হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারকুটে উইকেটকিপার-ব্যাটার নিকোলাস পুরান। মাত্র ২৯ বছর বয়সেই অবসরে গেলেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে এক বিবৃতি দিয়ে সব ধরনের আন্তর্জাতিক ফরম্যাট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। ইনস্টাগ্রামে দেয়া এক বিবৃতিতে পুরান জানিয়েছেন, ‘অনেক ভেবেচিন্তে এবং নিজেকে ভালোভাবে বোঝার পর আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আর দেখা যাবে না তার ব্যাটিং তাণ্ডব। পুরান জানিয়েছেন, অনেক ভেবে-চিন্তা করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে যাচ্ছেন তিনি। একটু আগেভাগেই অবসরের সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। ২০১৬ সালে অভিষেক হওয়া এই ক্রিকেটারের বয়স কেবল ২৯। তাই তো তার অবসরের ঘটনা বিস্ময় ছড়িয়েছে বেশ। পুরান নিজের অবসরের চিঠিতে লিখেছেন, ‘অনেক চিন্তাভাবনা এবং প্রতিফলনের পর, আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি এই খেলাটিকে ভালোবাসি যা আমাকে অনেক আনন্দ, ভালোবাসা এবং অবিস্মরণীয় স্মৃতি এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও দেবে। সেই মেরুন রঙের পোশাক পরে, জাতীয় সঙ্গীতের জন্য দাঁড়িয়ে এবং প্রতিবার মাঠে পা রাখার সময় আমার যা কিছু ছিল তা দিয়ে... এটা আমার কাছে আসলে কী তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।’ ক্রিকেট বিশ্বের যে সমস্ত ব্যাটসম্যান একাই প্রতিপক্ষের জন্য আতঙ্কের নাম তাদের মধ্যে পুরান অন্যতম। ভক্তদের জন্যই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান এতদূর আসতে পেরেছেন বলে মনে করছেন, ‘ভক্তদের...তোমাদের অকুণ্ঠ ভালোবাসার জন্য ধন্যবাদ। তোমরা কঠিন মুহূর্তগুলোতে আমাকে তুলে এনেছো এবং অতুলনীয় আবেগের সাথে সেই মুহূর্তগুলো উদযাপন করেছো। আমার পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং সতীর্থদের ধন্যবাদ, আমার সঙ্গে এই যাত্রায় হেঁটে যাওয়ার জন্য। তোমাদের বিশ্বাস এবং সমর্থন আমাকে সবকিছুর মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিয়েছে।’ তার বিস্ফোরক পারফরম্যান্স এবং অনুপ্রেরণামূলক ব্যক্তিগত সফর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারকে ভিন্ন জায়গায় নিয়ে গেছে। ২০১৫ সালে, একটি গুরুতর গাড়ি দুর্ঘটনায় তার স্বপ্ন সত্যিকার অর্থে শুরু হওয়ার আগেই ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তরুণ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের টেন্ডন ছিঁড়ে গিয়েছিল এবং পায়ের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। এরপর প্রায় এক বছর ধরে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। ২০১৮ সালে ভারতের বিপক্ষে ২৪ বলে ফিফটি করে লাইমলাইটে আসেন পুরান। ২০১৯ বিশ্বকাপে ৩৬৭ রান করেছিলেন ৫২.৪৭ গড়ে। শ্রীলংকার বিপক্ষে ১০৩ বলে ১১৮ রান করেছিলেন যা ওয়ানডেতে তার একমাত্র সেঞ্চুরি। ওয়ানডেতে পরবর্তীতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নেতৃত্বও দিয়েছেন তিনি। ৫৪ ওয়ানডে ১ হাজার ৬৩৪ রান রান করেছেন ৩৬.৩১ গড়ে। এছাড়া ৮৮ টি-টোয়েন্টিতে তার রান ১ হাজার ৮৪৮। ক্যারিবীয়ান ক্রিকেটের প্রতি তার ভালোবাসা ফুটিয়েও তুলেছেন, ‘যদিও আমার ক্যারিয়ারের আন্তর্জাতিক অধ্যায়টি শেষ হয়ে গেছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের প্রতি আমার ভালোবাসা কখনও মরবে না। আমি এই দল ও অঞ্চলের সাফল্য কামনা করি এবং আগামীর যাত্রার জন্য শক্তি কামনা করছি।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটে অসামান্য অবদানের জন্য পুরানকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ।