শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের ম্যাচে জয়ের জন্য বড় টার্গেট পেয়েছে বাংলাদেশ। কুশল মেন্ডিসের সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে ২৮৬ রানের টার্গেট দেয় স্বাগতিক শ্রীলংকা। গতকাল পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৮৫ রান করে লংকানরা। দলের পক্ষে কুশল মেন্ডিস সেঞ্চুরিসহ ১২৪ রান করেন। জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে ২৮৬ রানের টার্গেটটা কঠিই ছিল। এই কঠিন টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (রাত সাড়ে নয়টা) বাংলাদেশ ২৮ ওভারে ৫ উইকেটে ১২৪ রান নিয়ে ব্যাট করছিল। দলের পক্ষে তাওহিদ হৃদয় ৩৩ রানে আর জাকের আলী শূণ্য রানে ব্যাট করছিল। বড় টার্গেটে জয়ের জন্য ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি টাইগাররা। কারণ দলীয় ২০ রানেই বাংলাদেশ হারায় প্রথম দুই উইকেট। দলীয় ১৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওপেনার তানজিম হাসান তামিম মারকুটে ব্যাটিং শুরু করলেও ১৭ রানেই বোল্ড হয়ে ফেরেন। এরপর দলীয় ২০ রানে বোল্ড হয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৩ বল খেলে শান্তু খুলতে পারেননি রানের খাতা। ফলে ২০ রানে ২ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ২০ রানে দুই উইকেট হারালেও ইনিংস বড় করার সুযোগ ছিল পারভেজ হোসেন ইমনের সামনে। কিন্তু ভুলের কারণে ইনিংসটা বড় করতে পারলেন না পারভেজ হোসেন ইমন। দুনিথ ওয়াল্লালাগেকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ক্যাচ হয়েছেন এই ওপেনার। ৪৪ বলে ২৮ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ফলে দলীয় ৬২ রানে বাংলাদেশ হারায় তিন উইকেট। তাওহিদ হৃদয় আর মেহেদী হাসান মিরাজ মিলে দলকে নিয়ে যায় শতরানে। ১০৫ রানে মিরাজের বিদায়ে ভাংগে এই জুটি। আউট হৗযার আগে মিরাজ ২৫ বলে করেন ২৮ রান। দলীয় ১২৪ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ব্যাট করতে নেমে শামীম আউট হয় ১২ রানে। শামীমের বিদায়ে হৃদয়ের সাথে জুটি করেন জাকের আলী। এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা কিন্তু ভালো করতে পারেনি শ্রীলংকাও তবে শেষ পর্যন্ত বড় স্কোরই গড়ে দলটি। দলীয় ১৩ রানেই প্রথম উইকেট হারায় লংকানরা। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে ১ রান করে টাইগার পেসার তানজিম হাসানের বলে স্লিপে নাজমুল হোসেন শান্তকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন শ্রীলংকার ওপেনার নিশান মাদুস্কা। তবে শুরুর ধাক্কা ভালভাবে সামাল দেন আরেক ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও তিন নম্বরে নামা কুশল মেন্ডিস। ৬৯ বলে ৫৬ রানের জুটি গড়েন তারা। ১৫তম ওভারে নিশাঙ্কা-কুশলের জুটি ভাঙ্গেন আগের ম্যাচে ৫ উইকেট নেওয়া বাংলাদেশ স্পিনার তানভীর ইসলাম। স্কয়ার লেগে পারভেজ হোসনে ইমনকে ক্যাচ দেন নিশাঙ্কা। ৪ চারে ৩৫ রান করেন নিশাঙ্কা। নতুন ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে এসে ৩টি চারে ভাল শুরু করেন কামিন্দু মেন্ডিস। কুশলের সাথে ৩১ রানের জুটিতে দলের রান তিন অংকে নেন কামিন্দু। ২০ বলে ১৬ রান করা কামিন্দুকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। ১০০ রানে তৃতীয় উইকেট পতনের পর বাংলাদেশ বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন কুশল ও অধিনায়ক চারিথ আসালঙ্কা। দু’জনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে রানের চাকা ঘুরতে থাকে শ্রীলংকার। এতে দলের রান দেড়শ পেরিয়ে ২শ স্পর্শ করে। এই জুটিতেই আসালঙ্কা ১৬তম হাফ-সেঞ্চুরি ও কুশল ষষ্ঠ ওয়ানডে সেঞ্চুরির স্বাদ নেন। ২০১৭ সালের পর বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় শতকের দেখা পেলেন কুশল। দলীয় ২২৪ রানে কুশল-আসালঙ্কার জুটি বিচ্ছিন্ন করেন পেসার তাসকিন আহমেদ। মিরাজকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ৯টি চারে ৬৮ বলে ৫৮ রান করা আসালঙ্কা। চতুর্থ উইকেটে ১১৭ বলে ১২৪ রান যোগ করেছেন তারা। আসালঙ্কা ফেরার পর কুশলের সাথে ২৫ রান যোগ করে দলের রান আড়াইশর কাছে নিয়ে যান জানিথ লিয়ানাগে। এরপর ১০ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারায় শ্রীলংকা। ২৫৯ রানে সপ্তম উইকেট পতন হয় লংকানদের। এরমধ্যে সেঞ্চুরিয়ান কুশলকে শিকার করেন স্পিনার শামীম হোসেন। ১১৪ বল খেলে ১৮টি চারে ১২৪ রান করেন কুশল। শেষ দিকে হাসারাঙ্গা ডি সিলভা ও দুসমন্থ চামিরার ১৯ বলে অবিচ্ছিন্ন ২৬ রানের জুটিতে ৭ উইকেটে ২৮৫ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় শ্রীলংকা।