গাযী খলিলুর রহমান
যাদের লিখার অভ্যাস, যতো ঝঞ্ঝাট, যন্ত্রণা আসুক, চুপ থাকতে চাইলেও চুপ থাকা কি যায়? যায় না। মনের অজান্তেই লিখার অবতারণাটা কেউ না কেউ তৈরি করে দেয়। দেখুন, বিশ্বের সব দেশেই গণতন্ত্র বা দল রয়েছে। (মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ ব্যতীত) রয়েছে দলের নেতা কর্মী। রয়েছে দলে দলে মতপার্থক্য। এক্ষেত্রে আমি বাংলাদেশ, ভারত ও আমেরিকার গণতন্ত্র, দল ও দল গুলোর নেতা কর্মীকে নিয়ে দুটো কথা লিখতে চাই। কারণ, যেভাবেই হোক, যেকারণেই হোক, ভারত ও আমেরিকা বাংলাদেশের জনগণ, দল ও গণতন্ত্রের জন্য বিরাট ফ্যাকটর। এ দুটো দেশের বলয়ের মধ্যেই বাংলাদেশ। ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক বাংলাদেশের আপামর সর্বস্তরের জনগণ, এ দু’বলয়ের মধ্যে মাইনকা চিপায় পড়ে হিমশিম খাচ্ছেন। ভারতের বড়ো দুটো দলের দিকে ও সেই দল দুটোর নেতা কর্মী নিয়ে একটু বিবেক জাগ্রত করে তাকান এবং গবেষণা করুন। বিজেপি ও কংগ্রেস। একটি দলের সাথে অপর দলটির দা-কুমড়া সম্পর্ক। এক দলের নেতা কর্মীর সাথে অপর দলটির নেতা কর্মীর সম্পর্ক জটিল! সমীকরণটাও জটিল ও কঠিন! কিন্তু দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে কোনো দলের নেতারাই বিদেশীদের নিকট ধরনা দেন না, এমনকি ধরনা দেওয়ার রীতি নীতি তাদের মধ্যে নেই। দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়ায় না। প্রপাগাণ্ডা বা মিথ্যে গুজব রটায় না। আবার আমেরিকার দিকে তাকিয়ে দেখুন, ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান। এদের মধ্যে দা-কুমড়া সম্পর্ক।
মিস্টার বাইডেন নির্বাচন দেন আর মিস্টার ট্রাম্প বিজয়ী হয়! আবার মিস্টার ট্রাম্প বিজয়ী হয়ে সবার আগে মিস্টার বাইডেনের সাথে বসে কর্ম পলিসি ঠিক করেন। আসলে এটাই রাজনীতি। এটাই দেশ ও জাতির প্রতি, দল ও দলগুলোর নেতা কর্মীদের একাগ্রতা, ত্যাগ বা ভালোবাসা বা দায়বদ্ধতা। আর বাংলাদেশের দল ও দলীয় নেতা কর্মীদের দিকে তাকান। কথায় কথায় ভিনদেশীদের নিকট দৌড় ঝাঁপ। কিছু হলেই ভিনদেশীদের গোলামি। ভিনদেশ ছাড়া কিছুই বুঝতে চান না নেতারা। ভিনদেশের ফান্দে পড়ে কী যে অবস্থা। মাইনকা চিপায় পড়ে রক্তাক্ত পরিবেশের হাতছানি। আমার আশংকা, ভিনদেশী চক্রান্তে আর দেশীয় নেতাদের অদূরদর্শীতায় না জানি ভ্রাতৃপ্রতিম সার্বজনীন এই সোনার বাংলাদেশটি, কাশ্মীর, লিবিয়া, সুদান কিংবা অন্য কোনো মুসলিম দেশের মতো নিজেরা নিজেরা রক্ত ঝরায় মেতে উঠে। পরিস্থিতি ভয়াবহ।
নিজেরা নিজেরা আত্মঘাতী লড়াইয়ে মেতে উঠতে পরোক্ষ প্রস্তুতি। কী থেকে কী হয়, কালো অন্ধকার দেখছি। আমি একজন ছোটো সংবাদকর্মী, লিখাটা হয়তো জটিল সমীকরণে গাঁথা। আমরা মুসলিম, আমাদের বাংলাদেশ মুসলিম দেশ। ঐ দুটো দেশ কিন্তু মুসলিম না। চরিত্রটা থাকা উচিত ছিল আমাদের। কিন্তু সে চরিত্রটা আমাদের থেকে হরণ করে নিয়ে, দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন অমুসলিম দেশ। কষ্ট ও দুঃখ এখানেই। হিসাব মিলিয়ে দেখবেন। তবে আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলছি, আকাশে কালো মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে। যে কোনো সময় ঝড়ের আঘাতে সব লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়ার শংকা হচ্ছে। বাংলাদেশের নেতাদের বোধোদয় নেই। তাদের বোধোদয় হউক এটাই কামনা করছি। তাদের বিবেক দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করুক। ব্যত্যয় ঘটলেই ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। লেখক : সাংবাদিক।