্যবস্থা পরিচালিত হয়েছে তা-ই ইসলামি বিচার ব্যবস্থা।
ইসলামি বিচারব্যবস্থায় আইনের উৎস
১.আল কুরআন। ২. আল হাদিস বা রাসূলের কথা ও কর্মনির্দেশনা। ৩. আল কুরআন ও আল হাদিসের ভিত্তিতে ইজমা অর্থাৎ উম্মাহর ইজতিহাদ বা গবেষণালব্ধ সিদ্ধান্ত।
আল্লাহ তা’আলার ঘোষণা : ‘সার্বভৌম নির্দেশ দেওয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ তা’আলা। তিনি (রাসূলগণের কাছে) সত্য বর্ননা করেন এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ মীমাংসাকারী। -সূরা আল আন’আম-৫৭ সূরা আল মায়েদার ৪২ নং আয়াতে আল্লাহ তা’আলার ঘোষণা : ‘আর যদি বিচার-ফায়সালা করেন, তাহলে ইনসাফপূর্ণ বিচার করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা ন্যায়বিচারকারীদের ভালোবাসেন।’
ইসলামি বিচারব্যবস্থার মূলনীতিতে কুরআন ও সুন্নাহর সিদ্ধান্তকে অনুসরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে
মূলনীতি : ১. ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে নিরপেক্ষভাবে বিবাদ-বিরোধ মীমাংসা করা
২. সমাজে বিরাজমান সব ধরনের অনৈতিক ও ক্ষতিকর বিষয়গুলো প্রতিহত করা
৩. শাসক ও জনসাধারণের মধ্যে উদ্ভূত সমসাময়িক সমস্যাবলির দ্রুত সমাধান করা।
ইসলামি বিধানে বিচারকের কর্তব্য : ইসলামি বিচারব্যবস্থায় ন্যায়বিচার কার্যকর করার ক্ষেত্রে বিচারকের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে আল্লাহর রাসূলের কর্মনীতিতে বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যায়-
১. বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনা :রাসূল (সা.) ঘোষণা করেন, ‘তোমার সমীপে যখন দু’জন লোক বিচারের জন্য আসে, তখন তুমি দ্বিতীয় জনের কথা না শুনেই প্রথম জনের কথার ওপর ভিত্তি করে রায় প্রদান করবে না। তুমি অতিশীঘ্রই জানতে পারবে, তুমি কীভাবে ফয়সালা করেছো। -তিরমিযি, হাদীস-১৩৩১; সহীহুল জামে’ হাদিস-৪৩৫। রাসূল (সা.) আরো বলেন, ‘তোমার কাছে যখন দু’জন লোক বসে বিচারের জন্য, তখন তুমি তাদের মধ্যে কোনো রায় দেবে না, যতক্ষণ না দ্বিতীয় পক্ষের কথা শুনবে, যেভাবে প্রথম পক্ষের কথা শুনেছো। যখন তুমি এরূপ করবে, তখন তোমার কাছে ফয়সালার বিষয়টি সুস্পষ্ট হবে’।-আহমাদ, হাদিস-৮৮২; সহীহুল জামে’ হাদিস-৪৭৮।
আমাদের দেশে বিগত সরকারের আমলে তথাকথিত আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালের নামে বিবাদীর পক্ষে সাক্ষীদাতাকে হাজির না করে, তাকে গুম করে ভারতীয় কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে। কাল্পনিক মিথ্যা সাক্ষীদাতা সাজিয়ে মিথ্যাচারের উপর ভিত্তি করে নিরপরাধ শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। যা মানবতাবিরোধী, শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
২. বিচারকের রাগান্বিত অবস্থায় নয়, মেজাজের ভারসাম্য বজায় রেখে বিচারকাজ সম্পাদন : ক্রোধ মানুষের বিবেককে বিধ্বস্ত করে, উত্তেজিত করে, স্বাভাবিক জ্ঞান-বুদ্ধির বিকৃতি ঘটায়, তখন ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য সঠিকভাবে বিবেচিত হয় না-এমন মতামত চিকিৎসা বিজ্ঞানী ও মনোবিজ্ঞানীদের। তাই ইসলামি শরী’আহ রাগত অবস্থায় বিচার-ফয়সালা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। আবদুর রহমান ইবনে আবু বাকরাহ (রা.) বর্ণনা করেন, ‘আবু বাকরাহ সিজিস্তানে অবস্থানকারী তাঁর পুত্রকে লিখে পাঠান, তুমি রাগত অবস্থায় লোকদের মাঝে বিচার-ফয়সালা করবে না। আমি রাসূলে আকরাম (সা.)কে বলতে শুনেছি, কোনো বিচারক রাগান্বিত অবস্থায় দু’জনের মধ্যে বিচার-ফয়সালা করবে না’।- বুখারী, হাদিস-৭১৫৮; মুসলিম, হাদিস-৪৩৮২।
