জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির পর এ প্রশ্নে গণভোট আয়োজন ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্তের পর বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। গত ১৯ নভেম্বর রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় সেশনের সংলাপে সভাপতির বক্তব্যে সিইসি এসব কথা বলেন। দৈনিক সংগ্রামে বুধবার প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ. এম. এম. নাসির উদ্দিন বলেছেন, রেফারেন্ডাম (গণভোট) পরিচালনার জন্য একটি স্পষ্ট আইন প্রণয়ন জরুরি। তিনি বলেন, কীভাবে গণভোট হবে, সে আইনটা আগে হওয়া দরকার। আইন হলে তখন আমাদের একটা দায়বদ্ধতা আসবে। বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় সেশনের সংলাপে সভাপতির বক্তব্যে সিইসি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সকালে বহু বক্তা গণভোট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু আইন ছাড়া গণভোটের পদ্ধতি, ব্যালট, ব্যালট বাক্স বা যাবতীয় কাঠামো নিয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি উল্লেখ করেন, রেফারেন্ডাম আইন এর আগে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ করেছিলেন, এখন আবার আইন প্রণয়ন প্রয়োজন। আইন হওয়ার পর ইসি এ বিষয়ে অনুশীলন ও প্রস্তুতি শুরু করবে। পাকিস্তান আমল থেকে নির্বাচন দেখে আসার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে সিইসি বলেন, দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতাকে বিবেচনায় নিয়েই অগ্রসর হতে হবে। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক বাস্তবতার হিট ওয়েভটা আমাকে ফিল করতে হয়। সামাজিক বাস্তবতাও সেরকম। তাই কম কথা, কাজ বেশি এই নীতিতে আমরা এগোচ্ছি। স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে সিসিটিভি ও সাংবাদিকদের স্বাধীন উপস্থিতিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন তিনি বলেন, গুড অবজারভার থাকলে, ভালো সাংবাদিকদের জন্য উন্মুক্ত রাখলে স্বচ্ছতা বাড়বে। লুকিয়ে নির্বাচন করতে চাই না। সাংবাদিকদের ক্যামেরা থাকবে, আমাদের সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে। আমরা স্বচ্ছতা চাই। তিনি আরও বলেন, ইসি ন্যায়নীতি, আইন ও বিধি বিষয়ে কোনো আপসে যাবে না। নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনে কমিশন অটল থাকবে। এজন্য রাজনৈতিক দল, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং ভোটারদের সহযোগিতা প্রয়োজন। দুপুরের সেশনে বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি) এবং বাসদ মার্কসবাদী (নতুন দল)-এর সঙ্গে ইসির সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
সকালে অংশ নেয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ মাইনোরিটি জনতা পার্টি, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণসংহতি আন্দোলন, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) এবং বাংলাদেশ লেবার পার্টি। এর আগে ১৩, ১৬ ও ১৭ নভেম্বর দুই সেশনে ১২টি করে মোট ৩৬টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন।
আমরা মনে করি গণভোট জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য খুবই প্রয়োজন। আর এ লক্ষ্যে যা কিছু প্রয়োজন তা করতে হবে। আমরা এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যকে প্রণিধানযোগ্য বলে মনে করি। আমরা মনে করি, গণভোট আইন প্রণয়ন জরুরি। এর মধ্য দিয়ে ইসির দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে। ৫ আগস্টের বিপ্লব আগামীতে যে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ উপহার দেবে তার সুফল লাভের জন্য এটা প্রয়োজন। আমরা বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি দেয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানাই।