শ্রীলংকার বিপেক্ষে টেস্ট সিরিজের পর ওয়ানডে সিরিজেও হেরেছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ হেরেছে ২-১ ব্যবধানে। অথচ শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়ার হাতছানি ছিল বাংলাদেশের সামনে। তবে সেই সুযোগ আর কাজে লাগানো হলো না টাইগারদের। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ওয়ানডেতে ৯৯ রানের বড় ব্যবধানে হেরে শ্রীলংকার মাটিতে প্রথমবার ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল বাংলাদেশের। পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শেষ ম্যাচে টস জিতে শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮৫ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর তোলে তারা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১২৪ রান করেন কুশল মেন্ডিস, যেটি ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করলেও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ৩৯ ওভার ৪ বলে ১৮৬ রানেই গুটিয়ে যায় পুরো দল। বড় ব্যবধানে হারের সঙ্গে সিরিজ হারও নিশ্চিত হয়ে যায় টাইগারদের। ম্যাচশেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ বলেন, ‘আমরা বোলিংয়ে ভালো করেছিলাম। বিশেষ করে শেষ ১০ ওভারে স্পিনাররা কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। উইকেট ছিল ব্যাটিং সহায়ক।
আমরা ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করেছিলাম, তবে ব্যাটিংয়ের সময় কিছু ভুল সিদ্ধান্তের কারণে ম্যাচটা আমাদের হাতছাড়া হয়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘মাঝের ওভারগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পার্টনারশিপ করতে পারিনি। ফলে ভালো শুরুটাকে কাজে লাগানো সম্ভব হয়নি। আমাদের দলে এখনও কিছু নতুন মুখ রয়েছে। আরো সুযোগ পেলে সবাই ভালো করবে।’ কলম্বোতে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ৭৭ রানে হেরে সিরিজ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। পরের ম্যাচে ১৬ রানে জয় পায় বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সিরিজে ফেরায় সমতা। কিন্তু বাংলাদেশ আরেকটি হতশ্রী পারফরম্যান্সে ম্যাচ হেরে যায় ৯৯ রানে। ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হার। যেনতেন পরাজয় নয়। স্রেফ আত্মসমর্পণ। নতুন অধিনায়ক, একাধিক তরুণ ক্রিকেটার, অনভিজ্ঞ দল...বিষয়গুলোকে সামনে এনে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ আরো সময় চাইলেন। অভয় দিলেন, এই দলই একদিন বড় হয়ে উঠবে। মিরাজ বলেছেন, ‘আমাদের দল তরুণ; তাদের সময় প্রয়োজন। সুযোগ দিলে, একদিন ভালো হবে।’ বোলিং ভালো হলেও ব্যাটিং আবার ডুবিয়েছে বাংলাদেশকে। ২৮৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশ ৩৯.৪ ওভারে ১৮৬ রানে গুটিয়ে যায়। ৯৯ রানের হারের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মিরাজ বলেছেন, ‘উইকেট দারুণ ছিল। আমরা ইতিবাচক ক্রিকেট খেলবো সেই আলোচনা করেছিলাম। যারা সুযোগ পাবে তারা গভীর পর্যন্ত খেলার চেষ্টা করবে। আমরা শেষ ১০ ওভারে আক্রমণ করবো এমন পরিকল্পনাই ছিল। কিন্তু আমরা শুরু থেকে ভুল করেছি। জুটি গড়তে পারিনি শুরুতে ও মাঝে। এখানেই সমস্যা তৈরি হয়েছে।’ নিজেদের বোলিং নিয়ে মিরাজ তৃপ্তির কথাই শোনালেন। বিশেষ করে তিনশর নিচে তাদেরকে আটকে রাখতে পারাকে বড় করেই দেখছেন তিনি, ‘আমি মনে করি আমরা শেষ ১০ ওভারে ভালো বোলিং করেছি। যদিও এখানে বোলিং করা সহজ ছিল। উইকেট অসাধারণ ছিল। তাসকিন, মোস্তাফিজুর ও স্পিনাররা ভালো করেছে।’ প্রথম ওয়ানডের মতো গতকাল মঙ্গলবার শেষ ম্যাচেও কা-জ্ঞানহীন ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ। দায়িত্বশীল হতে পারেননি তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, পারভেজ হোসেন ইমন, মেহেদী হাসান মিরাজ ও শামীম হোসেনরা।