তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের কাছে অপ্রত্যাশিতভাবে ৩৯ রানে পরাজিত হওয়ার পর, আজ শনিবার চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ম্যাচে সিরিজে সমতা আনতে মরিয়া হয়ে মাঠে নামবে স্বাগতিক বাংলাদেশ। অন্যদিকে, প্রথম ম্যাচের মনোবলে বলীয়ান হয়ে আইরিশরা চাইবে এই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের পকেটে পুরে নিতে। বাংলাদেশের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ: ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই : প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতা ছিল চোখে পড়ার মতো। আয়ারল্যান্ডের দেওয়া ১৮২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে টাইগাররা শুরুতেই ব্যাকফুটে চলে যায়। তরুণ ব্যাটার তৌহিদ হৃদয়ের ৮৩ রানের অপরাজিত দুর্দান্ত ইনিংস সেই ব্যবধান কমালেও, দলের জয় নিশ্চিত করতে পারেনি। মিডল অর্ডারে দ্রুত উইকেট পতন এবং টপ অর্ডারের ব্যর্থতা-এই দুটিই দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের জন্য চিন্তার কারণ। অধিনায়ক লিটন দাস এবং টপ অর্ডারের অন্যান্য ব্যাটারদের আরও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে। আয়ারল্যান্ডের স্পিনার ম্যাথিউ হামফ্রেসের ৪ উইকেটে ১৩ রানের ক্যারিয়ার-সেরা বোলিং পারফরম্যান্স টাইগারদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। স্পিন-সহায়ক পিচেও বাংলাদেশের ব্যাটারদের আরও আক্রমণাত্মক ও পরিণত মনোভাব দেখাতে হবে, যার ইঙ্গিত তৌহিদ হৃদয়ও দিয়েছেন। বোলিংয়ে তানজিম হাসান সাকিবের শুরুটা ভালো হলেও আইরিশ ব্যাটার হ্যারি টেক্টরের অসাধারণ ৬৯ রানের ইনিংসের কাছে ১৮২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে বাংলাদেশ সুবিধা করতে পারেনি। দ্বিতীয় ম্যাচে টাইগার বোলারদের আরও আঁটসাঁট বোলিংয়ের পাশাপাশি ডেথ ওভারে কার্যকরী হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আয়ারল্যান্ডের লক্ষ্য: টানা দুই জয় ও সিরিজ নিশ্চিত করা : পল স্টার্লিংয়ের নেতৃত্বাধীন আয়ারল্যান্ড দলের জন্য প্রথম ম্যাচটি ছিল এক বিশাল টার্নিং পয়েন্ট। প্রায় ১৪ মাস পর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এই জয় তাদের আত্মবিশ্বাসকে অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে পরাজিত হওয়ার পর, টি-টোয়েন্টিতে এমন শুরু আইরিশদের জন্য এক বিশাল স্বস্তি। হ্যারি টেক্টরের ব্যাটে ভর করে আইরিশরা লড়াকু পুঁজি গড়েছিল। অন্যদিকে, বোলিংয়ে তরুণ বাঁহাতি স্পিনার ম্যাথিউ হামফ্রেস বাংলাদেশের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপকে একাই ধসিয়ে দেন। মার্ক অ্যাডায়ার এবং ব্যারি ম্যাককার্থির মতো পেসাররাও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট তুলে নিয়ে আইরিশদের জয় নিশ্চিত করেন।সিরিজ জয়ের সুযোগ তৈরি হওয়ায় আয়ারল্যান্ড স্বাভাবিকভাবেই এই ম্যাচেও তাদের প্রথম ম্যাচের একাদশ ধরে রাখার চেষ্টা করবে। তাদের অধিনায়ক পল স্টার্লিং আত্মবিশ্বাসী যে, তারা এই সিরিজ জিততে পারবে। আইরিশরা নিশ্চয়ই চাইবে, আজ জিতে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করতে, এবং ঘরের মাঠে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সাফল্যের ধারায় ছেদ ঘটাতে।হেড টু হেড: দুই দলের মধ্যে মোট ৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ৫টি এবং আয়ারল্যান্ড ৩টি ম্যাচে জয় পেয়েছে। প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের জয় এই পরিসংখ্যানকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলেছে। সবমিলিয়ে, আজ ম্যাচটি উভয় দলের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ যদি সিরিজে সমতা আনতে পারে, তবে সিরিজের মীমাংসা হবে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে। আর আয়ারল্যান্ড জিতলে, তাদের ঐতিহাসিক সিরিজ জয় নিশ্চিত হবে। ঘরের মাঠে সমর্থকদের হতাশ না করার একটা বাড়তি চাপ থাকবে বাংলাদেশের ওপর।