বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে প্রথম টেস্ট সিরিজ শুরু হবে ২০ এপ্রিল থেকে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচকে সামনে রেখে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুশীলন ক্যাম্প করছে বাংলাদেশ দল। দীর্ঘ বিরতির পর ক্রিকেটারদের টেস্ট ক্রিকেটের আবহে ফেরাতে ১৩ এপ্রিল থেকে সিলেটে অনুশীলন ক্যাম্প চলছে। প্রথম টেস্টের আগে সিলেটের মাটিতে অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন দুই দলের ক্রিকেটাররা। গতকাল অনুশীলন নিয়ে সিলেটে সাংবাদিক সম্মেলনে কথা বলেছেন বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স। সিমন্স প্রশংসায় ভাসান প্রথম টেস্টের ভেন্যু সিলেটকে। টাইগার এই কোচ বলছিলেন, ‘প্রথম থেকেই প্রস্তুতি দারুণ হচ্ছে। এখানে সুযোগ-সুবিধা দারুণ, স্বপ্নের মতো। যেভাবে চাইবেন সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া যাচ্ছে। আমরা ভালোভাবেই প্রস্তুতি নিতে পারছি।’ দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স স্পষ্ট করেছেন প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য বিশেষভাবে স্পিন উইকেট তৈরির কোনো পরিকল্পনা নেই তাদের। বরং ভালো ‘ক্রিকেটীয়’ উইকেটে খেলেই জয়ের ধারা ধরে রাখার পাশাপাশি দলের সামগ্রিক উন্নতিতে মনোযোগ দিতে চায় বাংলাদেশ।

সাধারণত বাংলাদেশের পিচগুলো স্পিনারদের সহায়তা করে বেশি,বিশেষত মিরপুরের উইকেট। তবে সিলেট বা চট্টগ্রামের উইকেটে কিছুটা ভিন্নতা থাকে। সিলেটে পেসাররা খানিকটা সুবিধা পান, চট্টগ্রামে ব্যাটসম্যানদের দাপট বেশি দেখা যায়। অতীতে ভারত,ইংল্যান্ড বা দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে বাংলাদেশ প্রায়শই স্পিন-সহায়ক উইকেট তৈরি করত। কিন্তু ২০১৯ সালে আফগানিস্তানের কাছে স্পিন উইকেটে টেস্ট হারার পর থেকে কৌশলগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। সম্প্রতি তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে পেসারদেরও সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, যেমনটা দেখা গেছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ টেস্টে। তবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে শেষ টেস্টে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক ছিলেন মূলত স্পিনাররাই (তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান)। সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়েও কোচ ফিল সিমন্স এবারের সিরিজে ভিন্ন পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিলেন। উইকেট প্রসঙ্গে বাংলাদেশ দলের হেড কোচ সিমন্স বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা হলো ভালো উইকেট বানানো এবং টেস্ট দলকে আমরা যেভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই সেভাবেই খেলার চেষ্টা করা। আমার মনে হয় না জিম্বাবুয়ের জন্য আমাদের স্পিনবান্ধব উইকেট বানানোর প্রয়োজন আছে। আমরা ভালো উইকেটে খেলেই ম্যাচ জিততে চাই।’ তিনি আরও জানান,‘উইকেট দেখে তার শক্ত এবং ভালো মনে হয়েছে এবং স্পিন বা পেস নির্দিষ্ট উইকেট নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।’ গত বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরের পর এটাই বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সিরিজ। সিলেটে প্রস্তুতি ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন সিমন্স। তিনি বলেন,‘প্রস্তুতি খুব ভালো হয়েছে। এখানকার সুযোগ-সুবিধা অনেকটা স্বপ্নের মতো। হোটেলের কাছাকাছি সব ব্যবস্থা থাকায় অল্প সময়ে অনেক কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি আমরা।’ সিরিজের লক্ষ্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে টাইগার কোচ সিমন্স জানান,এখনই হোয়াইটওয়াশ নিয়ে ভাবছেন না। তার মূল লক্ষ্য ধাপে ধাপে এগোনো। ‘আমরা একটা ধাপ করে এগোতে চাই। এখানে (সিলেটে) আমাদের একটা টেস্ট আছে,এটা জিততে চাই। প্রথম টেস্ট জিততে হবে,এমনকি প্রথম দিনটাও ভালো খেলতে হবে। আপাতত চট্টগ্রামের কথা মাথায় আনতে চাই না’- বললেন বাংলাদেশ কোচ। সিমন্স জানান, আপাতত সিলেট টেস্টেই তার পূর্ণ মনোযোগ। তিনি বলেন, 'হোয়াইটওয়াশ নিয়ে আমি ভাবছি না। আমি সামনের ম্যাচ ধরে ভেবে থাকি। প্রথম টেস্ট আগে জিতি, এরপর সিরিজ জয়ের কথাও ভাববো। প্রথম টেস্টের প্রথম দিনটা জিততে চাই। সিলেট পর্ব শেষ করে চট্টগ্রাম টেস্ট নিয়ে ভাববো।’