বৈশাখ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত প্রতি মাস ৩১ দিন এবং কার্তিক থেকে চৈত্র মাস হবে ৩০ দিনে। ফাল্গুন হবে ২৯ দিনে এবং যে বছরে লিপ-ইয়ার বা অধিবর্ষ হবে সে বছর ফাল্গুন মাস হবে ৩০ দিনে। এরপর আশির দশকে বাংলা একাডেমি কর্তৃক একটি টাস্কফোর্সের মাধ্যমে বাংলা পঞ্জিকার অধিকতর উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে যে প্রস্তাব করা হয় তাতে বলা হয়, মাসের দিন নির্ধারণের পূর্বোক্ত পদ্ধতি বলবৎ থাকবে। তবে গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জির অধিবর্ষে যে বাংলা বছরে ফাল্গুন মাস পড়ত সে বাংলা বছরকে অধিবর্ষ গণ্য করা হবে। অধিবর্ষে চৈত্র মাসের পরিবর্তে ফাল্গুন মাসে ৩১ দিন হবে। আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী রাত ১২টায় তারিখ পরিবর্তন হবে। বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত বাংলা সনের এ বৈজ্ঞানিক সংস্কার বাংলাদেশ সরকার গ্রহণ করেছে এবং এখন তা সারা দেশে সরকারিভাবে চালু রয়েছে।

বৈশাখ থেকে আশ্বিন প্রতি মাস ৩১ দিনে এবং কার্তিক থেকে চৈত্র পর্যন্ত ফাল্গুন মাস বাদে পাঁচ মাস ৩০ দিনে গণনা করা হচ্ছে (ফাল্গুন হচ্ছে ২৯ দিনে)। লিপ ইয়ারের ফাল্গুন মাস ৩০ দিনে গণনা করা হচ্ছে। জ্যোতিষ থেকে মূলত বাংলায় আমরা মাসগুলোর যে নাম ব্যবহার করি তা এসেছে। এর প্রতিটি এসেছে নক্ষত্রের নাম থেকে। চাঁদ পৃথিবীকে বছরে ১২ বার প্রদক্ষিণ করে। চাঁদের এ আবর্তন থেকেই মানুষ মাসের ধারণা গ্রহণ করেছে। ১২ বার প্রদক্ষিণের পথে ২৭টি নক্ষত্রের সঙ্গে চাঁদের সাক্ষাৎ হয়।

বাংলা মাসের ক্ষেত্রে মূলত যে নক্ষত্র মণ্ডলে ঢোকার পর চাঁদ পূর্ণিমা দেখায় সে নক্ষত্রের নামেই ওই মাসের নাম রাখা হয়েছে। সে হিসাবে বিশাখা নক্ষত্র থেকে বৈশাখ, জ্যেষ্ঠা নক্ষত্র থেকে জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়া নক্ষত্র থেকে আষাঢ়, শ্রবণা নক্ষত্র থেকে শ্রাবণ, পূর্বভাদ্রপদা নক্ষত্র থেকে ভাদ্র, অশ্বিনী নক্ষত্র থেকে আশ্বিন, কৃত্তিকা নক্ষত্র থেকে কার্তিক, মার্গশীর্ষ মাস (পূর্বে বৎসরের প্রথম মাস রূপে গণ্য করা হত, অগ্র+হায়ন) থেকে অগ্রহায়ণ, পুষ্যা বা পৌষী থেকে পৌষ, মঘা নক্ষত্র থেকে মাঘ, ফল্গুনী নক্ষত্র থেকে ফাল্গুন এবং চিত্রা নক্ষত্র থেকে চৈত্র।

-সোহাইল আহমেদ

গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষক ও সংগঠক।