কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর চ্যাটজিপিটির দেওয়া চিকিৎসা পরামর্শ অনুসরণ করে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক বৃদ্ধ ব্যক্তি। ঘটনাটি নিয়ে পরিবার ও চিকিৎসকদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ওই বৃদ্ধ দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। অনলাইনে চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য জানতে গিয়ে তিনি চ্যাটজিপিটির পরামর্শ নেন। এআই চ্যাটবটের দেওয়া কিছু খাদ্যাভ্যাস ও ওষুধের পরামর্শ মেনে চলার পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। পরে দ্রুত তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
৬০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি চ্যাটজিপিটির কাছে ডায়েট প্ল্যানের পরামর্শ গ্রহণ করেন। জানা যায়, ওই ব্যক্তির কোনো গুরুতর শারীরিক অসুখ ছিল না।
তবে ডায়েট চার্টে চ্যাটজিপিটি তাকে সাধারণ লবণের (সোডিয়াম ক্লোরাইড) পরিবর্তে ‘সোডিয়াম ব্রমাইড’ ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া দেয়। আর ছোট এই পরিবর্তনই ডেকে আনে বিপদ।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অনলাইনে পাওয়া তথ্য সবসময় সঠিক বা সবার জন্য উপযোগী নাও হতে পারে। রোগীর বয়স, শারীরিক অবস্থা ও পূর্ববর্তী রোগের ইতিহাস বিবেচনা না করেই কোনো চিকিৎসা পরামর্শ মেনে চলা বিপজ্জনক হতে পারে।
এই ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে। হিন্দুস্তান টাইমসের ‘অ্যানালস অব ইন্টার্নাল মেডিসিন: ক্লিনিক্যাল কেসেস’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই ব্যক্তি টানা তিন মাস অনলাইনে কেনা ব্রোমাইড লবণের বিকল্প হিসেবে খাদ্যে ব্যবহার করছিলেন। এর ফলে তার শরীরে মস্তিষ্কের সমস্যা, বিভ্রান্তি, হ্যালুসিনেশন এবং ত্বকে লাল দাগসহ ব্রোমোডার্মার মতো জটিলতা দেখা দেয়। তিন সপ্তাহের নিবিড় চিকিৎসা ও ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য ঠিক করার পর তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, চিকিৎসা বিষয়ক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই নিবন্ধিত ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। প্রযুক্তি সহায়ক হতে পারে, তবে সেটি কখনোই পেশাদার চিকিৎসার বিকল্প নয়।