শিশুদের বিরুদ্ধে কি যুদ্ধ করতে হয়? কাপুরুষ নেতানিয়াহু এমন অপকর্মই করছেন। লোকটি শুধু শিশু হত্যার অপরাধে অপরাধী নন, অভুক্ত রেখে মানুষ মারার মতো নিষ্ঠুরতাও প্রদর্শন করছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। এএফপি এবং মিডলইস্ট মনিটর সূত্রে জানা গেছে, গাজা যে কোনো সময় দুর্ভিক্ষের কবলে পড়তে পারে। এতে হুমকির মুখে পড়বে ৬৫ হাজারের বেশি শিশুর জীবন। দু’মাসের বেশি সময় ধরে গাজা অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরাইল। তারা গাজায় মানবিক সহায়তা ও জরুরি পণ্য ঢুকতে বাধা দিচ্ছে। এ কারণে সেখানে চরম খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত সরকার গত শুক্রবার এসব তথ্য দিয়েছে। গাজার গণমাধ্যম দফতর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরাইলি দখলদার বাহিনী গাজায় পরিকল্পিতভাবে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করছে, যা সাধারণ মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তারা সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ রেখে ৩৯ হাজার ট্রাক গাজায় ঢুকতে বাধা দিচ্ছে। এ ট্রাকগুলোতে আছে ত্রাণ, জ¦ালানি ও ওষুধ। এভাবে ইসরাইল ২৪ লাখের বেশি বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ও পরিকল্পিত অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

রোববার গাজার পরিষেবা দফতর জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরে একটি আশ্রয় শিবিরের তাঁবুতে ইসরাইলের বিমান হামলায় আটজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে চারজনই শিশু। এ তাঁবুগুলোতে অনেক মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। দু’মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে ১৮ মার্চ গাজায় আবার অভিযান চালায় ইসরাইলি সোনাবাহিনী।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে আকস্মিক হামলা চালায় স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এতে নিহত হয় ১ হাজার ২১৮ জন ইসরাইলি। আর জিম্মি করা হয় আড়াই শতাধিক ব্যক্তিকে। ওইদিনই গাজায় পাল্টা হামলা চালায় ইসরাইল। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে সেই হামলা অব্যাহত রয়েছে। গত জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি হলেও তা লঙন করে হামলা চালায় ইসরাইল। এতে শনিবার পর্যন্ত ২ হাজার ৭০১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত মোট নিহত হয়েছেন ৫২ হাজার ৮১০ জন ফিলিস্তিনি।

যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু যুদ্ধ অব্যাহত রাখতে চাইলেও এর বিরোধিতা করছেন বহু ইসরাইলি সোনাসদস্য ও নাগরিকরা। গাজা যুদ্ধ বন্ধ করে ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে তেলআবিবে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। জিম্মি ও নিখোঁজ পরিবারগুলোর সদস্যরা ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সদর দফতরের বাইরেও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। এখন তাদের দাবি নেতানিয়াহুর কর্নকুহরে প্রবেশ করলেই হয়।