আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের প্রথমদিন পুরো ৯০ ওভার খেলার পর আরও এক ওভার খেলতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। আর একটি ওভার হলেই হয়তো মুশফিকের সেঞ্চুরি পূরণ হয়ে যেতো। পাশাপাশি লিটন দাসও পৌঁছে যেতে পারতেন পঞ্চাশে। মুশফিক ছিলেন শতরান থেকে মাত্র একরান দূরে। আর লিটন দাসের ফিফটি করতে দরকার ছিল ৩ রান। কিন্তু ২ আম্পায়ার স্টিভ ডোহেনি আর রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ বেলস তুলে জানিয়ে দিলেন, না খেলা শেষ। এমনিতে ৯০ ওভার করে খেলা চালানোর নিয়ম। তবে আলো পর্যাপ্ত থাকলে আম্পায়াররা আরও ২/১ ওভার খেলা চালিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু সেটা হয়নি। ফলে অপেক্ষার প্রহর আরো বাড়লো। মুশফিকুর রহিমের কাঙ্খিত শতরান আর লিটন দাসের অর্ধশতক দেখতে অপেক্ষায় থাকতে হবে আজ নভেম্বর দ্বিতীয় দিন সকালের সেশন পর্যন্ত। তারা দু’জন যেমন আত্মবিশ্বাস ও আস্থা নিয়ে খেলেছেন, গতকাল পড়ন্ত বিকেলে একটি ওভার বাড়িয়ে দিলেই হয়ত দুজনেরই লক্ষ্য পূরণ হয়ে যেতো। এখন অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ হলো। শততম টেস্টে মুশফিকের সেঞ্চুরির জন্য চাই একটি মাত্র রান। ওই রানটি হয়ে গেলে শুধু তিন অংকেই পৌঁছাবেন না, ক্রিকেটে রীতিমত ‘অমর’ হয়ে যাবেন তিনি। টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৮ বছরের ইতিহাসে ১১ নম্বর ব্যাটার হিসেবে শততম টেস্টে শতরানকারী হিসেবে মুশফিকের নাম লিখা থাকবে স্বর্ণাক্ষরে। এই অপেক্ষা শুধু ভক্ত ও সমর্থকদের না। মুশফিক নিজে কিভাবে নিয়েছেন সেটা? এই এক রান করা নিয়ে কি কোনরকম নার্ভাসনেস আছে তার ভেতরে? টিম বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমের পরিস্থিতিই বা কেমন? পুরো দল তাকিয়ে মুশফিকের শতরানের দিকে। এই একটি মাত্র রান করা নিয়ে কোনরকম সংশয় আছে কী? গতকাল খেলা শেষে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে উঠলো সে প্রশ্ন। কথা বলতে আসা মুমিনুল হক জানিয়ে দিলেন, ‘একটি মাত্র রান দরকার। আমাদের কোনোই সংশয় নেই মুশফিক ভাই দ্বিতীয় দিন সকালে অনায়াসে তা তুলে নিয়ে নিজের ১৩ নম্বর সেঞ্চুরি পূরণ করবেন।’ মুমিনুল জানিয়ে দিলেন, ‘যেহেতু ক্রিকেটারটি মুশফিক ভাই, তাই কোনোরকম চিন্তা-ভাবনা নেই আমাদের। তিনি ছাড়া অন্য কেউ হলে হয়ত খানিক কনফিউশনে থাকতাম; কিন্তু মুশফিক ভাই সব সময় এসব কন্ডিশনে অনেক বেশি সতর্ক। সাবধানী। তিনি খেলেছেন আস্থা ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে। মনে হয় না ওই একরান করতে কোনোরকম ভুল করবেন তিনি।’ গতকাল বাংলাদেশের ইনিংসের তখন ৮৬তম ওভার চলছিল। দিনের খেলা বাকি ছিল আরও ২১ মিনিট। তখন থেকে সময় ক্ষেপন করতে থাকে আইরিশরা। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ে ৯০ ওভারের বেশি খেলা সম্ভব হয়নি। আর মুশফিকও সেঞ্চুরি করতে পারেননি এদিন। শেরে-ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এদিন প্রথম দিনের খেলা শেষ হওয়া পর্যন্ত ১৮৭ বলে ৯৯ রানে অপরাজিত রয়েছেন মুশফিক। আজ নতুন দিন সকালে আর ১ রান করলেই ১১তম ব্যাটার হিসেবে শততম টেস্টে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়বেন বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক। তবে বাংলাদেশের ইচ্ছা ছিল, প্রথম দিনের শেষ বিকেলেই সেঞ্চুরি নিশ্চিত করার। দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে সেই কথাই বললেন মুমিনুল হক। তিনি বলেন, 'হ্যাঁ (আমরা আরেক ওভার খেলতে চাচ্ছিলাম)। কে চাইবে না (আরেক ওভার খেলতে)। এই সময় তো সবাই চাইবে। কারণ দুইজনেরই মাইলস্টোন ছিল। একজনের ফিফটি, একজনের সেঞ্চুরি। অবশ্যই যে কেউ চাইবে এই সময় করার জন্য। ওরা অবশ্যই স্লো করেছে। অনেক স্লো ছিল। আমাদের সবাই চাচ্ছিল (আরেক ওভার)।'
ক্রিকেট
মুশফিক ভাইয়ের সেঞ্চুরি নিয়ে কোন সংশয় নেই -----মুমিনুল
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের প্রথমদিন পুরো ৯০ ওভার খেলার পর আরও এক ওভার খেলতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। আর একটি ওভার হলেই হয়তো মুশফিকের সেঞ্চুরি পূরণ হয়ে যেতো।
Printed Edition