৩. পক্ষপাতিত্বহীন বিচার-ফয়সালা : ইসলামি বিচারব্যবস্থায় বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষই বিচারকের কাছে সমান বিচার পাওয়ার অধিকারী। বিচারক আল্লাহর বিধান মোতাবেক বিচার-ফয়সালার ক্ষেত্রে ধনী-দরিদ্র, অসহায়-প্রভাবশালী, গোলাম-মনিব, প্রজা-রাজা, উচ্চ বংশীয়-নি¤œ বংশীয়ের মধ্যে কোনো পক্ষপাতিত্ব করতে পারবে না। ন্যায়বিচারের ওপর অটল থাকবে। আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) হতে বর্ণিত, আমি রাসূল (সা.)কে বলতে শুনেছি, ‘নিশ্চয়ই মানুষ এমন একশত উটের মতো, যাদের মধ্যে থেকে তুমি একটিকেও বাহনের অনুপযোগী পাবে না’।- বুখারী, হাদিস-৬৪৯৮। এর অর্থ হলো, ইসলামে সব মানুষই ন্যায়বিচার পাওয়ার বিষয়ে সমান অধিকারী। যেমন একশত উটের মধ্যে সবগুলোর মর্যাদা সমান।
৪. উৎকোচ গ্রহণ বা কোনো পার্থিব লোভের বশীভূত হয়ে বিচার না করা : ইসলামি শারি’য়ায় উৎকোচ, অন্যায় বখশিশ, সুদ, ঘুষ অত্যন্ত ঘৃণিতভাবে হারাম বা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়। সার্বজনীন সুবিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে উৎকোচ বা ঘুষ গ্রহণের ব্যাপারে কঠোর সতর্ক ও সাবধান বাণী উচারণ করা হয়েছে। হযরত আবু হরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, ‘বিচারের ক্ষেত্রে ঘুষ গ্রহণকারী ও ঘুষ দাতাকে রাসূল (সা.) অভিসম্পাত করেছেন।-তিরমিযি, হাদিস-১৩৩৬; ইবনু মাজাহ, হাদিস-২৩১৩।
৫. বিদ্বেষ বা হীন প্রতিশোধ-প্রতিরোধ গ্রহণের মানসিকতায় বিচার না করা : ব্যক্তিগত বা দলীয় শত্রুতা সিদ্ধি ও বিদ্বেষ মনোভাব পোষণ করে বিচার কার্যাবলি পরিচালনা বিষয়ে আল কুরআনে আল্লাহ তা’আলা কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন : ‘কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ বা প্রতিহিংসা যেন তোমাদেরকে সুবিচার বর্জনে প্ররোচিত না করে। তোমরা ন্যায়বিচার কর, যা আল্লাহভীতির অধিকতর নিকটবর্তী। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের সব কৃতকর্ম সম্পর্কে সম্যক অবহিত’। -সূরা আল মায়েদাহ-৮
বিচার ব্যবস্থায় সাক্ষ্য গ্রহণ : ইসলামি বিচারব্যবস্থায় নিরপেক্ষ ও সঠিক সাক্ষ্যগ্রহণ অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাক্ষীর সত্য সাক্ষ্যদানের মাধ্যমে বিচারকার্য সঠিক ও ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। আর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা সাক্ষ্যের ফলশ্রুতিতে অন্যায় বিচার বা পক্ষপাতিত্বমূলক জুলুম প্রতিষ্ঠিত হয়। এ ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলা স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেন :
‘শোন হে ঈমানদারগণ, তোমরা ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকো আল্লাহর জন্য সাক্ষ্যদাতা হিসেবে, যদিও তা তোমাদের নিজেদের বা তোমাদের পিতা-মাতা ও নিকটাত্মীয়দের বিরুদ্ধে যায়। বাদী-বিবাদী ধনী হোক বা দরিদ্র হোক ( সেদিকে নজর দিও না)। কেননা তোমাদের চাইতে আল্লাহ তাদের অধিক মঙ্গলাকাক্সক্ষী। তাই তোমরা ন্যায়বিচারে প্রবৃত্তির অনুগামী হয়ো না। আর তোমরা যদি ছল-চাতুরীপূর্ণ কথা বলো অথবা সত্যকে পাশ কাটিয়ে যাও, তবে জেনে রাখো আল্লাহ নিশ্চিতই তোমাদের যাবতীয় কর্মকা- সম্পর্কে পূর্ণ অবহিত’।-সূরা আন নিসা-১৩৫।
সার্বজনীন মুক্তি ও মানবতার কল্যাণে ন্যায়বিচার কার্যকর করার জন্য সৎ সাক্ষ্যদাতাকে সত্য সাক্ষ্য দিতে নির্বাচিত করতে হবে। যায়েদ ইবনে খালিদ জুহানি (রা.) হতে বর্নিত, রাসূলে আকরাম (সা.) প্রশ্ন করেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে উত্তম সাক্ষ্যদাতা সম্পর্কে জানাবো না? উত্তম সাক্ষ্যদাতা হলো সে ব্যক্তি যে সত্য-সঠিক সাক্ষ্য প্রদান করার জন্য এগিয়ে আসে, তাঁকে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য ডাকার আগেই’।-মুসলিম, হাদিস-১৭১৯।
মিথ্যা সাক্ষ্যদানকে ইসলামি শারি’আহ কবীরা গুনাহ হিসাবে সাব্যস্ত করেছে। হযরত আনাস (রা.) হতে বর্নিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.)-কে কবীরা গুনাহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,
১. আল্লাহর সাথে শরীক করা।
২. পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া।
৩. কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা।
৪. মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া।
