॥ এম এ খালেক ॥

ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব আমেরিকা (ফেড) পলিসি রেট বা নীতি সুদ হার ২৫ পয়েন্ট কমিয়ে ৪ দশমিক ২৫ পয়েন্টে নামিয়ে এনেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত ৯ মাসের মধ্যে এ প্রথম নীতি সুদ হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফেড চেয়ারম্যান জোরাম পাওয়েল সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, অক্টোবর এবং ডিসেম্বর মাসে নীতি সুদ হার আরো কমতে পারে। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, শ্রমবাজারে ক্রমবর্ধমান দুর্বলতা এখন তার ও তার সহকর্মীদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্র্যাম অনেক দিন ধরেই নীতি সুদ হার কমানোর জন্য ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব আমেরিকাকে চাপ দিয়ে আসছিলেন। তার বক্তব্য হচ্ছে নীতি সুদ হার কমালে দেশের অর্থনীতি এই মুহূর্তে চাঙ্গা হবে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এতদিন প্রেসিডেন্টের সে চাপের নিকট নতি স্বীকার করেনি। বর্তমানে তারা যে হারে নীতি সুদ হার কমিয়েছে তা মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্র্যাম্প কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন গভর্নর লিসা কুককে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেবার চেষ্টা করলেও সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। আদালত লিসা কুককে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেবার উদ্যোগ সমর্থন করেনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কতটা স্বাধীন এবং শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে লিসা কুকের এই ঘটনার তার প্রমাণ। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের কথা যদি আমরা বিবেচেনা করি তাহলে দেখবো বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বা শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাগণ স্বাধীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারেন না।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দেশের শীর্ষস্থানীয় একজন ব্যাংকার বলেছেন, গত সরকার আমলে দেশে দু’টি কেন্দ্রীয় ব্যাংক দায়িত্ব পালন করেছে। এর মধ্যে একটি আমাদের পরিচিত বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অন্যটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে থাকা কতিপয় ব্যক্তি। মূলত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেই দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করা হতো। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালককে তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন। চট্টগ্রামের বিতর্কিত একজন ব্যবসায়ি, যার সঙ্গে বিগত সরকারের সর্বোচ্চ মহলের দারুন সুসম্পর্ক ছিল ৬টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মালিকানা কজ¦া করেছিলেন। এসব ব্যাংক থেকে সে শিল্প গোষ্ঠী হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে দেশের বাইরে পাচার করেছেন। বিগত সরকার আমলে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা পরিচালিত হতো তিনটি কর্তৃপক্ষের অধীনে। অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে থাকা একটি শক্তিশালি গোষ্ঠী ব্যাংকিং সেক্টর পরিচালনা করতো। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে যারা পরোক্ষভাবে ব্যাংকিং সেক্টর পরিচালনা করতেন তারাই ছিলেন সবচেয়ে ক্ষমতাবান। এরা ছিলেন খুবই ক্ষমতাবান কিন্তু তাদের কোন দায়বদ্ধতা ছিল না। অর্থাৎ এরা দায়হীন ক্ষমতা ব্যবহার করতেন। ব্যাংকিং সেক্টরে বিতর্কিত নানা আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে এই মহলটি বিশেষ ভূমিকা পালন করতেন। বিগত সরকার আমলে সৃষ্ট উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না আসা, ব্যাংকিং সেক্টর থেকে হাজার কোটি টাকা পাচার, রেমিট্যান্স প্রত্যাশিত মাত্রায় বৈধ চ্যানেলে দেশে না আসার জন্য এই মহলটিই ভূমিকা পালন করে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব আমেরিকা এ মুহূর্তে পলিসি রেট বা নীতি সুদ হার কমানোর উদ্যোগ নিলো কেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিডিউল ব্যাংকগুলোকে স্বল্পকালীন তহবিল সঙ্কট মোকাবেলার জন্য যে ঋণ বা ধার দেয় তার উপর আরোপিত সুদ হারকেই পলিসি রেট বা নীতি সুদ হার বলা হয়। ব্যাংকিং পরিভাষায় এ ধরনের ঋণকে রেপো রেট বলা হয়। করোনা উত্তর বিশ^ অর্থনীতি যখন উত্তরণের পর্যায়ে ছিল ঠিক তখনই শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এ যুদ্ধের ফলে বিশ^ব্যাপী সাপ্লাই চেইন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশেও মূল্যস্ফীতি ৪০ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে ৯ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত হয়। সে সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি মন্থর হয়ে পড়ার ঝুঁকি নিয়েও পলিসি রেট ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগের হার মন্থর হয়ে পড়ে। কর্মসংস্থানের সুযোগ মারাত্মকভাবে সংকুচিত হয়ে পড়ে। এখনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতির হার লক্ষ্যমাত্রার উপরে রয়েছে। ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব আমেরিকার লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে বছর শেষে মূল্যস্ফীতির হার ২ শতাংশে নামিয়ে আনা। কিন্তু দেশটির মূল্যস্ফীতির হার বছর শেষে ৩ শতাংশে উন্নীত হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এ বছর ১ দশমিক ৬ শতাংশ এবং বেকারত্বের হার হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব আমেরিকা ইউক্রেন যুদ্ধের পর দফায় দফায় নীমি সুদ হার বৃদ্ধি করে। এক পর্যায়ে নীতি সুদ হার ৫দশমিক ৫০ শতাংশ উন্নীত হয়। নীতি সুদ হার বাড়ানোর পাশাপাশি অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে দেশটি উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমাতে সক্ষম হলেও অর্থনীতির গতি মন্থর হয়ে পড়ে। সে অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্যই তারা এখন নীতি সুদ হার কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এতে মূল্যস্ফীতি আবারো বেড়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে।

ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব আমেরিকার অনুকরণে বাংলাদেশ ব্যাংক বারবার পলিসি রেট বা নীতি সুদ হার বাড়িয়েছে। এক সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি রেট ছিল ৫ শতাংশ। এখন তা ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু তারপরও দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যস্ফীতি এখনো প্রত্যাশিত মাত্রায় কমেনি। বিশে^র অন্তত ৭৭টি দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুসরণের পলিসি রেট বৃদ্ধি করে। অধিকাংশ দেশই এ নীতি অনুসরণ করে তাদের উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে সমর্থ হলেও বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছে। পলিসি রেট বারবার বাড়ানো সত্বেও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে উচ্চ মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নেমে না আসার পেছনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অবস্থিতি অদৃশ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রকগণ অবদান রেখেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক পলিসি রেট বাড়ালো বিগত সরকারের শেষ সময় পর্যন্ত ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদ হার ৯ শতাংশে ফিক্সড করে রাখা হয়। ফলে বিদ্যমান মূল্যস্ফীতির তুলনায় ব্যাংক ঋণের সুদের হার সস্তা হয়ে পড়ে। এ সুযোগে একটি মহল ব্যাংক থেকে ঋণের নামে টাকা নিয়ে তা বিদেশে পাচার করে। আগের এক মুদ্রানীতিতে ব্যক্তি খাতে ব্যাংক ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছিল ১৪ দশমিক ১ শতাংশ। সে সময় বাস্তবে ব্যক্তি খাতে ব্যাংক ঋণের প্রবৃদ্ধি ঘটেছিল ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ। অর্থাৎ নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। কিন্তু একই সময়ে শিল্পে ব্যবহার্য কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী পণ্য আমদানি কমেছিল ১৪ শতাংশ করে। আর ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানিও ব্যাপকভাবে কমেছিল। ব্যাংকিং খাতে ব্যাংক ঋণের ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ঘটলে তো কাঁচমাল, মধ্যবর্তী পণ্য এবং ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানি বাড়ার কথা। কিন্তু উল্টোটি ঘটলো কেন? তার অর্থ হচ্ছে ব্যাংক থেকে যে ঋণ গ্রহণ করা হয়েছে তা উদ্দিষ্ট খাতে ব্যবহার না করে অন্যত্র প্রবাহিত করা হয়েছে। ব্যাংক থেকে গৃহীত ঋণের অর্থ কোন না কোনভাবে বাজারে চলে এসেছে। ফলে মূল্যস্ফীতি আরো বৃদ্ধি পায়। সেই সময় বাংলাদেশ ব্যাংক যদি পলিসি রেট বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যাংক ঋণের সুদের হার(ব্যাংক গ্রাহকদের ঋণদানের সময় যে সুদ চার্জ করে) বাজার ভিত্তিক করা হতো তাহলে উদ্যোক্তা এবং সাধারণ ঋণ গ্রহীতাদের মধ্যে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের প্রবণতা কমে যেত। ফলে মূল্যস্ফীতির উপর তার প্রভাব পড়তো। মূল্যস্ফীতি কমে যেতো। এখানে একটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন তাহলো, পলিসি রেট বৃদ্ধির মাধ্যমে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা কখনোই দীর্ঘ মেয়াদের জন্য করা উচিৎ নয়। কারণ এতে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ হ্রাসের পাশাপাশি কর্মসংস্থান ও প্রবৃদ্ধির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

