১৯৭৩ সালে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন থেকে ঢাকা পর্যন্ত একটি রেললাইন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। সে সময় এ প্রকল্পের আওতায় ঈশ্বরদী থেকে পাবনা জেলার নগরবাড়ী ফেরিঘাট পর্যন্ত একটি রেললাইন এবং মানিকগঞ্জ জেলার আরিচা ফেরিঘাট থেকে ঢাকা পর্যন্ত একটি রেললাইন নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়ে তা একযোগে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। রেললাইন নির্মাণের কাজ পুনরায় শুরু করা হলে ঈশ্বরদী থেকে নগরবাড়ী ফেরিঘাট পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করে ট্রেন চালু করা হয়েছে কিন্তু আরিচা ফেরিঘাট থেকে ঢাকা পর্যন্ত রেললাইনই নির্মাণ করা হয়নি। তাই মানিকগঞ্জবাসী যোগাযোগের সবচেয়ে নিরাপদ, আরামদায়ক এবং স্বল্প ব্যয়সাপেক্ষ মাধ্যম হিসাবে স্বীকৃত রেল যোগাযোগের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। মানিকগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের লালিত প্রত্যাশা হচ্ছে মানিকগঞ্জ-ঢাকা রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা। বর্তমানে মানিকগঞ্জ জেলায় আরিচা ফেরিঘাটের পাশাপাশি পাটুরিয়া ফেরিঘাট রয়েছে এবং মানিকগঞ্জ-ঢাকা রেললাইন নির্মাণের জন্য কয়েকটি রুট রয়েছে। মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলায় একটি রেলওয়ে জংশন স্থাপন করে আরিচা ফেরিঘাট থেকে শিবালয় পর্যন্ত একটি রেললাইন এবং পাটুরিয়া ফেরিঘাট থেকে শিবালয়, মানিকগঞ্জ সদর (কোতোয়ালি) উপজেলা, নবীনগর, সাভার, হেমায়েতপুর, গাবতলী ও মিরপুরের রূপনগর হয়ে ঢাকার বনানী রেল ষ্টেশন পর্যন্ত একটি রেললাইন নির্মাণ করা দরকার। এ রেললাইনগুলো নির্মাণ করা হলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ট্রেনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত করার সুযোগ পাবে। আরিচা ফেরিঘাট এবং পাটুরিয়া ফেরিঘাট থেকে ঢাকা (কমলাপুর) পর্যন্ত কমিউটার ট্রেন চালু করা যাবে। তখন মানিকগঞ্জের মানুষ ঢাকায় নিয়মিত অফিস করার সুযোগ পাবে। স্বল্প খরচে ও অপেক্ষাকৃত দ্রুতগতিতে কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন মালপত্র পরিবহন করা যাবে। সাভারে অবস্থিত ঢাকা ইপিজেডের অন্তর্গত শিল্প-কারখানায় উৎপাদিত পণ্য কনটেইনার ট্রেনে খুব কম খরচে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানো যাবে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া পয়েন্টে “দ্বিতীয় পদ্মা সেতু” এবং আরিচা-নগরবাড়ী পয়েন্টে “দ্বিতীয় যমুনা সেতু” নির্মাণের পর খুলনা, রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগের মানুষও এ রেললাইন দিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ এবং সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে স্বল্প খরচে নিরাপদ এবং আরামদায়ক ভ্রমণের সুযোগ পাবে। মানিকগঞ্জের পাশাপাশি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। রাজশাহী-ঢাকা রুটে ট্রেন ভ্রমণের সময় দু’ঘণ্টা কমে যাবে। সুতরাং এ রেললাইনগুলো নির্মাণ করা অত্যন্ত জরুরী। যতদ্রুত কাজ শুরু করা হবে তত কম খরচে কাজ শেষ করা যাবে। বৈদেশিক সাহায্য বা ঋণ সময়মতো পাওয়া যায় না। তাই রেললাইন নির্মাণের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা উচিত। শিগগিরই এ রেললাইনগুলো নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য মাননীয় রেল উপদেষ্টার কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
বিনীত : রফিকুল বাশার, ৯৮৬, পূর্ব শেওড়াপাড়া, কাফরুল, ঢাকা-১২০৬।