নুরুল আমিন মিন্টু, চট্টগ্রাম ব্যুরো : মেহেদি হাসান মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে তৃতীয় দিন শেষে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। অতিথিদের নাটকীয় ব্যাটিং ধসে ইনিংস ব্যবধানে জিতে সিরিজ ড্র করল বাংলাদেশ। আগের দিন নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেটে ২৯১ রান নিয়ে দিন শেষ করেছিল টাইগাররা। গতকাল তৃতীয় দিন খেলতে নেমে ব্যাটে-বলে দাপট দেখান মেহেদী হাসান মিরাজ। তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। তার সেঞ্চুরিতে ভর করে অলআউট হওয়ার আগে আরও ১৫৩ রান যোগ করে বাংলাদেশ।
আর তাতে ১ম ইনিংসে ৪৪৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। যাতে স্বাগতিকদের লিড দাঁড়ায় ২১৭ রান। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে এবার মেহেদী হাসান মিরাজের বোলিং তোপে পড়ে জিম্বাবুয়ে। মিরাজ নিয়েছেন ৫ উইকেট। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে ৩৮৮ রান সংগ্রহ করে সফরকারীরা। প্রথম ইনিংসে ২২৭ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১১১ রান নেয় জিম্বাবুয়ে।
ফলে তিন দিনের মধ্যে বাংলাদেশ জিতল ইনিংস ও ১০৬ রানে। টেস্টে বাংলাদেশের এটি তৃতীয় ইনিংস ব্যবধানে জয়। ঘরের মাঠে টানা ৬ টেস্ট হারের পর বাংলাদেশের এটি প্রথম জয়। এই টেস্টের আগে দেশের মাটিতে বাংলাদেশ সর্বশেষ টেস্ট জিতেছিল ২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে।
বুধবার বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লা. লে. মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম টেস্টে তৃতীয় দিনের ব্যাটিং শুরু করেন আগের দিনের অপরাজিত মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম। ওইদিন ৮২.৬ ওভারে মাসেকেসার বলে উইলিয়ামসের ক্যাচে পরিণত হন নাঈম হাসান। ২৩ বলে ৩ রান করেন তিনি। ৭ উইকেটে রান ২৭৯।
৯৬.৫ ওভারে মাসেকেসার বলে তাফাদজাওয়াও সিগার বলে তালুবন্দী হন তাইজুল ইসলাম। ৪৫ বলে ৩ চারে ২০ রান নিয়েছেন তিনি। ৮ উইকেটে রান ৩৪২।
১২২.৫ ওভারে ওয়েসলি মাধেভেরের বলে নিকোলাস ওয়েলচ গ্লাভসবন্দী হন তানজিম হাসান সাকিব। ৮০ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৪১ রান করেছেন তিনি। ৯ উইকেটে রান ৪৩৮।
১২৯.২ ওভারে মাসেকেসার বলে তাফাদজাওয়াও সিগার স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১৬২ বলে ১১ চার ও ১ ছক্কায় ১০৪ রান নিয়েছেন তিনি। ১০ উইকেটে রান ৪৪৪। ব্যক্তিগত ১৬ বলে ০ রানে অপরাজিত ছিলেন হাসান মাহমুদ। এতে প্রথম ইনিংসে ২১৭ রানে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং শুরু করে সফরকারীরা ২২ রানেই হারায় প্রথম ৩ উইকেট। এরপর অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন ওপেনার বেন কারেনকে নিয়ে ৪৭ রানের জুটি গড়েন। আরভিনকে বোল্ড করে জুটি ভাঙা মেহেদী হাসান মিরাজ একই ওভারে ফিরিয়ে দেন ওয়েসলি মাধেভেরেকে। এরপর আর ৪২ রান যোগ হতেই অলআউট জিম্বাবুয়ে।
সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেট নিয়ে দারুণ এক কীর্তিতেও নাম লিখিয়েছেন মিরাজ। সব উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ১১১ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। ফলে তিন দিনের মধ্যে বাংলাদেশ জিতল ইনিংস ও ১০৬ রানে। বাংলাদেশের পক্ষে মেহেদী হাসান মিরাজ ৫টি, তাইজুল ইসলাম ৩টি ও নাঈম হাসান ১টি উইকেট পেয়েছেন। ম্যাচ ও সিরিজ সেরা হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস : ২২৭। বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: (আগের দিন ২৯১/৭) ১২৯.২ ওভারে ৪৪৪ (মিরাজ ১০৪, তাইজুল ২০, তানজিম ৪১, হাসান ০*; এনগারাভা ১৪-২-৫৭-০, মুজারাবানি ২৬-৫-৮৩-১, মাসাকাদজা ৩৪-৫-৯০-১, মাসেকেসা ৩১.২-০-১১৫-৫, মাধেভেরে ১৫-১-৩৫-১, বেনেটে ৯-১-৪৯-১)।
জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস: ৪৬.২ ওভারে ১১১ (বেনেট ৬, কারান ৪৬, ওয়েলচ ০, উইলিয়ামস ৭, আরভাইন ২৫, মাধেভেরে ০, সিগা ০, মাসাকাদজা ১০, এনগারাভা ৫, মাসেকেসা ২, মুজারাবানি ৭*; তাইজুল ১৬.২-৩-৪২-৩, হাসান ২-২-০-০, মিরাজ ২১-৮-৩২-৫, নাঈম ৭-১-৩৪-১)।