কলম্বো টেস্টে তৃতীয় দিন শেষে বড় ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। ফলো-অন এড়াতে এখনও ৯৬ রান প্রয়োজন টাইগারদের। আর হাতে রয়েছে মাত্র ৪ উইকেট। শেষ টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ইনিংস হারের শঙ্কায় পড়েছে বাংলাদেশ। ফলে টিকে থেকে ইনিংস হার এড়াতে রীতিমতো লড়াই চালাতে হচ্ছে নাজমুল হোসেনা শান্তর দলকে। প্রথম ইনিংসে ২১১ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে তৃতীয় দিন শেষে ৬ উইকেটে ১১৫ রান করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ২৪৭ রানের জবাবে ৪৫৮ রান করে শ্রীলংকা। ফলে প্রথম ইনিংস থেকে ২১১ রানের বড় লিড পায় লংকানরা। কলম্বোয় প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ২৪৭ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ২ উইকেটে ২৯০ রান করেছিল শ্রীলংকা। ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ৪৩ রানে এগিয়ে ছিল লংকানরা। নিশাঙ্কা ১৪৬ রানে ও প্রবাথ জয়সুরিয়া ৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। তৃতীয় দিন ব্যক্তিগত দেড়শ রান তুলে বাংলাদেশ স্পিনার তাইজুল ইসলামের শিকার হন নিশাঙ্কা। এনামুল হককে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে ১৯ চারে ২৫৪ বলে ১৫৮ রান করেন নিশাঙ্কা। নিশাঙ্কার পর শ্রীলংকার অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে ৭ রানে লেগ বিফোর আউট করেন তাইজুল। তাইজুলের জোড়া আঘাতের পর সিরিজে প্রথম উইকেটের দেখা পান পেসার নাহিদ রানা। নাইটওয়াচম্যান জয়সুরিয়াকে ১০ রানে বিদায় দেন তিনি। ৩৩৫ রানে পঞ্চম উইকেট পতনের পর জুটি বেঁধে শ্রীলংকাকে বড় সংগ্রহ এনে দেন কামিন্দু মেন্ডিস ও কুশল মেন্ডিস। তবে দুজনই শিকার হন স্পিনার নাইম হাসানের। আর্মবল ডেলিভারিতে কামিন্দুর স্টাম্প ভাঙ্গেন নাইম। ৪১ বলে ৩৩ রান করেন কামিন্দু। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও এক প্রান্তে রানের চাকা সচল রাখেন কুশল। তার ৮ চার ও ২ ছক্কা সাজানো ৮৭ বলে ৮৪ রানের সুবাদে ৪৫৮ রানের সংগ্রহ পায় শ্রীলংকা। এতে ২১১ রানের লিড পায় লংকানরা। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে সফল বোলার তাইজুল। টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৭তম বারের মত ইনিংসে পাঁচ বা ততোধিক উইকেট নিয়েছেন তিনি। এছাড়াও নাইম ৩ ও রানা ১ উইকেট নেন। দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও বিজয়। ৬ ওভারে ৩০ রান তুলে ফেলেন তারা। কিন্তু আসিথা ফার্নান্দোর করা সপ্তম ওভারের পঞ্চম বলে পুল করতে গিয়ে শর্ট লেগে ক্যাচ দেন ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৯ রান করা বিজয়। বড় ইনিংস খেলতে পারেননি আরেক ওপেনার সাদমানও। ১২ রান করে প্রবাথ জয়সুরিয়ার বলে ক্যাচ আউট হন তিনি। ৩১ রানের মধ্যে দুই ওপেনার ফেরার পর জুটি বাঁধেন মোমিনুল হক ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু মোমিনুল ও শান্তকে বড় ইনিংস খেলতে দেননি শ্রীলংকার অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। মোমিনুল ১৫ ও শান্ত ১৯ রানে ডি সিলভার বলে আউট হন। ৭০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলের রান ১শতে নেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। দলীয় তিন অংকের ঘরে পৌঁছেই সজঘরে ফিরেন মুশফিক। জয়সুরিয়ার বলে বোল্ড হন ২৬ রান করা মুশফিক। দিনের শেষটা ভালোভাবে শেষ করার দায়িত্ব ছিল লিটন ও মেহেদি হাসান মিরাজের। কিন্তু থারিন্দু রত্নায়েকের বলে লেগ বিফোর আউট হন ১১ রান করা মিরাজ। তার আউটের পর দিনের খেলা শেষ হয়। ১৩ রানে অপরাজিত আছেন লিটন। শ্রীলংকার জয়সুরিয়া ও ডি সিলভা ২টি করে উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৪৭

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ১১৬.৫ ওভারে ৪৫৮ (আগের দিন ২৯০/২) (নিসাঙ্কা ১৫৮, জায়াসুরিয়া ১০, ধানাঞ্জায়া ৭, কামিন্দু ৩৩, কুসাল ৮৪, দিনুশা ১১, থারিন্ডু ১০, ভিশ্ব ২*, আসিথা ০; ইবাদত ১৪-০-৫৫-০, তাইজুল ৪২.৫-৪-১৩১-৫, নাহিদ ২০-১-৯৪-১, মিরাজ ২০-১-৭৫-০, নাঈম ১৮-৪-৮৭-৩, মুমিনুল ২-০-৮-০)।

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৩৮.৪ ওভারে ১১৫/৬ (সাদমান ১২, এনামুল ১৯, মুমিনুল ১৫, এনামুল ১৯, মুশফিক ২৬, লিটন ১৩*, মিরাজ ১১; আসিথা ৮-১-২২-১, ভিশ্ব ৬-৩-১৬-০, জায়াসুরিয়া ১৪-২-৪৬-২, ধানাঞ্জায়া ৪-১-১৩-২, দিনুশা ৩-১-৭-০, থারিন্ডু ২.৪-০-১০-১)।