শনিবার যুক্তরাষ্ট্রে ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচার বিরোধী এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। সমাবেশের স্লোগান হলো, ‘নো ফ্যাসিস্ট নো ডিক্টেটর নো কিংস’। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এর আগে গত ১৪ জুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অ-আমেরিকান কর্মকাণ্ড, কর্তৃত্ববাদী মনোভাব এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ক্ষুণ্ন করার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১৮শ’ শহর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। তবে আয়োজকরা জানিয়েছেন, এবারের সমাবেশের মেজাজ আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় আরো কঠোর হবে। এমন বক্তব্যের বার্তা বেশ পরিষ্কার। এদিকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। পার্ক ও পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ‘নো কিংস’ অর্থাৎ ‘আমরা কোনো রাজা বা স্বৈরাচার চাই না’ এ মেজাজে সারাদেশে কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। আগের মতো এবারও নিউইয়র্ক, বস্টন, শিকাগো, ফিলাডেলফিয়া, ক্যানসাস, নিউ অরলিন্স এবং ফ্যান্সিসকোসহ অভিবাসী অধ্যুষিত শহরগুলোতে বড় ধরনের সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
এসব সমাবেশের লক্ষ্য বেশ পরিষ্কার। আয়োজকরা বলেছেন, সম্প্রতি ডেমোক্রেট শাসিত শহরগুলোতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের সিদ্ধান্ত ও ফেডারেল প্রশাসনের বাড়তি নিয়ন্ত্রণ জনগণের মধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পবিরোধী ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এদিকে কংগ্রেসের রিপাবলিকান স্পিকার মাইক জনসন এমন কর্মসূচিকে ‘চরমপন্থীদের অপতৎপরতা’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘এটি ফেডারেল প্রশাসনকে অচল করার ষড়যন্ত্রের অংশ’। এর জবাবে স্বতন্ত্র সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স বলেন, ‘নো কিংস’ র্যালি আমেরিকার প্রতি ঘৃণার প্রকাশ নয়, বরং কোটি আমেরিকানের কণ্ঠ, যারা স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। এ র্যালির মধ্য দিয়েই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কর্তৃত্ববাদী শাসন অবসানের বার্তা যাবে।’ হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র আবিগাইল জ্যাকশন অবশ্য সংক্ষেপে বলেছেন, ‘কিসের প্রতিবাদ’?
ট্রাম্পবিরোধী সমাবেশের আয়োজকরা বলেছেন, আগামী ৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ২৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে প্রেসিডেন্ড ট্রাম্প নিজেকে ‘রাজা বা সম্রাট’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন। এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ও মানবিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে একের পর এক পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। তারা আরও বলেন, ট্রাম্প-প্রশাসন শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নয়, এমন কী নিজ দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধেও মামলা এবং হয়রানির পথে হাঁটছে। নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থী অ্রান্ডু ক্যুমো জয়ী না হলে ফেডারেল অর্থ সহায়তা বন্ধের হুমকিও দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। বর্তমানে ডেমোক্রেট প্রার্থী যোহরান মামদানি, যিনি মুসলিম আমেরিকান তরুণদের প্রিয় মুখ, জনমত জরিপে এগিয়ে আছেন। ‘নো কিংস’ র্যালির আয়োজকদের ওয়েব সাইটে বলা হয়েছে, এ কর্মসূচির লক্ষ্য সারা বিশ্বকে জানানো যেÑ আমেরিকায় কোনো রাজা নেই, নেই স্বৈরাচার; আমেরিকার প্রকৃত ক্ষমতা জনগণের হাতে। ওয়েবসাইটে প্রদত্ত বক্তব্য জনপ্রিয় বক্তব্য, ন্যায়সঙ্গত বক্তব্য। শুধু আমেরিকায় নয়, এমন বক্তব্য পুরো পৃথিবীরে গণমানুষের বক্তব্য। কোনো দেশের মানুষই স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট শাসকদের চায় না। জনগণ নিজেদের মতামতের ভিত্তিতে নিজেদের শাসন চায়। ক্ষমতার মালিক তো আসলে জনগণই। এ কারণে বাংলাদেশের ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে।