গত ৫ আগস্ট জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে ভোট আয়োজনের আভাস দেওয়ায় পর থেকে দেশে জাতীয় নির্বাচনের একটা বাতাস বইতে শুরু করেছে। অনেকের প্রশ্ন ক্রীড়াঙ্গনের গণতন্ত্র ফিরবে কবে। ক্রীড়াঙ্গনের সচ্ছতা নিশ্চিত করতে গত সরকারের রেখে যাওয়া কমিটিগুলো বিলুপ্ত করে মহিলা ক্রীড়া সংস্থা ছাড়া অন্য ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোতে অ্যাডহক কমিটি দিয়ে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সাধারণত জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কোনো ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাডহক কমিটি গঠন করলে সেই কমিটির মেয়াদ সম্পর্কে একটা নির্দেশনা দিয়ে থাকে। যদিও এবার কোনো অ্যাডহক কমিটিরই মেয়াদ বেঁধে দেয়নি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। এ প্রসঙ্গে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাহী পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম বলেছেন, ’আমরা প্রজ্ঞাপনে অ্যাডহক কমিটিকে সময় বেঁধে দেয়নি ঠিক। তবে ফেডারেশন চলে গঠনতন্ত্রের মাধ্যমে। সেখানেই গাইডলাইন দেওয়া আছে। আরেকটি বিষয় হলো গত বছর ৫ আগস্টের পর প্রেক্ষাপটটা পুরোপুরি ভিন্ন। ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটি দায়িত্ব দুটি। এক. রুটিন কাজ করা এবং নির্বাচন আয়োজন করা। তার সাথে তৃতীয়টা যোগ হয়েছে গঠনতন্ত্র বিষয়ে মতামত দেওয়া। যে কারণে তাদের সময় যদি বেশি লাগে সেক্ষেত্রে দেওয়া হচ্ছে। আগামী সপ্তাহেই ফেডারেশনগুলোকে আদর্শ গঠনতন্ত্র পাঠানো হবে। ফেডারেশনগুলোর মতামতের ভিত্তিতে আদর্শ গঠনতন্ত্র সংশোধন হবে এবং সেটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে অনুমোনের পর তার ভিত্তিতে নির্বাচনের দিকে হাটতে হবে। না হলে তো ক্রীড়াঙ্গনের অবস্থা আগের মতোই থেকে যাবে।’ ক্রীড়াঙ্গন কেবল ফেডারেশনকেন্দ্রিক নয়। উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা, জেলা ক্রীড়া সংস্থা, বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার ধারাবাহিকতায় পরিচালিত হয়ে থাকে। তাহলে তো সব সংস্থার গঠনতন্ত্রই সংশোধ করে নতুন করে প্রণয়ন করতে হবে। তবে আপাতত স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থা নয়, আদর্শ গঠনতন্ত্র তৈরির কাজ চলছে জাতীয় ক্রীড়া সংস্থার। গত বছর অক্টোবরে হয়েছে বাফুফের নির্বাচন। এ বছর নভেম্বরে হওয়ার কথা বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন। ডিসেম্বরে শেষ হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বর্তমান কমিটির মেয়াদ। অনেকে মনে করছেন, এখন ক্রীড়াঙ্গন চলছে অ্যাডহক কমিটি দিয়ে। এই অনির্বাচিত কাউন্সিলররে মাধ্যমে বিওএর নির্বাহী কমিটির নির্বাচন হলে সেটা আইওসি’র কাছে গ্রহণযোগ্য হবে কিনা সে প্রশ্নও করছেন অনেকে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাহী পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেছেন,‘আইওসি চার্টারে উল্লেখ আছে কার্যকর প্রতিনিধির কথা। বিওএর নির্বাহী কমিটির কেউ ‘কার্যকর প্রতিনিধি’ না থাকলে তাকে সরে যেতে হয়। তাই এখন ফেডারেশনগুলোতে অ্যাডহক কমিটি থাকলেও বিওএ’র নির্বাচন হতে কোনো বাঁধা নেই। বিওএর নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাহী কমিটিতে আসা কোনো ব্যক্তি যদি পরবর্তীতে তার সংস্থার কাউন্সিলরশিপ হারান তাহলে তাকে সরে যেতে হবে এবং সেই শূন্য জায়গায় একজন কার্যকর প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে আসবেন।’ বিদ্যমান আদর্শ গঠনতন্ত্র সংশোধন করে যুগোপোযোগী করতে কাজ করছে কমিটি। সংশোধিত ‘আদর্শ গঠনতন্ত্র’ অনুমোদন হওয়ার পরই নির্বাচনের দিকে হাঁটবে ক্রীড়াঙ্গন।