বিগত সরকার আমলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত ভুল নীতির কারণে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্থ হয়েছে। পাশাপাশি উচ্চ মূল্যস্ফীতি আরো উচ্চতর মাত্রায় পৌঁছেছে। পলিসি রেট বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যাংক ঋণের সুদের হার বাজার ভিত্তিক না করলে কি প্রতিক্রিয়া হতে পারে তা বাংলাদেশ ব্যাংক বুঝতো না বা জানতো না তা মনে করার কোন কারণ নেই। তারা জেনেশুনেই এই কাজটি করেছে। তারা এটা করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তৎপর অদৃশ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কারণে।

বাংলাদেশ ব্যাংক আগের সরকার আমলে আরো একটি বিতর্কিত কাজ করেছিল মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ফিক্সড করে রাখার মাধ্যমে। বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক দিন পর্যন্ত প্রতি মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ১১০ টাকা ফিক্সড করে রেখেছিল। এটা করা হয়েছিল একটি মহলকে তুলনামূলক কম মূল্যে মার্কিন ডলার যোগানোর জন্য। সে সময় বাজারে মার্কিন ডলারের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। প্রতি মার্কিন ডলার কার্ব মার্কেটে ১১২ থেকে ১২৪ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতো। সৎ এবং ভালো ব্যবসায়িরা ব্যাংক থেকে নির্ধারিত রেটে মার্কিন ডলার ক্রয় করতে পারতেন না। কিন্তু সরকারের মদদপুষ্ট এক শ্রেণির ব্যবসায়ি-উদ্যোক্তা ব্যাংকের উপর চাপ প্রয়োগ করে মার্কিন ডলার বের করে নিতো। এ অর্থ তারা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেন। অনেকেই বিদেশে পাচার করেছেন। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় রেমিট্যান্স আহরণের ক্ষেত্রে। প্রবাসী বাংলাদেশীরা প্রতি মার্কিন ডলারের বিনিময়ে কার্ব মার্কেটে ১২ থেকে ১৪ টাকা বেশি পেতো। তাই তারা এই সুযোগ হারাতে চাইতো না। তারা হুন্ডির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ দেশে প্রেরণ করতেন। স্থানীয়ভাবে যারা হুন্ডি ব্যবসায় নিয়োজিত ছিলেন তাদের অধিকাংশই সরকারি দলের সমর্থক। গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে বিগত সরকারের পতন হলে হুন্ডি ব্যবসায়িদের তৎপরতা অনেকটাই কমে যায়। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক মার্কিন ডলারের বিনিময় হার বাজার ভিত্তিক করার ফলে কার্ব মার্কেট এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার প্রায় সমতালে চলে আসে। এখন আর হুন্ডি ব্যবসায় খুব একটা লাভজনক নয়। প্রবাসী বাংলাদেশীরা বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স দেশে প্রেরণ করছেন। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি রেমিট্যান্স দেশে প্রেরণ করেছে। এটা এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ রেমিট্যান্স প্রেরণ। প্রবাসী বাংলাদেশীরা কি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে রেমিট্যান্স প্রেরণ বাড়িয়ে দিয়েছে? না এটা মনে করার কোন কারণ নেই। তারা ব্যাংকিং চ্যানেলে কার্ব মার্কেটের মতো রেট পাবার জন্যই বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণ করছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক পলিসি রেট কমানোর কোন উদ্যোগ এখনও পর্যন্ত গ্রহণ করেনি। এতে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ ক্ষতিগস্ত হচ্ছে। উদ্যোক্তাগণ নতুন করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। অবস্থা এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও শিল্পায়নের গতি মন্থর হয়ে পড়বে। ফলে সরকারের দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শুধু পলিসি রেট বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশের মতো দেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক করতে হবে। পরিবহনকালে সব ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। পলিসি রেট বৃদ্ধিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের একমাত্র টোল হিসেবে বিবেচনা করা ঠিক হবে না।

লেখক : সাবেক ব্যাংকার।