সাম্প্রতিক সময়ে চীনে দেখা দিয়েছে এইচএমপিভি ভাইরাসের সংক্রমণ। মহামারী করোনার প্রায় পাঁচ বছর পর এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বিশ্ববাসীকে চিন্তিত করে তুলেছে। চলতি বছরের শুরুতে চীনে প্রথম এ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। এইচএমপিভি (হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস) চীন, জাপান, মালয়েশিয়া, হংকং, ভারত ছাড়িয়ে এবার বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এর তথ্যমতে, কিছুদিন আগে এক নারীর নমুনা পরীক্ষা করার পর ভাইরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। তথ্যটি নিশ্চিত করেন ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান ডা. আহমেদ নওশের আলম। আক্রান্ত ব্যক্তি একজন গৃহিণী। তার বাড়ি ময়মনসিংহের ভৈরবে। তিনি রাজধানীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গিয়েছেন। তবে এ ভাইরাস ব্যতীত তিনি ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তাই নিশ্চিতভাবে তাঁর মৃত্যুর জন্য ভাইরাসটিকে দায়ী করা যায় না। তাই আতঙ্কিত হবার কিছু নেই।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলেন, “হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসটি নতুন কোনো ভাইরাস নয়। তবে এটা শুধু চীনেই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই পাওয়া যাচ্ছে”। ২০০১ সালে নেদারল্যান্ডসে এ ভাইরাসটি সর্বপ্রথম শনাক্ত হলেও বাংলাদেশে এ ভাইরাসের উপস্থিতি প্রথম শনাক্ত করা হয় ২০১৭ সালে। তবে ধারণা করা হয়, এটি তার আগেও বিশ্বজুড়ে ছিল। কিন্তু চীনের উত্তর অঞ্চলে এ ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ায় নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে ভয়ের কিছু নেই। এটি একটি শ্বাসতন্ত্রবাহিত ভাইরাস, যা মূলত হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তি জ্বর, হাচি- কাশি এবং গলা ব্যথায় ভুগতে পারেন। সাধারণত ১৪ বছর বা তার কম বয়সী শিশুদের মধ্যে এর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে। এ ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজন হাইজিন মেইনটেইন করা, প্রচুর পানি পান করা, ভালোভাবে হাত ধোঁয়া, মাস্ক পরা ইত্যাদি। জ্বর বা অন্য উপসর্গ গুরুতর না হলে ভাইরাসটি সাধারণত নিজে নিজেই সেরে যায়। তবে জ্বর, সর্দি-কাশি দীর্ঘদিন যাবৎ লেগে থাকলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
-আয়শা আক্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।