দাম্পত্য জীবন গঠনে ইসলাম
আল্লাহর রাসুল যেখানে বিয়েকে মানুষের প্রশান্তি অর্জনের একটা উপায় বলেছেন সেখানে বিয়ের পর দাম্পত্য জীবনে মানুষ প্রশান্তি পাচ্ছে না কেন? কেন মুসলিম পরিবারগুলোতে ঝগড়া, দ্বন্দ্ব ও কলহ লেগেই আছে ? দাম্পত্য কলহই যেন আমাদের জীবনের প্রশান্তি নষ্ট করেছে। অধিকাংশ পুরুষ ও নারী ভাবে কেন বিয়ে করলাম? বিয়ে না করলে অনেক ভালো থাকতাম !!!
Printed Edition

শারমিন আকতার
আল্লাহর রাসুল যেখানে বিয়েকে মানুষের প্রশান্তি অর্জনের একটা উপায় বলেছেন সেখানে বিয়ের পর দাম্পত্য জীবনে মানুষ প্রশান্তি পাচ্ছে না কেন? কেন মুসলিম পরিবারগুলোতে ঝগড়া, দ্বন্দ্ব ও কলহ লেগেই আছে ? দাম্পত্য কলহই যেন আমাদের জীবনের প্রশান্তি নষ্ট করেছে। অধিকাংশ পুরুষ ও নারী ভাবে কেন বিয়ে করলাম? বিয়ে না করলে অনেক ভালো থাকতাম !!!
আমাদের মুসলিম সমাজে দাম্পত্য কলহ ও বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে কারণ অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে যে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিবাহ বিচ্ছেদের মূল কারণ মূলত জীবনে ইসলামী অনুশাসন না মানা ও বিবাহের সময় কুফু আইন না মানা।
এই কুফু আইন আসলে কী? উইকিপিডিয়া অনুসারে কুফু এর সংজ্ঞা হচ্ছে- “বিয়ের ক্ষেত্রে বর-কনের রুচি, চাহিদা, বংশ, যোগ্যতা সব কিছু সমান সমান বা কাছাকাছি হওয়াকে ইসলামী পরিভাষায় কুফু বলে।”
আল্লাহ বলেন, ‘দুশ্চরিত্রা নারী দুশ্চরিত্র পুরুষদের জন্য; দুশ্চরিত্র পুরুষ দুশ্চরিত্রা নারীর জন্য; সচ্চরিত্রা নারী সচ্চরিত্র পুরুষদের জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষ সচ্চরিত্রা নারীর জন্য উপযুক্ত।’ (সূরা নূর : ২৬)।
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘ব্যভিচারী পুরুষ যেন ব্যভিচারিণী বা মুশরিক নারী ছাড়া কাউকে বিয়ে না করে। আবার ব্যভিচারিণী নারী যেন ব্যভিচারী পুরুষ বা মুশরিক পুরুষ ছাড়া কাউকে বিয়ে না করে। মুমিনদের জন্য এ ধরনের চরিত্রের নারী-পুরুষকে হারাম করা হয়েছে।’ (সূরা নূর : ৩) ।
সাধারণ বাঙালি যেসব পরিবারে দাম্পত্য জীবনে কলহ মনোমালিন্য লেগে আছে, সেসব পরিবারের স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া-ঝাটি বা বাক-বিতন্ডার ক্ষেত্রে কথোপকথন সাধারণত কেমন হয়ে থাকে?
শিক্ষাগত ও আর্থিক সামঞ্জস্য না থাকলে স্ত্রী হয়তো ঝগড়ার সময় স্বামীকে বলে ফেলে- তোমার মতো ফকিরের সাথে বাবা-মা কেন যে আমাকে বিয়ে দিল। শিক্ষিত হলেই হয় নাকি ? যে কোন স্ট্যাটাস বুঝে না তার সাথে সংসার করা যায়?
স্বামী হয়তো স্ত্রীর কথার উত্তরে বলে ফেললো, “শোন এতো ভাব নিও না বুঝেছ? কী আছে তোমার যে এতো দেমাগ দেখাও? আমার মতো এমন শিক্ষিত ইঞ্জিনিয়ার পাওয়া তোমার ভাগ্যের ব্যাপার। তোমার বাপের টাকা থাকলেই হল? তোমার কী আছে ? এইচএসসি পাসও তো করতে পার নাই ! মূর্খ কোথাকার!”
