যুদ্ধাপরাধী ও সন্ত্রাসী কোনো রাষ্ট্র সভ্য রাষ্ট্রের সমর্থন পেতে পারে না। কিন্তু বিস্ময়ের বিষয় হলো, এমন একটি মন্দ রাষ্ট্রের কর্মকা-কে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে সভ্যতার শাসক হিসেবে পরিচিত কতিপয় রাষ্ট্র। তবে আন্তর্জাতিক বিশে^ সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইল একঘরে হয়ে পড়ছে। এএফপি, আল-জাজিরাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়, গাজায় হামলার কারণে আন্তর্জাতিক জনমত ধীরে ধীরে ইসরাইলের বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে। অনেক দেশ সে জনমতের প্রতিফলন ঘটিয়ে ইসরাইলের প্রতি নিন্দাও জানাচ্ছে। প্রসঙ্গত এখানে দ্য হেগ গ্রুপের কথা উল্লেখ করা যায়। এটি একটি আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রীয় জোট। এ জোট আন্তর্জাতিক আইন রক্ষা এবং ফিলিস্তিনীদের পাশে থাকার লক্ষ্যে ‘সমন্বিত কূটনৈতিক ও আইনি পদক্ষেপ’ নেয়ার জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ। এ গ্রুপের আটটি দেশ হলো- দক্ষিণ আফ্রিকা, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, কিউবা, হন্ডুরাস, মালয়েশিয়া, নামিবিয়া ও সেনেগাল। তাদের লক্ষ্য জাতিসংঘ সনদের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক আইন, আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারসহ সব মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা করা। দ্য হেগ গ্রুপ চলতি সপ্তাহেই কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায় এক বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে চীন, স্পেন, কাতারসহ প্রায় ৩০টি দেশ অংশ নেয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ফ্রান্সচেসকা আলবানিজ। তিনি এই বৈঠককে গত ২০ মাসের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে উল্লেখ করেন। গাজায় ফিলিস্তিনীদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের অভিযানে মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগ তুলে প্রতিবেদন দেয়ায় আলবানিজের ওপর সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুই দিনের সম্মেলন শেষে ১২টি দেশ ইসরাইলের কর্মকা- নিয়ন্ত্রণে ছয়টি পদক্ষেপের ব্যাপারে সম্মত হয়। এর মধ্যে আছে ইসরাইলে অস্ত্র সরবরাহের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া, অস্ত্রবহনকারী জাহাজ চলাচলে বাধা প্রদান এবং ইসরাইলী দখলদারি থেকে উপকৃত প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সরকারি চুক্তি পর্যালোচনা করা।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ইসরাইলের কট্টর ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেনগভির ও চরমপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্পোট্রিচকে বুধবার নিজেদের ভূখ-ে প্রবেশে বাধা দেয় স্লোভেনিয়া। এর আগে গত জুনমাসে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যা-, যুক্তরাজ্য ও নরওয়ে ওই দুইমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সহিংসতায় উস্কানি দেয়ার অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এ দু’মন্ত্রী গাজায় অবৈধ ইহুদির বসতি স্থাপনের পক্ষে এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণে অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন। উপলব্ধি করা যায়, ইসরাইলের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে বিশ^বাসীর ক্ষোভ বাড়ছে। ফলে দেশটির মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। ইসরাইলের কর্মকা- নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারেও বিভিন্ন দেশ পদক্ষেপ নিচ্ছে, যা আগে লক্ষ্য করা যায়নি। এভাবেই দেশটি আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে হয়ে পড়বে। এরপর ইসরাইল টিকে থাকবে কেমন করে?