ইসরাইলকে এখন নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিচ্ছে বিভিন্ন দেশ। দেশটির অপরাধের তুলনায় এটা কিছুই নয়। গাজাকে ফিলিস্তিনি শূন্য করতে এখন সামরিক অভিযান আরো তীব্র করেছে ইসরাইল। বর্বর এ হামলায় প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছে শিশুসহ অগণিত নিরাপরাধ ফিলিস্তিনি। সোমবারও ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৯১ জন। গাজায় নতুন করে চালানো সামরিক অভিযান বন্ধ এবং ত্রাণসহায়তা প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করে উল্টো হামলার তীব্রতা বাড়ানোয় ইসরাইলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ ‘জোরালো পদক্ষেপ’ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে কানাডা, ফ্রান্স ও বৃটেন। স্থানীয় সময় সোমবার ইউরোপের এ বৃহৎ তিন দেশের এমন ঘোষণা ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ওপর চাপের মাত্রা বাড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে ইসরাইলের সেনাবাহিনী শুক্রবার গাজায় নতুন করে সামরিক অভিযান শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে সোমবার নেতানিয়াহু বলেছিলেন, যে কোনোভাবে তারা পুরো গাজার নিয়ন্ত্রণ নেবেন। মূলত যুদ্ধ বন্ধে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতিসহ জিম্মি মুক্তি নিয়ে কোনো চুক্তি না করেই মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার সফরের সময় থেকেই গাজায় নতুন করে আরো ধ্বংসাত্মক স্থল আক্রমণ শুরু করে ইসরাইল। গাজায় ত্রাণ সহায়তা বন্ধ করায় আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যে সেখানে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছেন। বৃটিশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা বন্ধ করা অগ্রহণযোগ্য এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এর জবাবে নেতানিয়াহু বলেন; লন্ডন, অটোয়া ও প্যারিসের নেতারা ইসরাইলের নাগরিকদের হত্যার জন্য হামাসকে বিশাল পুরস্কারের প্রস্তাব দিচ্ছেন। একই সঙ্গে তারা আরো নৃশংসতাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। নেতানিয়াহুর এমন বক্তব্যে বহু প্রশ্ন জাগে। একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের নৃশংস প্রধানমন্ত্রীর মুখে এমন বক্তব্য আদৌ মানায় কি? তার আগ্রাসন, জবরদখল, হত্যা, ধ্বংস ও প্রতারণার দ্বিতীয় কোনো উদাহরণ মানব ইতিহাসে আছে কি? এমন একজন কুৎসিত মানুষ এখনো অহংকারের সাথে কথা বলতে পারছে, এটা মানবজাতির জন্য বড় লজ্জার বিষয়। এসব হতে পারছে বর্তমান অমানবিক সভ্যতা এবং প্রতারণামূলক বিশ্বব্যবস্থার কারণে।

এদিকে সোমবার গাজায় ত্রাণবাহী মাত্র পাঁচটি ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দিয়েছেন ‘যুদ্ধপরাধী’ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। সমগ্র গাজায় এটি সমুদ্রের মাঝে এক ফোঁটা পানির মতো। এমনটাই মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের ত্রাণসহায়তা বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা টম ফ্লেচার। তিনি বলেছেন, আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ১৪ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে। বিবিসির রেডিও ফোর টুডের এক অনুষ্ঠানে টম ফ্লেচার বলেন, হাজার হাজার ট্রাক ত্রাণসহায়তা নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে। এসব ট্রাকে রয়েছে শিশুখাদ্যসহ অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার। কিন্তু তা গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে না যুদ্ধাপরাধী নেতানিয়াহু। এমন একজন অমানুষকে শাস্তি দিতে পৃথিবী ব্যর্থ কেন?