অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্টারলিংকের ইন্টারনেট ব্যবহারে জাতীয় নিরাপত্তা কোনোভাবেই বিঘিœত হবে না।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তৈয়্যব বলেন, স্টারলিংকের একটি লোকাল গেটওয়ে থাকবে। এর কমার্শিয়াল টেস্ট রান ও গ্রাউন্ড টেস্ট চলমান। এসকল কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য স্টারলিংক কোম্পানিকে ৯০ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে, যার ১০ দিন গত হয়েছে। তিনি বলেন, অতিবাহিত হলেই তাদের লোকাল গেটওয়ে বাধ্যতামূলক হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পাশাপাশি ডিভাইসের ক্ষেত্রে রেট, ভ্যাট, ট্যাক্স আছে তাই ডিভাইসের বিষয়ে এনওসি লাগবে।
বাংলাদেশে মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্টারলিংকের যাত্রা শুরু হওয়ার প্রেক্ষিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা বিশেষ সরকারী।
তৈয়্যব বলেন, স্টারলিংকের ইন্টারনেটের কারণে আমাদের জাতীয় স্বার্থ বিঘিœত হবে না। এর জন্য আমরা দুটি নিরাপত্তার বিষয় রেখেছি। একটি হচ্ছে স্টারলিংককে লোকাল গেটওয়ে ব্যবহার করতে হবে। অর্থাৎ তাদের স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরি করতে হবে এবং সেই গ্রাউন্ড স্টেশনের মাধ্যমে গেটওয়ে হয়ে ইন্টারনেট যাবে।
তিনি বলেন, আমরা বলেছি, তারা চাইলে বিকল্প হিসেবে বিদেশি গেটওয়ে রাখতে পারবে, কিন্তু অ্যাকটিভ ডিভাইস মনিটর করার জন্য, সেখান থেকে রাজস্ব আয়ের জন্য এবং একইসঙ্গে বাংলাদেশের যাদের লাইসেন্স গেটওয়ে আছে তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য লোকাল গেটওয়ে ব্যবহার করতে পারবে। সেখানে এলআইসি বসাতে হবে অর্থাৎ আমাদের আইনে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য যে ইন্টারসেপ্টের বিধান আছে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থা থেকে সেই কমপ্লায়েন্স মানতে হবে। তিনি বলেন, পাশাপাশি অননুমোদিত ডিভাইস যাতে আমাদের সীমান্তের ভেতর না প্রবেশ করতে পারে, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায়, সেজন্য আমরা বলেছি ডিভাইসগুলোর জন্য এনওসি নিতে হবে। যেহেতু হাজার হাজার ডিভাইস আলাদা করে এনওসি দিতে গেলে প্রক্রিয়াগত জটিলতা তৈরি হবে, এজন্য গ্রুপ অব ডিভাইসকে একই এনওসির আওতায় ব্যাচ করে আনা যাবে।
এদিকে দেশে স্টারলিংকের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা জানান।
শুরুতে স্টারলিংক দুটি প্যাকেজ নিয়ে এসেছেÑ স্টারলিংক রেসিডেন্স এবং স্টারলিংক রেসিডেন্স লাইট। এর মধ্যে রেসিডেন্স প্যাকেজের মাসিক খরচ ৬ হাজার টাকা ও রেসিডেন্স লাইট প্যাকেজের খরচ ৪ হাজার ২০০ টাকা। যন্ত্রপাতি সেটআপের জন্য এককালীন খরচ পড়বে ৪৭ হাজার টাকা। এই সেবায় কোনো স্পিড বা ডাটা লিমিট নেই। একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ৩০০ এমবিপিএস গতিতে আনলিমিটেড ডেটা ব্যবহার করতে পারবেন বলে জানান ফয়েজ আহমদ।