কলাম
জনশক্তি রপ্তানিতে চাই যুৎসই পরিকল্পনা
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে জনশক্তি রপ্তানি খাত বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে। বৈদেশীক মুদ্রা অর্জনের দু’টি শীর্ষ খাতের একটি হচ্ছে জনশক্তি রপ্তানি। বাংলাদেশ প্রধানত পাঁচটি উৎস থেকে বৈদেশীক মুদ্রা অর্জন করে থাকে।
Printed Edition
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে জনশক্তি রপ্তানি খাত বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে। বৈদেশীক মুদ্রা অর্জনের দু’টি শীর্ষ খাতের একটি হচ্ছে জনশক্তি রপ্তানি। বাংলাদেশ প্রধানত পাঁচটি উৎস থেকে বৈদেশীক মুদ্রা অর্জন করে থাকে। এগুলো হচ্ছে পণ্য ও সেবা রপ্তানি, জনশক্তি রপ্তানি, বৈদেশীক সরাসরি বিনিয়োগ ও যৌথ উদ্যোগে বিনিয়োগ, বৈদেশীক অনুদান এবং ঋণ। এর মধ্যে গৃহীত বৈদেশীক ঋণের ক্ষেত্রে এক ধরনের দায়বদ্ধতা থাকে। কাজেই বৈদেশীক ঋণকে সরাসরি দায়মুক্ত সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা যায় না। বৈদেশীক অনুদান এখন তেমন একটা পাওয়া যায় না। সরাসরি এবং যৌথ উদ্যোগে বিনিয়োগ আহরণের পরিমাণও খুব একটা সন্তোষজনক নয়। কাজেই বাংলাদেশকে বৈদেশীক মুদ্রার জন্য প্রধানত পণ্য ও সেবা রপ্তানি এবং জনশক্তি রপ্তানি খাতের উপর নির্ভর করতে হয়। জনশক্তি রপ্তানি খাত থেকে যে বৈদেশীক মুদ্রা অর্জিত হয় তার অন্তত দ্বিগুন বৈদেশীক মুদ্রা আয় হয় পণ্য ও সেবা রপ্তানি খাত থেকে। কাজেই দৃশ্যমান বৈদেশীক ক্ষেত্রে এখনো পণ্য ও সেবাখাত সবার শীর্ষে রয়েছে। কিন্তু তুলনামূলক বিচারে পণ্য ও সেবা রপ্তানি খাতের চেয়ে জনশক্তি রপ্তানি খাত বেশি সম্ভাবনাময়।
পণ্য ও সেবা রপ্তানি করে প্রতিবছর যে বিপুল পরিমাণ বৈদেশীক মুদ্রা অর্জিত হয় তার অন্তত ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশই শিল্পে ব্যবহার্য কাঁচামাল, মধ্যবর্তী পণ্য এবং ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানিতে পুনরায় বিদেশে চলে যায়। ফলে জাতীয় অর্থনীতিতে মূল্য সংযোজনের পণ্য ও সেবা রপ্তানি খাতের অবদান আনুপাতিক হারে কম। অন্যদিকে জনশক্তি রপ্তানি খাত থেকে যে বিপুল পরিমাণ বৈদেশীক মুদ্রা প্রতিবছর আয় হচ্ছে তার প্রায় পুরোটাই জাতীয় অর্থনীতিতে মূল্য সংযোজন করে। কারণ এ খাতের জন্য কোনো কাঁচামাল বা ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানি করতে হয় না। ফলে অর্জিত পুরো অর্থই জাতীয় অর্থনীতিতে মূল্য সংযোজন করে। অধিকন্তু এ খাতে প্রায় দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। যারা কর্মসংস্থান উপলক্ষে বিদেশে গমন করেন তাদের বেশির ভাগই গ্রামীণ এলাকা থেকে আগত এবং তুলনামূলক দরিদ্র শ্রেণির সদস্য। তারা বিদেশে গিয়ে যে রেমিট্যান্স প্রেরণ করে তা স্থানীয় বেনিফিশিয়ারিদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। আজ থেকে কয়েক প্রায় তিন দশক আগে বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত শ্রেণির পরিবারের সংখ্যা ছিল ১২ শতাংশ। এখন তা ২০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে ইতিবাচক রূপান্তরের ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রেরিত রেমিট্যান্স গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। শহুরে জীবনের যেসব উপকরণ ব্যবহৃত হয় এখন গ্রামেও তা পাওয়া যাচ্ছে। এর পেছনে প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রেরিত রেমিট্যান্স তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