বংশগত ও সংস্কৃতিগত সামঞ্জস্য না থাকলে ঝামেলা হতে পারে। শহরের ছেলে এবং গ্রামের শিক্ষিত মেয়ের দাম্পত্য জীবনে নানা ধরনের টানাপোড়েন আসতে পারে। স্ত্রী হয়তো মাঝে মাঝেই বলে ফেলে- “আমার মতো শিক্ষিত মেয়ে তোমার কপালে জুটেছে তো তাই কদর দিতে জানো না। মেট্রিক পাস মেয়ে হলে বুঝতে বউ কী জিনিস!” স্বামী হয়তো উত্তরে বলে ফেললো, “খালি শিক্ষিত হলেই হবে? গ্রামের গাইয়া কোথাকার। শহরের নিয়ম-কানুন কিছু বোঝ তুমি? খালি তো পড়াই শিখেছ আর কী জান তুমি?”
ধর্মভিত্তিক অসামঞ্জস্য পরিবারে মারাত্মক অশান্তি সৃষ্টি করে। স্ত্রী হয়তো পূর্ণভাবে পর্দা মেনে চলতে চায়। কিন্তু স্বামী চায় তার স্ত্রী একেবারে অশালীন না হোক কিন্তু একটু বাঙালি সামাজিকতা মেনে চলুক। পরিবার ও বন্ধুমহলে মাঝে মাঝে শাড়ির সাথে হিজাব পরে হালকা লিপস্টিক দিক না। তাতে কী এমন ইসলাম লঙ্ঘন হবে? স্ত্রী বেচারি স্বামীকে পর্দার সীমা বুঝাতে না পেরে স্বামীর প্রতি বিরক্ত হয়ে থাকে। স্বামীর সাথে তার দূরত্ব বাড়তে থাকে। আর ওদিকে স্বামী বেচারা ভাবতে থাকে স্বামীর আদেশ মানা প্রতিটি স্ত্রীর কর্তব্য। আর তার স্ত্রী এতোটুকু চাওয়া মানতে পারছে না?
আবার ইসলামী অনুশাসন পূর্ণভাবে মানতে চাওয়া কোন স্বামী যদি চায় তার স্ত্রী পূর্ণভাবে পর্দা পালন করুন, ছেলে বন্ধু ও কলিগদের এড়িয়ে চলুক। কিন্তু স্ত্রী যখন স্বামীর এসব চাওয়া অস্বীকার করে অতিরিক্ত গোঁড়ামি ভেবে। তখনও দাম্পত্য জীবনে চিড় ধরে। এই রকম দু-একটি চাওয়া-পাওয়ার অমিল তাদের সম্পর্কের মাঝে জটিল সমস্যা তৈরি করে এবং দাম্পত্য জীবনে মহা ফাটল ধরিয়ে দিতে পারে।
স্বামী-স্ত্রীর রুচি, চিন্তা-চেতনার অমিল নিয়ে সুন্দর একটা ছড়া আছে কবি মাহফুজা শিরিন আপুর। তিনি আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে রুমমেট ছিলেন। ছড়াটার নাম “তুমি আমি ভিন্ন ভীষণ”। ছড়াটার নাম যেমন সুন্দর এর লাইনগুলোও অসাধারণ-
তুমি আমি ভিন্ন ভীষণ/কথায় কথায় উল্টো ভাষণ/জীবন হলো বিটকেলে।/ভালোবাসার গল্প হবে/রাত্রি দিনই সুর ছড়াবে, একতালে/সুখ পাখি সব ফাঁকি?/ প্রেমের বানে চোখের কোণে/ধিকি ধিকি ছড়ায় দ্যুতি সব ফাঁকি?/তুমি আমি ভিন্ন ভীষণ/দু’জনেতে ফারাক যোজন।/মিল বাকি?/যৎসামান্য পেয়ে ধন্য,/ফারাকগুলো নিয়ে শুধু দিন ঢাকি।/তুমি আমি ভিন্ন ভীষণ,/ভিন্নতাতেই বুঁদ থাকি।
স্বামী-স্ত্রীর চিন্তা-চেতনা, চাওয়া-পাওয়াতে ভিন্নতা থাকলে আসলে দুইজন অনেক ভাল মানুষ হলেও জীবনে শান্তি বিরাজ করে না খুব একটা। মাহফুজা শিরিনের কবিতার মতোই জীবন বিটকেলে হয়ে যায়।
