জাতীয় ক্রিকেট লিগে বড় জয় পেয়েছে চট্টগ্রাম। গতকাল চট্টগ্রাম ১১২ রানের হারিয়েছে রাজশাহী বিভাগকে। সিলেট বনাম ময়মনসিংহের মধ্যেকার দিনের অপর ম্যাচটি ড্র হয়েছে। রাজশাহীতে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে শেষ পর্যন্ত পারলেন না প্রিতম কুমার। পরে পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস খেললেন শাখির হোসেন। তাতে অবশ্য লাভ হলো না। লক্ষ্যের ধারেকাছেও যেতে পারল না রাজশাহী। বড় জয়ে জাতীয় ক্রিকেট লিগ শুরু করল চট্টগ্রাম। গতকাল স্বাগতিকদের ১১২ রানে হারিয়েছে ইয়াসির আলি চৌধুরি, মুমিনুল হক, মাহমুদুল হাসান জয়রা। ৪৮৩ রানের বিশাল লক্ষ্য দিয়ে প্রতিপক্ষকে ৩৭০ রানে থামিয়ে দিয়েছে তারা। ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরির কীর্তি গড়ার খুব কাছ থেকে ফিরে আসা ইয়াসির জেতেন সেরার পুরস্কার। প্রথম ইনিংসে ১২৯ রানের পর দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নেমে ৯২ রান করেন তিনি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের আগে নিজেকে মেলে ধরেন জয়ও। দুই ইনিংসে ১২৭ ও ৫১ রান করেন তিনি। মুমিনুল ছিলেন ব্যর্থ। প্রথম ইনিংসে ১৩ রান করা বাংলাদেশের সাবেক টেস্ট অধিনায়ক দ্বিতীয় ইনিংসে রানের খাতাই খুলতে পারেননি। জয়ের সম্ভাবনায় এগিয়ে ছিল চট্টগ্রামই। শেষ দিনে তাদের প্রয়োজন ছিল ৬ উইকেট, রাজশাহীর ২৬৪ রান। শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিতভাবেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল চট্টগ্রাম। ৪ উইকেটে ২১৯ রান নিয়ে খেলতে নেমে শুরুতেই মেহরব হাসানকে হারায় রাজশাহী। আগের দিনের ৫৪ রানের সঙ্গে ৬ রান যোগ করতেই ফেরেন তিনি (২ ছক্কা ও ৬টি চারে ৬০)। তাকে বিদায় করে ১০৮ রানের জুটি ভাঙেন নাঈম হাসান। এরপর শাখির ও প্রিতমের ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে রাজশাহী। ৫৬ রান নিয়ে খেলতে নামা প্রিতম সেঞ্চুরির দিকে এগোতে থাকেন। কিন্তু তাকে কাক্সিক্ষত তিন অঙ্কে পৌঁছাতে দেননি নাঈম। ২ ছক্কা ও ৮ চারে ৮৩ রান করে এলবিডব্লিউ হন প্রিতম। প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ শাখির এবার চেষ্টা চালান বড় ইনিংস খেলার। ৯২ বলে প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। তাকে অনেকটা সময় সঙ্গ দেন তাইজুল ইসলাম। ৬ চারে ৩০ বলে ৩০ রান করা তাইজুলকে এলবিডব্লিউ করে ৫৭ রানের বন্ধনে ফাটল ধরান জয়। কিছুক্ষণ পর হাসান মুরাদের বলে কট বিহাইন্ড হন শাখির। ১ ছক্কা ও ৪টি চারে ৫২ রান করেন তিনি। নিজের তিন ওভারের মধ্যে শেষ দুই উইকেট নিয়ে প্রতিপক্ষের ইনিংস গুটিয়ে দেন মুরাদ। ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার, ৯৬ রান খরচায়। প্রথম ইনিংসে ৩৯ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। দুটি করে প্রাপ্তি আহমেদ শরিফ ও নাঈমের। অফ স্পিনার নাঈম প্রথম ইনিংসে ধরেছিলেন এক শিকার।
জাতীয় ক্রিকেট লিগের রর প্রথম রাউন্ডে ময়মনসিংহ বিভাগ ও সিলেট বিভাগের মধ্যকার ম্যাচটি ড্র হয়েছে। এই ড্র’তে সমান ২ করে পয়েন্ট পেয়েছে দু’দল। প্রথম ইনিংসে ময়মনসিংহের ৪০১ রানের জবাবে ৪৮৯ রান করে সিলেট। ৮৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে চতুর্থ ও শেষ দিন ৯ উইকেটে ২৭২ রান করে ময়মনসিংহ। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিনই নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছিল ময়মনসিংহ। দিন শেষে বিনা উইকেটে ৫৮ রান করেছিল তারা। চতুর্থ দিন শতরানের জুটি গড়ে বিচ্ছিন্ন হন ময়মনসিংহের দুই ওপেনার মাহফিজুল ইসলাম ও মোহাম্মদ নাইম। ৭টি চারে ৪৫ রানে মাহফিজুল থামলেও হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন মোহাম্মদ নাইম। ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৩ বলে ৫৮ রানে আউট হন তিনি।
মিডল অর্ডারে দ্রুত চার উইকেট পতনে চাপে পড়ে ময়মনসিংহ। ১৬৪ রানে ৬ উইকেট হারায় তারা। এতে ২শর নীচে অলআউটের শঙ্কায় পড়ে ময়মনসিংহ। পাঁচ নম্বরে নামা আরিফুল ইসলামের লড়াকু হাফ-সেঞ্চুরিতে আড়াইশ পার হয় ময়মনসিংহের স্কোর। তাকে সঙ্গ দিয়েছেন লেয়ার অর্ডারের দুই ব্যাটার রাকিবুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম। আরিফুল ৭ বাউন্ডারিতে ৬২, রাকিবুল ২০ ও শহিদুল ১৬ বলে ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন। শেষ উইকেটে শহিদুল ও মারুফ মৃধা ১০ বলের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়লে অলআউট হয়নি ময়মনসিংহ। ৯ উইকেটে ২৭২ রান করে তারা। সিলেটের বাঁ-হাতি স্পিনার নাবিল সামাদ ৩৬ ওভারে ১৩৫ রানে ৪ উইকেট নেন। আরেক অফ-স্পিনার আসাদুল্লাহ আল গালিব ৫০ রানে নেন ৩ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ১০১ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৬২ রান করে ম্যাচ সেরা হন আরিফুল।