দেশের বাইরে প্রথম টেস্ট ম্যাচে বোলিংয়ের সুযোগ পেয়েই বাজিমাত করেছেন ডানহাতি স্পিনার নাঈম হাসান। গতকাল শ্রীলংকার বিপক্ষে বোলিংয়ে নেমে ৫ উইকেট নিয়ে নাঈম নিজেকে প্রমাণ করেছেন। ২০১৮ সালে নাঈম হাসানের টেস্ট অভিষেক। ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সাদা পোশাকে পথচলা শুরু। সাত বছর পর নাঈমের দীর্ঘ এক অপেক্ষা ফুরাল। বিদেশের মাটিতে প্রথমবার বল করার সুযোগ পেলেন। আর আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্যারিয়ারে চতুর্থ ফাইফার তুলে নিলেন। টেস্টে ২৫ বছর বয়সী স্পিনার নাঈমের সেরা বোলিং ফিগার ১০৫/৬। ২০২২ সালের সেই চট্টগ্রাম টেস্টেও প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলংকা। এ ছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাওয়া ফাইফার দুটি ছিল দেশের মাটিতে। অর্থাৎ, এবারই প্রথম বিদেশের মাটিতে লাল বলে ৫ উইকেট নিলেন নাঈম। অবশ্য দেশের বাইরে তার সেভাবে একাদশে সুযোগও মেলে কম। গতকাল কেবল দীনেশ চান্দিমালকে আউট করা এই স্পিনার একে একে ফেরান কামিন্দু, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, থারিন্দু রত্ননায়েকে ও আসিথা ফার্নান্দোকে। ২০১৯ সালে ইডেনে নাঈমের খেলার সুযোগ হয়েছিল। একাদশে থেকে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করে ১৯ রান করেছিলেন।

কিন্তু ২২ গজে হাত ঘোরানো হয়নি। ফিল্ডিংয়ে চোট পাওয়ায় নাঈম ছিটকে যান। ফলে তার অ্যাওয়ে ম্যাচে বোলিংয়ের অভিষেকের অপেক্ষা দীর্ঘ হয়। টেস্ট ক্যাপ পাওয়ার সাত বছর পর দেশের বাইরে প্রথম টেস্ট খেলেই বাজিমাত করলেন। ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফাইফারের স্বাদ পেলেন। ৪৩.২ ওভার হাত ঘুরিয়ে ১২১ রানে ৫ উইকেট নেন এই অফস্পিনার। এর আগে তিনবার ফাইফার পেয়েছেন। শ্রীলংকার বিপক্ষে চট্টগ্রামে ৬ উইকেট পেয়েছিলেন যা তার ক্যারিয়ার সেরা। এছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আছে ৫ উইকেট পাওয়ার কীর্তি। সাত বছরের লম্বা ক্যারিয়ারে নাঈম ঘরের মাঠেও খুব বেশি ম্যাচ খেলেননি। এই ম্যাচের আগে তার টেস্টের সংখ্যা ছিল ১২টি। সব মিলিয়ে ১৩ টেস্টে তার উইকেট ৪৪টি। এই ম্যাচেও তার খেলা হতো কিনা সেটাও বিরাট প্রশ্নের। দেশের মাটিতে বাংলাদেশ দুই ডান হাতি অফস্পিনার খেলানোর চিন্তা করতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। মিরাজ ও নাঈম একই সঙ্গে খেলতে পারেন। দেশের বাইরে সেই পরিকল্পনা থেকে সরে আসে। ব্যাটিংয়ে এগিয়ে থাকায় মিরাজ হয়ে যান অটোমেটিক চয়েজ। ফলে নাঈমকে থাকতে হয় ডাগআউটে। থাকতে হয় সুযোগের অপেক্ষায়। এই টেস্টের আগে হঠাৎ মিরাজের জ্বর আসায় নাঈমের ভাগ্য খুলে যায়। অফস্পিনারের সুযোগ হয় হাত ঘুরানোর। সুযোগটি দারুণভাবে কাজে লাগিয়ে ফাইফারের স্বাদ পেয়ে গেলেন অ্যাওয়ে অভিষেকেই। বাউন্সের উইকেট থেকে বাড়তি টার্ন ও বাউন্স পাওয়ায় নাঈমের বোলিং ছিল ধ্রুপদী। বাংলাদেশ ১০ রানের লিড পেয়েছে। নাঈমের ফাইফারের সুবাদেই মিলেছে এই সাফল্য।