পেশাভিত্তিক বা মনস্তাত্ত্বিক বৈসাদৃশ্যের জন্যও সংসারে অশান্তি লেগে থাকে - যেমন স্বামী বা স্ত্রী হয়তো বেশি বাস্তববাদী আর স্ত্রী বা স্বামী একটু ভাবুক প্রকৃতির। স্ত্রী বা স্বামী চায় গবেষণা বা লেখালেখি কেন্দ্রিক ক্যারিয়ার গড়তে কিন্তু স্ত্রী বা স্বামী পছন্দ করে না বিসিএস বা ব্যাংকিং বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়তে। স্ত্রী স্বামীর পছন্দ আর স্বামী স্ত্রীর পছন্দ মেলাতে গিয়ে জীবনে হিমশিম খেতে থাকে ।
“Pakistan Journal of Gender Studies” এ প্রকাশিত পাকিস্তানের করাচী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডঃ উবায়েদ আহমেদ খান এবং একই বিভাগের পিএইচডি গবেষক ও বালুচিস্তানের সরকারী পিসিন ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক হাফিজ নাকিব উল্লাহ এর গবেষণা পত্র “Importance Of The Law Of Compatibility (Kufu) In Islamic Marriage” এর Abstract এ উল্লেখ করেন- “The basic objective of this law is to ensure equality in social status for the purpose of successful marriage and psychological balance.”
অর্থাৎ “এই আইনের মূল উদ্দেশ্য হল সফল বিবাহ এবং মনস্তাত্ত্বিক ভারসাম্য রক্ষার উদ্দেশ্যে সামাজিক মর্যাদার ক্ষেত্রে সমতা নিশ্চিত করা ।”
আসলে কুফু আইন একটি বিবাহকে সফল করতে অসাধারণ ভূমিকা রাখে। এই আর্টিকেলে আরও বলা হয়-
“The law of compatibility (kufu) is an important rule and if practiced it contribute greatly in the success of marriage. On the other hand if this law is not observed, sometimes lack of compatibility leads towards separation and divorce, which is although lawful in necessity but disliked by Almighty Allah.”
অর্থাৎ সামঞ্জস্যের আইন (কুফু) একটি গুরুত্বপূর্ণ আইন। আর এই আইনটি যদি বিবাহের ক্ষেত্রে ভালভাবে অনুশীলন করা হয়, তাহলে তা বিবাহকে সাফল করতে অসাধারণ ভূমিকা রাখে অন্যদিকে যদি এই আইনটি অগ্রাহ্য করা হয়, তাহলে সামঞ্জস্যের অভাবে মুসলিম সমাজে দাম্পত্য জীবনে বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে এবং এমনকি অনেক সময় ইহা বিবাহ বিচ্ছেদের দিকে নিয়ে যেতে পারে। জরুরী প্রয়োজনে বিবাহ বিচ্ছেদ বৈধ হলেও সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে তা অনেক অপছন্দনীয় কাজ।”
সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী তার বিখ্যাত তাফসির গ্রন্থ তাফহীমুল কোরআনের সূরা হুজুরাতের এক আয়াতের ব্যাখ্যাংশে বলেছেন, “ইসলামী আইন অনুসারে প্রত্যেক মুসলমান পুরুষের সাথে প্রত্যেক মুসলমান নারীর বিয়ে হতে পারে। তবে দাম্পত্য জীবনের সফলতা স্বামী-স্ত্রীর অভ্যাস, আচার-আচরণ, জীবন যাপন পদ্ধতি, পারিবারিক বা বংশগত ঐতিহ্য এবং আর্থিক ও সামাজিক পরিবেশের ক্ষেত্রে সর্বাধিক সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ার উপর নির্ভর করে যাতে তারা পরস্পরের সাথে ভালভাবে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। কুফু বা সম বংশ হবার মূল লক্ষ্য এটাই। যেখানে পুরুষ ও নারীর এদিক দিয়ে অনেক বেশি দূরত্ব হবে সেখানে জীবনব্যাপী বিস্তৃত বন্ধুত্বের সম্পর্কে বনিবনার আশা কমই করা যায়। ”