-বুখারী, হাদিস-২৬৫৩-৫৪: মুসলিম, হাদিস-৮৭।
অপরাধীর সমপরিমাণ শাস্তি : আল্লাহ তা’আলা আল কুরআনে অপরাধীকে তার অপরাধের সমপরিমাণ শাস্তির নির্দেশ দিয়েছেন এভাবে : ‘আমি তাদের জন্য বিধান দিয়েছিলাম যে, জানের বদলে জান, চোখের বদলে চোখ, নাকের বদলে নাক, কানের বদলে কান, দাঁতের বদলে দাঁত। আর জখমের বদলে অনুরূপ জখম। কেউ ক্ষমা করে দিলে তাতে তারই পাপ মোচন হবে। আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, সে অনুযায়ী যারা বিচার-ফয়সালা করে না, তারাই জালিম’। -সূরা আল মায়েদাহ-৪৫
মানবিক কল্যাণে ইসলামি বিচার ব্যবস্থার বাস্তব দৃষ্টান্ত : ইসলামি বিচারব্যবস্থায় রায় বাস্তবায়নের সময় বিচারকের মনে কোনো প্রকার দয়া, দুর্বলতা, পক্ষপাতিত্ব বা সহানুভূতি প্রদর্শন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। সমকামিতা বা যেনার মতো ব্যভিচারীদের শাস্তি কার্যকরের ক্ষেত্রে আল্লাহ তা’আলার নির্দেশ : ‘ব্যভিচারী নারী ও পুরুষের প্রত্যেককে একশত বেত্রাঘাত করো। আল্লাহর এ বিধান কার্যকরণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের অন্তরে কোনো প্রকার দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও বিচার দিবসের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাকো। আর মুমিনদের একটি দল যেন তাদের এই শাস্তি সরাসরি দেখে’। -সূরা আন নূর-২।
অপরাধীর প্রতি আল্লাহ তা’আলার নির্ধারিত হদ্দ বা শাস্তি কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সুপারিশ, স্বজনপ্রীতি ইসলামি শারিআয় সম্পূর্ণরূপে হারাম। আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) হতে বর্নিত, রাসূল (সা.) ঘোষণা করেন, ‘তোমরা আল্লাহর নির্ধারিত হদ্দ (শাস্তি) কার্যকর হওয়ার যোগ্য অপরাধ পারস্পরিক সমঝোতার পর্যায়ে ক্ষমা করতে পারো। অন্যথায় এ ধরনের অপরাধের অভিযোগ আমার কাছে পৌঁছলে অবশ্যই তাঁর শাস্তি কার্যকর হবে’।-আবু দাউদ, হাদিস-৪৩৭৬; নাসাঈ, হাদিস-৪৮৮৫।
ইসলামি বিচার ব্যবস্থায় দ- কার্যকর হবে রাষ্ট্রীয়ভাবে ও স্বাধীন বিচার বিভাগে : ইসলামি বিচারব্যবস্থায় শাস্তি (হদ্দ) বা দ- কার্যকর করার ক্ষমতা শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় প্রশাসন ও স্বাধীন বিচার বিভাগের। ইসলামি শারি’আর বিধান মোতাবেক কোনো শাস্তি নির্ধারিত হলে তা ব্যক্তিগত বা দলীয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে কোনো অবস্থাতেই পরিবর্তন বা অকার্যকর করা যাবে না। শারি’আর সিদ্ধান্তের ব্যত্যয় ঘটলে একটি দেশের প্রশাসনিক ও বিচার ব্যবস্থার অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে যাবে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত না হলে ব্যক্তি ও সমাজের স্বাভাবিক জীবনধারা বিপর্যস্ত হবে। বিচার ব্যবস্থার উদ্দেশ্য, লক্ষ্য ধ্বংস হবে। প্রকৃত অপরাধীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিদান প্রদর্শিত না হলে অন্য অপরাধীদের অপরাধপ্রবণতা বিলুপ্ত হবে না। সমাজে অপরাধ কর্মকা- সংঘটিত হতেই থাকবে। রাষ্ট্রীয় বিচার ব্যবস্থায় প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি কার্যকর হলে সমাজে শান্তি, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি বিরাজমান থাকবে। সর্বস্তরের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ও কল্যাণ সাধিত হবে।
আমাদের দেশে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি না দিয়ে নিরপরাধ মানুষকে গুম ও হত্যার মতো হীন কর্মকা- সংঘটিত হওয়ায় জুলুম ও স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নজির স্থাপিত হয়েছে। মানুষ তার মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাই মানবতার সার্বিক মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের সার্বজনীন বিচার ব্যবস্থা চালু করা সময়ের অনিবার্য দাবি। এ জন্য প্রয়োজন সৎ নেতৃত্বের মাধ্যমে ইসলামি শাসন ব্যবস্থা কায়েমের জন্য সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করা।
লেখক : শিক্ষাবিদ ও কবি।