কিন্তু জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ জনশক্তি রপ্তানি খাতটি নানাভাবে অবহেলার শিকার হচ্ছে। এখনো খাতটি মূলত ব্যক্তি মালিকানাধীনে পরিচালিত হচ্ছে। সেখানে সরকারের নিয়ন্ত্রণ খুবই কম। ফলে জনশক্তি রপ্তানি ব্যবসায়ের সঙ্গে যুক্ত একটি মহল নানাভাবে বিদেশ গমনার্থীদের সঙ্গে প্রতারণ করে চলেছে। একজন শ্রমিকের বিদেশে গমন করতে যে অর্থ প্রয়োজন তার চেয়ে অন্তত ২/৩ গুন বেশি অর্থ আদায় করা হচ্ছে। তারপর অনেকে অর্থ প্রদান করার পরও বিদেশে যেতে পারেন না। বা বিদেশে গেলেও তারা চুক্তি মোতাবেক কর্মে নিযুক্ত হতে পারেন না। জনশক্তি রপ্তানি খাতটি সম্পূর্ণরূপে সরকারি নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হওয়া প্রয়োজন।
জনশক্তি রপ্তানি খাতটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা পরিসংখ্যানের দিকে দৃষ্টি দিলেই অনুধাবন করা যায়। জুলাই, ২৪ থেকে জানুয়ারি, ২৫ পর্যন্ত অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে বাংলাদেশ মোট ২০ দশমিক ৮ বিলিযন মার্কিন ডলার সমতুল্য রেমিট্যান্স আহরণ করতে সক্ষম হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স আয়ের পরিমাণ ছিল ১৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ বর্ণিত সময়ে রেমিট্যান্স আয়ের ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ। বিগত সরকারের আমলে এক সময় রেমিট্যান্স প্রবাহ মারাত্মকভাবে কমে গিয়েছিল। ফলে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের উপর নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হয়েছিল। জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুরু হলে প্রবাসী বাংলাদেশীরা বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণ কমিয়ে দিয়েছিল। এমনকি কোন কোন আরব দেশে বাংলাদেশী প্রবাসী শ্রমিকরা শেখ হাসিনা সরকার বিরোধী আন্দোলন করলে বেশ কিছু সংখ্যক শ্রমিককে আটক করা হয়েছিল। প্রবাসী শ্রমিকরা বৈধ পথে দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণ বন্ধ করার হুমকিও দিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে প্রচণ্ড আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারি হাসিনা সরকারের পতন ঘটলে প্রবাসী বাংলাদেশীরা আবারো বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণ শুরু করে। ফলে অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। জনশক্তি রপ্তানি কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের মতে, প্রবাসী বাংলাদেশীরা বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণ অব্যাহত রাখলে চলতি অর্থবছরে প্রথমবারের মতো মোট রেমিট্যান্সের পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ল্যান্ড মার্ক স্পর্শ করতে পারে।
বিগত সরকারের ভুল নীতির কারণে প্রবাসী বাংলাদেশীদের অনেকেই বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের পরিবর্তে হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাতেন। ফলে প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রেরিত অর্থ দেশে এলেও তা বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভে যুক্ত হতো না। বাংলাদেশ ব্যাংক মহলবিশেষকে সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে অনেক দিন পর্যন্ত মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ফিক্সড করে রেখেছিল। প্রতি মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ছিল ১১০ টাকা। অথচ সে সময় খোলা বাজারে বা কার্ব মার্কেটে প্রতি মার্কিন ডলার বিক্রি হচ্ছিল ১২২-১২৩ টাকায়। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রবাসী আয়ের উপর নগদ আর্থিক প্রণোদনা দেয়া হলেও তার চেয়ে বেশি মূল্য পাওয়া যাচ্ছিল কার্ব মার্কেটে। ব্যাংকিং চ্যানেলের সঙ্গে কার্ব মার্কেটে মার্কিন ডলারের বিনিময় হারের মধ্যে পার্থক্য থাকে ১ থেকে ২ টাকা কিন্তু বিগত সরকারের আমলে টাকা ও মার্কিন ডলারের বিনিময় হারের মধ্যে পার্থক্য ১১/১২ টাকায় উন্নীত হয়েছিল। প্রবাসী বাংলাদেশীরা বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়ে স্থানীয় মুদ্রায় বেশি অর্থ পাবার প্রত্যাশায় হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স মুদ্রা দেশে প্রেরণ করতে থাকে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ রেমিট্যান্স আয় করে ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অথচ সে বছর মোট ১৩ লাখ বাংলাদেশী কর্মী নতুন করে বিদেশী গমন করে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে। আগের কর্মীরা তো ছিলই। তাহলে রেমিট্যান্স আয় এত কম হবার কারণ কী? প্রবাসী বাংলাদেশীরা উপার্জিত অর্থ ঠিকই দেশে প্রেরণ করেছে তবে তা পাঠিয়েছে হুন্ডির মাধ্যমে। হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স দেশে প্রেরণের ক্ষেত্রে সুবিধা হচ্ছে এতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে ব্যাংকে যেতে হয় না। হুন্ডি ব্যবসায়ীরা প্রবাসী কর্মীদের আবাসস্থলে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে থাকেন। স্থানীয় বেনিফিশিয়ারিদের ব্যাংকে গিয়ে টাকা উত্তোলন করতে হয় না। হুন্ডি এজেন্টগণ বাড়িতে গিয়ে রেমিট্যান্সের অর্থ পৌঁছে দিয়ে আসে।
বাংলাদেশের জন্যশক্তি রপ্তানি খাতের সবচেয়ে বড় সীমাদ্ধতা হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে যারা কর্মসংস্থান উপলক্ষে বিদেশে গমন করেন তাদের গন্তব্য মূলত মধ্যপ্রাচ্যের ৬টি মুসলিম দেশ। অথচ ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং পশ্চিমা বিশ্বের প্রশিক্ষিত জনশক্তির বিপুল চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে যারা কর্মসংস্থান উপলক্ষে বিদেশে গমন করেন তাদের বেশির ভাগই অদক্ষ এবং অপ্রশিক্ষিত শ্রমিক। বাংলাদেশ যদি সাধারণ শ্রমিকের পাশাপাশি দক্ষ শ্রমিক এবং পেশাজীবী অধিক সংখ্যায় প্রেরণ করতে পারতো তাহলে এ খাতের আয় বহুগুন বৃদ্ধি করা সম্ভব হতো। প্রতিযোগী দেশগুলো তুলনামূলক কম জনশক্তি রপ্তানি করেও বাংলাদেশের চেয়ে বেশি অর্থ আয় করছে। কিন্তু দক্ষ-প্রশিক্ষিত শ্রমিক এবং পেশাজীবী বিদেশে প্রেরণের ক্ষেত্রে আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ২০০৯ সালে মোট ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার ২৭৮ জন বাংলাদেশী কর্মসংস্থান উপলক্ষে বিদেশে গমন করেছিল। এদের মধ্যে পেশাজীবী ছিল মাত্র ১ হাজার ৪২৬জন বা শুন্য দশমিক ৩০ শতাংশ। দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার ২৬৫জন বা ২৮দশমিক ২৫ শতাংশ। আধা দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ৭৪ হাজার ৬০৪জন বা ১৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। স্বল্প দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৫৫ হাজার ৭০ জন বা ৫৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। অন্যান্য শ্রেণির শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৪৮৫জন বা ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ। ২০১৯ সালে মোট ৭ লাখ ১৫৯জন বাংলাদেশী বিদেশে গমন করে। এদের মধ্যে পেশাজীবী ছিলেন ১ হাজার ৯১৪ জন বা শুন্য দশমিক ২৭ শতাংশ। দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৪ হাজার ৯২১ জন বা ৪৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আধা দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৪২ হাজার ৫৩৬ জন বা ২০ দশমিক ৩৬ শতাংশ। স্বল্প দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৯৭ হাজার ১০২ জন বা ২৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। অন্যান্য শ্রেণির শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ৫৩ হাজার ৬৮৬ জন বা ৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ। পরবর্তী বছরগুলোতে এ চিত্র খুব একটা পরিবর্তিত হয়নি। অথচ বাংলাদেশ থেকে যদি অধিকহারে পেশাজীবী বিদেশে রপ্তানি করা যেত তাহলে এ খাতের আয় অনেকগুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব ছিল। ইউরোপীয় দেশগুলোতে সাধারণ শ্রমিককের চেয়ে পেশাজীবী এবং তথ্য-প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জনশক্তির চাহিদা বেশি।
বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি খাতের সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হচ্ছে সামান্য কিছু দেশ ও অঞ্চলের উপর জনশক্তি রপ্তানি কার্যক্রম সীমিত হয়ে আছে। বাংলাদেশ মূলত সৌদি আরব, ইউনাইটেড আরব আমিরাত, কুয়েত, বাহরাইন, মালয়েশিয়া ইত্যাদি দেশে অধিকহারে জনশক্তি রপ্তানি করে থাকে। অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে বর্ধিত হারে জনশক্তি রপ্তানি করা গেলে এ খাতের অর্থ আয় অনেকগুন বৃদ্ধি করা সম্ভব। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশী দূতাবাসগুলো কী করে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। দূতাবাসের উদ্যোগে জনশক্তি রপ্তানি বাড়ানোর চেষ্টা করা হলে এ ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জিত হতে পারে। তবে আশার কথা, সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত জানুয়ারি মাসে প্রবাসী বাংলাদেশীরা যে রেমিট্যান্স প্রেরণ করেছে তার মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ দেশ থেকে মোট ৫৬ দশমিক ৪১ কোটি মার্কিন ডলার প্রেরণ করা হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৭ দশমিক ২৫ কোটি মার্কিন ডলার। সৌদি আরব থেকে এসেছে ২৯ দশমিক ২৭ কোটি মার্কিন ডলার। মালয়েশিয়া এবং যুক্তরাজ্য থেকে রেমিট্যান্স এসেছে যথাক্রমে ২৬ দশমিক ১৫ কোটি মার্কিন ডলার ও ২৫ দশমিক ২৭ কোটি মার্কিন ডলার। জানুয়ারি মাসে মোট ২১৯ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসে। এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য থেকে আসে ৬৮ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় এক-তৃতীয়াংশ রেমিট্যান্স আসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য থেকে অধিক পরিমাণে রেমিট্যান্স আহরিত হবার পেছনে প্রধান কারণ হচ্ছে যারা এ দু’টি দেশে গমন করেছেন তাদের অধিকাংশই উচ্চ শিক্ষিত এবং প্রশিক্ষিত। কাজেই তারা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন সাধারণ শ্রমিকদের চেয়ে অনেক বেশি।
জনশক্তি রপ্তানি খাত থেকে আয় বাড়ানোর পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সরকারি উদ্যোগে অন্তত দীর্ঘ মেয়াদি প্রশিক্ষণ দানের পর সেসব প্রশিক্ষিত জনশক্তিকে বিদেশে প্রেরণ করতে হবে। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ লাভের পর সরকারি উদ্যোগে তাদের বিদেশে গমনের জন্য অর্থায়ন করা যেতে পারে। সিডিউল ব্যাংকগুলো সুনির্দিষ্ট চুক্তির আওতায় প্রবাস গমনেচ্ছুক ব্যক্তিদের অর্থায়ন করবে। তারা যখন রেমিট্যান্স প্রেরণ করবে তখন ব্যাংক তার নির্দিষ্ট পরিমাণ কিস্তি আদায় করে অবশিষ্ট অর্থ স্থানীয় সুবিধাভোগিদের নিকট প্রদান করবে।