মির্জা ইয়াওয়ার বেগ এর বই- “Marriage: Making and Living i.” “[সিয়ান পাবলিকেশন্স কর্তৃক প্রকাশিত বাংলায় অনূদিত বইটির নাম “বিয়ে স্বপ্ন থেকে অষ্টপ্রহর” ] বইয়ে বিয়ে করার আগে বিবাহ করতে ইচ্ছুক ছেলে-মেয়েদের উদ্দেশে উল্লেখ করেন-“ আমি জানি আপনি গোটা পরিবারকে বিয়ে করেননি। কিন্তু আমাদের মধ্যপ্রাচ্যে ও উপমহাদেশীয় সংস্কৃতিতে বৈবাহিক জীবনে পরিবারের বেশ প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। জীবনের বাকি সময়টা যদি স্বামী বা স্ত্রীকে সঠিক পথে রাখার যুদ্ধে ব্যতিব্যস্ত হয়ে কাটাতে না চান, তাহলে নিশ্চিত করুন-আপনি যে পথে আছেন পরিবারটিও সে পথে রয়েছে কি না। একই কথা প্রযোজ্য তাদের জীবনধারা, আচার-আচরণ, খাদ্যাভ্যাস, যেসব বিষয়ে তারা বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন ইত্যাদি বিষয়েও। একদম নিজের মন মতো হতে হবে এমন কোন কথা নেই, তবে অমিল কতখানি তা খেয়াল রাখতে হবে। কেননা সেটুকু হয় আপনাকে বদলাতে হবে অথবা মানিয়ে নিতে হবে। মনে রাখবেন পরিবর্তন সাধন সব সময়ই কষ্টকর; তাই ভিন্নতা যত কম হবে বৈবাহিক জীবনে আপনার সুখী হবার সম্ভাবনাও তত বেশি হবে।”
রাসূল সা: বলেছেন, ‘তোমরা যে ব্যক্তির দ্বীনদারী ও নৈতিক চরিত্রে সন্তুষ্ট আছ তোমাদের নিকট সে ব্যক্তি বিয়ের প্রস্তাব করলে তবে তার সাথে বিয়ে দাও। তা যদি না কর তাহলে পৃথিবীতে ফিতনা-ফাসাদ ও চরম বিপর্যয় সৃষ্টি হবে।’ (তিরমিজি, হাদিস নং ১০৮৪)। তিরমিযি শরিফের আরেকটি হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, রাসূল সা: হযরত আলী রা:-কে উদ্দেশ করে বলেছেন ‘হে আলী! তিনটি ব্যাপারে দেরি করো না। নামায যখন তার ওয়াক্ত আসে, জানাযা যখন উপস্থিত হয় এবং যখন তুমি তার উপযুক্ত পাত্র পাও’’ (তিরমিজি, হাদিস নং ১৭১)। আরেক হাদিসে রাসূল সা: বলেছেন, ‘তোমরা ভবিষ্যৎ বংশধরদের স্বার্থে উত্তম মহিলা গ্রহণ করো এবং সমতা (কুফু) বিবেচনায় বিয়ে করো, আর বিয়ে দিতে সমতার প্রতি লক্ষ্য রাখো’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১৯৬৮)।
ইমাম শাওকানি রা: কুফু আইন সংক্রান্ত উপরোক্ত হাদিস উল্লেখ বলেছেন, ‘এসব হাদিস স্পষ্ট প্রমাণ করে যে, দ্বীনদারী ও চরিত্রের দিক দিয়াই ‘কুফু’র বিবেচনা করতে হবে। ইমাম মালেক দৃঢ়তার সাথে বলেছেন ‘কুফু’র ব্যাপারটি কেবলমাত্র দ্বীনদারীর ক্ষেত্রেই বিবেচ্য। (নায়লুল আওতার)।
কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে অনেক ধার্মিক ছেলেও বিয়ের সময় ধর্মীয় দিক থেকে কুফুর বিষয়টা মাথায় না নিয়ে মেয়েদের অন্য গুণ বিবেচনায় রেখে বিয়ে করে থাকে। ভাবে যে তাকে বদলে ফেলবে! তাদের উদ্দেশ্য মির্জা ইয়াওয়ার বেগ বলেছেন, “যেসব দুঃসাহসী মানুষ মনে করেন তারা অন্যদের বদলে ফেলতে পারবেন, তারা মনে রাখবে, হিদায়াত একমাত্র আল্লাহর হাতে। আপানার হাতে যদি সমস্ত ক্ষমতা থাকতো তাহলে আপনি মানুষকে পরিবর্তন করে ফেলতে পারতেন। কিন্তু আপনি সম্ভবত পৃথিবীর সেই ৯৯.৯% মানুষদের মতো একজন যারা মনে করে সে মানুষকে বদলাতে পারে। যে মানুষ বিয়ের আগে কাউকে দেখে বলে, ‘আমি তাকে বদলে একজন চমৎকার মানুষ বানিয়ে ফেলব’ সে আসলে তার জীবনটাকে আক্ষরিক অর্থেই যেন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। আপনি যদি এমন মানুষকে বিয়ে করতে চান যার পরিবর্তন প্রয়োজন, তাহলে সে কাজটি আপনি তাকেই করতে দিন। আপনি বরং তাকে তার মতোই থাকতে দিন এবং এমন কাউকে খুঁজে বের করুন, যাকে দেখে আপনি মুগ্ধ হবেন; আপনি তার মতো একজন হতে চাইবেন।
প্রকৃতপক্ষে বিয়ের ক্ষেত্রে কুফু আইন মানার পাশাপাশি দাম্পত্য জীবনকে গুছিয়ে তুলতে ও ভালোভাবে চালিয়ে নিয়ে চলতে প্রয়োজন হয় অনেক প্রচেষ্টা, আপস, সামঞ্জস্য এবং ত্যাগ। দাম্পত্য জীবনের আসলে যতœ নিতে হয়। আর অনেক ক্ষেত্রে এই যত্ন নিতে পারার ব্যর্থতাও দাম্পত্য জীবন সফল হবার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।
মির্জা ইয়াওয়ার বেগ এর বই- “Marriage: Making and Living it” এর ভূমিকায় বলেছেন, “দাম্পত্য জীবনের সুখ শান্তি কেবল স্বামী-স্ত্রীর মন- মানসিকতা ও আচার-আচরণের উপরই নির্ভর করে। তারা যদি সত্যিই সুখী হতে চায় তাহলে কেউ তা রোধ করতে পারবে না; আর তারা যদি অশান্তি সৃষ্টি করে তাহলে কেউই তাদের শান্তি এবে দিতে পারবে না।”
অবশেষে মির্জা ইয়াওয়ার বেগ এর ভাষায় বলতে চাই। কুফুর বিষয়টা মাথায় রেখে এবং সেগুলো খেয়াল রেখে নিজেকে জিজ্ঞেস করি-
অন্যের মধ্যে যে জিনিসগুলো খুঁজছি, আমার মধ্যে সেগুলো কতটুকু আছে? আমি নিজে কতগুলো শর্ত পূরণ করতে পেরেছি? যাকে বিয়ে করতে যাচ্ছি আমি কি তার একজন ভালো জীবনসঙ্গী হতে পারবো?
রেফারেন্সঃ
১। Ubaid Ahmad Khan and Hafiz Naqib Ullah, ÒImportance Of The Law Of Compatibility (Kufu) In Islamic Marriage, Pakistan Journal of Gender Studies, P 231-236.
২। তাফহীমুল কোরআন, সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী।
৩। বিয়ে স্বপ্ন থেকে অষ্টপ্রহর” [মূল বইঃ “Marriage: Making and Living it” ], মির্জা ইয়াওয়ার বেগ
লেখক : প্রাবন্ধিক, সম্পাদক ও ব্যাংক কর্মকর্তা, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি