অবশেষে তামিম ইকবালসহ বিএনপিপন্থিদের একটি বড় অংশ বিসিবি নির্বাচন বয়কট করেছন। মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত গুলশানের একটি হোটেল ও কফি শপে দুই দফা বৈঠক শেষেই মূলত নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। জানা গেছে, সেখানে বিএনপিপন্থি প্যানেলের শীর্ষ নেতা তামিম ইকবাল নিজে নির্বাচন না করার কথা বলেন।

পাশাপাশি তামিমের নেতৃত্বাধীন প্যানেলের রফিকুল ইসলাম বাবু, মাসুদুজ্জামান বিএনপির ৪ নেতার ছেলে ইসরাফিল খসরু, সাইদ ইব্রাহিম আহমেদ, ইয়াসির আব্বাস এবং ওমর শরীফ মোহাম্মদ ইমরান, ক্যাটাগরি ‘১’ থেকে সিরাজউদ্দীন মোহাম্মদ আলমগীর, বোরহান হোসেন পাপ্পু এবং সাব্বির রুবেলসহ সব মিলে প্রায় ১৫ জন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। শেষ মুহূর্তে হাইকোর্টে রিটে ১৫ ক্লাবের ওপর এসেছে নিষেধাজ্ঞা। তাতে করে তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন বিএনপিপন্থি প্যানেলের প্রার্থী কমে গেছে ৪ জন। তাদের প্যানেল ভোটও কমেছে ১৫ জন। এমতাবস্থায় প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোই উত্তম। আগের রাতে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে এমন সিদ্ধান্তই নিয়ে ফেলেছিলেন তামিম ইকবালসহ তার প্যানেলের বেশিরভাগ সদস্য।

গতকাল ১ অক্টোবর ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। সকাল ১০ থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়। সকাল ১০টার পর পরই তামিম ইকবাল দলবলসহ বিসিবি অফিসে পৌঁছান এবং বেলা ১১টা নাগাদ একে একে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে শুরু করেন। তামিমসহ তার প্যানেলের একটা বড় অংশ নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিলেও এই প্যানেলের সবাই যে নির্বাচন বয়কট করেছেন, তা নয়। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, বিএনপিপন্থি প্যাানেলের মধ্যে যারা বিএনপির সঙ্গে দলীয়ভাবে সম্পৃক্ত, তারা সবাই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। জানা গেছে, বিএনপির হাই কমান্ডের নির্দেশেই বিএনপিপন্থি প্রার্থীরা একে একে নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছেন। ১৫ ক্লাবের ওপর হাইকোর্টের রিটের পর পরিস্থিতি ঘোলা হতে থাকে। তাতে করে তামিম ইকবাল নেতৃত্বাধীন বিএনপিপন্থিদের ১৫টি প্যানেল ভোট কমে যায়। ১২ জনের প্যানেল থেকে ৪ জন প্রার্থীও যায় কমে। এরকম অবস্থায় নির্বাচন করায় থাকবে রাজ্যের ঝুঁকি।

কাউন্সিলর তালিকা তৈরি, প্রার্থীরা মনোনয়ন তুলে জমা দিয়েছেন। যাচাই-বাছাইও শেষ। গতকাল ১ অক্টোবর সকাল থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় ছিল। এরকম অবস্থায় ১৫ ক্লাবের ওপর নতুন করে রিট করে নিষেধাজ্ঞা আনা মানে সাজানো নির্বাচন কার্যক্রমকে বিতকিত করে ফেলা। সেই নির্বাচন করার চেয়ে না করা ভালো। এমন যুক্তি দেখিয়ে আসলে তামিমের গ্রুপ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর চিন্তা করেন। তবে কাগজে-কলমে বিএনপি করেন না, সরাসরি পারিবারিকভাবে এই দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, এমন কেউ কেউ নির্বাচন করতে পারেন। সেই তালিকায় ইফতিখার রহমান মিঠু, শানিয়ান তানিম, ইশতিয়াক সাদেক ও মঞ্জুরুল আলমের নাম শোনা যাচ্ছে। তারা নাকি নির্বাচন করবেন।

মাহবুব আনাম পর্দার আড়ালে চলে যাওয়ার পর তামিমপন্থি প্যানেলের মূল কো-অর্ডিনেটরই হচ্ছেন বিসিবির সাবেক শীর্ষকর্তা এবং একমি ল্যাবরেটরিজের অন্যতম স্বত্ত্বাধিকারী আফজালুর রহমান সিনহার ছেলে ফাহিম সিনহা শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়িয়েছেন। এর আগে তৃতীয় বিভাগ বাছাই ক্রিকেট থেকে উঠে আসা বিতর্কিত ১৫টি ক্লাবের কাউন্সিলরের নাম চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এর পর থেকেই তামিমের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার নিয়ে গুঞ্জন শোনা যায়। তাতে যোগ দেন আরও ১৫ ক্লাব। সকালে ১০ টার পর তামিম সর্বপ্রথম মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। এরপর আরও ১৫টি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন জমা পরে।

প্রত্যাহার তালিকা : তামিম ইকবাল (ওল্ডডিওএইচএস) ২. রফিকুল ইসলাম বাবু (ইন্দিরা ক্রীড়াচক্র) ৩. মাসুদুজ্জামান (মোহামেডান) ৪. সাঈদ ইব্রাহীম আহমেদ (ফেয়ার ফাইটার্স) ৫. মির হেলাল (চট্টগাম জেলা) ৬. সৈয়দ বুরহান হোসেন পাপ্পু (তেজগাঁও ক্রিকেট একাডেমি) ৭. ইসরাফিল খশরু (এক্সিউম ক্রিকেটার্স) ৮. সাব্বির আহমেদ রুবেল (প্রগতি সেবা সংঘ) ৯. তৌহিদ তারেক (পাবনা) ১০. অসিফ রাব্বানী (শাইনপুকুর) ১১. সিরাজ উদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর (ক্যাটাগরি-৩) ১২. ইয়াসির আব্বাস (আজাদ স্পোর্টিং) ১৩. ফাহিম সিনহা (সুর্যতরুণ) ১৪. সাইফুল ইসলাম সপু (গুপিবাগ ফ্রেন্ডস) ১৫. ওমর শরীফ মোহাম্মদ ইমরান (বাংলাদেশ বয়েজ)।