দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইতিহাস গড়া এক জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। ইংল্যান্ড ১৪৬ রানে বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে দক্ষিণ আিিফ্রকাকে। ম্যাচে শুধু বিশাল জয়ই নয়। এক অবিশ্বাস্য ইনিংস উপহার দিয়েছে দলটি। যা টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে একটি নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছে। ইংল্যান্ড ২০ ওভারে ৩০৪ রান সংগ্রহ করে রেকর্ড গড়েছে। এই বিশাল রান তাড়া করতে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৫৮ রানে গুঁটিয়ে দিয়েছে। ফিল সল্টের ৩৯ বলে ঝোড়ো সেঞ্চুরিতে টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ গড়েছে ইংল্যান্ড। সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩০৪ রানের পাহাড় টপকাতে না দিয়ে রেকর্ড জয় তুলে নিয়ে সিরিজে ১-১ সমতা ফিরিয়েছে স্বাগতিক দল। সার্বিকভাবে টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ হলেও ইংল্যান্ডের জন্য এটি ছিল রেকর্ড স্কোর। ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছিলেন ফিল সল্ট। ৩৯ বলের সেঞ্চুরিতে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে ইংলিশদের হয়ে নিজেরই করা সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহের রেকর্ড ভেঙেছেন তিনি। হয়েছেন ইংল্যান্ডের দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ানও। তাছাড়া ১৪৬ রানের এই জয়টিও এই সংস্করণে তাদের সবচেয়ে বড়।
২২ গজের পিচে ঝড় তোলা ইংল্যান্ড ওলট-পালট করে দিয়েছে রেকর্ড বুকেও, যার মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য রেকর্ড হল:
* ইংল্যান্ড এখন পর্যন্ত টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে প্রথম দল হিসেবে ৩০০ বা তার বেশি রান করেছে। এর আগে ভারতের (২৯৭ রান, বাংলাদেশ বিপক্ষে) সর্বোচ্চ রান ছিল। তবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ রান। এর আগে গাম্বিয়ার বিপক্ষে জিম্বাবুয়ে ৩৪৪ এবং নেপাল ৩১৪ রান করেছিল মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে। ইংল্যান্ডের এই ৩০৪ রান তাদের জন্য ছিল সর্বোচ্চ রান।
* ইংল্যান্ডের ওপেনিং ব্যাটসম্যান ফিল সল্ট এক ইনিংসে ১৫টি চার ও ৮টি ছক্কায় ১০৮ রান করেছেন, যা ইংল্যান্ডের হয়ে একটি টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ বাউন্ডারি সংগ্রহের রেকর্ড। এর আগে সল্ট ৮৮ রান বাউন্ডারিতে করেছিলেন।
* জস বাটলার মাত্র ১৮ বলেই অর্ধশতরান পূর্ণ করেছেন, যা ইংল্যান্ডের হয়ে তৃতীয় দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি। তার আগে রয়েছেন মঈন আলি (১৬ বল) এবং লিয়াম লিভিংস্টোন (১৭ বল)।
* ইংল্যান্ড পাওয়ার প্লে-তে ১০০ রান পূর্ণ করে বিনা উইকেটে। এটি পূর্ণ সদস্য দেশের মধ্যে চতুর্থবারের মতো দেখা গেল। এর আগে, স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া ১১৩ রান তুলেছিল।
* ইংল্যান্ডের ওপেনিং জুটি সল্ট ও বাটলার ১২৬ রান করেছেন, যা তাদের চতুর্থ ১০০+ রানের জুটি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এই সংখ্যায় তাঁরা এখন যুগ্মভাবে দ্বিতীয়।
* ফিল সল্ট ১৯ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ করেছেন, যা ইংল্যান্ডের চতুর্থ দ্রুততম অর্ধশতরান।
* আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১০ ওভার শেষে সর্বোচ্চ দলীয় রান ১৬৬/১, যে রেকর্ড ইংল্যান্ড গড়েছে গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। এর আগে অস্ট্রেলিয়া ১৫৬/৩ করেছিল।
* ইংল্যান্ড ১২.১ ওভারে দ্রুততম ২০০ রানের রেকর্ড গড়েছে। এর আগে গাম্বিয়ার বিপক্ষে জিম্বাবুয়ে ১২.৫ ওভারে ২০০ রান করেছিল।
* ফিল সল্ট মাত্র ৩৯ বলে সেঞ্চুরি করেছেন, যা ইংল্যান্ডের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরি। এর আগে লিভিংস্টোন পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪২ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন। সল্টের ইনিংসে ১৫ চার এবং ৮ ছক্কার সাহায্যে ৬০ বলে ১৪১* রান করে তিনি ইংল্যান্ডের এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রান করার রেকর্ড গড়েছেন।
* ফিল সল্ট ৪২ ইনিংসে চতুর্থ সেঞ্চুরি করেছেন, যা যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তার সমান চারটি সেঞ্চুরি করেছেন সূর্যকুমার যাদব, যিনি ৮০ ইনিংসে ৪টি সেঞ্চুরি করেছেন।
* গতকাল ফিল্ডার (নন-উইকেটরক্ষক) হিসেবে ইংল্যান্ডের হয়ে এক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ৪টি ক্যাচ ধরেন জোফরা আর্চার। বল হাতে ৩ উইকেট শিকারের পাশাপাশি ফিল্ডিংয়েও তার প্রদর্শনী ছিল প্রশংসনীয়। এর আগে কেভিন পিটারসেন এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩টি ক্যাচ নেন।
* দক্ষিণ আফ্রিকার কাগিসো রাবাদা ৪ ওভারে ৭০ রান খরচ করেছেন, যা দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রান খরচের রেকর্ড।