জাতীয় দলের স্পিনার নাঈম হাসান নিজেকে প্রস্তুত করছেন তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটের জন্য। শুধু টেস্ট খেলেই থেমে থাকতে চান না এই ডানহাতি অফ স্পিনার। প্রিমিয়ার লিগ, বিপিএলসহ ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রতিটি ফরম্যাটে খেলে নিজেকে রাখছেন চূড়ান্ত প্রস্তুতির মধ্যে। গতকাল গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে নিজের লক্ষ্য, অস্ট্রেলিয়া সফরের আগ্রহ এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়ে অকপটে কথা বলেছেন নাঈম। সেই সঙ্গে প্রশংসা করেছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বেরও। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রামে টেস্ট অভিষেক হয় নাঈম হাসানের। অভিষেকেই ৫ উইকেট নিয়ে নজর কাড়েন। এরপরও টেস্ট দলে আছেন যাওয়া-আসার মধ্যেই। তবে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে জায়গা পাননি এখনও। কিন্তু নিজের প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি রাখছেন না ২৪ বছর বয়সী এই স্পিনার।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নিজেকে তিন ফরম্যাটে খেলার মতো করে প্রস্তুত করছি। আপনি যেটা বললেন একটা ফরম্যাটে জাতীয় দলে খেলছি। কিন্তু প্রিমিয়ার লিগ, বিপিএল এগুলোতেও খেলি আলহামদুলিল্লাহ। তো আমি যদি শুধু এক ফরম্যাটে খেলতাম তাহলে শুধু প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলতাম। তাহলে প্রিমিয়ার লিগ কিংবা বিপিএল খেলা হতো না। আমি নিজেকে তিন ফরম্যাটে খেলার জন্য চিন্তা করি।’ সামনে এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো বড় দুটি বড় আসর। বাংলাদেশ দল নিয়ে আশাবাদী নাঈম। তার বিশ্বাস, মোমেন্টাম পেলে সেরা ফল বের করে আনতে পারবে বাংলাদেশ। সতীর্থদের নিয়ে তাই তিনি বললেন, ‘দেখুন-আলহামদুলিল্লাহ ওরা খুব ভালো খেলছে। আমার বিশ্বাস ওরা ওইখানে খুব ভালো রেজাল্ট করবে। টি-টোয়েন্টি অল্প সময়ের খেলা, যদি মোমেন্টাম পায় তাহলে বাংলাদেশ ভালো কিছু করবে ইনশাআল্লাহ।’ বাংলাদেশ এইচপি ও এ দলের ক্রিকেটার নিয়ে গঠিত একটি দলের টপ-এন্ড টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলতে অস্ট্রেলিয়া সফর করার কথা। সেই সফরের একজন সদস্য হওয়ার প্রবল আগ্রহ নাঈমের। তার মতে, নতুন কন্ডিশনে খেলার অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতের জন্য বড় সম্পদ হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, ‘দেখুন-অস্ট্রেলিয়া আমাদের জন্য অচেনা কন্ডিশন, কোনো সময়ই খেলা হয়নি। এখন যদি আমাকে সিলেক্ট করে অবশ্যই যাব। ওইখানে গেলে তো আমি বাইরের দেশের খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলবে। নতুন কন্ডিশনটা আমি জানব ওখানে কিভাবে কি করতে হয়। যখন কেউ ‘এ’ দলের হয়ে খেলতে যায় তখন ওইখানে আপনার ভবিষ্যতে জাতীয় দলে খেলে তাদের মতো খেলোয়াড়ই থাকে। ওদের সঙ্গে খেললে ভিন্ন রকম চ্যালেঞ্জ আসবে, কন্ডিশনগুলোও চেনা হবে। এটা আমাদের জন্য হেল্প হবে।’ নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্ব নিয়ে স্পষ্ট প্রশংসা ঝরেছে নাঈমের কণ্ঠে। তার মতে, শান্তর মতো নেতৃত্বে দল নিয়মিত ভালো করেছে, খেলোয়াড়রাও পেয়েছে প্রয়োজনীয় সমর্থন।
তিনি বলেন, ‘অধিনায়ক হিসেবে উনি (নাজমুল হোসেন শান্ত) অনেক ভালো। সত্যি কথা বলতে উনি খেলায় অনেক চিন্তা করে। অধিনায়ক কিন্তু অনেক সহজ ব্যাপার না। ধরুন একজন খেলোয়াড় হিসেবে যদি আমি চিন্তা করি তাহলে দলে আমার ভূমিকাটা কী আমি ওইটা নিয়ে চিন্তা করি। কিন্তু একজন অধিনায়ককে পুরো দল নিয়ে চিন্তা করতে হয়, কন্ডিশন কেমন, প্রত্যেকটা খেলোয়াড়কে নিয়ে চিন্তা করতে হয়। অধিনায়কত্ব অনেক কঠিন। উনি খুব ভালোভাবে সামলে রেখেছেন সবাইকে। বাংলাদেশ উনার অধীনে অনেকগুলো ম্যাচ জিতেছে।’ অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে আগেই খেলতে পারলে ভবিষ্যতে জাতীয় দলে সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে বলেও মনে করেন নাঈম। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দেখুন- এখন তো গিয়ে (অস্ট্রেলিয়ায়) খেলব। যদি তখন খেলার সুযোগ হয়...আমি যদি এই কন্ডিশনে আগে থেকেই খেলে থাকি তাহলে পরে সুযোগ আমার জন্য কাজটা সহজ হবে।’ স্পিনারদের জন্য অপেক্ষাকৃত কঠিন অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে মানিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে চান এখনই। আর তিন ফরম্যাটে খেলার স্বপ্ন বুকে লালন করে এগিয়ে যেতে চান নাঈম হাসান।