DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

সম্পাদকীয়

বাগবিতণ্ডার এক অদ্ভুত রূপ

ট্রাম্প-জেলেনস্কির বাগবিতণ্ডার চিত্রটা কেমন? বিশ্বপরিমণ্ডলে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। অনেকেই আগামীর বিশ্বপরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কিত।

Printed Edition
Default Image - DS

ট্রাম্প-জেলেনস্কির বাগবিতণ্ডার চিত্রটা কেমন? বিশ্বপরিমণ্ডলে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। অনেকেই আগামীর বিশ্বপরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কিত। আমেরিকার সঙ্গে ইউরোপের সম্ভাব্য সংকটের বিষয়টি তো অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। উল্লেখ্য যে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির বাগবিতণ্ডার আগেই দু’জনের সম্পর্কে টানাপোড়েন লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। ট্রাম্প জেলেনস্কিকে ‘স্বৈরশাসক’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন এবং বলেছিলেন, এক মিথ্যার ওপর ভর করে যুদ্ধ শুরু করেছে ইউক্রেন। শুক্রবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সামনে দুই নেতার বাগবিতণ্ডার পর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের লালন করা মার্কিন-ইউক্রেন মিত্রতা যেন চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেছে। একই সঙ্গে আশঙ্কা তৈরি হলো, ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক নিয়ে। ফলে এখন ইউক্রেন ছাড়াও ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য মার্কিন প্রতিশ্রুতি নিয়ে তৈরি হয়েছে সন্দেহ-সংশয়। এখন বড় প্রশ্ন হলো, ন্যাটো সদস্যদের ওপর হামলাকে আমেরিকার ওপরই হামলা হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসন বিবেচনা করবে কি? রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন সম্পর্ক তৈরির জোর প্রচেষ্টা দেখে এমন শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ট্রাম্প একদিকে যুদ্ধ বন্ধের জন্য ইউক্রেনের ওপর প্রচণ্ড চাপ প্রয়োগ করছেন, অপরদিকে পুতিনকে দিচ্ছেন বড় ছাড়।

পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, বাগবিতণ্ডার ঘটনাটি পরিকল্পিত। এর মাধ্যমে হয় জেনেলস্কিকে আমেরিকার কথা মতো চলতে হবে, নয়তো পরবর্তীতে কোনো সংকট সৃষ্টি হলে তার দায় তাকে দেওয়া যাবে। অবস্থা এখন যে পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে, তাতে ইউরোপকে নিজেদের নিয়ে ভাবতে হবে। আর ইউরোপের সামর্থ্য কম নয়। ইউরোপের আছে প্রায় ৫০ কোটি মানুষ। অর্থনীতিও যুক্তরাষ্ট্রের মত শক্তিশালী। ইউরোপ হয়তো উদ্ভাবনের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের চাইতে কিছুটা পিছিয়ে। আর লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো ট্রাম্প, ভ্যান্স ও ইলন মাস্ক নিজেরাই যুক্তরাষ্ট্রের শক্তির মূল ভিত্তিগুলো নষ্ট করে দিচ্ছেন।

এছাড়া ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক বাড়িয়ে আমেরিকানদের নিত্যপণ্যের দাম তথা থাকাখাওয়া ও চলাফেরার ব্যয় বাড়াচ্ছে। আর অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হিতে বিপরীত হতে পারে। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, ট্রাম্পের বিভিন্ন চমক দীর্ঘ মেয়াদে সুখপ্রদ হবে না। কারণ, পৃথিবী চলে বাস্তব প্রয়োজন ও ভারসাম্য নীতির মাধ্যমে। চরম ভাবনা ফলপ্রসূ হয় না। আর ইউরোপের সাথে দ্বন্দ্ব যুক্তরাষ্ট্রের দুর্ভোগ বাড়াতে পারে।