নয় বছর পর লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে আবাহনীকে হারিয়ে জয় পেয়েছে মোহামেডান। গতকাল মিরপুরে মোহামেডান ৩৯ রানে হারিয়েছে আবাহনীকে। ২০১৬ সালে এই মাঠেই সর্বশেষ আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচ জিতেছিল মোহামেডান। মাঝে একবার কুড়ি ওভারের প্রিমিয়ার লিগে জিতেছিল মোহামেডান। গতকাল শনিবার আগে ব্যাটিং করে মোহামেডান ২৬৪ রান সংগ্রহ করে। সহজ এই লক্ষ্যে খেলতে নেমে ২২৫ রানে অলআউট হয় আবাহনী। তাতে ৩৯ রানের জয় পেয়েছে ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহামেডান।
যদিও তারা পয়েন্ট টেবিলে আবাহনীকে টপকাতে পারেনি। ১১ ম্যাচে দুই দলেরই জয় ৯টি, পরাজয় ২টি। আবাহনীর রান রেট ১.৪৬৮। মোহামেডানের ০.৭৭১। সুপার লিগের লড়াইয়ে দুই দল আবারো মুখোমুখি হবে। সেই লড়াইয়ে কার মুখে শেষ হাসিটা থাকে সেটাই দেখার। গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ভালো শুরুর পরও মোহামেডান দলীয় ইনিংসটাকে তিনশর কাছাকাছি নিতে পারেনি। আবাহনীকে ২৬৪ রানের লক্ষ্য দিতে পারে। মাঝারি মানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৩১ রানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় আবাহনী। সেই চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন জাতীয় দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তৃতীয় উইকেটে মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে ২৮ এবং মুমিনুলের সঙ্গে ৬৭ রানের জুটি গড়েন তিনি। এরপর মাহফুজুর রহমান রাব্বি দ্রুত বিদায় নিলে মোসাদ্দেক হোসেন ও শান্ত মিলে ৪৪ রানের জুটি গড়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেন। তবে মোসাদ্দেকের (২৪) আউটের পর শান্তও (৮০) ফিরে গেলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারায় আবাহনী। শেষ পর্যন্ত ৪৭.২ ওভারে ২২৫ রান তুলে অলআউট হয় তারা। শান্ত ১১৩ বলে ৭ চারে ৮০ রানের ইনিংস খেলে আউট হন। এর বাইরে মুমিনুল ২৫, মিঠুন ১৯ ও মৃত্যুঞ্জয় ২৪ রানের ইনিংস খেলেন। মোহামেডানের বোলারদের মধ্যে এবাদত হোসেন ৩৬ রানে নেন চারটি উইকেট। মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাইফ উদ্দিন নেন দুটি করে উইকেট। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পাওয়া মোহামেডান শুরুতেই রনি তালুকদারকে হারায়। দ্বিতীয় উইকেটে আনিসুল ইসলাম ইমন ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন মিলে ১২৩ রানের জুটি গড়েন। মাহিদুল ৫৫ বলে ৪৮ রান করে আউট হলে ভাঙে জুটি।
এই জুটির পর মোহামেডানের আর কেউই দাঁড়াতে পারেনি। মাহমুদউল্লাহ (১৭), মুশফিকুর রহিম (২০) ও মেহেদী হাসান মিরাজ (১৮) ভালো শুরুর পরও ইনিংসটাকে বড় করতে পারেনি। যা করেছেন আনিসুল একাই। চলতি লিগে নিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমেই সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ১১৮ বলে ১৮ চার ও ২ ছক্কায় ১১৪ রানের ইনিংস খেলে আউট হন ২৭ বছর বয়সী এই ব্যাটার। এটাই তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। আনিসুলের দারুণ সেঞ্চুরিতে মোহামেডান ৪৮.২ ওভারে ২৬৪ রানে থামে। আবাহনীর বোলারদের মধ্যে নাহিদ রানা ৪৯ রানে নেন তিনটি উইকেট। এছাড়া মৃত্যুঞ্জয় চেীধুরী, রাকিবুল হাসান ও মাহফিজুর রহমান রাব্বি নেন দুটি করে উইকেট। একটি উইকেট নেন মোসাদ্দেক হোসেন।
তবে এই ম্যাচ ঘিরে ব্যাটে-বলে তেমন কোনো উত্তেজনা, রোমাঞ্চ ছড়ায়নি। মোহামেডান শুরু থেকে দাপট দেখিয়েছে। আবাহনী এক পর্যায়ে ফিরে লক্ষ্য নাগালে রেখেছিল। বোলিংয়ে মোহামেডান আবার দাপট দেখায়। জুটি গড়ে আবহনীও দেয় জবাব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মোহামেডানের দলগত পারফরম্যান্সে আবাহনীকে হার মানতে হয়। তবে ইবাদত হোসেনের বলে মোহাম্মদ মিঠুনের এক এলবিডব্লিউ আবদেনকে ঘিরে কথা কাটাকাটি হয়েছে। সেটাও অনফিল্ড দুই আম্পায়ার তানভীর ও সৈকতের সঙ্গে মোহামেডানের অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিমের। আম্পায়ারের থেকে আউটের সাড়া না পেয়ে ইবাদতও অশোভন আচরণ করেছেন। ড্রেসিংরুমের দিকে তাক করে আঙ্গুল তুলে চিৎকার করতে দেখা গেছে তাকে। পরিস্থিতি এতোটাই বাড়াবাড়ি পর্যায়ের ছিল যে মিনিট তিনেক খেলা বন্ধ ছিল।