সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ব্যাংকিংব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা অনেকটাই কমে গেছে। যার প্রভাব আমরা প্রত্যক্ষ করছি বিভিন্নভাবে। বিগত সরকার আমলে দেশের শীর্ষস্থানীয় উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ি গোষ্ঠী নানাভাবে ব্যাংক থেকে ঋণের নামে অর্থ তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। ফলে বেশির ভাগ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তারল্য সঙ্কটে পতিত হয়েছে। কোনো কোনো ব্যাংক আমানতকারিদের জমাকৃত অর্থ ফেরৎ দিতে পারছে না। এমতাবস্থায় সাধারণ মানুষ ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অর্থ সংরক্ষণের পরিবর্তে উদ্বৃত্ত অর্থ নিজেদের কাছে রাখাটাকেই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করছেন। কোনো কোনো ব্যাংক বন্ধ করে দেয়া হতে পারে এমন একটি ধারণা অনেকের মধ্যেই বদ্ধমূল হয়েছে। তাই তারা প্রচলিত ব্যাংকিংব্যবস্থায় অর্থ সংরক্ষণের ব্যাপারে অত্যন্ত ভীতির মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া দেশের অর্থনীতিতে প্রায় তিন বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। মানুষের আয় সে হারে বৃদ্ধি পায়নি। ফলে সংসারের ব্যয় নির্বাহের জন্য অনেকেই ব্যাংকে আমানতকৃত অর্থ উত্তোলন করে সাংসারিক ব্যয় নির্বাহ করছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ২০২৫ সালের মে মাসে ব্যাংকে আমানতকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ১৮ দশমিক ৩২ লাখ কোটি টাকা। আর ব্যাংকব্যবস্থার বাইরে ছিল ২ দশমিক ৯৩ লাখ কোটি টাকা। এপ্রিল মাসে ব্যাংকিং ব্যাংকে আমনতকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ১৮ দশমিক ২০ লাখ কোটি টাকা। আর ব্যাংকব্যবস্থার বাইরে ছিল ২ দশমিক ৭৭ লাখ কোটি টাকা। মার্চ মাসে ব্যাংকব্যবস্থায় আমানত ছিল ১৮ দশমিক ১৮ লাখ কোটি টাকা। আর ব্যাংকের বাইরে ছিল ২দশমিক ৯৬ লাখ কোটি টাকা। পরিসংখ্যান থেকে প্রতীয়মান হয়, মার্চ মাসের তুলনায় এপ্রিল মাসে ব্যাংক ব্যবস্থার বাইরে থাকা অর্থের পরিমাণ কিছুটা কমেছিল। কিন্তু মে মাসে এসে তা আবারো বেড়েছে। আগামীতে ব্যাংক ব্যবস্থার বাইরে অর্থ সরবরাহ আরো বাড়তে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদগণ। বাজারে প্রচলিত কারেন্সির ব্যবহার বেড়েছে। বর্তমানে নানা কারণেই দেশেল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড মন্থর হয়ে পড়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে যদি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং তার মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে তাহলে মানুষের অর্থনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি পাবে। সেই অবস্থায় মানুষের অর্থের চাহিদা বাড়বে। ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আমানতের পরিমাণ নিশ্চিতভাবে আরো হ্রাস পাবে।
সম্পাদকীয়
মানুষের হাতে নগদ টাকা বেড়েছে
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ব্যাংকিংব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা অনেকটাই কমে গেছে। যার প্রভাব আমরা প্রত্যক্ষ করছি বিভিন্নভাবে। বিগত সরকার আমলে দেশের শীর্ষস্থানীয় উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ি গোষ্ঠী নানাভাবে ব্যাংক থেকে ঋণের