গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ৪ নভেম্বর মৃত্যু হয়েছিল একদিনে এ বছরের সর্বোচ্চ সংখ্যক ১০ জন। এক দিনের বিরতিতে আবারো ৫ জনের মৃত্যু হলো। এ নিয়ে এ বছর মৃত্যুর সংখ্যা ৩০৭ জন মারা গেছে এবং গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ১০৩৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যা এ বছর দাঁড়িয়েছে ৭৬ হাজার ২৬ জন।
দৈনিক সংগ্রামে গতকাল প্রকাশিত খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে চারজন পুরুষ এবং একজন নারী। তাদের বয়স ৬ থেকে ৫০ বছর। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি নতুন রোগীদের মধ্যে ৩৭১ জনই ঢাকার দু’সিটি করপোরেশন এলাকার। এর বাইরে ঢাকা বিভাগে ১৮৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০৩ জন, বরিশাল বিভাগে ১৩৪ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৬৬ জন, খুলনা বিভাগে ৫৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ৭৯ জন, রংপুর বিভাগে ৩৩ জন এবং সিলেট বিভাগে ৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল সেপ্টেম্বর মাসে। তবে অক্টোবর মাসে এ সংখ্যা ছাড়িয়ে ৮০ জন হয়েছে। আর নভেম্বরে মারা গেছেন ২৯ জন। নভেম্বরে এক সপ্তাহে ২৯ জনের মৃত্যু ভাবনার কারণ বটে।
খবরে বলা হয়েছে, এ ছাড়া জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, এপ্রিলে ৭ জন, মে মাসে ৩ জন, জুন মাসে ১৯ জন, জুলাই মাসে ৪১ জন, আগস্ট মাসে ৩৯ জন মারা যান। এ বছর সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল সবচেয়ে বেশি, ১৫ হাজার ৮৬৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে অক্টোবরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ২২ হাজার ৫২০ জন রোগী, যা সেপ্টেম্বর মাসকে ছাড়িয়ে যায়। আর নভেম্বরে এ পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন ৬ হাজার ১৬৪ জন রোগী। এ ছাড়া জানুয়ারিতে ১ হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন, মে মাসে ১ হাজার ৭৭৩ জন, জুন মাসে ৫ হাজার ৯৫১ জন, জুলাই মাসে ১০ হাজার ৬৮৪ জন, আগস্টে ১০ হাজার ৪৯৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখে ২০০০ সাল থেকে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে এ রোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যুও হয় ওই বছর।
এ বছর বৃষ্টির প্রবণতা বেশি থাকায় এবং থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে। বৃষ্টির ফলে জলাবদ্ধতায় মশার জন্ম বেশি হয়েছে। কিন্তু সে তুলনায় মশক নিধন কার্যক্রম যথার্থ ছিল না বলেই মনে হয়। আমরা মনে করি নভেম্বর মাসের এক সপ্তাহে ডেঙ্গুতে ২৯ জনের মৃত্যুর ফলে বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, সিটি কর্পোরেশন ও পৌর সভাগুলোকে ভাবতে হবে। আমরা রাজধানীসহ বিভিন্নস্থানে জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশাবাদী। আমরা চাইব ডেঙ্গুতে মৃত্যু কিভাবে রোধ করা যায় তা নির্ধারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও সাধারণ মানুষকে কিভাবে আশ্বস্ত করা যায়। ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা যে কোন মূল্যে কমিয়ে আনা দরকার।