আফগানিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ওয়ানডে সিরিজ হেরে গেছে বাংলাদেশ। এক ম্যাচ বাকি থাকতেই তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে আফগানরা। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেটে হারের পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হার ৮১ রানের বড় ব্যবধানে। এরআগে, টি-টোয়েন্টি সিরিজে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। তবে ওয়ানডে সিরিজে দলটির বিরুদ্ধে ব্যর্থতার ধারা অব্যাহত রেখেছে টাইগাররা। পরপর দুই ম্যাচ হেরে সিরিজ থেকে ছিটকে গেছে মিরাজরা। আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজে সমতা ফেরানোর লক্ষ্যে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৯১ রানের সহজ লক্ষ্য পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে ব্যাটিং ব্যর্থতায় নিয়মিত উইকেট হারিয়ে ২৮.৩ ওভারে ১০৯ রানে অলআউট হয় দল। যাতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতে নেয় আফগানিস্তান। ২০২৩ সালে চট্টগ্রামে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে আফগানদের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। গত বছর শারজাতেও একই ব্যবধানে সিরিজ হেরেছিল টাইগাররা। এবার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে আফগানদের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হ্যাটট্রিক সিরিজ হারের ম্যাচে এক লজ্জার রেকর্ডও গড়েছে বাংলাদেশ দল। আবুধাবিতে এত কম রান তাড়ায় নেমে হারেনি কোনো দলই। ম্যাচের শুরুতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানের ৯৫ রানে ভর করে শেষ পর্যন্ত ৪৪.৫ ওভারে ১৯০ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান। বাংলাদেশের পক্ষে মেহেদী হাসান মিরাজ সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন। এছাড়া দুটি করে উইকেট নেন তানজিম হাসান সাকিব ও রিশাদ হোসেন। ব্যাটিং ব্যর্থতার শুরুটা খারাপ ছিল বাংলাদেশের। তাওহিদ হৃদয় ২৪, সাইফ হাসান ২২, জাকের আলী ১৮ ও নুরুল হাসান সোহান ১৫ রান করলেও শেষ পর্যন্ত রশিদ খানের স্পিনে বাংলাদেশ দলের সবকটি উইকেট হারায় ১০৯ রানে। রশিদ একাই ৫ উইকেট নেন। ফলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হেরে বড় শঙ্কায় পড়ে গেছে বাংলাদেশ। এই হার শুধু সিরিজ হারই নয়, ২০২৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়া অনুষ্ঠিতব্য ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার পথটাকেও অনেক কঠিন করে ফেলেছে বাংলাদেশ দল। ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে অংশ নেবে মোট ১৪টি দল। এর মধ্যে র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষ ৮টি দল সরাসরি বিশ্বকাপে অংশ নেবে, আর মূল পর্বে বাকি ৬টি দলকে উঠতে খেলতে হবে বাছাইপর্বে। বর্তমানে বাংলাদেশ ৭৬ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ে ১০ম স্থানে থাকায় সেই শঙ্কা তৈরি হয়েছে।বাংলাদেশের ওপরে ৮০ পয়েন্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ৮৮ পয়েন্টে ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডকে টপকানো প্রায় অসম্ভব হলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেছনে ফেলে শীর্ষ ৮-এ ঢোকার সুযোগ এখনো আছে বাংলাদেশের সামনে। তবে শর্ত একটাই, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আসন্ন ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হারাতে হবে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতলেও অবশ্য কাজটা কঠিন ছিল। কিন্তু সেই সিরিজ হেরে যাওয়ায় এখন র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতির সুযোগ আরও সংকুচিত হয়ে গেছে। শেষ ম্যাচ জিতলেও বাংলাদেশের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসবে না, মিরাজ-লিটনরা থাকবেন ১০ম স্থানেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজটি ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের আগে টাইগারদের শেষ ওয়ানডে সিরিজ। তাই এই সিরিজেই র‌্যাংকিং উন্নতির শেষ সুযোগ। অন্যদিকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে আরও ওয়ানডে খেলার সুযোগ থাকায় তারা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে। তাই বাংলাদেশের সামনে এখন পরিষ্কার সমীকরণ এই যে, যদি র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষ ৮-এ জায়গা করে নিতে না পারে, তাহলে ১৯৯৯ সালের পর এই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মূল পর্বে উঠতে হলে বাছাইপর্ব খেলতে হবে টাইগারদের।