ক্রিকেট
আফগানিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু দ: আফ্রিকার

মো: রফিকুল ইসলাম: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জয় দিয়ে শুরু করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। গতকাল নিজেদের প্রথম ম্যাচেই দলটি আফগানিস্তানকে হারিয়েছে ১০৭ রানের বিশাল ব্যবধানে। আগে ব্যাট করতে নেমে ওপেনার রায়ান রিকেলটনের সেঞ্চুরিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩১৫ রান করেছে দলটি। রিকেলটন সেঞ্চুরিসহ ১০৩ রান করেন। ফলে জয়ের জন্য আফগানিস্তান পায় ৩১৬ রানের বিশাল টার্গেট। এই বিশাল টার্গেট সামনে রেখে আফগানিস্তানের জন্য জয় পাওয়া কঠিনই ছিল। হয়েছেও তাই। ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তান ৪৩.৩ ওভারে- ২০৮ রানে অলআউট হলে দক্ষিণ আফ্রিকা জয় পায় ১০৭ রানের বড় ব্যবধানে। আফগানদের পক্ষে রহমত শাহ ছাড়া কোন ব্যাটসম্যানই ভালো করতে পারেনি। ফলে ২০৮ রানেই থেমে যায় আফগানিস্তানের স্কোর। রহমত শাহ দলের পক্ষে ফিফটিসহ করেন সর্বোচ্চ ৯০ রান।
জয়ের জন্য আফগানিস্তানের সামনে ৩১৬ রানের টার্গেটটা কঠিনই ছিল। বিশাল টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটাও ভালো করতে পারেনি আফগানিস্তান। একের পর এক উইকেট হারিয়ে প্রথমেই চাপে পড়ে দলটি। ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় আফগানরা। রহমানউল্লাহ গুলবাজের বিদায়ে ভাঙে দলটির ওপেনিং জুটি। মাত্র ১০ রান করে বিদায় নেন এই ওপেনার। দলীয় ৩৮ রানে আফগানরা হারায় দ্বিতীয় উইকেট। এবার ১৭ রান করে আউট হন অপর ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান। ওয়ান ডাউনে ব্যাট করতে নেমে দলকে ৫০ রানের নিয়ে বিদায় নেন সেদিকুল্লাহ আটাল। রান আউট হয়ে বিদায় নেয়ার আগে সেদিকুল্লাহ করেন ১৬ রান। দলীয় ৫০ রানেই আরো একটি উইকেট হারায় দলটি। ব্যাট করতে নেমে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শাহিদি। চার বল খেলে কোন রানই পাননি এই অধিনায়ক। তবে সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মধ্যে একাই দলকে এগিয়ে নিতে লড়াই করেছেনে রহমত শাহ। ৬২ বলে চারটি চার মেরে ফিফটি করেন এই ব্যাটার। রহমত শাহ এর সাথে জুটি করে মোটেও ভালো করতে পারেননি আজমতুল্লাহ ওমরজাই, মোহাম্মদ নবি, গুলবাদিন নাইব , রশিদ খান ও নুর আহমেদ। ফলে ১৬৯ রানের মধ্যে দলটি হারায় প্রথম ৮ উইকেট। শেষ পর্যন্ত রহমত শাহ এর ব্যাটে ভর করে আফগানিস্তান ২০০ রান টপকালেও বড় হার এড়াতে পারেনি। কারন ৪৩,৩ ওভারে আফগানিস্তানের স্কোর থেমে যায় ২০৮ রানে। রহমত শাহ দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯০ রান করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে কাগিসো রাবাদা ৩টি, লুঙ্গি এনগিদি ও ওয়াইন মুল্ডার নেন ২টি করে উইকেট। এরআগে, গতকাল করাচি ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। ব্যাট করতে নেমে রায়ান রিকেলটনের সেঞ্চুরি ও আরও তিনটি হাফ সেঞ্চুরির ওপর ভর করে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩১৫ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিং করতে থাকে দলটি। যদিও ২৮ রানের জুটি গড়ার পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যান দুই ওপেনার রিকেলটন ও টনি ডি জর্জি। ২৮ রানের মাথায় আউট হয়ে যান টনি ডি জর্জি। এরপরই ঘূরে দাঁড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা। রায়ান রিকেলটন ও টেম্বা বাভুমা মিলে গড়ে তোলেন ১২৯ রানের অনবদ্য জুটি।
অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে ২৯তম ওভারের ৪র্থ বলে এলবিডব্লিউ আউট করেছিলেন মোহাম্মদ নবি। আম্পায়ার আউটের আঙ্গুল তুললেও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান বাভুমা। কিন্তু পরের বলেই ছক্কা মারতে গিয়ে ধরা পড়েন বাউন্ডারি লাইনের আগে সেদিকুল্লাহ অটলের হাতে। ৭৬ বলে ৫৮ রান করে আউট হন বাভুমা। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি করতে ১০১ বল খেলেন রায়ান রিকেল্টন। যদিও ১০৩ রান করেই রানআউট হয়ে যান তিনি। এরপর রাশি ফন ডার ডুসেন, এইডেন মারক্রামরা ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন। ৪৬ বলে ৫২ রান করে আউট হন ফন ডার ডুসেন। ৩৬ বলে ৫২ রান করে অপরাজিত থেকে যান এইডেন মারক্রাম। শেষ দুই বলে ফজলহক ফারুকিকে বাউন্ডারি এবং ছক্কা মেরে ১০ রান নিয়ে দলীয় স্কোর ৬ উইকেটে ৩১৫ রানে নিয়ে যান উইয়ান মুল্ডার। ৬ বল খেলে তিনি অবশ্য ১২ রানে অপরাজিত ছিলেন। মাঝে ডেভিড মিলার ১৪ রান করে আউট হন। আফগান বোলারদের মধ্যে ২ উইকেট নেন মোহাম্মদ নবি। ১টি করে উইকেট নেন ফজলহক ফারুকি, আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও নুর আহমদ।