আজ থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে মাঠে নামার আগে আরব আমিরাত সফরটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে আরব আমিরাতের কাছে হেরেছে টাইগাররা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে সিরিজ হারটা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে বড় লজ্জাগুলোর একটি। আরব আমিরাতের কাছে এমন হার নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে বেশ। তাই পাকিস্তান সিরিজে ভালো করা ছাড়া বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে। অবশ্য সময়টা ভালো যাচ্ছে না পাকিস্তান দলেরও। নতুনভাবে দল গঠনের পর থেকে আগের মতো সেই ধার খুঁজে পাচ্ছে না তারা। তারপরও দলটিকে হালকাভাবে নিতে চান না বাংলাদেশের কোচ ফিল সিমন্স। যদিও জেতার ব্যাপারে বেশ আত্মবিশ্বাসী তিনি। টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগে সিরিজ নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশের হেড কোচ ফিল সিমন্স। তিনি বলেছেন, স্বাগতিক পাকিস্তানকে কোনওভাবেই হালকাভাবে নিচ্ছেন না। সিমন্স বলেন, ‘পাকিস্তান একটি বিপজ্জনক দল। আমরা তাদের মোটেও হালকাভাবে নিচ্ছি না। সবাই বলছে, তারা ভালো করছে না, তবে পাকিস্তান এখনও পাকিস্তানই। যে কোনো দলকে হারানোর ক্ষমতা তাদের আছে। কিন্তু পাকিস্তান তো দল হিসেবে এখনও পাকিস্তান-ই। যে কোনও প্রতিপক্ষকে হারানোর ক্ষমতা তাদের আছে।’ বাংলাদেশ দলে বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ তারকার অনুপস্থিতি। তবে বাংলাদেশ দল পাকিস্তান সফরের আগে বেশ কয়েকজন পাকিস্তান সুপার লিগে খেলেছেন। তাদের মধ্যে ছিলেন রিশাদ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ। এখানে খেলার কারণে স্থানীয় কন্ডিশন সম্পর্কে ভালোই ধারণা পেয়েছেন তারা। সিমন্স জানিয়েছেন, সেই ধারণা তারা দলের সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করেছেন, ‘আমাদের কয়েকজন পিএসএলে খেলেছে। তারা এখানকার কন্ডিশন সম্পর্কে ভালো তথ্য দিয়েছে।’ সিরিজে চোটের কারণে খেলা হচ্ছে না তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমানের। সিনিয়রদের অনুপস্থিতিকে কোনও সমস্যা হিসেবে দেখেন না সিমন্স। তিনি মনে করেন, এটা একটা সুযোগ, ‘সিনিয়রা যখন থাকেন না, এটা তরুণদের জন্য সুযোগ করে দেয়। মোস্তাফিজুর রহমান অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় আমাদের জন্য। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাকে এবার পাচ্ছি না। অভিজ্ঞদের আমরা মিস অবশ্যই করবো। কিন্তু তার পরেও আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যে এই দল নিয়েই শক্তিশালী নৈপুণ্য দেখাতে পারবো।’ আরব আমিরাতের কাছে হারের প্রসঙ্গ আসতেই সিমন্স বলে ওঠেন, ‘আরব আমিরাতের কাছে সিরিজ হার কঠিন ছিল। তবে এটি মাঝেমধ্যে আপনাকে উজ্জীবিত করতে পারে। আমাদের মনোবল দুর্দান্ত আছে এবং আশা করছি (আরব আমিরাতের ফল) আমাদের আরও উজ্জীবিত করবে।’ পাকিস্তানের মাটিতে সিরিজ জয়ের সুযোগও দেখছেন সিমন্স। তার কথা, ‘আমার মনে হয় সিরিজ জয়ের ভালো সুযোগ আছে। মানুষ বলছে, পাকিস্তান ভালো খেলছে না। তবে নির্দিষ্ট দিনে কী ঘটে সেটাই আসল কথা। আবারও বলছি, এখানে সিরিজ জেতার ভালো সুযোগ আছে। আমরা সব দিক থেকে উন্নতি করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি। আশা করি এই সিরিজে ভালো করব।’ আরব আমিরাতের কাছে অপ্রত্যাশিত এক হারের পরেই পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ। মানসিকভাবে কিছুটা পিছিয়ে থাকারই কথা ছিল বাংলাদেশ জাতীয় দলের। তবে জাতীয় দলের কোচ ফিল সিমন্স এটাকেই বলছেন নিজেদের সেরা ক্রিকেট উপহার দেয়ার সময়। প্রতিপক্ষকে নিয়ে সমীহ থাকলেও ক্যারিবিয়ান এই কোচের কণ্ঠে ছিল আত্মবিশ্বাসের সুর। ফিল সিমন্স বলেন, ‘এটা পাকিস্তানকে টি-টোয়েন্টিতে হারানোর সেরা সময় কিনা জানি না। আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলার জন্য এটা সেরা সময়। আমরা সিরিজ জিততে এসেছি। যেকোনো সময়েই পাকিস্তান ভয়ংকর দল। সহজভাবে নেয়া যাবে না। যেকোনো দিন তারা ভালো খেলতে পারে।’ রিশাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে সিমন্স বলেছেন, ‘হ্যাঁ, পিএসএলের অভিজ্ঞতা সহায়তা করতে পারে। আমরা এখানকার কন্ডিশন কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। এখানে কয়েকজন পিএসএল খেলেছে, শন (টেইট), মুশিরা (মুশতাক আহমেদ) পিএসএলে ছিল। ওদের কাছ থেকে তথ্য, অভিজ্ঞতা নিতে পারব এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারব।’ খেলোয়াড় বা কোচ হিসেবে পাকিস্তানে আগেও এসেছিলেন সিমন্স। ভারতের বিপক্ষে সামরিক উত্তেজনার পর পাকিস্তানে এসে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘পাকিস্তানে আমার সব স্মৃতিই সুখকর। পাকিস্তানে খেলতে খুব ভালো লাগত। তখন বাইরে ঘুরাফেরার স্বাধীনতা ছিল। গত বছর করাচিতে বেশ উপভোগ করেছি। আবারও আসতে মুখিয়ে ছিলাম।’ মোস্তাফিজকে হারানো দলের জন্য বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন ফিল সিমন্স। লাহোরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, মোস্তাফিজ এখন একজন সিনিয়র পেসার। আপনি তো আপনার সিনিয়রদের মিস করবেনই। সে আইপিএলে দুর্দান্ত বল করেছে। তাকে হারানো অবশ্যই ক্ষতির। আমরা তাকে মিস করবো। কিন্তু এটা অন্য একজনের জন্য সুযোগ তিন ম্যাচে পারফর্ম করে জায়গা করে নেয়া।’